Ajker Patrika

উদাসীনতায় নীরবে বেড়েছে ডেঙ্গুতে মৃত্যু

  • এ বছর দেশে ডেঙ্গুর ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু।
  • রোগী ব্যবস্থাপনা, সমন্বিত উদ্যোগের ঘাটতিসহ নানা কারণে বাড়ছে ডেঙ্গু।
  • মশকনিধনে জোর দেওয়ার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
ডেঙ্গু এখন সারা বছরের রোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, মশকনিধন ও রোগী ব্যবস্থাপনায় অবহেলার কারণে দুই দশকেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে এই শীতেও ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে, হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে রোগীদের। গতকাল রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডেঙ্গু এখন সারা বছরের রোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, মশকনিধন ও রোগী ব্যবস্থাপনায় অবহেলার কারণে দুই দশকেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে এই শীতেও ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে, হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে রোগীদের। গতকাল রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সাড়ে পাঁচ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এডিস মশাবাহিত এই রোগে মৃত্যুর এ সংখ্যা দেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এ ছাড়া চলতি বছর আক্রান্ত হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। এই হিসাব শুধু হাসপাতালভিত্তিক। এর বাইরে কত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ও মারা গেছেন, তার পরিসংখ্যান নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুর বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের উদাসীনতা বরাবরের মতো এখনো রয়ে গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছরের শুরু থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত সারা দেশের হাসপাতালগুলোয় ১ লাখ ৪৯১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৬৫ জনের। এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৫৬ জন।

মাসভিত্তিক হিসাবে গত জানুয়ারিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ১ হাজার ৫৫ জন, মৃত্যু হয় ১৪ জনের। ফেব্রুয়ারিতে ভর্তি হয় ৩৩৯ জন, মারা যায় ৩ জন। মার্চে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩১১ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। এপ্রিলে ৫০৪ জন রোগীর মধ্যে মারা গেছে ২ জন। মে মাসে ৬৪৪ জন রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের, জুনে ৭৯৮ জনের মধ্যে ৮, জুলাইয়ে ২ হাজার ৬৬৯ জনের মধ্যে ১২, আগস্টে ৬ হাজার ৫২১ জনের মধ্যে ২৭, সেপ্টেম্বরে ১৮ হাজার রোগীর মধ্যে ৮০, অক্টোবরে ৩০ হাজার ৮৭৯ জনের মধ্যে ১৩৫ এবং নভেম্বরে ২৯ হাজার ৬৫২ রোগীর মধ্যে ১৭৩ জন মারা গেছে। ডিসেম্বরের গতকাল পর্যন্ত ৯ হাজারের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মারা গেছে ৭৭ জন।

জনস্বাস্থ্যবিদ ও রোগতত্ত্ববিদেরা বলছেন, আড়াই দশক ধরে বাংলাদেশ ডেঙ্গু মোকাবিলা করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু প্রতিরোধ, চিকিৎসা, রোগ ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তবে এর কোনো প্রতিফলন এখনো দেখা যাচ্ছে না। এডিস মশা নির্মূলে ও রোগী ব্যবস্থাপনায় জনস্বাস্থ্য-সংক্রান্ত চিন্তাভাবনাগুলো এখনো উপেক্ষিত। শুরু থেকেই সমন্বিত উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ একে অপরের প্রতি দোষারোপ করছে। ফলে বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার বিশ্বে শীর্ষে। এদিকে এডিশ মশার স্বভাব অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আবহাওয়াসহ নানা কারণে ডেঙ্গু এখন সারা বছরের রোগ।

জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. গোলাম সারোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মশার মধ্যে ভাইরাসের মিউটেশন (রূপান্তর) বেশি হচ্ছে। ফলে মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। মশার স্বভাবে পরিবর্তন এসেছে। মশা নির্মূলে যে কীটনাশক দেওয়া হচ্ছে, তা কাজ করছে না আর। মশা কীটনাশকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।’

এই কীটতত্ত্ববিদ বলেন, যে পদ্ধতিতে মশা নিধন করার কথা, সেভাবে হচ্ছে না। কীটনাশক, রাসায়নিক কাজ করছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করা হচ্ছে না। মশা প্রতিরোধী হয়ে উঠল কি না দেখতে হবে। যে এলাকায় রোগী পাওয়া যাচ্ছে, সে এলাকায় মশকনিধন কর্মসূচি জোরদার করতে হবে। যত ধরনের নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া রয়েছে, তা প্রয়োগ করতে হবে। স্থানীয়দের সংযুক্ত করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশে ডেঙ্গুকে রোগতত্ত্বের গুরুত্ব দেওয়া হয় ২০০০ সালে। এরপর ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৩ বছরে ডেঙ্গু রোগীর মোট সংখ্যা ছিল আড়াই লাখ। এই ২২ বছরে মারা গেছেন ৮৫০ রোগী। ২০২৩ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সে বছর হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজারের বেশি রোগী। মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। আর চলতি বছর এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৬৫ জনের, যা দেশে ডেঙ্গুর ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু জামিল ফয়সাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ডেঙ্গুর ব্যবস্থাপনা করছে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে। তবে এখনো আশানুরূপ নিয়ন্ত্রণ সরকার দেখাতে পারেনি। যতটুকু দেখা যাচ্ছে, তা মূলত রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে। অতিদ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম এ রোগটিকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম নেই।’

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সরকার ডেঙ্গুবিষয়ক যে তথ্য দিচ্ছে, তা মূলত হাসপাতালভিত্তিক চিত্র। রাজধানীর ১৮টি সরকারি ও ৫৯টি বেসরকারি হাসপাতালের তথ্য নিয়মিত হালনাগাদ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর বাইরে সরকারি পর্যায়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা বা জেনারেল হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তবে সারা দেশে বিভিন্ন পর্যায়ের বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিলেও তা সরকারের সম্মিলিত তথ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এ ছাড়া ডেঙ্গু শনাক্ত হলেও বড় ধরনের জটিলতা না থাকায় অনেক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বাড়িতে।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও সংস্থাটির পরামর্শক মুশতাক হোসেন বলেন, ‘হিসাবের বাইরে কয়েকগুণ বেশি রোগী রয়েছে। কেউ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন সে সংখ্যা আমাদের জানা নেই। রোগী ব্যবস্থাপনা যে ঠিক নেই, এ কথা আমরা বহু বছর ধরে বলে আসছি। রোগ এবং রোগীর ব্যবস্থাপনা না হলে কোনো রোগই নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করা যায় না। আর ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়নি। বেশির ভাগ রোগী ঢাকায় ভিড় করছেন। এতে চিকিৎসা বিলম্বিত হয়।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগনিয়ন্ত্রণ) মো. ফরহাদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এডিশ মশার নিধনে আমাদের কার্যক্রম নেই। আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এ বছর বৃষ্টি দেরিতে শুরু হয়েছে এবং তা নভেম্বর পর্যন্ত ছিল। এতে ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধি পেয়েছিল। হাসপাতালের বাইরে রোগীর হিসাব নেওয়া হয় না। আমরা একটা পরিকল্পনা করছি, যেন আগামী বছর থেকে হাসপাতালের বাইরের রোগীর হিসাবও রাখা হয়। তাতে মৃত্যুর হারও কমে আসবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদিকে হত্যা ও পরবর্তী সহিংসতায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের নিন্দা, ন্যায়বিচারের আহ্বান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হাদিকে হত্যা ও পরবর্তী সহিংসতায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের নিন্দা, ন্যায়বিচারের আহ্বান

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী সময়ে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এসব ঘটনায় দ্রুত, পূর্ণাঙ্গ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

গতকাল শুক্রবার রাত ১২টা ২৬ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাউথ এশিয়া রিজিওনাল অফিসের অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।

পোস্টটিতে মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, হাদি হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সময়টিতে সহিংসতায় প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানট-এর কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে এবং নিউ এজ-এর সম্পাদক নুরুল কবির হয়রানির শিকার হন।

এ ছাড়া ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দু পোশাকশ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায়ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে বলা হয়, এসব কর্মকাণ্ডে মানুষ আহত হয়েছেন, সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে এমন সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ন্যায্য বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের আশ্রয় না নিয়ে আইনসম্মত ও ন্যায়সঙ্গত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিল্পকলা একাডেমির সব অনুষ্ঠান স্থগিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সব অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী স্থগিত করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার শিল্পকলা একাডেমির উপপরিচালক (প্রশাসন) পূর্ণলাক্ষ চাকমা স্বাক্ষরিত একটি স্মারকপত্রে বিষয়টি নির্দেশক্রমে জানানো হয়।

ঘোষণায় বলা হয়, রাষ্ট্রীয় শোক দিবস ও অনিবার্য কারণবশত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সকল অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী আজ ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুতে আজ শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গত বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে রাষ্ট্রীয় শোকের ঘোষণা দেন তিনি।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি। নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে রিকশায় থাকা হাদিকে গুলি করা হয়। গুলিটি হাদির মাথায় লাগে।

গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে রাতেই তাঁকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দীর মর্গে হাদির মরদেহ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ময়নাতদন্তের জন্য ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে নেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ১০টার কিছু আগে তাঁর মরদেহ জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘর থেকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে নেওয়া হয়।

এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইটে তাঁর কফিন দেশে পৌঁছানোর পর মরদেহ রাখা হয় জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে।

জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী আজ সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওসমান হাদির মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে নেওয়া হয়েছে। এখন ময়নাতদন্ত চলছে। ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর মরদেহ আবারও হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে আনা হবে। এরপর দুপুরে জানাযার জন্য নেওয়া হবে।’

আজ দুপুর ২টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক আজ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪২
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুতে আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হবে। গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। একই রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আজ এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক একটি সংবাদ নিয়ে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি আর আমাদের মাঝে নেই।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমি তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত স্ত্রী, পরিবারের সদস্যবৃন্দ, স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। শহীদ ওসমান হাদির স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে।’

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় শোক পালনে আজ দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

গতকাল শুক্রবার হাদির মরদেহ সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আনা হয়। তাঁর মরদেহ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়েছে। আজ বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হবে।

জানাজায় অংশগ্রহণে আগ্রহীদের কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারি বস্তু বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

আরও বলা হয়েছে, এ সময় সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিচিতি পাওয়া শরিফ ওসমান বিন হাদি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে রিকশায় থাকা হাদিকে গুলি করা হয়। গুলিটি হাদির মাথায় লাগে।

গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে রাতেই তাঁকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত