Ajker Patrika

স্বৈরাচারদের নিয়ে সমিতি হলে শেখ হাসিনা সভাপতি হতেন: অ্যাটর্নি জেনারেল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, যদি স্বৈরাচারদের কোনো সমিতি করা হয়, তাহলে শেখ হাসিনা সমিতির সভাপতি হতে পারতেন। আজ রোববার (৩ আগস্ট) জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য শুরুর আগে এ কথা বলেন তিনি।

এদিন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। মামলার বিচার কার্যক্রম আজ সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে ৩৬ দিনের আন্দোলনে ৩০ হাজার মানুষকে পঙ্গু করা করা হয়েছে, প্রায় ২ হাজারের মতো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তারপরও তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা হয়নি। পৃথিবীর ইতিহাসে আমরা দেখেছি, অনেক স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে। বাংলাদেশে দেখেছি, স্বৈরাচার শুধু পালিয়েই যায়নি, তার ৩০০ সংসদ সদস্য পালিয়ে গেছে, তার কেবিনেট পালিয়েছে, তার শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদেরা পালিয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে শেখ হাসিনার মতো এ রকম স্বৈরাচারের জন্ম হয়নি। যদি স্বৈরাচারদের কোনো সমিতি করা হতো, তাহলে সে (শেখ হাসিনা) সভাপতি হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘হিটলারের গোয়েবলস যদি বেঁচে থাকতেন, আজ মিথ্যা কথা শেখার জন্য, মিথ্যা কথা বলার জন্য, মিথ্যা সংস্কৃতি চালুর জন্য পিএইচডি করার প্রয়োজন—সেই পিএইচডি করার জন্য তিনি এই স্বৈরাচারের কাছে আসতেন। সেই স্বৈরাচারের নাম শেখ হাসিনা ওয়াজেদ। যিনি আজ একজন আসামি ছাড়া আর কিছুই নন।’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমরা ইতিহাসের পাতা খুললে দেখতে পাই, বিশ্বের দেশে দেশে স্বৈরশাসকের জন্ম হয়েছে। আমরা এডলফ হিটলারের নাম শুনেছি, মুসোলিনির নাম শুনেছি, ফান্সিসকো ফ্রান্সের নাম শুনেছি, মার্কোসের নাম শুনেছি। এ সমস্ত ফ্যাসিস্ট ও হিটলারের, স্বৈরশাসকদের অনেকেই বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ব্রিটিশ সিংহাসনে বসেছিলেন, শাসকের আসনে বসেছিলেন অলিভার ক্রমওয়েল। গণহত্যার দায়ে অলিভার ক্রমওয়েলকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। স্বাভাবিক মৃত্যুর পরে তার পচা-গলা লাশ তুলে এনে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে জনসম্মুখে দেখানো হয়েছিল, গণহত্যার, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কী হওয়া উচিত। এরপর পচা-গলা দেহটাকে কবরে রেখে মাথার খুলিতে রড ঢুকিয়ে ২০ বছর ওয়েস্ট মিনিস্টারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে ক্যামব্রিজের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে সেই লাশ সমাধিত করা হয়েছিল।’

তিনি ট্রাইব্যুনালে বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে ইতিহাসের যে নির্মম হত্যাযজ্ঞ ঘটেছে, তার বিচার চাইতে এসে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অবশ্যই আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। সেটি চাই আইনি পরিকাঠামোর মধ্যে। আমরা সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করলে আপনারা ন্যায়বিচার করবেন। গত ১৭ বছরে গুম, খুন, পলিটিক্যাল পারসিকিউশনের কালচার চালু হয়েছিল। আজকে কথা উঠেছে, কে কার চেয়ে বড় খুনি ছিলেন?’

আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘৭২-৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী দুঃশাসন আমরা দেখেছি। তখন প্রায় ৩০ হাজার তরতাজা যুবককে হত্যা করা হয়েছিল একটি রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করার জন্য। প্রশ্ন উঠেছে, ৭২-৭৫-এ যে শাসক ছিলেন, উনি বড় খুনি ছিলেন না ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত যিনি শাসক ছিলেন তিনি বড় খুনি ছিলেন? প্রশ্ন উঠেছে, ৭২-৭৫ পর্যন্ত খুনের ধরন এবং ৯-২৪-এর খুনের ধরন একই রকমের নাকি কোনো রকম রিফাইনিং স্টেজে আমাদের সামনে এসেছে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের মানুষের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, আগামীর প্রজন্মের বসবাসের জন্য এমন একটি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা দরকার, যাতে খুনের রাজনীতি বন্ধ হবে।’

অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ‘গত ২৪ বছরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে যে রাজনীতি করা হয়েছে, সেখানে একটা ধারণা দেওয়া হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে খুন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গুম করা, দিনের ভোট রাতে করা, চাঁদাবাজি করা, লুটেরাদের প্রতিষ্ঠা করা, বিদেশে দেশের টাকা পাচার করে বেগমপাড়ায় বাড়ি বানানো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রাক-প্রস্তুতি সভার নির্দেশ ‎ইসির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রাক-প্রস্তুতি সভা আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ ‎সোমবার ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের সই করা এ-সংক্রান্ত চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ইসির সব আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের এর মধ্যে এ নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, ইসি সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে গত ১৬ অক্টোবর মাসিক সমন্বয় সভায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারের ৩১টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে প্রাক-প্রস্তুতি সভা করেছে ইসি।

এর ধারাবাহিকতায় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভোটের করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা জানাতে তাঁদের সঙ্গেও নির্বাচনী প্রস্তুতিমূলক সভায় বসবে ইসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ২৩
ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে তিন বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

এ-সংক্রান্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব।

আব্দুল ওয়াহাব বলেন, রিটের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

গত ১৪ আগস্ট ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে তিন বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। পরে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন লিয়াকত আলী নামের এক ব্যক্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো কিছু যাচাই না করে শেয়ার করবেন না: সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। ফাইল ছবি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। ফাইল ছবি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু দেখলেই তা বিশ্বাস করবেন না, শেয়ার করবেন না। আগে সেই তথ্যের সঠিকতা যাচাই করবেন। তথ্য সঠিক হলে তারপর তা শেয়ার করবেন।’

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারার আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) জাতীয় নির্বাচনে আনসার-ভিডিপির ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা মহড়া ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সিইসি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ বর্তমানে এক ‘সংকটময় অবস্থায়’ দাঁড়িয়ে আছে এবং আগামী সংসদ নির্বাচন দেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ ও গণতন্ত্রের পথচলা নির্ধারণ করবে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, তিনি তাঁর দায়িত্বকে গতানুগতিক ‘রুটিন কাজ’ বা ‘চাকরি’ হিসেবে না দেখে এটিকে ‘মিশন’ এবং ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নিয়ে কাজ করছেন।

সিইসি বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য কী বাংলাদেশ রেখে যাব, কোন ধরনের বাংলাদেশ রেখে যাব, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রেখে যাব কি না, কীভাবে রেখে যাব—সেই চিন্তা আমাকে সারাক্ষণ ভাবায়।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে গতানুগতিক ধারায় কাজ করলে চলবে না, বরং ‘দায়িত্বসীমার বাইরে গিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’

সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করে সিইসি বলেন, ‘ভোটার, রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সবাই মিলে আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেব।’

সিইসি জানান, এবারের নির্বাচনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে প্রায় ১০ লাখ লোক যুক্ত থাকবে। তাঁদের সুবিধার্থে নির্বাচন কমিশন এবার একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। সাধারণত যারা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকেন, তারা নিজেরা ভোট দিতে পারেন না। কিন্তু এবার সেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যেন সবাই ভোট দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ‘আইনি হেফাজতে যাঁরা কারাগারে রয়েছেন, তাঁরা এ দেশের নাগরিক। তাঁরাও যাতে ভোট দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এ ছাড়া প্রবাসীরা এবার ভোট দিতে পারবেন।’

ভোটকেন্দ্রের শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে আনসার সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করে সিইসি তাঁদের ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মূল শক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের ওপর আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব এসে পড়েছে।’

আনসার প্লাটুন সদস্যদের প্রশিক্ষণকে ‘স্বস্তির’ উল্লেখ করে সিইসি দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশাল নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে এআইসহ যেকোনো অপপ্রচার রোধে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব জানান, নির্বাচনে প্রায় পাঁচ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে। সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের প্রস্তুতি হিসেবে গত এক বছরে বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে ১ লাখ ৪৫ হাজার নতুন সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আগামী নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে দেশ কোন দিকে যাবে: সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩৭
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ‘সংকটময় অবস্থায়’ দাঁড়িয়ে আছে উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, দেশ কোন দিকে যাবে, গণতন্ত্রের পথে কীভাবে হাঁটবে, সেটা নির্ভর করছে আগামী সংসদ নির্বাচনের ওপর। নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গতিপথ নির্ধারণ হবে।

আজ সোমবার জাতীয় নির্বাচনে আনসার-ভিডিপির ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা মহড়া ও ২০২৫-২৬ সালের চতুর্থ ধাপের আনসার প্লাটুন সদস্যদের মৌলিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ভাটারার আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।

সিইসি বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য কী বাংলাদেশ রেখে যাব, কোন ধরনের বাংলাদেশ রেখে যাব, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রেখে যাব কি না, কীভাবে রেখে যাব—সেই চিন্তা আমাকে সারাক্ষণ ভাবায়। এটাকে (সিইসির পদ) আমি ব্যক্তিগতভাবে রুটিন দায়িত্ব হিসেবে নিইনি, চাকরি হিসেবে নিইনি। এটাকে আমি মিশন হিসেবে নিয়েছি, চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আমি গতানুগতিক ধারার কাজে বিশ্বাসী নই। বিশেষ করে, এ ধরনের সংকটময় মুহূর্তে দেশ যখন রয়েছে—এখানে গতানুগতিক ধারায় কাজ করলে হবে না। দায়িত্বসীমার বাইরে গিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ভোটার, রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সবাই মিলে আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেব, যাতে দেশ এগিয়ে যায়, গণতন্ত্র এগিয়ে যায়।’

নির্বাচনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে প্রায় ১০ লাখ লোক যুক্ত থাকবে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘যাঁরা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকেন, তাঁরা নিজেরাই ভোট দিতে পারেন না। আমরা এবার উদ্যোগ নিয়েছি, যাঁরা ভোটের দায়িত্বে থাকবেন, তাঁরা যেন সবাই ভোট দিতে পারেন। আইনি হেফাজতে যাঁরা কারাগারে রয়েছেন, তাঁরা এ দেশের নাগরিক। তাঁরাও যাতে ভোট দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এ ছাড়া প্রবাসীরা এবার ভোট দিতে পারবেন।’

তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মূল শক্তি আনসার বাহিনীর সদস্যরা। তাঁরাই অধিকসংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। আগামী নির্বাচনে যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের ওপর আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব এসে পড়েছে। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের যে গতিপথ নির্ধারণ হবে, সেখানে আনসার বাহিনীর বিশাল একটি ভূমিকা থাকবে।

এ সময় ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় আনসার প্লাটুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ ‘স্বস্তির’ উল্লেখ করে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশাল নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে এআইসহ যেকোনো অপপ্রচার রোধে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান সিইসি।

এ ছাড়া নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা সব বাহিনীর সদস্যদের নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশিক্ষণ দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

আনসার সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু দেখলেই তা বিশ্বাস করবেন না, শেয়ার করবেন না। আগে সেই তথ্যের সঠিকতা যাচাই করবেন। তথ্য সঠিক হলে তারপর তা শেয়ার করবেন।’

এ সময় ইসির ম্যান্ডেট অনুযায়ী আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী কাজ করবে বলে জানান বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব।

তিনি জানান, নির্বাচনে প্রায় পাঁচ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে। বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো ও সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে গত এক বছরে ১ লাখ ৪৫ হাজার নতুন সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত