আমানুর রহমান রনি, ঢাকা

কারাগারের ভেতরে ‘অদৃশ্য’ এক আর্থিক লেনদেনের জাল বিস্তৃত হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। বন্দীদের নানা সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা করতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে স্বজনেরা টাকা পাঠাচ্ছেন কারারক্ষীদের কাছে। বিনিময়ে বন্দীদের কারাগারেই মিলছে মোবাইল ফোন ব্যবহার, মাদকসেবন, বাইরের খাবার কিংবা ফাঁকিবাজির সুযোগ। অবৈধ এই লেনদেনে কোনো কোনো কারারক্ষী ফেঁসে গেলেও এসব বন্ধ হচ্ছে না।
কারা অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ তদন্তে কারারক্ষীদের এ রকম অবৈধ লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে। অনেক কারারক্ষী নিজের বা বিশ্বস্ত আত্মীয়-পরিজনের নামে থাকা নগদ, বিকাশের মতো বিভিন্ন মোবাইল আর্থিক সেবার নম্বর দিয়ে থাকেন বন্দীর স্বজনদের। ওই নম্বরগুলোতে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা ঢুকছে। সেবা দেওয়ার বিনিময়ে কারারক্ষীরা পান কমিশন।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের রক্ষী আব্দুল কাদের একজন বন্দীর স্বজনের কাছ থেকে বিকাশে টাকা নিলেও বন্দীকে কোনো সুবিধা দেননি। ওই বন্দীর স্বজনেরা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। তদন্তে কাদেরের ঘুষ গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বদলি করা হয়।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আব্দুল্ল্যাহেল আল-আমিন বলেন, ‘কারারক্ষী আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যখনই এ রকম অভিযোগ আসছে তখনই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
আব্দুল্ল্যাহেল আল-আমিন বলেন, ‘কোনো বন্দীর স্বজন যদি কারাগারে এসে পিসি কার্ডে টাকা জমা না দিতে পারেন, তাহলে আমাদের অফিশিয়াল নম্বরের মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা জমা দিতে পারেন। কিন্তু কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত লেনদেন করা যাবে না।’
প্রসঙ্গত, কারাগারে বন্দীদের নিজের প্রয়োজনে ব্যবহারের অর্থ রাখার জন্য অনুমোদিত পিসি (ব্যক্তিগত তহবিল) কার্ডের ব্যবস্থা আছে। তাতে রাখার জন্য মানি অর্ডার, মোবাইল ব্যাংকিং বা সশরীরে কারাগারে এসে প্রধান রক্ষীর কাছে অর্থ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের এক বন্দীর স্বজন তার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, “প্রথমে কারা ফোর্সের একজন আমাদের বলে, ‘ভাই আপনার লোকটা অসুস্থ, হাসপাতালে রাখতে চাইলে কিছু করতে হবে।’ পরে সে বিকাশ নম্বর দেয়। ওই নম্বরে এক হাজার টাকা পাঠাই। এরপর থেকে প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো অজুহাতে টাকা চাইতো।”
কারারক্ষীরা সাধারণত সরাসরি টাকা নেন না, হয় স্বজন না হয় কারাগারের আশপাশের কোন দোকানের মোবাইল নম্বর দেন।
কারা অধিদপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এটা এখন ওপেন সিক্রেট। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের তথ্য ঘাটলেই দেখা যাবে, কারা কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত কিছু নম্বরে নিয়মিত টাকা যাচ্ছে।’
তথ্য বলছে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কাশিমপুর, রাজশাহী, যশোর ও চট্টগ্রামের কারাগারগুলোতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন বেশি হচ্ছে।
এসব অবৈধ লেনদেন ঠেকাতে কারা অধিদপ্তর অননুমোদিতভাবে কাউকে অর্থ না দেওয়ার জন্য গত কয়েক মাস ধরে একটি নোটিশ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করছে।
অবৈধ অর্থ লেনদেন ছাড়াও রক্ষী ও অন্য কর্মীদের সহযোগিতায় প্রায়ই বন্দীরা কারাগারে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুযোগ পান। গত ৫ মার্চ খুলনা কারাগারের ৩০ নম্বর সেলের ১০ নম্বর কক্ষ তল্লাশি করে একটি ভিভো ব্র্যান্ডের মোবাইল ও চার্জার পান কারা কর্মকর্তারা। ওই কক্ষে শাহাদাত হোসেন লিটন ওরফে খোঁড়া লিটন নামে এক সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি ছিলেন। তদন্তের পর লিটনের সঙ্গে যোগসাজশের প্রমাণ পেলে কারাগারের ফ্যাক্টরি ওভারসিয়ার আব্দুর রহীমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
কারাসূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রধানত বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়া, সামান্য অসুস্থতায়ও হাসপাতাল ওয়ার্ডে স্থানান্তর ইত্যাদি সুবিধার বিনিময়ে অর্থ হাতবদল হয়। মাদক বাণিজ্যের টাকার লেনদেনও হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ে।
মো. বদরুজ্জামান শিকদার নামে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের এক রক্ষী বন্দীর স্ত্রীর কাছ থেকে মোবাইলে অর্থ নিয়ে ধরা পরেন গত মে মাসে। অর্থ দেওয়া হলেও ওই নারীর স্বামী কারাগারে বাড়তি সুবিধা পাননি। এরপর রক্ষী বদরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী নারী। কর্তৃপক্ষের তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। বদরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘কারাগার হচ্ছে সংশোধনের স্থান, অথচ এখানে টাকা দিলে নিয়ম ভাঙার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এই অঘোষিত অর্থনীতির বলি হচ্ছে সাধারণ বন্দীরা, যাদের পক্ষে ঘুষ দেওয়া সম্ভব নয়। এই ঘুষচক্র ঠেকাতে প্রয়োজন প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারি, আর্থিক লেনদেনের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্ত।’
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোতাহের হোসেন বলেন, ‘মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কোনো অবৈধ লেনদেন হলে তা তদন্তসাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে আমরা কিছু কারারক্ষীকে এ ধরনের অনিয়মের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। অনেককে বদলি করা হয়েছে।’
আরও খবর পড়ুন:

কারাগারের ভেতরে ‘অদৃশ্য’ এক আর্থিক লেনদেনের জাল বিস্তৃত হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। বন্দীদের নানা সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা করতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে স্বজনেরা টাকা পাঠাচ্ছেন কারারক্ষীদের কাছে। বিনিময়ে বন্দীদের কারাগারেই মিলছে মোবাইল ফোন ব্যবহার, মাদকসেবন, বাইরের খাবার কিংবা ফাঁকিবাজির সুযোগ। অবৈধ এই লেনদেনে কোনো কোনো কারারক্ষী ফেঁসে গেলেও এসব বন্ধ হচ্ছে না।
কারা অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ তদন্তে কারারক্ষীদের এ রকম অবৈধ লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে। অনেক কারারক্ষী নিজের বা বিশ্বস্ত আত্মীয়-পরিজনের নামে থাকা নগদ, বিকাশের মতো বিভিন্ন মোবাইল আর্থিক সেবার নম্বর দিয়ে থাকেন বন্দীর স্বজনদের। ওই নম্বরগুলোতে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা ঢুকছে। সেবা দেওয়ার বিনিময়ে কারারক্ষীরা পান কমিশন।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের রক্ষী আব্দুল কাদের একজন বন্দীর স্বজনের কাছ থেকে বিকাশে টাকা নিলেও বন্দীকে কোনো সুবিধা দেননি। ওই বন্দীর স্বজনেরা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। তদন্তে কাদেরের ঘুষ গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বদলি করা হয়।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আব্দুল্ল্যাহেল আল-আমিন বলেন, ‘কারারক্ষী আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যখনই এ রকম অভিযোগ আসছে তখনই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
আব্দুল্ল্যাহেল আল-আমিন বলেন, ‘কোনো বন্দীর স্বজন যদি কারাগারে এসে পিসি কার্ডে টাকা জমা না দিতে পারেন, তাহলে আমাদের অফিশিয়াল নম্বরের মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা জমা দিতে পারেন। কিন্তু কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত লেনদেন করা যাবে না।’
প্রসঙ্গত, কারাগারে বন্দীদের নিজের প্রয়োজনে ব্যবহারের অর্থ রাখার জন্য অনুমোদিত পিসি (ব্যক্তিগত তহবিল) কার্ডের ব্যবস্থা আছে। তাতে রাখার জন্য মানি অর্ডার, মোবাইল ব্যাংকিং বা সশরীরে কারাগারে এসে প্রধান রক্ষীর কাছে অর্থ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের এক বন্দীর স্বজন তার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, “প্রথমে কারা ফোর্সের একজন আমাদের বলে, ‘ভাই আপনার লোকটা অসুস্থ, হাসপাতালে রাখতে চাইলে কিছু করতে হবে।’ পরে সে বিকাশ নম্বর দেয়। ওই নম্বরে এক হাজার টাকা পাঠাই। এরপর থেকে প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো অজুহাতে টাকা চাইতো।”
কারারক্ষীরা সাধারণত সরাসরি টাকা নেন না, হয় স্বজন না হয় কারাগারের আশপাশের কোন দোকানের মোবাইল নম্বর দেন।
কারা অধিদপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এটা এখন ওপেন সিক্রেট। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের তথ্য ঘাটলেই দেখা যাবে, কারা কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত কিছু নম্বরে নিয়মিত টাকা যাচ্ছে।’
তথ্য বলছে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কাশিমপুর, রাজশাহী, যশোর ও চট্টগ্রামের কারাগারগুলোতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন বেশি হচ্ছে।
এসব অবৈধ লেনদেন ঠেকাতে কারা অধিদপ্তর অননুমোদিতভাবে কাউকে অর্থ না দেওয়ার জন্য গত কয়েক মাস ধরে একটি নোটিশ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করছে।
অবৈধ অর্থ লেনদেন ছাড়াও রক্ষী ও অন্য কর্মীদের সহযোগিতায় প্রায়ই বন্দীরা কারাগারে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুযোগ পান। গত ৫ মার্চ খুলনা কারাগারের ৩০ নম্বর সেলের ১০ নম্বর কক্ষ তল্লাশি করে একটি ভিভো ব্র্যান্ডের মোবাইল ও চার্জার পান কারা কর্মকর্তারা। ওই কক্ষে শাহাদাত হোসেন লিটন ওরফে খোঁড়া লিটন নামে এক সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি ছিলেন। তদন্তের পর লিটনের সঙ্গে যোগসাজশের প্রমাণ পেলে কারাগারের ফ্যাক্টরি ওভারসিয়ার আব্দুর রহীমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
কারাসূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রধানত বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়া, সামান্য অসুস্থতায়ও হাসপাতাল ওয়ার্ডে স্থানান্তর ইত্যাদি সুবিধার বিনিময়ে অর্থ হাতবদল হয়। মাদক বাণিজ্যের টাকার লেনদেনও হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ে।
মো. বদরুজ্জামান শিকদার নামে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের এক রক্ষী বন্দীর স্ত্রীর কাছ থেকে মোবাইলে অর্থ নিয়ে ধরা পরেন গত মে মাসে। অর্থ দেওয়া হলেও ওই নারীর স্বামী কারাগারে বাড়তি সুবিধা পাননি। এরপর রক্ষী বদরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী নারী। কর্তৃপক্ষের তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। বদরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘কারাগার হচ্ছে সংশোধনের স্থান, অথচ এখানে টাকা দিলে নিয়ম ভাঙার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এই অঘোষিত অর্থনীতির বলি হচ্ছে সাধারণ বন্দীরা, যাদের পক্ষে ঘুষ দেওয়া সম্ভব নয়। এই ঘুষচক্র ঠেকাতে প্রয়োজন প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারি, আর্থিক লেনদেনের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্ত।’
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোতাহের হোসেন বলেন, ‘মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কোনো অবৈধ লেনদেন হলে তা তদন্তসাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে আমরা কিছু কারারক্ষীকে এ ধরনের অনিয়মের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। অনেককে বদলি করা হয়েছে।’
আরও খবর পড়ুন:

‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতির জন্য সারা দেশে নতুন করে দুই হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। বিতর্ক এড়াতে এসব আবেদনের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্তে নেমেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক...
১ ঘণ্টা আগে
‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে আন্দোলনে অর্থ উপদেষ্টাকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৪ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করায় তাঁদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
১ ঘণ্টা আগে
দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার পর দুই দেশের সম্পর্কে আবার তিক্ততা তৈরি হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে (এটিএ) গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক আনিস আলমগীরের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি জানায়, গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১১ ঘণ্টা আগেজুলাই গণ-অভ্যুত্থান
রাসেল মাহমুদ, ঢাকা

‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতির জন্য সারা দেশে নতুন করে দুই হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। বিতর্ক এড়াতে এসব আবেদনের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্তে নেমেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পুলিশের বিশেষায়িত এই দুই ইউনিটের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তার সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শাখার উপসচিব ডা. মো. জহিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এর আগে তালিকা প্রকাশের পর কিছু বিতর্কিত নাম ছিল। পরে তাদের বাদ দেওয়া হয়। তাই নতুন আবেদনকারীদের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে তালিকা করা হচ্ছে, যাতে জুলাই যোদ্ধারাই বেশি সুরক্ষা পায়। তাদের যাচাই-বাছাইটা সঠিক হয়, চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর যেন কোনো বিতর্ক না ওঠে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও তদন্তসংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন করে ২ হাজার ৬৯ জন নিজেকে আহত জুলাই যোদ্ধা দাবি করে আবেদন করেছে, যার মধ্যে ১ হাজার ৯৩৮ জনের তথ্য মাঠপর্যায়ে যাচাই করছে পুলিশের এসবি ও পিবিআই। গত ৩ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠাতে সংস্থা দুটিকে নির্দেশ দেয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছরের বেশি সময় পরও বিভিন্ন জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তরে আবেদন জমা পড়ছে। দেশের ৪১ জেলার মোট ১ হাজার ৯৩৮ আবেদনকারীর তথ্য এখন যাচাই করা হচ্ছে। প্রত্যেকে সত্যিই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়াই এর মূল উদ্দেশ্য।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে তৎকালীন সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের হামলায় নিহতদের শহীদ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আর জালিয়াতি করে কাউকে শহীদ বা আহত জুলাই যোদ্ধা দেখালে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়নের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে দুই ধাপে ৮৩৬ জন শহীদ এবং অতি গুরুতর আহত (ক শ্রেণি) ৬০২ জন জুলাই যোদ্ধা, গুরুতর আহত (খ শ্রেণি) ১ হাজার ১১৮ জন জুলাই যোদ্ধা ও আহত (গ শ্রেণি) ১২ হাজার ৮০ জন জুলাই যোদ্ধাসহ সর্বমোট ১৪ হাজার ৬৩৬ জনের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।
তবে তালিকা প্রকাশের পর গত দেড় বছরে বিভিন্ন বিতর্কও উঠেছে। কেউ ৫ আগস্টের আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে, কেউ ৫ আগস্টের পর মারা গেছে, এমন ব্যক্তির নামও তালিকায় এসেছে বলে অভিযোগ ওঠে। নতুন আবেদনকারীরা জেলা প্রশাসকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন বলে জানা যায়। এ পরিস্থিতিতে সব আবেদন সরাসরি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
আবেদনকারীদের বিষয়ে বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নতুন করে যারা আবেদন করেছে, তাদের আবেদনগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নতুন আবেদনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগের, ৫৮২টি, যার মধ্যে ঢাকা জেলার ৩৩৯টি। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৩৩টি, রাজশাহীতে ২৯৪টি, সিলেটে ৩১১টি, রংপুরে ১২২টি, খুলনা বিভাগে ৮৩টি, বরিশালে ৫০টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৫টি আবেদন জমা হয়। এসব আবেদন যাচাই করতে গিয়ে রাজনৈতিক তদবির, সামাজিক চাপসহ নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ফলে এসবি ও পিবিআই দিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা সুবিধা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়ায় অনেকেই গণ-অভ্যুত্থানের সময় দুর্ঘটনায় আহত হয়েও জুলাই আহত তালিকায় নাম তোলার চেষ্টা করছে, যেখানে রাজনৈতিক চাপও আছে। তবে এখনো অনেক প্রকৃত জুলাই যোদ্ধা তালিকার বাইরে। দুই সংস্থার তদন্তে ভুয়া আবেদনকারীর পাশাপাশি আসল জুলাই যোদ্ধাদের শনাক্ত করা সহজ হবে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আবেদন যাচাইয়ে আবেদনকারীর পরিচয়, ঠিকানা, পেশা, এনআইডি/জন্মনিবন্ধন, আগে গেজেটভুক্ত হওয়ার তথ্য, আহত বা শহীদ দাবির ক্ষেত্রে মামলা ও তার অবস্থা, সাক্ষী, সংবাদ ও অন্যান্য প্রমাণ সংগ্রহ করছেন। পাশাপাশি হাসপাতালের চিকিৎসার সময়কাল, চিকিৎসাপত্র, চিকিৎসকের বক্তব্য এবং ঘটনার ভিডিও, অডিও, ছবি বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার তথ্য যাচাই করছেন।
জানতে চাইলে পিবিআইয়ের প্রধান ও পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মোস্তফা কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে যে তালিকা পাওয়া গেছে, সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। দেশব্যাপী কাজ চলছে বলে কিছুটা সময় লাগবে। যাচাই-বাছাই শেষে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি শহীদ পরিবারকে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে এককালীন ৩০ লাখ টাকা দেওয়া হচ্ছে; এর মধ্যে ১০ লাখ দেওয়া হয়েছে, বাকি ২০ লাখ ধাপে ধাপে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতাও পাচ্ছে পরিবারগুলো। ঢাকায় তাদের জন্য ফ্ল্যাট দেওয়ার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আহতদের ক্ষেত্রে ক শ্রেণিভুক্তদের এককালীন পাঁচ লাখ টাকা ও মাসিক ২০ হাজার টাকা, খ শ্রেণিভুক্তদের এককালীন পাঁচ লাখ ও মাসিক ১৫ হাজার এবং গ শ্রেণিভুক্তদের এক লাখ টাকা এককালীন সহায়তা ও মাসিক ১০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ সুবিধাও রয়েছে।
গ্রাফিকস:
আট বিভাগে নতুনদের আবেদনের চিত্র
ঢাকা বিভাগে ৫৮২ জন
চট্টগ্রামে ৪৩৩ জন
রাজশাহীতে ২৯৪ জন
সিলেটে ৩১১ জন
রংপুরে ১২২ জন
বরিশালে ৫০ জন
খুলনায় ৮৩ জন
ময়মনসিংহে ৫ জন
গত ৪ মার্চ পর্যন্ত সরকারের স্বীকৃত আহত জুলাই যোদ্ধা
ঢাকা বিভাগে ৩০৯৮ জন
চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯২৭ জন
রংপুর বিভাগে ১৩১৫ জন
খুলনা বিভাগে ১১৯৫ জন
রাজশাহী বিভাগে ১০৯৩ জন
বরিশাল বিভাগে ৭৭২ জন
সিলেট বিভাগে ৭০৮ জন
ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৩৪ জন

‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতির জন্য সারা দেশে নতুন করে দুই হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। বিতর্ক এড়াতে এসব আবেদনের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্তে নেমেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পুলিশের বিশেষায়িত এই দুই ইউনিটের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তার সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শাখার উপসচিব ডা. মো. জহিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এর আগে তালিকা প্রকাশের পর কিছু বিতর্কিত নাম ছিল। পরে তাদের বাদ দেওয়া হয়। তাই নতুন আবেদনকারীদের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে তালিকা করা হচ্ছে, যাতে জুলাই যোদ্ধারাই বেশি সুরক্ষা পায়। তাদের যাচাই-বাছাইটা সঠিক হয়, চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর যেন কোনো বিতর্ক না ওঠে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও তদন্তসংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন করে ২ হাজার ৬৯ জন নিজেকে আহত জুলাই যোদ্ধা দাবি করে আবেদন করেছে, যার মধ্যে ১ হাজার ৯৩৮ জনের তথ্য মাঠপর্যায়ে যাচাই করছে পুলিশের এসবি ও পিবিআই। গত ৩ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠাতে সংস্থা দুটিকে নির্দেশ দেয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছরের বেশি সময় পরও বিভিন্ন জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তরে আবেদন জমা পড়ছে। দেশের ৪১ জেলার মোট ১ হাজার ৯৩৮ আবেদনকারীর তথ্য এখন যাচাই করা হচ্ছে। প্রত্যেকে সত্যিই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়াই এর মূল উদ্দেশ্য।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে তৎকালীন সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের হামলায় নিহতদের শহীদ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আর জালিয়াতি করে কাউকে শহীদ বা আহত জুলাই যোদ্ধা দেখালে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়নের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে দুই ধাপে ৮৩৬ জন শহীদ এবং অতি গুরুতর আহত (ক শ্রেণি) ৬০২ জন জুলাই যোদ্ধা, গুরুতর আহত (খ শ্রেণি) ১ হাজার ১১৮ জন জুলাই যোদ্ধা ও আহত (গ শ্রেণি) ১২ হাজার ৮০ জন জুলাই যোদ্ধাসহ সর্বমোট ১৪ হাজার ৬৩৬ জনের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।
তবে তালিকা প্রকাশের পর গত দেড় বছরে বিভিন্ন বিতর্কও উঠেছে। কেউ ৫ আগস্টের আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে, কেউ ৫ আগস্টের পর মারা গেছে, এমন ব্যক্তির নামও তালিকায় এসেছে বলে অভিযোগ ওঠে। নতুন আবেদনকারীরা জেলা প্রশাসকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন বলে জানা যায়। এ পরিস্থিতিতে সব আবেদন সরাসরি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
আবেদনকারীদের বিষয়ে বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নতুন করে যারা আবেদন করেছে, তাদের আবেদনগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নতুন আবেদনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগের, ৫৮২টি, যার মধ্যে ঢাকা জেলার ৩৩৯টি। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৩৩টি, রাজশাহীতে ২৯৪টি, সিলেটে ৩১১টি, রংপুরে ১২২টি, খুলনা বিভাগে ৮৩টি, বরিশালে ৫০টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৫টি আবেদন জমা হয়। এসব আবেদন যাচাই করতে গিয়ে রাজনৈতিক তদবির, সামাজিক চাপসহ নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ফলে এসবি ও পিবিআই দিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা সুবিধা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়ায় অনেকেই গণ-অভ্যুত্থানের সময় দুর্ঘটনায় আহত হয়েও জুলাই আহত তালিকায় নাম তোলার চেষ্টা করছে, যেখানে রাজনৈতিক চাপও আছে। তবে এখনো অনেক প্রকৃত জুলাই যোদ্ধা তালিকার বাইরে। দুই সংস্থার তদন্তে ভুয়া আবেদনকারীর পাশাপাশি আসল জুলাই যোদ্ধাদের শনাক্ত করা সহজ হবে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আবেদন যাচাইয়ে আবেদনকারীর পরিচয়, ঠিকানা, পেশা, এনআইডি/জন্মনিবন্ধন, আগে গেজেটভুক্ত হওয়ার তথ্য, আহত বা শহীদ দাবির ক্ষেত্রে মামলা ও তার অবস্থা, সাক্ষী, সংবাদ ও অন্যান্য প্রমাণ সংগ্রহ করছেন। পাশাপাশি হাসপাতালের চিকিৎসার সময়কাল, চিকিৎসাপত্র, চিকিৎসকের বক্তব্য এবং ঘটনার ভিডিও, অডিও, ছবি বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার তথ্য যাচাই করছেন।
জানতে চাইলে পিবিআইয়ের প্রধান ও পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মোস্তফা কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে যে তালিকা পাওয়া গেছে, সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। দেশব্যাপী কাজ চলছে বলে কিছুটা সময় লাগবে। যাচাই-বাছাই শেষে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি শহীদ পরিবারকে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে এককালীন ৩০ লাখ টাকা দেওয়া হচ্ছে; এর মধ্যে ১০ লাখ দেওয়া হয়েছে, বাকি ২০ লাখ ধাপে ধাপে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতাও পাচ্ছে পরিবারগুলো। ঢাকায় তাদের জন্য ফ্ল্যাট দেওয়ার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আহতদের ক্ষেত্রে ক শ্রেণিভুক্তদের এককালীন পাঁচ লাখ টাকা ও মাসিক ২০ হাজার টাকা, খ শ্রেণিভুক্তদের এককালীন পাঁচ লাখ ও মাসিক ১৫ হাজার এবং গ শ্রেণিভুক্তদের এক লাখ টাকা এককালীন সহায়তা ও মাসিক ১০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ সুবিধাও রয়েছে।
গ্রাফিকস:
আট বিভাগে নতুনদের আবেদনের চিত্র
ঢাকা বিভাগে ৫৮২ জন
চট্টগ্রামে ৪৩৩ জন
রাজশাহীতে ২৯৪ জন
সিলেটে ৩১১ জন
রংপুরে ১২২ জন
বরিশালে ৫০ জন
খুলনায় ৮৩ জন
ময়মনসিংহে ৫ জন
গত ৪ মার্চ পর্যন্ত সরকারের স্বীকৃত আহত জুলাই যোদ্ধা
ঢাকা বিভাগে ৩০৯৮ জন
চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯২৭ জন
রংপুর বিভাগে ১৩১৫ জন
খুলনা বিভাগে ১১৯৫ জন
রাজশাহী বিভাগে ১০৯৩ জন
বরিশাল বিভাগে ৭৭২ জন
সিলেট বিভাগে ৭০৮ জন
ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৩৪ জন

কারাগারের ভেতরে ‘অদৃশ্য’ এক আর্থিক লেনদেনের জাল বিস্তৃত হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। বন্দীদের নানা সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা করতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে স্বজনেরা টাকা পাঠাচ্ছেন কারারক্ষীদের কাছে। বিনিময়ে বন্দীদের কারাগারেই মিলছে মোবাইল ফোন ব্যবহার, মাদকসেবন, বাইরের খাবার কিংবা ফাঁকিবাজির সুযোগ।
১৭ আগস্ট ২০২৫
‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে আন্দোলনে অর্থ উপদেষ্টাকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৪ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করায় তাঁদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
১ ঘণ্টা আগে
দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার পর দুই দেশের সম্পর্কে আবার তিক্ততা তৈরি হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে (এটিএ) গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক আনিস আলমগীরের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি জানায়, গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১১ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে আন্দোলনে অর্থ উপদেষ্টাকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৪ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করায় তাঁদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এই ১৪ জন সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁরা হলেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি বাদিউল কবির, সহসভাপতি শাহীন গোলাম রাব্বানী ও নজরুল ইসলাম; স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মো. তায়েফুল ইসলাম, বিকাশ চন্দ্র রায়, ইসলামুল হক, মো. মহসিন আলী, রোমান গাজী, আবু বেলাল; তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মিজানুর রহমান সুমন; জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কামাল হোসেন ও মোহাম্মদ আলিমুজ্জামান; অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিপুল রানা বিপ্লব এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নাসিরুল হক।
সচিবালয় ভাতার দাবিতে ১০ ডিসেম্বর অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদকে তাঁর দপ্তরে ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন বাদিউল কবিরের নেতৃত্বে আন্দোলনরত কর্মচারীরা। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কয়েকজন কর্মচারীকে ১১ ডিসেম্বর আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে তাঁদের ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ ডিসেম্বর আদালত তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হলে আদালত তা গ্রহণ করেন।

‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে আন্দোলনে অর্থ উপদেষ্টাকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৪ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করায় তাঁদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এই ১৪ জন সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁরা হলেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি বাদিউল কবির, সহসভাপতি শাহীন গোলাম রাব্বানী ও নজরুল ইসলাম; স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মো. তায়েফুল ইসলাম, বিকাশ চন্দ্র রায়, ইসলামুল হক, মো. মহসিন আলী, রোমান গাজী, আবু বেলাল; তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মিজানুর রহমান সুমন; জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কামাল হোসেন ও মোহাম্মদ আলিমুজ্জামান; অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিপুল রানা বিপ্লব এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নাসিরুল হক।
সচিবালয় ভাতার দাবিতে ১০ ডিসেম্বর অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদকে তাঁর দপ্তরে ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন বাদিউল কবিরের নেতৃত্বে আন্দোলনরত কর্মচারীরা। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কয়েকজন কর্মচারীকে ১১ ডিসেম্বর আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে তাঁদের ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ ডিসেম্বর আদালত তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হলে আদালত তা গ্রহণ করেন।

কারাগারের ভেতরে ‘অদৃশ্য’ এক আর্থিক লেনদেনের জাল বিস্তৃত হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। বন্দীদের নানা সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা করতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে স্বজনেরা টাকা পাঠাচ্ছেন কারারক্ষীদের কাছে। বিনিময়ে বন্দীদের কারাগারেই মিলছে মোবাইল ফোন ব্যবহার, মাদকসেবন, বাইরের খাবার কিংবা ফাঁকিবাজির সুযোগ।
১৭ আগস্ট ২০২৫
‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতির জন্য সারা দেশে নতুন করে দুই হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। বিতর্ক এড়াতে এসব আবেদনের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্তে নেমেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক...
১ ঘণ্টা আগে
দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার পর দুই দেশের সম্পর্কে আবার তিক্ততা তৈরি হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে (এটিএ) গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক আনিস আলমগীরের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি জানায়, গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার পর দুই দেশের সম্পর্কে আবার তিক্ততা তৈরি হয়েছে।
দুই দেশের রাজনীতিকসহ বিভিন্নজনের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য, পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক তলবের পর গতকাল বুধবার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে জুলাই ঐক্যের মিছিল কর্মসূচি এবং ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র বন্ধ সম্পর্কের তিক্ততায় নতুন মাত্রা দিয়েছে। ভারতীয় ভিসার আবেদন কেন্দ্রের (আইভ্যাক) ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলার বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও বলেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যকে গতকাল তিনি নসিহত আখ্যা দিয়ে তা অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন।
বিগত আওয়ামী লীগের আমলে ‘বন্ধুত্বের শিখরে’ পৌঁছানো দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক নতুন মোড় নেয় গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর। সেদিন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে গেছেন। ক্ষমতাচ্যুত সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের অনেক নেতাসহ আরও অনেকে সেখানে গেছেন বলে জানা গেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানকে ফেরত চেয়ে ঢাকা অনুরোধ জানালেও নয়াদিল্লি সাড়া দিচ্ছে না। এর মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সীমিত করেছে ভারত। ভিসা কড়াকড়ির কারণে পর্যটনও প্রায় বন্ধ।
এ অবস্থায় ১২ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার পর সম্পর্কে নতুন করে তিক্ততা শুরু হয়েছে। গতকাল ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে মিছিল কর্মসূচির আয়োজন করে ‘জুলাই ঐক্য’। তবে পুলিশি বাধায় হাইকমিশন যাওয়ার আগেই কর্মসূচি শেষ হয়। অবশ্য এর আগে বেলা ২টা থেকে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গত রোববার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলবের পর গতকাল নয়াদিল্লিতে স্থানীয় সময় দুপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ রিয়াজ হামিদউল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বিএম) বি শ্যাম।
পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছে। এ সময় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষভাবে হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছে, কিছু ‘চরমপন্থী উপাদান’ প্রকাশ্যে ঢাকায় ভারতীয় মিশনের আশপাশে একটি নিরাপত্তা সংকট তৈরির পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, এই ধরনের হুমকি কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিক, এমনটাই প্রত্যাশিত।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা নিয়ে ‘চরমপন্থী উপাদানগুলো’র মাধ্যমে যে ‘বয়ান’ তৈরির চেষ্টা চলছে, ভারত তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে। অন্তর্বর্তী সরকার এই উদ্বেগজনক ঘটনাগুলোর কোনো পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করেনি বা ভারত সরকারের কাছে কোনো অর্থবহ প্রমাণ দেয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারত বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়, যা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক এবং মানুষে-মানুষে উদ্যোগের মাধ্যমে আরও জোরদার হয়েছে। এই সম্পর্কের ভিত্তিতেই নয়াদিল্লি বারবার বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে মত দিয়েছে। ভারত সরকার ধারাবাহিক আহ্বান জানিয়েছে, বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশে যেন অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
রোববার বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলবের কথা জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে জানানো হয়েছে, তারা যেন অবিলম্বে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতে পলাতক তাঁর সহযোগীদের ফ্যাসিবাদী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়। এ ছাড়া ভারতীয় হাইকমিশনারকে ওসমান হাদির হত্যাচেষ্টাকারীদের বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা রোধে ভারত সরকারের সহযোগিতা এবং তারা ভারতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলে তাদের অবিলম্বে পাকড়াও করার উদ্যোগ নেওয়ার ও বাংলাদেশের কাছে তাদের প্রত্যর্পণ করার অনুরোধ জানানো হয়।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিজ্ঞপ্তির বক্তব্যসমূহ স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করছে ভারত। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে ভারতের অবস্থান আমরা ধারাবাহিকভাবে পুনর্ব্যক্ত করে আসছি। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপে ভারতের ভূখণ্ড কখনোই ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি।’
এদিকে গতকাল বিকেলে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা তাদের (ভারত) হাইকমিশনারকে ডেকেছি। এটার ব্যাপারে আমরা যা কিছু বলেছি, সেটা তারা গ্রহণ করেনি, তাদের কিছু দ্বিমত আছে এ বিষয়ে। একইভাবে আমাদের হাইকমিশনারকেও তারা ডেকেছে। এটা খুব অপ্রত্যাশিত নয়। সাধারণত এটা ঘটে। একজনকে ডাকলে আরেকজনকে ডাকা হয়।’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘সর্বশেষ যে বক্তব্য তাদের, তাতে কিছু নসিহত করা হয়েছে আমাদের। আমি মনে করি না, কোনো প্রয়োজন আছে আমাদের এভাবে নসিহত করার। বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে, এটা নিয়ে আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের উপদেশ চাই না।’ তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের এটা (নির্বাচন) নিয়ে উপদেশ দিচ্ছে। এটাকে আমি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য মনে করি। তারা (ভারত) জানে, এর আগে গত ১৫ বছর যে সরকার ছিল, তাদের সঙ্গে (ভারতের) অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক ছিল। ওই সময় নির্বাচনগুলো যে প্রহসনমূলক হয়েছিল, সে সময় তারা (ভারত) একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। এখন সামনে আমরা একটা ভালো নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি, এই মুহূর্তে আমাদের নসিহত করার তো কোনো প্রয়োজন নেই।’
‘সম্পর্কের এই টানাপোড়েন’ মেনে নিয়েই বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছে বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘তবে আমরা চাইলেই যে হবে, এমন কোনো কথা নেই। দুই পক্ষ থেকেই সম্পর্ককে এগোনোর চেষ্টা করতে হবে।’
রাজনীতিকদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য
ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে সোমবার রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বদলীয় সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রকারীদের ভারত আশ্রয় দিচ্ছে। এ সময় তিনি ভারত সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, ভোটাধিকার ও মানবাধিকারকে বিশ্বাস করে না, তাদের আশ্রয় দিলে আমরাও বাংলাদেশে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দিয়ে সেভেন সিস্টার্স (উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্য) আলাদা করে দেব।’
হাসনাতের ওই বক্তব্যের পর ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা গত মঙ্গলবার বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারত থেকে আলাদা করার এবং বাংলাদেশের অংশ করার ব্যাপারে গত বছর থেকে বাংলাদেশে বারবার আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু ভারত খুব বড় একটি দেশ, পারমাণবিক শক্তিধর একটি দেশ এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। বাংলাদেশ কীভাবে এমনটা ভাবতে পারে? তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষজনের মন-মানসিকতা ভালো না। তাদের খুব বেশি সহযোগিতা করা উচিত নয় আমাদের। আমাদের উচিত তাদের একটা শিক্ষা দেওয়া যে তারা যদি ভারতের সঙ্গে এমন ব্যবহার করে, তাহলে আমরা চুপ থাকব না।’
এর আগেও আসামের মুখ্যমন্ত্রী আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন। এ ছাড়া গত নভেম্বরের শুরুতে ভারতের ‘নেটওয়ার্ক-১৮’ গ্রুপের প্রধান সম্পাদক রাহুল যোশীকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘কথা বলার ক্ষেত্রে মনোযোগী হওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছিলেন। জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজনাথের ওই মন্তব্যকে ‘শিষ্টাচার ও কূটনৈতিক সৌজন্যের প্রতি সম্মানজনক নয়’ বলে মন্তব্য করেছিল।
হাইকমিশন অভিমুখী মিছিল আটকে দিল পুলিশ
ভারতে পালিয়ে থাকা জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে দেওয়া, সীমান্ত হত্যা বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে গতকাল বিকেলে ‘মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ কর্মসূচি দেয় জুলাই অভ্যুত্থানের একাধিক সংগঠনের মোর্চা ‘জুলাই ঐক্য’। তবে বেলা সোয়া ৩টার দিকে শুরু হওয়া গুলশানে হাইকমিশন অভিমুখী কয়েক শ বিক্ষোভকারীর ওই মিছিল বাড্ডার হোসেন মার্কেট এলাকায় ব্যরিকেড দিয়ে আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় বিক্ষোভকারীদের একাংশ সড়কে বসে পড়ে। আরেকটি অংশ ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে। এ সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে কর্মসূচি শেষ করে জুলাই ঐক্য।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার রওনক আলম সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাড্ডায় মিছিলকারীদের আটকে দেওয়া হয়। তারা বিকেলেই সেখান থেকে চলে যায়।
সীমান্তে ‘বাড়াবাড়ি’ করছে বিএসএফ
গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সীমান্তে বিএসএফের পুশ ইন ও তৎপরতা বেড়েছে। সীমান্ত হত্যাও বেড়েছে। এ নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই গত সপ্তাহে কোচবিহার জেলায় এক প্রশাসনিক বৈঠকে বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ বাড়াবাড়ি করছে। তারা ভারতীয় নাগরিকদের ধরে ধরে বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে।

দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার পর দুই দেশের সম্পর্কে আবার তিক্ততা তৈরি হয়েছে।
দুই দেশের রাজনীতিকসহ বিভিন্নজনের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য, পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক তলবের পর গতকাল বুধবার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে জুলাই ঐক্যের মিছিল কর্মসূচি এবং ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র বন্ধ সম্পর্কের তিক্ততায় নতুন মাত্রা দিয়েছে। ভারতীয় ভিসার আবেদন কেন্দ্রের (আইভ্যাক) ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলার বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও বলেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যকে গতকাল তিনি নসিহত আখ্যা দিয়ে তা অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন।
বিগত আওয়ামী লীগের আমলে ‘বন্ধুত্বের শিখরে’ পৌঁছানো দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক নতুন মোড় নেয় গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর। সেদিন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে গেছেন। ক্ষমতাচ্যুত সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের অনেক নেতাসহ আরও অনেকে সেখানে গেছেন বলে জানা গেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানকে ফেরত চেয়ে ঢাকা অনুরোধ জানালেও নয়াদিল্লি সাড়া দিচ্ছে না। এর মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সীমিত করেছে ভারত। ভিসা কড়াকড়ির কারণে পর্যটনও প্রায় বন্ধ।
এ অবস্থায় ১২ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার পর সম্পর্কে নতুন করে তিক্ততা শুরু হয়েছে। গতকাল ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে মিছিল কর্মসূচির আয়োজন করে ‘জুলাই ঐক্য’। তবে পুলিশি বাধায় হাইকমিশন যাওয়ার আগেই কর্মসূচি শেষ হয়। অবশ্য এর আগে বেলা ২টা থেকে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গত রোববার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলবের পর গতকাল নয়াদিল্লিতে স্থানীয় সময় দুপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ রিয়াজ হামিদউল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বিএম) বি শ্যাম।
পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছে। এ সময় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষভাবে হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছে, কিছু ‘চরমপন্থী উপাদান’ প্রকাশ্যে ঢাকায় ভারতীয় মিশনের আশপাশে একটি নিরাপত্তা সংকট তৈরির পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, এই ধরনের হুমকি কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিক, এমনটাই প্রত্যাশিত।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা নিয়ে ‘চরমপন্থী উপাদানগুলো’র মাধ্যমে যে ‘বয়ান’ তৈরির চেষ্টা চলছে, ভারত তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে। অন্তর্বর্তী সরকার এই উদ্বেগজনক ঘটনাগুলোর কোনো পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করেনি বা ভারত সরকারের কাছে কোনো অর্থবহ প্রমাণ দেয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারত বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়, যা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক এবং মানুষে-মানুষে উদ্যোগের মাধ্যমে আরও জোরদার হয়েছে। এই সম্পর্কের ভিত্তিতেই নয়াদিল্লি বারবার বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে মত দিয়েছে। ভারত সরকার ধারাবাহিক আহ্বান জানিয়েছে, বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশে যেন অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
রোববার বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলবের কথা জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে জানানো হয়েছে, তারা যেন অবিলম্বে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতে পলাতক তাঁর সহযোগীদের ফ্যাসিবাদী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়। এ ছাড়া ভারতীয় হাইকমিশনারকে ওসমান হাদির হত্যাচেষ্টাকারীদের বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা রোধে ভারত সরকারের সহযোগিতা এবং তারা ভারতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলে তাদের অবিলম্বে পাকড়াও করার উদ্যোগ নেওয়ার ও বাংলাদেশের কাছে তাদের প্রত্যর্পণ করার অনুরোধ জানানো হয়।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিজ্ঞপ্তির বক্তব্যসমূহ স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করছে ভারত। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে ভারতের অবস্থান আমরা ধারাবাহিকভাবে পুনর্ব্যক্ত করে আসছি। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপে ভারতের ভূখণ্ড কখনোই ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি।’
এদিকে গতকাল বিকেলে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা তাদের (ভারত) হাইকমিশনারকে ডেকেছি। এটার ব্যাপারে আমরা যা কিছু বলেছি, সেটা তারা গ্রহণ করেনি, তাদের কিছু দ্বিমত আছে এ বিষয়ে। একইভাবে আমাদের হাইকমিশনারকেও তারা ডেকেছে। এটা খুব অপ্রত্যাশিত নয়। সাধারণত এটা ঘটে। একজনকে ডাকলে আরেকজনকে ডাকা হয়।’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘সর্বশেষ যে বক্তব্য তাদের, তাতে কিছু নসিহত করা হয়েছে আমাদের। আমি মনে করি না, কোনো প্রয়োজন আছে আমাদের এভাবে নসিহত করার। বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে, এটা নিয়ে আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের উপদেশ চাই না।’ তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের এটা (নির্বাচন) নিয়ে উপদেশ দিচ্ছে। এটাকে আমি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য মনে করি। তারা (ভারত) জানে, এর আগে গত ১৫ বছর যে সরকার ছিল, তাদের সঙ্গে (ভারতের) অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক ছিল। ওই সময় নির্বাচনগুলো যে প্রহসনমূলক হয়েছিল, সে সময় তারা (ভারত) একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। এখন সামনে আমরা একটা ভালো নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি, এই মুহূর্তে আমাদের নসিহত করার তো কোনো প্রয়োজন নেই।’
‘সম্পর্কের এই টানাপোড়েন’ মেনে নিয়েই বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছে বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘তবে আমরা চাইলেই যে হবে, এমন কোনো কথা নেই। দুই পক্ষ থেকেই সম্পর্ককে এগোনোর চেষ্টা করতে হবে।’
রাজনীতিকদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য
ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে সোমবার রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বদলীয় সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রকারীদের ভারত আশ্রয় দিচ্ছে। এ সময় তিনি ভারত সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, ভোটাধিকার ও মানবাধিকারকে বিশ্বাস করে না, তাদের আশ্রয় দিলে আমরাও বাংলাদেশে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দিয়ে সেভেন সিস্টার্স (উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্য) আলাদা করে দেব।’
হাসনাতের ওই বক্তব্যের পর ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা গত মঙ্গলবার বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারত থেকে আলাদা করার এবং বাংলাদেশের অংশ করার ব্যাপারে গত বছর থেকে বাংলাদেশে বারবার আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু ভারত খুব বড় একটি দেশ, পারমাণবিক শক্তিধর একটি দেশ এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। বাংলাদেশ কীভাবে এমনটা ভাবতে পারে? তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষজনের মন-মানসিকতা ভালো না। তাদের খুব বেশি সহযোগিতা করা উচিত নয় আমাদের। আমাদের উচিত তাদের একটা শিক্ষা দেওয়া যে তারা যদি ভারতের সঙ্গে এমন ব্যবহার করে, তাহলে আমরা চুপ থাকব না।’
এর আগেও আসামের মুখ্যমন্ত্রী আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন। এ ছাড়া গত নভেম্বরের শুরুতে ভারতের ‘নেটওয়ার্ক-১৮’ গ্রুপের প্রধান সম্পাদক রাহুল যোশীকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘কথা বলার ক্ষেত্রে মনোযোগী হওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছিলেন। জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজনাথের ওই মন্তব্যকে ‘শিষ্টাচার ও কূটনৈতিক সৌজন্যের প্রতি সম্মানজনক নয়’ বলে মন্তব্য করেছিল।
হাইকমিশন অভিমুখী মিছিল আটকে দিল পুলিশ
ভারতে পালিয়ে থাকা জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে দেওয়া, সীমান্ত হত্যা বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে গতকাল বিকেলে ‘মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ কর্মসূচি দেয় জুলাই অভ্যুত্থানের একাধিক সংগঠনের মোর্চা ‘জুলাই ঐক্য’। তবে বেলা সোয়া ৩টার দিকে শুরু হওয়া গুলশানে হাইকমিশন অভিমুখী কয়েক শ বিক্ষোভকারীর ওই মিছিল বাড্ডার হোসেন মার্কেট এলাকায় ব্যরিকেড দিয়ে আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় বিক্ষোভকারীদের একাংশ সড়কে বসে পড়ে। আরেকটি অংশ ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে। এ সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে কর্মসূচি শেষ করে জুলাই ঐক্য।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার রওনক আলম সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাড্ডায় মিছিলকারীদের আটকে দেওয়া হয়। তারা বিকেলেই সেখান থেকে চলে যায়।
