Ajker Patrika

মধ্যরাতে পুলিশ পরিচয়ে কেউ বাসায় হানা দিলে কী করবেন

আপডেট : ২৩ জুন ২০২৩, ২০: ০৭
মধ্যরাতে পুলিশ পরিচয়ে কেউ বাসায় হানা দিলে কী করবেন

অপরাধী খুঁজতে বা তথ্য অনুসন্ধানে পুলিশ যে কারও বাসাবাড়িতে যেতে পারে। বাসাবাড়িতে পুলিশ গেলে তাতে ভয় না পেয়ে সহযোগিতা করতে হবে। তবে এ সময় যাতে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয়, বা পুলিশের পক্ষ থেকে তল্লাশির নামে যাতে হয়রানি করা না হয়, সে ক্ষেত্রেও আইনের সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে।

মধ্য বা গভীর রাতে আপনার বাসায় পুলিশ পরিচয়ে কেউ হানা দিলে প্রথমেই নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করুন তিনি বা তাঁরা আদতে পুলিশ বা আইনের লোক কি না। এ সময় অবশ্যই তাঁর গায়ে পুলিশের পোশাক থাকতে হবে। পুলিশের পোশাকে না থাকলে এবং আইডি কার্ড দেখাতে না চাইলে ধরে নিতে পারেন, তাঁরা পুলিশ বা অন্য কোনো বাহিনীর লোক নন। তাঁরা দুর্বৃত্ত বলে সন্দেহ হলে দ্রুত ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে আপনার বাসার ঠিকানাসহ বিস্তারিত বলুন। এমনকি তাঁরা পুলিশ কি না, তা নিশ্চিত হতে থানায় ফোন দিতে পারেন।

৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটের মধ্যে আপনার বাসাবাড়িতে পাশের থানার পুলিশ হাজির হওয়ার কথা। এমনকি পুলিশ আরও আগেই হাজির হতে পারে। এই সময়ের মধ্যে জেনে নিন, তাঁরা ঠিক কোন অভিযোগের ভিত্তিতে আপনার বাসায় এসেছে। নির্দিষ্ট কোনো ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে এসে থাকলে ওয়ারেন্টের কাগজ চেয়ে নিন। পুলিশ আসা পর্যন্ত সময়ক্ষেপণে আরও কোনো কৌশল নিতে পারেন। দুর্বৃত্ত হলে পুলিশ এলে তারা ধরা পড়বে, বা এর আগেই দৌড়ে পালাবে।

এ ক্ষেত্রে স্থানীয় থানায় ফোন করে নিশ্চিত হতে পারেন, আসলেই আপনার বাসায় থানা থেকে কোনো পুলিশ পাঠানো হয়েছে কি না। তাই যেখানেই থাকুন না কেন, স্থানীয় থানা-পুলিশের নম্বরটি আপনার কাছে থাকা জরুরি। সন্দেহজনকভাবে কেউ নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিলে তখন তাঁর পরিচয় সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন।

আর যদি তাঁরা পুলিশ বা কোনো বাহিনীর লোক বলে নিশ্চিত হন, তবে তাঁকে বা তাঁদের বোঝাতে চেষ্টা করুন, এত রাতে আপনি তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চান না। তাঁদের দিনের বেলা আসতে বলুন। অথবা ঠিকানা দিয়ে যেতে বলুন। তাঁদের আশ্বস্ত করুন, আপনি নিজেই দিনের বেলা গিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন।

একান্তই তাঁরা আপনার কথা মানতে না চাইলে স্বজনদের দিয়ে তাঁদের নিয়ে আসা গাড়ির নম্বর জেনে রাখুন। গাড়িসহ কৌশলে তাঁদের ছবি তুলে রাখতে পারেন। তবে বিষয়টি তাঁরা বুঝে বা জেনে গেলে এই কাজে তাঁরা বাধা দিতে পারেন।

বিভিন্ন কারণে বাসায় পুলিশ যেতে পারে। যেমন যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধে মামলা হলে তাঁকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে পুলিশ যেতে পারে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যদি জানা যায়, কোনো বাড়িতে বা সুনির্দিষ্ট কোনো জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্র বা বিস্ফোরক পদার্থ মজুত রয়েছে, তখন পুলিশ তল্লাশির জন্য যেতে পারে। কোনো মামলার পলাতক আসামিকে খুঁজতেও যেতে পারে ‍পুলিশ।

আদালত যদি কারও বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেন, তবে পুলিশ ওই ব্যক্তি বা বিষয়বস্তুর সন্ধানে তল্লাশি চালাতে পারে। ওয়ারেন্ট জারি হলে তা লিখিত ও ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষরিত হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ফয়জুল্লাহ ফয়েজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, উচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, পুলিশ সাদাপোশাকে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না। তা ছাড়া গ্রেপ্তারের সময় অবশ্যই পুলিশকে তাঁর পরিচয় জানাতে হবে।

ফয়জুল্লাহ ফয়েজ আরও বলেন, কাউকে আটক করতে হলে তাঁর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ তা জানাতে হবে এবং তাঁর পরিবারের লোকজন বা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ দিতে হবে। আটক করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই তাঁকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে হবে। এসবের কোনোটির ব্যত্যয় ঘটলে তা হবে অসদাচরণ এবং এ কারণে সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত