Ajker Patrika

ঢাকার রাস্তা ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত হবে কবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২: ০৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আধুনিক নগরসভ্যতায় পরিবহন মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যার ক্রমাগত বৃদ্ধি হয়ে উঠছে যানজট, বায়ুদূষণ, জ্বালানি অপচয় এবং মানসিক চাপের প্রধান কারণ। আর এ কারণেই আজ (২২ সেপ্টেম্বর) পালিত হচ্ছে ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস। মূলত ব্যক্তিগত বাড়ির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে, গণপরিবহন, বাইসাইকেল ব্যবহার কিংবা হাঁটার ওপর জোর দিতেই এই দিনটি পালিত হয়।

এটি কেবল একটি প্রতীকী দিবস নয়, বরং টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির একটি বিশ্বব্যাপী আন্দোলন। বিশেষ করে ঢাকার মতো শহরে, যেখানে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলের ভিড়ের কারণে প্রায় অচল হয়ে পড়ে প্রায় প্রতিটি ছোট রাস্তা, সেখানে এই দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম।

ইদানীং বিষয়টি নিয়ে বেশি আলোচনা শোনা গেলেও এই দিবস কিন্তু খুব একটা নতুন নয়। বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবসের ইতিহাস প্রায় পাঁচ দশক পুরোনো। ১৯৭৪ সালে সুইজারল্যান্ডে প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে গাড়িমুক্ত দিবস পালন করা হয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল তৎকালীন জ্বালানি তেল সংকট মোকাবিলা করা। পাশাপাশি শহরে যানবাহনের পরিবেশগত প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা, বিশেষ করে বায়ু ও শব্দদূষণ কতটা কমে যায় তা লক্ষ্য করা। পরবর্তীতে ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেনসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশ এই উদ্যোগে যোগ দেয়।

১৯৯৪ সাল থেকে ইউরোপের শহরগুলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে এ আন্দোলন ইউরোপ ছাড়িয়ে লাতিন আমেরিকা, এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে শতাধিক দেশের হাজারো শহরে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালিত হচ্ছে।

কেন প্রয়োজন গাড়িমুক্ত দিবস?

যানজট নিরসন: ঢাকা, দিল্লি, জাকার্তা, মুম্বাইয়ের মতো শহরে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ যানজটে আটকে থাকে। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বেশি হওয়াকেই এর প্রধান কারণ হিসেবে অভিহিত করা হয়। একেকটি গাড়ি সাধারণত ১-২ জন যাত্রী বহন করে, অথচ এটি বাসের সমান জায়গা দখল করে। এর ফলে রাস্তার সক্ষমতা হ্রাস পায়, অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় এবং মানুষের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। যানজট শুধু সময়ের অপচয় নয়, বরং মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য ও দৈনন্দিন জীবনেও গভীর প্রভাব ফেলে।

বায়ুদূষণ রোধ: জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত গাড়ি থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইডসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাস নির্গত হয়। এসব দূষিত গ্যাস মানুষের শ্বাসযন্ত্র, হৃৎপিণ্ড ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি বছর বায়ুদূষণজনিত রোগে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া দীর্ঘ মেয়াদে ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সমস্যাও বেড়ে যায় বাতাসের ক্ষতিকর পদার্থের কারণে।

জ্বালানি সাশ্রয়: বিশ্বের জ্বালানি সম্পদ সীমিত এবং তেলের দাম ক্রমশ বাড়ছে। ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমালে জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব, যা জাতীয় অর্থনীতিকেও লাভবান করবে।

পরিবেশবান্ধব শহর গঠন ও মানসিক স্বস্তি: গাড়ির সংখ্যা কমলে শুধু বায়ুদূষণ নয়, শব্দদূষণও কমে। এতে শহরকে হাঁটা ও বাইসাইকেল বান্ধব করে তোলা সহজ হয়। শান্ত, পরিচ্ছন্ন ও সবুজ শহর মানসিক স্বস্তি দেয় এবং কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি

বাংলাদেশ, বিশেষ করে ঢাকা, বিশ্বের অন্যতম যানজটপূর্ণ শহর। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার যানজটে বছরে প্রায় ৩ বিলিয়ন কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। বর্তমানে মোট নিবন্ধিত যানবাহনের প্রায় ৬৫ লাখের মধ্যে ৫৩ শতাংশই মোটরসাইকেল এবং ১৫ শতাংশ প্রাইভেটকার ও জিপ। প্রতিদিন গড়ে ৪০০টিরও বেশি নতুন গাড়ি ঢাকায় রাস্তায় নামছে, যার বড় অংশ ব্যক্তিগত গাড়ি। ফলে যানজট ও বায়ুদূষণ দিন দিন বেড়ে চলছে। ২০২২ সালে ঢাকায় সীমিত পরিসরে দিবসটি পালন করা হলেও নিয়মিত উদ্যোগের অভাবে এর কার্যকারিতা সীমিত।

সমাধান ও আন্তর্জাতিক উদাহরণ

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই সমস্যার সমাধানে গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি। আরামদায়ক, নিরাপদ ও সময়নিষ্ঠ গণপরিবহন যেমন মেট্রোরেল, ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট এবং এক্সপ্রেস বাস চালু করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি, সাইকেল লেন তৈরি এবং হাঁটার উপযোগী প্রশস্ত ফুটপাথ গড়ে তুলে মানুষকে হাঁটা ও সাইকেল ব্যবহারে উৎসাহিত করা যেতে পারে বলেও মনে করেন অনেকে।

প্যারিস, ফ্রান্স এবং বোগোটা, কলম্বিয়ার মতো শহরগুলো একাধিক দিন গাড়িমুক্ত থেকে প্রমাণ করেছে যে, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং সুপরিকল্পিত নীতিমালা থাকলে নগর পরিবহন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা সম্ভব।

সুফল ও সীমাবদ্ধতা

ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবসের শহরের বায়ুমান সাময়িকভাবে উন্নত করে। পাশাপাশি মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ির বিকল্প পরিবহন ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়। দীর্ঘ মেয়াদে শহরগুলো আরও টেকসই, বাসযোগ্য ও সবুজ হয়। তবে সমালোচকেরা এটিকে কেবল একটি প্রতীকী দিবস মনে করেন এবং বলেন যে একদিন গাড়ি কম চালালেই সমস্যার সমাধান হবে না। উন্নয়নশীল দেশে পর্যাপ্ত বিকল্প গণপরিবহন না থাকায় এর কার্যকারিতা সীমিত—তা ও অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

এই বছর বাংলাদেশে ‘সমাজ, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ সুরক্ষায় ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার সীমিত করি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ৬২টি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সম্মিলিত উদ্যোগে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গণতন্ত্রের মূল কথা হলো জনগণ ভোট দিতে পারবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মহৎ উদ্দেশ্য ছিল জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। গণতন্ত্রের মূলকথা হলো, জনগণ ভোট দিতে পারবে। ভোটাধিকার প্রয়োগটাই এখানে মুখ্য। সে কারণে ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত করা) আনা হয়েছিল। সেই ত্রয়োদশ সংশোধনী আপিল বিভাগ বাতিল করলেন সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে। তার প্রধানত দুটি কারণ–একটি হলো এটা নির্বাচিত সরকার না। আরেকটি হলো, এটাতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানিতে আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এসব কথা বলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগে আজ নবম দিনের মতো এ বিষয়ে শুনানি হয়। এদিন রাষ্ট্রপক্ষ তাদের শুনানি শেষ করে। এরপর ১১ নভেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়।

অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানিতে বলেন, ত্রয়োদশ সংশোধনী আপিল বিভাগ বাতিল করলেন এজন্য যে, বিচারকেরা প্রধান বিচারপতি, প্রধান উপদেষ্টা ইত্যাদি হওয়ার লোভ সামলাতে পারবেন না। যদি এটিই সত্য হয়, তাহলে যেসব বিচারপতি প্রধান বিচারপতি হওয়ার লোভে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে রায় দিয়েছিলেন, সেই সিস্টেমটা বদলানো দরকার।

আসাদুজ্জামান আরও বলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে, নির্বাচিত সরকার হলেই গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে পারে না। প্রমাণিত হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আওতায় বাংলাদেশের মানুষ কীভাবে নিরপেক্ষভাবে, স্বাধীনভাবে, উন্মুক্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।

রায় কার্যকর হওয়া প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এই রায় সেই দিন থেকেই কার্যকর হবে। তবে জুলাই বিপ্লবের পর একটি সরকার গঠিত হয়েছে। রাজপথ থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে এ দেশের সরকার প্রধান কে হবেন, কোন ধরনের সরকার হবে। দেশের প্রধান বিচারপতি কে হবেন, সেটাও রাজপথ থেকে বলে দেওয়া হয়েছে। এই যে রেভ্যলুশনের (বিপ্লবের) বিজয়ী শক্তি, এটাকে রেভ্যলুশনের থিওরি জুরিসপ্রুডেন্স বলে। এ থিওরি অনুসারে, এই সরকার একটা নির্বাচনের পথ ধরে হেঁটে গেছে। সেই নির্বাচনের পথে হাঁটতে গিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এই সরকারের পরে যে সরকার আসবে, সেখান থেকে যদি কার্যকর করেন সেখানে কোনো ব্যত্যয় হবে না।’

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সরকার প্রধান যখন ৫ আগস্ট পালিয়ে যায়, তার ক্যাবিনেট যখন পালিয়ে যায়, তার সংসদ সদস্যরা যখন পালিয়ে যায়, তখন রাষ্ট্রপতির সামনে যখন কোনো পথ খোলা থাকে না। রাষ্ট্রপতি ১০৬ ধারায় সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে মতামত নিয়ে সরকার গঠন করেছেন। এই সরকার গঠন শুধু সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ওপর নির্ভর করে না। বিপ্লবের তত্ত্ব অনুসারে মুক্তিকামী জনগণ, বিজয়ী জনগণ, স্বাধীন জনগণ, গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বকারী জনগণ যেভাবে নির্ধারণ করবেন—সেটাই সংবিধান, সেটাই আইন। সুতরাং রেভ্যলুশনারি থিওরিতে যে জুরিসপ্রুডেন্স স্বীকার করা হলো, গ্রহণ করা হলো—সেই থিওরিটাকেই আমরা হাইলাইট করছি। ১০৬ সব নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে টাকা আত্মসাৎ, ৬ এজেন্সির মালিক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে টাকা আত্মসাৎ, ৬ এজেন্সির মালিক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৫২৫ কোটি টাকার বেশি আদায় করে আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ৬টি রিক্রুটিং এজেন্সির ১১ মালিক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ৬টি পৃথক মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন কমিশনে মামলাগুলোর অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মো. আক্তার হোসেন বলেন, এসব রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও কর্মকর্তারা মালয়েশিয়াগামী ৩১ হাজার ৩৩১ জন কর্মীর কাছ থেকে সরকারনির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার পরিবর্তে পাঁচ গুণ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে ৫২৫ কোটি ২২ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেন।

দুদকের সূত্র বলেছে, মেসার্স আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের বিরুদ্ধে ৭ হাজার ৪৩০ জনের কাছ থেকে ১২৪ কোটি ৪৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায়ের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের মালিক রুহুল আমিনকে আসামি করা হচ্ছে। মেসার্স মেরিট ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মাধ্যমে ৩ হাজার ৪৮৯ জনের কাছ থেকে ৫৮ কোটি ৪৪ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়ার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, তাঁর স্ত্রী এবং কোম্পানির এমডির নামে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

৩ হাজার ৩২১ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৫৫ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা আদায়ের অভিযোগে সাদিয়া ইন্টারন্যাশনালের শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমানের বিরুদ্ধে এবং ৮ হাজার ১০১ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ১৩৫ কোটি ৬৯ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা আদায়ের অভিযোগে ইম্পেরিয়াল রিসোর্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসাইন ও এমডি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

৫ হাজার ২০২ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৮৭ কোটি ১৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগে আরআরসি হিউম্যান রিসোর্স সার্ভিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও এমডি মো. আলমগীর কবীর এবং ৩ হাজার ৭৮৮ জনের কাছ থেকে ৬৩ কোটি ৮৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায়ের অভিযোগে থানেক্স ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সাবেক এমডি আব্দুল্লাহ শাহেদ, পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন নোমানী ও এমডি শমসের আহমেদের নামে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠিয়ে ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১১ মার্চ ৩২ জনের বিরুদ্ধে এবং ১ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৪ সেপ্টেম্বর ১৩টি রিক্রুটিং এজেন্সির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন অনিয়ম ও সিন্ডিকেটের কারণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করেছিল মালয়েশিয়া। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দেশটি পুনরায় বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার চুক্তি করে। তখন শ্রমিক ভিসায় যেতে সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার ৫৪০ টাকা ফি নির্ধারণ করে সরকার, যা ২০২২ সালে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় অফিস আদেশের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অ্যাটর্নি জেনারেল পদে থেকেও নির্বাচন করতে পারেন: আসাদুজ্জামান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ২০
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি

ক্ষমতায় (পদে) থেকেও অ্যাটর্নি জেনারেল জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারবেন, এখানে অস্পষ্টতার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত আপিলের শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল সরকারের কর্মচারী নন, সংবিধানের ৬৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রের আইনজীবী। অ্যাটর্নি জেনারেল ক্ষমতায় থেকেও নির্বাচন করতে পারেন। এখানে কোনো অ্যাম্বিগুইটির (অস্পষ্টতা) কিছু নেই। এটা সেটেল ল।

মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘আমি যতক্ষণ অ্যাটর্নি জেনারেল আছি, ততক্ষণ রাষ্ট্রের আইনজীবী। দায়িত্ব পালনের সময় আমি রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগ করেছি। এর বাইরে না, এর ওপরে-নিচে কোনো জায়গায় না। অ্যাটর্নি জেনারেল যদি মনে করে, সরকারের কোনো অ্যাকশন ডিফেন্ডেবল না, রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর; আমি সেই সরকারের বিরুদ্ধেও দাঁড়াতে পারি—দ্যাট ইজ ল।’

এর আগে গতকাল বুধবার পদ ছেড়ে দিয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে ভোট করার কথা জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি ভোট করব। আমি নমিনেশন ওখানে চেয়েছি। আমি ভোট করব, আমি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে আছি এখনো। আমার অ্যাটর্নি জেনারেল পদ ছেড়ে গিয়ে আমি ভোট করব। যখন সময় আসবে, তখন করব।’

গত বছরের ৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি বিএনপির মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপে প্রতারণা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পুলিশ সদর দপ্তর। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশ সদর দপ্তর। ছবি: সংগৃহীত

সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম ও ছবি ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। প্রতারক চক্র জনপ্রতিনিধি বা শীর্ষ কর্মকর্তাদের ছবি প্রোফাইল হিসেবে ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে টাকা দাবি করছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) পুলিশ সদর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনো আইডিতে পরিচিত ব্যক্তির ছবি থাকলেই সেটি তাঁর নিজের নম্বর—এমন ধারণা করা ঠিক নয়। এ ধরনের বার্তায় প্রতিক্রিয়া না দেওয়ার এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছে। এ ধরনের প্রতারণায় কেউ জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত