ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক
বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কভার লাঘবে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষ বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত বুধবার মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসার পর পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের করণীয় ঠিক করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর এ নির্দেশনা পেয়ে গত চার দিনের চেষ্টায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মহলের যৌথ অংশগ্রহণে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠক থেকে পাওয়া সুপারিশের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায় সরকার।
প্রেস সচিব আজ জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি দেবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিঠি দুটি পাঠানো হবে। দুটি চিঠির একটি পাঠাবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠিটি দেবেন। অন্য চিঠিটি বাণিজ্য উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন পাঠাবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরে (ইউএসটিআর)। এই চিঠিতে বাংলাদেশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি সহজ করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে ও নেবে এবং বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহজ করার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তার কৌশলগুলো কী হবে, তা তুলে ধরা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত
আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ে সোয়া ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা ইউএসএর সঙ্গে বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ লক্ষ্যে দেশটি থেকে বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় পণ্য এবং সেবা—উভয় ধরনের আমদানিই বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে বাংলাদেশের আরোপ করা শুল্কহার যৌক্তিকীকরণের মাধ্যমে কমিয়ে আনা হবে। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বিদ্যমান ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ বাধাগুলোও দূর করার দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আশা করছি, এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান, বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমান, বিনিয়োগ বোর্ডের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি রুবানা হক, ফারুক হাসান, ব্যবসায়ী তপন চৌধুরী, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, বিকেএমইএর সভাপতি মো. হাতেমসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ নিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, মার্কিন শুল্কনীতি ইস্যুতে দেশটির বাজারে যাতে কোনোভাবেই বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগী সক্ষমতা না কমে, সরকারি নীতি-পদক্ষেপে সেদিকে জোরালো নজর থাকবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানান, ‘ধারাবাহিক বৈঠকের পর সবার সুপারিশ পর্যালোচনা করে আমরা সংকট উত্তরণের একটা সহায়ক পদক্ষেপে পৌঁছেছি। আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি, যা আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সবার কাছে স্পষ্ট হবে।’
খলিলুর রহমান বলেন, ‘মার্কিন নতুন শুল্কনীতি ইস্যুটির যথাসম্ভব একটি সন্তোষজনক সমাধানে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। এর জন্য করণীয় সবকিছুই করা হবে।’
বৈঠক শেষে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সরকারের উদ্যোগে তাঁরা সন্তুষ্ট। সরকার যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতির পরিপ্রেক্ষিতে যে কর্মকৌশল নিচ্ছে, তাতে একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে বলে আশা করছেন তাঁরা। আজকের বৈঠকের আলোচনায় যার একটি পথনির্দেশনা পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা, যেটি ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর।
সরকারকে ৬ পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ
এদিকে গতকাল সকালে বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে আন্তমন্ত্রণালয়ের আরেকটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রপ্তানিকারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠক থেকে পাওয়া সুপারিশের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন শুল্কনীতি কার্যকরে ন্যূনতম ৩ থেকে ৬ মাস অতিরিক্ত সময় চাওয়া।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সরকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউএসটিআরকে যে দুটি চিঠি পাঠাতে যাচ্ছে, সেখানে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে উঠে আসবে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির গতি বাড়াতে বাংলাদেশে মার্কিন রপ্তানিকারকদের জন্য দ্রুত ওয়্যারহাউস প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব রাখারও সুপারিশ করা হয় বৈঠকে। বাকি পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে তুলাসহ অন্যান্য পণ্য ও সেবার আমদানি বৃদ্ধি, বাংলাদেশে বিদ্যমান শুল্কহার যৌক্তিকীকরণ, মার্কিন প্রশাসনে দ্রুত চিঠি চালাচালি শুরু করা ও টেলিসংলাপ অব্যাবহত রাখা এবং টিকফা ফোরামে বাংলাদেশের জোরালো আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।
বৈঠকে অংশ নেওয়া ট্রেড বিশেষজ্ঞ ড. এম এ রাজ্জাক বলেন, মার্কিন তুলা আমদানিতে ওয়্যারহাউস নির্মাণের সিদ্ধান্ত পুরোনো হলেও এবার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দ্রুততা আনা হচ্ছে। তিনি সতর্ক করেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে, তাহলে বাংলাদেশের গার্মেন্ট রপ্তানি হুমকির মুখে পড়বে। মার্কিন বাজারে বছরে ৮০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি হয়, সেখানে ১০-২৫ শতাংশ কমতি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে। পাশাপাশি যদি চীন তাদের মার্কিন রপ্তানি কমায়, তবে তারা ইউরোপীয় বাজারে প্রবেশ বাড়াতে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলার আমদানি তিন থেকে চার গুণ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে, যা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ভূমিকা রাখবে। এই উদ্যোগ সফল করতে হলে দ্রুত অবকাঠামো প্রস্তুত করা জরুরি।
নীতিগত দিক থেকে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানান পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, ‘সরকারকে দুই দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে চিঠি পাঠাতে বলেছি। সময়ক্ষেপণ না করে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করা দরকার।’
এদিকে শুল্ক ব্যবস্থাপনার দিকটি সামনে রেখে এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, এমন পণ্যের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, যেগুলো শুধু যুক্তরাষ্ট্র থেকেই আমদানি হয় এবং শুল্ক কমালে রাজস্ব ঘাটতি হবে না। তবে তাঁরা সতর্ক করে বলেন, একতরফাভাবে শুল্কছাড় দিলে অন্যান্য দেশও একই দাবি তুলতে পারে। এ জন্য হিসাব-নিকাশ করে কৌশল নির্ধারণ করা হচ্ছে।
মাসরুর রিয়াজ বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন, ‘শুধু অনুমানভিত্তিক ছাড় দিলে হবে না, যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা কী—তা জেনে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একতরফা ছাড় দিলে তা রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নীতিনির্ধারকদের বৈঠক
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত শুল্ক বিষয়ে আলোচনার জন্য গতকাল মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সরকারের শীর্ষস্থানীয় নীতিনির্ধারকেরা। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, যে মানদণ্ডে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নতুন শুল্কনীতি আরোপ করা হয়েছে, তা সঠিক ও নৈতিক হয়নি। কারণ, বাংলাদেশে মার্কিন পণ্যের শুল্কহার গড়ে ৫ শতাংশের বেশি নয়। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।
গুলশান ২-এ মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের বাসভবনে ‘ব্রেকফাস্ট অন ট্রেড ব্যারিয়ার্স’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, শিল্প উপদেষ্টা মো. আদিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সভায় দুটি বিষয়ে আলোচনা করেছেন উপদেষ্টারা। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং কিছু মার্কিন পণ্যে শুল্ক কমানো, ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ সহজ করা। একই সঙ্গে মার্কিন শুল্কনীতি ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান ট্রাম্প প্রশাসনকে অবহিত করতেও অনুরোধ জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কভার লাঘবে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষ বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত বুধবার মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসার পর পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের করণীয় ঠিক করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর এ নির্দেশনা পেয়ে গত চার দিনের চেষ্টায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মহলের যৌথ অংশগ্রহণে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠক থেকে পাওয়া সুপারিশের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায় সরকার।
প্রেস সচিব আজ জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি দেবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিঠি দুটি পাঠানো হবে। দুটি চিঠির একটি পাঠাবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠিটি দেবেন। অন্য চিঠিটি বাণিজ্য উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন পাঠাবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরে (ইউএসটিআর)। এই চিঠিতে বাংলাদেশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি সহজ করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে ও নেবে এবং বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহজ করার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তার কৌশলগুলো কী হবে, তা তুলে ধরা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত
আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ে সোয়া ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা ইউএসএর সঙ্গে বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ লক্ষ্যে দেশটি থেকে বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় পণ্য এবং সেবা—উভয় ধরনের আমদানিই বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে বাংলাদেশের আরোপ করা শুল্কহার যৌক্তিকীকরণের মাধ্যমে কমিয়ে আনা হবে। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বিদ্যমান ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ বাধাগুলোও দূর করার দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আশা করছি, এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান, বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমান, বিনিয়োগ বোর্ডের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি রুবানা হক, ফারুক হাসান, ব্যবসায়ী তপন চৌধুরী, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, বিকেএমইএর সভাপতি মো. হাতেমসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ নিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, মার্কিন শুল্কনীতি ইস্যুতে দেশটির বাজারে যাতে কোনোভাবেই বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগী সক্ষমতা না কমে, সরকারি নীতি-পদক্ষেপে সেদিকে জোরালো নজর থাকবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানান, ‘ধারাবাহিক বৈঠকের পর সবার সুপারিশ পর্যালোচনা করে আমরা সংকট উত্তরণের একটা সহায়ক পদক্ষেপে পৌঁছেছি। আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি, যা আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সবার কাছে স্পষ্ট হবে।’
খলিলুর রহমান বলেন, ‘মার্কিন নতুন শুল্কনীতি ইস্যুটির যথাসম্ভব একটি সন্তোষজনক সমাধানে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। এর জন্য করণীয় সবকিছুই করা হবে।’
বৈঠক শেষে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সরকারের উদ্যোগে তাঁরা সন্তুষ্ট। সরকার যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতির পরিপ্রেক্ষিতে যে কর্মকৌশল নিচ্ছে, তাতে একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে বলে আশা করছেন তাঁরা। আজকের বৈঠকের আলোচনায় যার একটি পথনির্দেশনা পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা, যেটি ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর।
সরকারকে ৬ পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ
এদিকে গতকাল সকালে বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে আন্তমন্ত্রণালয়ের আরেকটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রপ্তানিকারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠক থেকে পাওয়া সুপারিশের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন শুল্কনীতি কার্যকরে ন্যূনতম ৩ থেকে ৬ মাস অতিরিক্ত সময় চাওয়া।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সরকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউএসটিআরকে যে দুটি চিঠি পাঠাতে যাচ্ছে, সেখানে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে উঠে আসবে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির গতি বাড়াতে বাংলাদেশে মার্কিন রপ্তানিকারকদের জন্য দ্রুত ওয়্যারহাউস প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব রাখারও সুপারিশ করা হয় বৈঠকে। বাকি পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে তুলাসহ অন্যান্য পণ্য ও সেবার আমদানি বৃদ্ধি, বাংলাদেশে বিদ্যমান শুল্কহার যৌক্তিকীকরণ, মার্কিন প্রশাসনে দ্রুত চিঠি চালাচালি শুরু করা ও টেলিসংলাপ অব্যাবহত রাখা এবং টিকফা ফোরামে বাংলাদেশের জোরালো আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।
বৈঠকে অংশ নেওয়া ট্রেড বিশেষজ্ঞ ড. এম এ রাজ্জাক বলেন, মার্কিন তুলা আমদানিতে ওয়্যারহাউস নির্মাণের সিদ্ধান্ত পুরোনো হলেও এবার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দ্রুততা আনা হচ্ছে। তিনি সতর্ক করেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে, তাহলে বাংলাদেশের গার্মেন্ট রপ্তানি হুমকির মুখে পড়বে। মার্কিন বাজারে বছরে ৮০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি হয়, সেখানে ১০-২৫ শতাংশ কমতি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে। পাশাপাশি যদি চীন তাদের মার্কিন রপ্তানি কমায়, তবে তারা ইউরোপীয় বাজারে প্রবেশ বাড়াতে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলার আমদানি তিন থেকে চার গুণ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে, যা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ভূমিকা রাখবে। এই উদ্যোগ সফল করতে হলে দ্রুত অবকাঠামো প্রস্তুত করা জরুরি।
নীতিগত দিক থেকে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানান পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, ‘সরকারকে দুই দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে চিঠি পাঠাতে বলেছি। সময়ক্ষেপণ না করে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করা দরকার।’
এদিকে শুল্ক ব্যবস্থাপনার দিকটি সামনে রেখে এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, এমন পণ্যের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, যেগুলো শুধু যুক্তরাষ্ট্র থেকেই আমদানি হয় এবং শুল্ক কমালে রাজস্ব ঘাটতি হবে না। তবে তাঁরা সতর্ক করে বলেন, একতরফাভাবে শুল্কছাড় দিলে অন্যান্য দেশও একই দাবি তুলতে পারে। এ জন্য হিসাব-নিকাশ করে কৌশল নির্ধারণ করা হচ্ছে।
মাসরুর রিয়াজ বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন, ‘শুধু অনুমানভিত্তিক ছাড় দিলে হবে না, যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা কী—তা জেনে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একতরফা ছাড় দিলে তা রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নীতিনির্ধারকদের বৈঠক
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত শুল্ক বিষয়ে আলোচনার জন্য গতকাল মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সরকারের শীর্ষস্থানীয় নীতিনির্ধারকেরা। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, যে মানদণ্ডে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নতুন শুল্কনীতি আরোপ করা হয়েছে, তা সঠিক ও নৈতিক হয়নি। কারণ, বাংলাদেশে মার্কিন পণ্যের শুল্কহার গড়ে ৫ শতাংশের বেশি নয়। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।
গুলশান ২-এ মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের বাসভবনে ‘ব্রেকফাস্ট অন ট্রেড ব্যারিয়ার্স’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, শিল্প উপদেষ্টা মো. আদিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সভায় দুটি বিষয়ে আলোচনা করেছেন উপদেষ্টারা। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং কিছু মার্কিন পণ্যে শুল্ক কমানো, ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ সহজ করা। একই সঙ্গে মার্কিন শুল্কনীতি ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান ট্রাম্প প্রশাসনকে অবহিত করতেও অনুরোধ জানানো হয়।
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক
বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কভার লাঘবে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষ বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত বুধবার মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসার পর পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের করণীয় ঠিক করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর এ নির্দেশনা পেয়ে গত চার দিনের চেষ্টায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মহলের যৌথ অংশগ্রহণে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠক থেকে পাওয়া সুপারিশের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায় সরকার।
প্রেস সচিব আজ জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি দেবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিঠি দুটি পাঠানো হবে। দুটি চিঠির একটি পাঠাবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠিটি দেবেন। অন্য চিঠিটি বাণিজ্য উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন পাঠাবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরে (ইউএসটিআর)। এই চিঠিতে বাংলাদেশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি সহজ করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে ও নেবে এবং বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহজ করার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তার কৌশলগুলো কী হবে, তা তুলে ধরা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত
আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ে সোয়া ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা ইউএসএর সঙ্গে বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ লক্ষ্যে দেশটি থেকে বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় পণ্য এবং সেবা—উভয় ধরনের আমদানিই বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে বাংলাদেশের আরোপ করা শুল্কহার যৌক্তিকীকরণের মাধ্যমে কমিয়ে আনা হবে। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বিদ্যমান ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ বাধাগুলোও দূর করার দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আশা করছি, এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান, বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমান, বিনিয়োগ বোর্ডের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি রুবানা হক, ফারুক হাসান, ব্যবসায়ী তপন চৌধুরী, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, বিকেএমইএর সভাপতি মো. হাতেমসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ নিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, মার্কিন শুল্কনীতি ইস্যুতে দেশটির বাজারে যাতে কোনোভাবেই বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগী সক্ষমতা না কমে, সরকারি নীতি-পদক্ষেপে সেদিকে জোরালো নজর থাকবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানান, ‘ধারাবাহিক বৈঠকের পর সবার সুপারিশ পর্যালোচনা করে আমরা সংকট উত্তরণের একটা সহায়ক পদক্ষেপে পৌঁছেছি। আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি, যা আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সবার কাছে স্পষ্ট হবে।’
খলিলুর রহমান বলেন, ‘মার্কিন নতুন শুল্কনীতি ইস্যুটির যথাসম্ভব একটি সন্তোষজনক সমাধানে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। এর জন্য করণীয় সবকিছুই করা হবে।’
বৈঠক শেষে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সরকারের উদ্যোগে তাঁরা সন্তুষ্ট। সরকার যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতির পরিপ্রেক্ষিতে যে কর্মকৌশল নিচ্ছে, তাতে একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে বলে আশা করছেন তাঁরা। আজকের বৈঠকের আলোচনায় যার একটি পথনির্দেশনা পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা, যেটি ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর।
সরকারকে ৬ পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ
এদিকে গতকাল সকালে বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে আন্তমন্ত্রণালয়ের আরেকটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রপ্তানিকারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠক থেকে পাওয়া সুপারিশের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন শুল্কনীতি কার্যকরে ন্যূনতম ৩ থেকে ৬ মাস অতিরিক্ত সময় চাওয়া।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সরকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউএসটিআরকে যে দুটি চিঠি পাঠাতে যাচ্ছে, সেখানে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে উঠে আসবে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির গতি বাড়াতে বাংলাদেশে মার্কিন রপ্তানিকারকদের জন্য দ্রুত ওয়্যারহাউস প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব রাখারও সুপারিশ করা হয় বৈঠকে। বাকি পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে তুলাসহ অন্যান্য পণ্য ও সেবার আমদানি বৃদ্ধি, বাংলাদেশে বিদ্যমান শুল্কহার যৌক্তিকীকরণ, মার্কিন প্রশাসনে দ্রুত চিঠি চালাচালি শুরু করা ও টেলিসংলাপ অব্যাবহত রাখা এবং টিকফা ফোরামে বাংলাদেশের জোরালো আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।
বৈঠকে অংশ নেওয়া ট্রেড বিশেষজ্ঞ ড. এম এ রাজ্জাক বলেন, মার্কিন তুলা আমদানিতে ওয়্যারহাউস নির্মাণের সিদ্ধান্ত পুরোনো হলেও এবার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দ্রুততা আনা হচ্ছে। তিনি সতর্ক করেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে, তাহলে বাংলাদেশের গার্মেন্ট রপ্তানি হুমকির মুখে পড়বে। মার্কিন বাজারে বছরে ৮০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি হয়, সেখানে ১০-২৫ শতাংশ কমতি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে। পাশাপাশি যদি চীন তাদের মার্কিন রপ্তানি কমায়, তবে তারা ইউরোপীয় বাজারে প্রবেশ বাড়াতে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলার আমদানি তিন থেকে চার গুণ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে, যা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ভূমিকা রাখবে। এই উদ্যোগ সফল করতে হলে দ্রুত অবকাঠামো প্রস্তুত করা জরুরি।
নীতিগত দিক থেকে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানান পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, ‘সরকারকে দুই দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে চিঠি পাঠাতে বলেছি। সময়ক্ষেপণ না করে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করা দরকার।’
এদিকে শুল্ক ব্যবস্থাপনার দিকটি সামনে রেখে এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, এমন পণ্যের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, যেগুলো শুধু যুক্তরাষ্ট্র থেকেই আমদানি হয় এবং শুল্ক কমালে রাজস্ব ঘাটতি হবে না। তবে তাঁরা সতর্ক করে বলেন, একতরফাভাবে শুল্কছাড় দিলে অন্যান্য দেশও একই দাবি তুলতে পারে। এ জন্য হিসাব-নিকাশ করে কৌশল নির্ধারণ করা হচ্ছে।
মাসরুর রিয়াজ বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন, ‘শুধু অনুমানভিত্তিক ছাড় দিলে হবে না, যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা কী—তা জেনে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একতরফা ছাড় দিলে তা রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নীতিনির্ধারকদের বৈঠক
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত শুল্ক বিষয়ে আলোচনার জন্য গতকাল মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সরকারের শীর্ষস্থানীয় নীতিনির্ধারকেরা। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, যে মানদণ্ডে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নতুন শুল্কনীতি আরোপ করা হয়েছে, তা সঠিক ও নৈতিক হয়নি। কারণ, বাংলাদেশে মার্কিন পণ্যের শুল্কহার গড়ে ৫ শতাংশের বেশি নয়। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।
গুলশান ২-এ মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের বাসভবনে ‘ব্রেকফাস্ট অন ট্রেড ব্যারিয়ার্স’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, শিল্প উপদেষ্টা মো. আদিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সভায় দুটি বিষয়ে আলোচনা করেছেন উপদেষ্টারা। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং কিছু মার্কিন পণ্যে শুল্ক কমানো, ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ সহজ করা। একই সঙ্গে মার্কিন শুল্কনীতি ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান ট্রাম্প প্রশাসনকে অবহিত করতেও অনুরোধ জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কভার লাঘবে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষ বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত বুধবার মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসার পর পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের করণীয় ঠিক করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর এ নির্দেশনা পেয়ে গত চার দিনের চেষ্টায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মহলের যৌথ অংশগ্রহণে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠক থেকে পাওয়া সুপারিশের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায় সরকার।
প্রেস সচিব আজ জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি দেবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিঠি দুটি পাঠানো হবে। দুটি চিঠির একটি পাঠাবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠিটি দেবেন। অন্য চিঠিটি বাণিজ্য উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন পাঠাবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরে (ইউএসটিআর)। এই চিঠিতে বাংলাদেশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি সহজ করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে ও নেবে এবং বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহজ করার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তার কৌশলগুলো কী হবে, তা তুলে ধরা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত
আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ে সোয়া ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা ইউএসএর সঙ্গে বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ লক্ষ্যে দেশটি থেকে বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় পণ্য এবং সেবা—উভয় ধরনের আমদানিই বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে বাংলাদেশের আরোপ করা শুল্কহার যৌক্তিকীকরণের মাধ্যমে কমিয়ে আনা হবে। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বিদ্যমান ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ বাধাগুলোও দূর করার দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আশা করছি, এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান, বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমান, বিনিয়োগ বোর্ডের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি রুবানা হক, ফারুক হাসান, ব্যবসায়ী তপন চৌধুরী, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, বিকেএমইএর সভাপতি মো. হাতেমসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ নিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, মার্কিন শুল্কনীতি ইস্যুতে দেশটির বাজারে যাতে কোনোভাবেই বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগী সক্ষমতা না কমে, সরকারি নীতি-পদক্ষেপে সেদিকে জোরালো নজর থাকবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানান, ‘ধারাবাহিক বৈঠকের পর সবার সুপারিশ পর্যালোচনা করে আমরা সংকট উত্তরণের একটা সহায়ক পদক্ষেপে পৌঁছেছি। আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি, যা আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সবার কাছে স্পষ্ট হবে।’
খলিলুর রহমান বলেন, ‘মার্কিন নতুন শুল্কনীতি ইস্যুটির যথাসম্ভব একটি সন্তোষজনক সমাধানে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। এর জন্য করণীয় সবকিছুই করা হবে।’
বৈঠক শেষে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সরকারের উদ্যোগে তাঁরা সন্তুষ্ট। সরকার যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতির পরিপ্রেক্ষিতে যে কর্মকৌশল নিচ্ছে, তাতে একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে বলে আশা করছেন তাঁরা। আজকের বৈঠকের আলোচনায় যার একটি পথনির্দেশনা পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা, যেটি ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর।
সরকারকে ৬ পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ
এদিকে গতকাল সকালে বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে আন্তমন্ত্রণালয়ের আরেকটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রপ্তানিকারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠক থেকে পাওয়া সুপারিশের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন শুল্কনীতি কার্যকরে ন্যূনতম ৩ থেকে ৬ মাস অতিরিক্ত সময় চাওয়া।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সরকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউএসটিআরকে যে দুটি চিঠি পাঠাতে যাচ্ছে, সেখানে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে উঠে আসবে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির গতি বাড়াতে বাংলাদেশে মার্কিন রপ্তানিকারকদের জন্য দ্রুত ওয়্যারহাউস প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব রাখারও সুপারিশ করা হয় বৈঠকে। বাকি পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে তুলাসহ অন্যান্য পণ্য ও সেবার আমদানি বৃদ্ধি, বাংলাদেশে বিদ্যমান শুল্কহার যৌক্তিকীকরণ, মার্কিন প্রশাসনে দ্রুত চিঠি চালাচালি শুরু করা ও টেলিসংলাপ অব্যাবহত রাখা এবং টিকফা ফোরামে বাংলাদেশের জোরালো আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।
বৈঠকে অংশ নেওয়া ট্রেড বিশেষজ্ঞ ড. এম এ রাজ্জাক বলেন, মার্কিন তুলা আমদানিতে ওয়্যারহাউস নির্মাণের সিদ্ধান্ত পুরোনো হলেও এবার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দ্রুততা আনা হচ্ছে। তিনি সতর্ক করেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে, তাহলে বাংলাদেশের গার্মেন্ট রপ্তানি হুমকির মুখে পড়বে। মার্কিন বাজারে বছরে ৮০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি হয়, সেখানে ১০-২৫ শতাংশ কমতি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে। পাশাপাশি যদি চীন তাদের মার্কিন রপ্তানি কমায়, তবে তারা ইউরোপীয় বাজারে প্রবেশ বাড়াতে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলার আমদানি তিন থেকে চার গুণ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে, যা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ভূমিকা রাখবে। এই উদ্যোগ সফল করতে হলে দ্রুত অবকাঠামো প্রস্তুত করা জরুরি।
নীতিগত দিক থেকে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানান পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, ‘সরকারকে দুই দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে চিঠি পাঠাতে বলেছি। সময়ক্ষেপণ না করে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করা দরকার।’
এদিকে শুল্ক ব্যবস্থাপনার দিকটি সামনে রেখে এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, এমন পণ্যের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, যেগুলো শুধু যুক্তরাষ্ট্র থেকেই আমদানি হয় এবং শুল্ক কমালে রাজস্ব ঘাটতি হবে না। তবে তাঁরা সতর্ক করে বলেন, একতরফাভাবে শুল্কছাড় দিলে অন্যান্য দেশও একই দাবি তুলতে পারে। এ জন্য হিসাব-নিকাশ করে কৌশল নির্ধারণ করা হচ্ছে।
মাসরুর রিয়াজ বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন, ‘শুধু অনুমানভিত্তিক ছাড় দিলে হবে না, যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা কী—তা জেনে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একতরফা ছাড় দিলে তা রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নীতিনির্ধারকদের বৈঠক
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত শুল্ক বিষয়ে আলোচনার জন্য গতকাল মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সরকারের শীর্ষস্থানীয় নীতিনির্ধারকেরা। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, যে মানদণ্ডে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নতুন শুল্কনীতি আরোপ করা হয়েছে, তা সঠিক ও নৈতিক হয়নি। কারণ, বাংলাদেশে মার্কিন পণ্যের শুল্কহার গড়ে ৫ শতাংশের বেশি নয়। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।
গুলশান ২-এ মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের বাসভবনে ‘ব্রেকফাস্ট অন ট্রেড ব্যারিয়ার্স’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, শিল্প উপদেষ্টা মো. আদিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সভায় দুটি বিষয়ে আলোচনা করেছেন উপদেষ্টারা। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং কিছু মার্কিন পণ্যে শুল্ক কমানো, ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ সহজ করা। একই সঙ্গে মার্কিন শুল্কনীতি ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান ট্রাম্প প্রশাসনকে অবহিত করতেও অনুরোধ জানানো হয়।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
৫ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
১০ ঘণ্টা আগে
সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে...
১১ ঘণ্টা আগে
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
দলগুলোর পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সরকারের অনুরোধের এক দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অন্য দলগুলোর প্রতি আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল মুখে মুখে। কিন্তু এ আহ্বান বাস্তবায়নে গতকাল পর্যন্ত কার্যত কোনো উদ্যোগ নেয়নি দলটি।
জামায়াত তবু আহ্বান জানিয়েছে। বিএনপি নিজের দিক থেকে কোনো কথা বলেনি, উদ্যোগও নেয়নি। বরং সরকারের আহ্বানে দলটি সাড়া দিতে চাইছে না বলে দলটির সূত্র জানিয়েছে। আর সংকট সমাধানে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণতন্ত্র মঞ্চ।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সংকট কাটাতে গত সোমবার জরুরি বৈঠকে বসে উপদেষ্টা পরিষদ। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, এ নিয়ে সরকারের দিক থেকে আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে না। এখন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সমঝোতায় আসুক। এ জন্য দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। এর মধ্যে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে সরকার নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত দেবে।
জুলাই সনদ ইস্যুতে গত মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আলোচনা করছে। সেখানে অনেক ইস্যুতে একমত হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে বিএনপিসহ বেশ কিছু দলের আপত্তি ছিল। ৩১ আগস্ট শেষ হওয়া দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, নির্বাচনে বিজয়ী হলে আপত্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে দলগুলো। তবে সে সময় গণভোট নিয়ে আলোচনা হয়নি। বাস্তবায়ন প্রশ্নে তৃতীয় ধাপে পাঁচ দিন সংলাপ করে দলগুলো। সেখানে গণভোটের বিষয়ে একমত হয় তারা। তবে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলো সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
গত ৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সংলাপে জানানো হয়, দলগুলোর মত ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের কাছে কমিশন বাস্তবায়নের উপায় জমা দেবে; যেখানে বিশেষজ্ঞরা গণভোটে আপত্তি না রাখার বিষয়ে মত দেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, জনগণ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, সেখানে আপত্তির বিধান রাখা যুক্তিযুক্ত না। ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিশন। এরপর শুরু হয় নতুন বিতর্ক। ছয় মাসে যেখানে দলগুলো একমত হতে পারেনি, সেখানে এক সপ্তাহে দলগুলো আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ হবে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
আলোচনার উদ্যোগ নেবে না বিএনপি
আলোচনা করে সমঝোতায় আসতে সরকারের অনুরোধে বিএনপি কোনো উদ্যোগ নেবে না বলে দলটির একাধিক সূত্র গতকাল জানিয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলছেন, বাস্তবায়ন আদেশে তাদের ওপর অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এখন আলোচনার নামে দায়ভার চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
সরকারের এমন অনুরোধে তাদের দল সাড়া দেবে না। এ জন্য আলোচনায় বসার জন্য কোনো দলকে ডাকবে না বিএনপি। কেউ আলোচনার জন্য দাওয়াত দিলে বিবেচনা করা হবে কি না, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে বসার বিষয়ে যে অনুরোধ করেছে, এ ব্যাপারে আমরা কোনো আলোচনা করতে পারিনি। সোমবার দলের প্রার্থী মনোনয়ন এবং প্রেস ব্রিফিং নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আলোচনার সুযোগ হয়নি। আলোচনা করে তারপর জানানো হবে।’
আহ্বান জানিয়েছে জামায়াত
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত জামায়াতে ইসলামী। যদিও সরকারের আহ্বানের আগেই আলোচনার জন্য অন্য দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। তবে দলটির অনুরোধে গতকাল পর্যন্ত কোনো দল সাড়া দেয়নি বলে জানা গেছে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ গতকাল বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছে একসঙ্গে বসার। সরকারের আগেই আমরা আহ্বান করেছি। এখনো কারও সাড়া পাইনি আমরা, হয়তো সামনে পাব।’
এর আগে গত রোববার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে কোনো ঝগড়ায় লিপ্ত হতে চায় না। যা-ই করছেন, এবার বন্ধ করুন। আসুন, আমরা একসঙ্গে বসি। দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি।’
আর গতকাল মঙ্গলবার বিদেশ সফর শেষে ঢাকায় ফিরে বিমানবন্দরে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘সরকার অনুরোধ করেছে, এক সপ্তাহ সময়ের ভেতরে রাজনৈতিক দলগুলো বসে যদি একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে, সরকারের জন্য এটা ভালো। আমরাই সবার আগে আমাদের নায়েবে আমিরের মাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছি যে আসুন, আমরা খোলামেলা আলোচনা করে একটা সমাধানে পৌঁছাই দেশ ও জাতির স্বার্থে। আমরা আশা করি, অন্যরা আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দেবেন।’
সরকারের কোর্টে বল ঠেলছে এনসিপি
রাজনৈতিক দলগুলোর কোর্টে বল ঠেলে না দিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারির উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে এনসিপি। তবে প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনায় যেতে তাঁরা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। যদিও এখন পর্যন্ত এনসিপি কোনো রাজনৈতিক দলকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয়নি বলে জানা গেছে। আবার এনসিপিকেও কেউ প্রস্তাব দেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপ চলছে। বাস্তবায়ন আদেশ জারির জন্য সরকারের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপ প্রয়োগ করছে এনসিপি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকার বা ঐকমত্য কমিশনকে রেফারি করেছে অনেকে। কিন্তু আমরা দেখি, সরকার ও ঐকমত্য কমিশন সংস্কার বাস্তবায়নের ব্যাপারে রেফারি না। তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে সংস্কারের পক্ষে। যদি তারা সংস্কারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা তাদের ম্যান্ডেট থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে। সরকারের এখন দায়িত্ব হলো ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেই প্রস্তাবে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘জুলাই সনদের বিষয়ে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তবে প্রয়োজনে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত আছি।’
গণতন্ত্র মঞ্চের ভাবনা
জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্য ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারই দায়ী বলে জানিয়েছে ৬টি রাজনৈতিক দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। মঞ্চের নেতারা বলেছেন, এই সংকট সমাধানের দায়িত্বও সরকারকেই নিতে হবে। একই সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চ দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টায় ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘এই সংকট সমাধানের জন্য সরকারের যে উদ্যোগ নেওয়া দরকার ছিল, তা না নিয়ে সরকার অনেকটা মান-অভিমানের মতো অবস্থান নিয়েছে। সরকারের এমন মনোভাব মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সংস্কার কি হবে না? সংস্কার না হলে নির্বাচন কি হবে? যাদের আমরা পরাজিত করেছি, তারা আবার ফিরে আসবে?’
আর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমদুর রহমান মান্না এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারে না। সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারকে রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করে সমাধানের পথ তৈরি করতে হবে।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
দলগুলোর পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সরকারের অনুরোধের এক দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অন্য দলগুলোর প্রতি আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল মুখে মুখে। কিন্তু এ আহ্বান বাস্তবায়নে গতকাল পর্যন্ত কার্যত কোনো উদ্যোগ নেয়নি দলটি।
জামায়াত তবু আহ্বান জানিয়েছে। বিএনপি নিজের দিক থেকে কোনো কথা বলেনি, উদ্যোগও নেয়নি। বরং সরকারের আহ্বানে দলটি সাড়া দিতে চাইছে না বলে দলটির সূত্র জানিয়েছে। আর সংকট সমাধানে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণতন্ত্র মঞ্চ।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সংকট কাটাতে গত সোমবার জরুরি বৈঠকে বসে উপদেষ্টা পরিষদ। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, এ নিয়ে সরকারের দিক থেকে আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে না। এখন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সমঝোতায় আসুক। এ জন্য দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। এর মধ্যে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে সরকার নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত দেবে।
জুলাই সনদ ইস্যুতে গত মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আলোচনা করছে। সেখানে অনেক ইস্যুতে একমত হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে বিএনপিসহ বেশ কিছু দলের আপত্তি ছিল। ৩১ আগস্ট শেষ হওয়া দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, নির্বাচনে বিজয়ী হলে আপত্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে দলগুলো। তবে সে সময় গণভোট নিয়ে আলোচনা হয়নি। বাস্তবায়ন প্রশ্নে তৃতীয় ধাপে পাঁচ দিন সংলাপ করে দলগুলো। সেখানে গণভোটের বিষয়ে একমত হয় তারা। তবে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলো সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
গত ৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সংলাপে জানানো হয়, দলগুলোর মত ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের কাছে কমিশন বাস্তবায়নের উপায় জমা দেবে; যেখানে বিশেষজ্ঞরা গণভোটে আপত্তি না রাখার বিষয়ে মত দেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, জনগণ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, সেখানে আপত্তির বিধান রাখা যুক্তিযুক্ত না। ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিশন। এরপর শুরু হয় নতুন বিতর্ক। ছয় মাসে যেখানে দলগুলো একমত হতে পারেনি, সেখানে এক সপ্তাহে দলগুলো আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ হবে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
আলোচনার উদ্যোগ নেবে না বিএনপি
আলোচনা করে সমঝোতায় আসতে সরকারের অনুরোধে বিএনপি কোনো উদ্যোগ নেবে না বলে দলটির একাধিক সূত্র গতকাল জানিয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলছেন, বাস্তবায়ন আদেশে তাদের ওপর অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এখন আলোচনার নামে দায়ভার চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
সরকারের এমন অনুরোধে তাদের দল সাড়া দেবে না। এ জন্য আলোচনায় বসার জন্য কোনো দলকে ডাকবে না বিএনপি। কেউ আলোচনার জন্য দাওয়াত দিলে বিবেচনা করা হবে কি না, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে বসার বিষয়ে যে অনুরোধ করেছে, এ ব্যাপারে আমরা কোনো আলোচনা করতে পারিনি। সোমবার দলের প্রার্থী মনোনয়ন এবং প্রেস ব্রিফিং নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আলোচনার সুযোগ হয়নি। আলোচনা করে তারপর জানানো হবে।’
আহ্বান জানিয়েছে জামায়াত
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত জামায়াতে ইসলামী। যদিও সরকারের আহ্বানের আগেই আলোচনার জন্য অন্য দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। তবে দলটির অনুরোধে গতকাল পর্যন্ত কোনো দল সাড়া দেয়নি বলে জানা গেছে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ গতকাল বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছে একসঙ্গে বসার। সরকারের আগেই আমরা আহ্বান করেছি। এখনো কারও সাড়া পাইনি আমরা, হয়তো সামনে পাব।’
এর আগে গত রোববার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে কোনো ঝগড়ায় লিপ্ত হতে চায় না। যা-ই করছেন, এবার বন্ধ করুন। আসুন, আমরা একসঙ্গে বসি। দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি।’
আর গতকাল মঙ্গলবার বিদেশ সফর শেষে ঢাকায় ফিরে বিমানবন্দরে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘সরকার অনুরোধ করেছে, এক সপ্তাহ সময়ের ভেতরে রাজনৈতিক দলগুলো বসে যদি একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে, সরকারের জন্য এটা ভালো। আমরাই সবার আগে আমাদের নায়েবে আমিরের মাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছি যে আসুন, আমরা খোলামেলা আলোচনা করে একটা সমাধানে পৌঁছাই দেশ ও জাতির স্বার্থে। আমরা আশা করি, অন্যরা আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দেবেন।’
সরকারের কোর্টে বল ঠেলছে এনসিপি
রাজনৈতিক দলগুলোর কোর্টে বল ঠেলে না দিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারির উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে এনসিপি। তবে প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনায় যেতে তাঁরা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। যদিও এখন পর্যন্ত এনসিপি কোনো রাজনৈতিক দলকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয়নি বলে জানা গেছে। আবার এনসিপিকেও কেউ প্রস্তাব দেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপ চলছে। বাস্তবায়ন আদেশ জারির জন্য সরকারের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপ প্রয়োগ করছে এনসিপি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকার বা ঐকমত্য কমিশনকে রেফারি করেছে অনেকে। কিন্তু আমরা দেখি, সরকার ও ঐকমত্য কমিশন সংস্কার বাস্তবায়নের ব্যাপারে রেফারি না। তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে সংস্কারের পক্ষে। যদি তারা সংস্কারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা তাদের ম্যান্ডেট থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে। সরকারের এখন দায়িত্ব হলো ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেই প্রস্তাবে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘জুলাই সনদের বিষয়ে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তবে প্রয়োজনে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত আছি।’
গণতন্ত্র মঞ্চের ভাবনা
জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্য ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারই দায়ী বলে জানিয়েছে ৬টি রাজনৈতিক দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। মঞ্চের নেতারা বলেছেন, এই সংকট সমাধানের দায়িত্বও সরকারকেই নিতে হবে। একই সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চ দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টায় ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘এই সংকট সমাধানের জন্য সরকারের যে উদ্যোগ নেওয়া দরকার ছিল, তা না নিয়ে সরকার অনেকটা মান-অভিমানের মতো অবস্থান নিয়েছে। সরকারের এমন মনোভাব মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সংস্কার কি হবে না? সংস্কার না হলে নির্বাচন কি হবে? যাদের আমরা পরাজিত করেছি, তারা আবার ফিরে আসবে?’
আর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমদুর রহমান মান্না এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারে না। সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারকে রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করে সমাধানের পথ তৈরি করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কভার লাঘবে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত
০৬ এপ্রিল ২০২৫
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
১০ ঘণ্টা আগে
সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে...
১১ ঘণ্টা আগে
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটি জানানো হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।
সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সচিব কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
সচিব কমিটি মনে করে, প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল। এত অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না এবং এতে বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশেই প্রস্তাবিত নিয়োগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলে একই শিক্ষককে ২০টির বেশি বিদ্যালয়ে যুগপৎভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর ফলে তাঁর পক্ষে কর্মঘণ্টা ম্যানেজ করা সম্ভব হবে না বলে সচিব কমিটি মনে করে।
পরে অর্থের সংস্থান সাপেক্ষে সব স্কুলে এ রকম নতুন বিষয়ের শিক্ষকের পদ সৃজন ও সেসব পদে নিয়োগদানের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে কমিটি অভিমত ব্যক্ত করেছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটি জানানো হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।
সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সচিব কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
সচিব কমিটি মনে করে, প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল। এত অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না এবং এতে বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশেই প্রস্তাবিত নিয়োগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলে একই শিক্ষককে ২০টির বেশি বিদ্যালয়ে যুগপৎভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর ফলে তাঁর পক্ষে কর্মঘণ্টা ম্যানেজ করা সম্ভব হবে না বলে সচিব কমিটি মনে করে।
পরে অর্থের সংস্থান সাপেক্ষে সব স্কুলে এ রকম নতুন বিষয়ের শিক্ষকের পদ সৃজন ও সেসব পদে নিয়োগদানের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে কমিটি অভিমত ব্যক্ত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কভার লাঘবে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত
০৬ এপ্রিল ২০২৫
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
৫ ঘণ্টা আগে
সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে...
১১ ঘণ্টা আগে
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে ফুল কোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় তাঁদের পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদোন্নতির জন্য প্যানেলে ছিলেন– অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদের জন্য ৩৪৫ জন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ এবং সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন। সব মিলিয়ে পদোন্নতির প্যানেলে ১ হাজার ১০৩ জন বিচারিক কর্মকর্তার নাম থাকলেও নানা কারণে বেশ কয়েকজনের নাম অনুমোদন হয়নি।
২০২৬ সালের সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডারও ফুল কোর্ট সভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তবে সরকারি ক্যালেন্ডার এখনো প্রকাশিত না হওয়ায় তা অনুমোদিত হয়নি।
সম্প্রতি ১ হাজার ১০৩ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পদোন্নতির প্যানেলে ছিল কয়েকজন বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নাম, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান।
বিচারকদের পদোন্নতি যেভাবে হয়
সব মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির জন্য ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) থাকে। ওই কমিটি পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এক দিনেই প্যানেলের সবার পদোন্নতির জিও জারি করা হয়।
তবে বিচারকদের ক্ষেত্রে প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। বাছাই কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় ওঠে। সভায় অনুমোদন পাওয়ার পর তা আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে ওই প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকে এবং পদ খালি হওয়ার পর সময়ে সময়ে জিও জারি করা হয়।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী জজদের এই পদে চার বছর দায়িত্ব পালনের শর্ত পূরণ করতে হয়। সিনিয়র সহকারী জজদের যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর এবং অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছরের শর্ত পূরণ করতে হয়। তবে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয় না। অনেকেই বছরের পর বছর প্যানেলভুক্ত হয়ে থাকেন।

সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে ফুল কোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় তাঁদের পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদোন্নতির জন্য প্যানেলে ছিলেন– অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদের জন্য ৩৪৫ জন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ এবং সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন। সব মিলিয়ে পদোন্নতির প্যানেলে ১ হাজার ১০৩ জন বিচারিক কর্মকর্তার নাম থাকলেও নানা কারণে বেশ কয়েকজনের নাম অনুমোদন হয়নি।
২০২৬ সালের সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডারও ফুল কোর্ট সভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তবে সরকারি ক্যালেন্ডার এখনো প্রকাশিত না হওয়ায় তা অনুমোদিত হয়নি।
সম্প্রতি ১ হাজার ১০৩ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পদোন্নতির প্যানেলে ছিল কয়েকজন বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নাম, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান।
বিচারকদের পদোন্নতি যেভাবে হয়
সব মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির জন্য ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) থাকে। ওই কমিটি পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এক দিনেই প্যানেলের সবার পদোন্নতির জিও জারি করা হয়।
তবে বিচারকদের ক্ষেত্রে প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। বাছাই কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় ওঠে। সভায় অনুমোদন পাওয়ার পর তা আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে ওই প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকে এবং পদ খালি হওয়ার পর সময়ে সময়ে জিও জারি করা হয়।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী জজদের এই পদে চার বছর দায়িত্ব পালনের শর্ত পূরণ করতে হয়। সিনিয়র সহকারী জজদের যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর এবং অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছরের শর্ত পূরণ করতে হয়। তবে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয় না। অনেকেই বছরের পর বছর প্যানেলভুক্ত হয়ে থাকেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কভার লাঘবে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত
০৬ এপ্রিল ২০২৫
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
৫ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
১০ ঘণ্টা আগে
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারীর স্ত্রী নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে ৪৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও ৪৩ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ মঙ্গলবার দুদকের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
দুদক মহাপরিচালক বলেন, অভিযুক্ত নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সন্দেহজনক লেনদেনের পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।
এ ছাড়া ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত নুরজাহান বেগমের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি হিসাবে ৪৩ কোটি ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৮০৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করেছে দুদক।
এ তথ্য আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যাচাই করা হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে এর আগেও অবৈধ সম্পদ অর্জন, ফেনী ও ঢাকায় নামে-বেনামে জমি ও ভবন ক্রয় এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে একাধিক তদন্ত চলছে।
সূত্রটি আরও জানায়, দুদকে পাঠানো সম্পদ বিবরণীতে ঘোষিত তথ্য ও বাস্তব সম্পদের মধ্যে বিশাল অমিল পাওয়া যায়। এর ধারাবাহিকতায় নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ফেনী-২ আসন থেকে টানা তিনবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নিজাম উদ্দিন হাজারী। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দখলদারত্বের অভিযোগ রয়েছে।

ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারীর স্ত্রী নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে ৪৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও ৪৩ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ মঙ্গলবার দুদকের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
দুদক মহাপরিচালক বলেন, অভিযুক্ত নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সন্দেহজনক লেনদেনের পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।
এ ছাড়া ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত নুরজাহান বেগমের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি হিসাবে ৪৩ কোটি ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৮০৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করেছে দুদক।
এ তথ্য আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যাচাই করা হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে এর আগেও অবৈধ সম্পদ অর্জন, ফেনী ও ঢাকায় নামে-বেনামে জমি ও ভবন ক্রয় এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে একাধিক তদন্ত চলছে।
সূত্রটি আরও জানায়, দুদকে পাঠানো সম্পদ বিবরণীতে ঘোষিত তথ্য ও বাস্তব সম্পদের মধ্যে বিশাল অমিল পাওয়া যায়। এর ধারাবাহিকতায় নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ফেনী-২ আসন থেকে টানা তিনবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নিজাম উদ্দিন হাজারী। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দখলদারত্বের অভিযোগ রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কভার লাঘবে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত
০৬ এপ্রিল ২০২৫
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
৫ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
১০ ঘণ্টা আগে
সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে...
১১ ঘণ্টা আগে