সীমান্তে ‘বাড়াবাড়ি’ করছে বিএসএফ
গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সীমান্তে বিএসএফের পুশ ইন ও তৎপরতা বেড়েছে। সীমান্ত হত্যাও বেড়েছে। এ নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই গত সপ্তাহে কোচবিহার জেলায় এক প্রশাসনিক বৈঠকে বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ বাড়াবাড়ি করছে। তারা ভারতীয় নাগরিকদের ধরে ধরে বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে।

কারাগারের ভেতরে ‘অদৃশ্য’ এক আর্থিক লেনদেনের জাল বিস্তৃত হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। বন্দীদের নানা সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা করতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে স্বজনেরা টাকা পাঠাচ্ছেন কারারক্ষীদের কাছে। বিনিময়ে বন্দীদের কারাগারেই মিলছে মোবাইল ফোন ব্যবহার, মাদকসেবন, বাইরের খাবার কিংবা ফাঁকিবাজির সুযোগ।
১৭ আগস্ট ২০২৫
‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতির জন্য সারা দেশে নতুন করে দুই হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। বিতর্ক এড়াতে এসব আবেদনের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্তে নেমেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক...
১ ঘণ্টা আগে
‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে আন্দোলনে অর্থ উপদেষ্টাকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৪ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করায় তাঁদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে (এটিএ) গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক আনিস আলমগীরের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি জানায়, গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে (এটিএ) গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক আনিস আলমগীরের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি জানায়, গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি ও আরও চারজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং অন্যান্য মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। এই অভিযোগের পর ঢাকার একটি মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষক রিহ্যাব মাহামুর বলেন, আনিস আলমগীরের গ্রেপ্তার একটি উদ্বেগজনক ধারাবাহিকতার অংশ, যেখানে নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে সমর্থন রয়েছে—এমন ধারণার ভিত্তিতে ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন করতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অপব্যবহার না করে অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত এসব অধিকার নিশ্চিত করা, বিশেষ করে নির্বাচনের প্রাক্কালে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদের (আইসিসিপিআর) অধীনে নিজেদের দায়বদ্ধতার সম্মান জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে আনিস আলমগীরকে মুক্তি দিতে হবে।
আদালতে শুনানির সময় আনিস আলমগীর বলেন, ‘আমি একজন সাংবাদিক। আমি ক্ষমতাসীনদের প্রশ্ন করি। গত দুই দশক ধরে আমি এই কাজই করছি। কারও কাছে মাথা নত করা আমার কাজ নয়।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মে মাসে অন্তর্বর্তী সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইন সংশোধন করে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। সংশোধনের পর থেকে দলটির প্রতি সমর্থনের অভিযোগে একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাও রয়েছেন।
অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারকে এমন পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, যেখানে রাজনৈতিক মতাদর্শ-নির্বিশেষে সবার মানবাধিকার সুরক্ষিত ও বিকশিত হয়। একটি মানবাধিকারসম্মত সমাজের জন্য অপরিহার্য স্বাধীনতাগুলো খর্ব করতে দমনমূলক আইনপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে।

বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে (এটিএ) গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক আনিস আলমগীরের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি জানায়, গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি ও আরও চারজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং অন্যান্য মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। এই অভিযোগের পর ঢাকার একটি মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষক রিহ্যাব মাহামুর বলেন, আনিস আলমগীরের গ্রেপ্তার একটি উদ্বেগজনক ধারাবাহিকতার অংশ, যেখানে নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে সমর্থন রয়েছে—এমন ধারণার ভিত্তিতে ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন করতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অপব্যবহার না করে অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত এসব অধিকার নিশ্চিত করা, বিশেষ করে নির্বাচনের প্রাক্কালে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদের (আইসিসিপিআর) অধীনে নিজেদের দায়বদ্ধতার সম্মান জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে আনিস আলমগীরকে মুক্তি দিতে হবে।
আদালতে শুনানির সময় আনিস আলমগীর বলেন, ‘আমি একজন সাংবাদিক। আমি ক্ষমতাসীনদের প্রশ্ন করি। গত দুই দশক ধরে আমি এই কাজই করছি। কারও কাছে মাথা নত করা আমার কাজ নয়।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মে মাসে অন্তর্বর্তী সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইন সংশোধন করে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। সংশোধনের পর থেকে দলটির প্রতি সমর্থনের অভিযোগে একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাও রয়েছেন।
অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারকে এমন পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, যেখানে রাজনৈতিক মতাদর্শ-নির্বিশেষে সবার মানবাধিকার সুরক্ষিত ও বিকশিত হয়। একটি মানবাধিকারসম্মত সমাজের জন্য অপরিহার্য স্বাধীনতাগুলো খর্ব করতে দমনমূলক আইনপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে।

কারাগারের ভেতরে ‘অদৃশ্য’ এক আর্থিক লেনদেনের জাল বিস্তৃত হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। বন্দীদের নানা সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা করতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে স্বজনেরা টাকা পাঠাচ্ছেন কারারক্ষীদের কাছে। বিনিময়ে বন্দীদের কারাগারেই মিলছে মোবাইল ফোন ব্যবহার, মাদকসেবন, বাইরের খাবার কিংবা ফাঁকিবাজির সুযোগ।
১৭ আগস্ট ২০২৫
‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতির জন্য সারা দেশে নতুন করে দুই হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। বিতর্ক এড়াতে এসব আবেদনের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্তে নেমেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক...
১ ঘণ্টা আগে
‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে আন্দোলনে অর্থ উপদেষ্টাকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৪ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করায় তাঁদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
১ ঘণ্টা আগে
দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার পর দুই দেশের সম্পর্কে আবার তিক্ততা তৈরি হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে