Ajker Patrika

এক দিনের খৈয়াছড়া ভ্রমণ

প্রকৃতির কোলে স্বর্গীয় অনুভব

রাব্বি মিয়া
প্রকৃতির কোলে স্বর্গীয় অনুভব

ঘড়ির কাঁটা রাত সাড়ে ১২টা ছুঁই ছুঁই। আমি আর তানিম শ্রীমঙ্গল স্টেশন থেকে ধীরে ধীরে গতি নিতে থাকা ট্রেনে উঠে পড়ি। গন্তব্য ফেনী। জানালার বাইরে ভেসে চলা চা-বাগান, অন্ধকারাচ্ছন্ন কুয়াশায় মোড়া সবুজ পথ আর ছায়াময় বনভূমি যেন আমাদের আগেই খৈয়াছড়ার গহিনে নিয়ে যেতে চাইছিল। এই নীরব প্রস্তুতিই বলে দিচ্ছিল, সামনে অপেক্ষা করছে এক দারুণ অ্যাডভেঞ্চার।

ভোর ৫টার দিকে আমরা সবাই ফেনী স্টেশনে নামলাম। স্টেশনে পা রাখতেই এক আলাদা অনুভূতি বুকজুড়ে বাজতে থাকে। সেই ভোরে নামাজসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করে আমরা গেলাম মহিপাল বাসস্ট্যান্ডের দিকে। ঢাকা থেকে আসা কয়েকজন

বন্ধু সেখানে আমাদের অপেক্ষায় রয়েছে। কুশল বিনিময়ের পর স্থানীয় রেস্টুরেন্টে নাশতা খেয়ে বাসে চড়ে যাত্রা শুরু করি মিরসরাইয়ের দিকে। এর ৪০ মিনিট পর মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারের আগে খৈয়াছড়া আইডিয়াল স্কুলের কাছে পৌঁছে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে ছুটলাম সেই স্বপ্নীল গন্তব্যের দিকে—খৈয়াছড়া জলপ্রপাত। আকার, আকৃতি ও গঠনশৈলীর দিক দিয়ে এই জলপ্রপাত নিঃসন্দেহে এখনো দেশের বড় ও মনোমুগ্ধকর ঝরনাগুলোর একটি। শহরের কোলাহল পেছনে ফেলে সবুজের নিবিড় আলিঙ্গনে হারিয়ে যাওয়ার এক তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পৌঁছালাম খৈয়াছড়ার প্রবেশপথে।

খৈয়াছড়া—নামটি শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে সবুজে ঘেরা পাহাড় আর ঝিরিঝিরি জলের অবিরাম ধারা। এখানে এলেই প্রাণ জুড়িয়ে যায় পাহাড়ি বাতাসে। চারপাশের নিস্তব্ধতা আর পাখির কলতান এক পবিত্রতম অনুভূতি এনে দিল। ঘন জঙ্গল, আকাশছোঁয়া বিশাল বৃক্ষরাজি আর অজস্র লতাপাতা মিলে এক সবুজ গালিচায় ঢেকে রেখেছে চারপাশ। আমরা ঝিরিপথের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। এটি কোনো মসৃণ পথ নয়। পুরোটাই পাথুরে আর আঁকাবাঁকা। কোথাও পিচ্ছিল কাদা, কোথাও হাঁটু পর্যন্ত শীতল জল, আবার কোথাও বিশাল পাথরের চাঁই ডিঙিয়ে যেতে হচ্ছিল।

অসংখ্য পশুপাখির দল গাছের ডালে ডালে চঞ্চলভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের ছোটাছুটি আর দুষ্টুমি দেখে মনটা আরও সতেজ হয়ে উঠল। পথের দুই ধারে বুনোফুলের সমারোহ আর অচেনা সব পাখির কিচিরমিচিরে এক দারুণ ছন্দ তৈরি হয়ে আছে চারদিকে। খৈয়াছড়া ঝরনার কাছে পৌঁছার আগে অতিক্রম করতে হয় নয়টি ধাপ। প্রতিটি ধাপেই প্রকৃতির এক নতুন ও সতেজ রূপের দেখা মেলে। ছোট ছোট ঝরনার ধারাগুলো যেন একেকটি শিল্পকর্ম। পাথরের গা বেয়ে নেমে আসা জলের শব্দ কানে এক মধুর সুরের মতো বাজছিল। এই ঝরনায় অনেকগুলো ধাপ আছে, যেগুলো দেশের আর কোনো ঝরনায় এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। তাই খৈয়াছড়াকে বলা হয় ‘ঝরনার রানি’।

ঝরনার কাছে যাওয়ার আগে অনেকগুলো দোকান আছে। ছোট একটা ব্যাগ ছাড়া বাকি সবকিছু আমরা দোকানির কাছে জমা রাখলাম। সেখানে আবার গোসলের ব্যবস্থা আছে। দোকানগুলোতে অগ্রিম খাবারের অর্ডার করে রেখে যেতে হয়, রেডিমেড খাবার পাওয়া যায় না। আমরা দুপুরের খাবার অর্ডার দিয়ে ঝিরিপথ, গিরিপথ ও পাহাড় বেয়ে ওঠার জন্য ২০ টাকা করে কয়েকটি ৫-৬ ফুট লম্বা চিকন বাঁশ কিনলাম। আরও কিনলাম পায়ে পরার জন্য ১০ টাকা দামের এক জোড়া হেলমেটজাতীয় চটি। এই চটি পরে পিচ্ছিল জায়গা সহজে পার হওয়া যায়। এই সামান্য প্রস্তুতিই আমাদের কঠিন পথের পাথেয় হয়ে উঠল।

কথিত আছে, শত বছর ধরে এই ঝরনা তার আপন গতিতে বয়ে চলেছে। মানুষের অগোচরেই সে তার সৌন্দর্য মেলে ধরেছিল। বাংলাদেশ সরকার এই অঞ্চলকে ইকো-ট্যুরিজম প্রকল্পের আওতায় এনে সংরক্ষণ ও পর্যটকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা করছে।

আমরা খৈয়াছড়া ঝরনার প্রথম ধাপটি পেরিয়ে ওপরে ওঠার জন্য প্রস্তুত হলাম।

শুধু লাঠির সাহায্যেই নয়, কোথাও কোথাও খাড়া পাথরের গা বেয়ে রশি ধরে ওপরে উঠতে হয়েছে। প্রতিটি ধাপ ছিল যেন এক একটি চ্যালেঞ্জ। মনে হলো, এখান থেকেই শুরু আমাদের অভিযাত্রার সত্যিকারের পরীক্ষা। ওপর থেকে নিচে তাকাতে রীতিমতো ভয় লেগেছে। মনে হয়েছে, যেন অতল গহ্বর হাতছানি দিচ্ছে! পাহাড়ের বুক চিরে সাদা ফেনার মতো জলধারা নেমে আসছে অবিরাম—সেই দৃশ্য চোখে না দেখলে বোঝা কঠিন।

অবশেষে যখন খৈয়াছড়ার শীর্ষে পৌঁছালাম, তখন শরীর পুরোপুরি ক্লান্ত। প্রতিটি পেশি যেন বিদ্রোহ করছে। তবে এতটুকু উচ্চতায় উঠে আসাটাই যেন এক বিশাল জয়, এক অসাধারণ প্রাপ্তি। চূড়ায় পৌঁছে কিছুক্ষণ শুয়ে বিশ্রাম নিলাম, প্রাণভরে ঝরনার স্ফটিক শীতল জলে গোসল করলাম।

প্রকৃতির রূপসুধা পান করে, প্রতিটি ধাপের সৌন্দর্য উপভোগ করে আবার যখন আমরা নিচে নামতে শুরু করলাম, ঘড়িতে তখন বেলা ১১টা বাজে। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলেছে আমাদের এই অভিযান। নামার পথও ছিল সমান চ্যালেঞ্জিং। এতটাই ক্লান্ত ছিলাম যে নিচের দোকানের বেঞ্চে বসার বদলে শরীর এলিয়ে শুয়েই পড়তে হলো! ক্লান্তির এমন অনুভূতি সচরাচর হয় না, কিন্তু সেই ক্লান্তিও যেন আনন্দের অংশ হয়ে গিয়েছিল।

3

অবশেষে হোটেলে ফিরে গোসল সেরে ক্লান্তি দূর করার চেষ্টা করা হলো। তারপর দুপুরের খাবার। এখানকার খাবারের মান বেশ ভালো। পেট ভরে খেয়ে, দীর্ঘক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বেলা দু্ইটার দিকে বের হলাম। এখন আর শরীরে ক্লান্তি নেই।

আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ছিল মনোমুগ্ধকর বাওয়াছড়া লেক। সেখানে নৌকা ভ্রমণ করে লেকের শান্ত জলে ভেসে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ছিল ভিন্ন রকম। সবুজ পাহাড়ের মাঝে লেকের স্বচ্ছ জল, আর তার ওপর ভেসে চলা নৌকা! যেন এ এক স্বপ্নের দেশ। সূর্যাস্তের আলোয় বাওয়াছড়ার সৌন্দর্য আরও মায়াবী হয়ে ওঠে।

এক দিনের এই ভ্রমণ স্মৃতিতে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলে গেল। প্রকৃতির মাঝে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার এই অভিজ্ঞতা সত্যিই অসাধারণ। এই নীরব সৌন্দর্য, এই স্নিগ্ধ বাতাস আর জলের অবিরাম গর্জন—সব মিলিয়ে এ এক অন্য জগৎ। যাঁরা অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসেন এবং প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে চান, তাঁদের জন্য খৈয়াছড়া হতে পারে আদর্শ গন্তব্য।

যেভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে উঠে নামতে হবে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারের কাছে খৈয়াছড়া আইডিয়াল স্কুলের সামনে। এটি সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার যাত্রা। বাসের চালক বা সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলে রাখলে তাঁরা নামিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন সঠিক জায়গায়। বড়তাকিয়া বাজার থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা ব্যাটারিচালিত রিকশা দিয়ে খৈয়াছড়া ঝরনার কাছে যাওয়া যায়।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম থেকে বাসে করে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারে গিয়ে সেখান থেকে খৈয়াছড়ায় যাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যেসব খাবারে আকর্ষণীয় হয় গায়ের ঘ্রাণ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

প্রত্যেক মানুষের একটি অনন্য ঘ্রাণ আছে, ঠিক যেমন আঙুলের ছাপ। আপনার ব্যক্তিত্ব, মেজাজ, স্বাস্থ্য—সবকিছুই এই ঘ্রাণকে প্রভাবিত করে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, রসুন, মাংস, এমনকি উপবাসও শরীরের ঘ্রাণ পরিবর্তন করে দিতে পারে। গায়ের গন্ধ কিন্তু উপেক্ষা করার বিষয় নয়। অন্যরা আপনাকে কীভাবে দেখছে, সেটিকে প্রভাবিত করে ঘ্রাণ।

স্কটল্যান্ডের স্টার্লিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ক্রেইগ রবার্টসের মতে, ‘আমাদের শরীরের ঘ্রাণ মূলত জিন, হরমোন, স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কারণগুলোর পাশাপাশি, আমাদের খাদ্যাভ্যাস একটি বড় ভূমিকা পালন করে।’

খাবার যেভাবে ঘ্রাণ তৈরি করে

নিউইয়র্কের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা বিষয়ক সহকারী অধ্যাপক লিনা বেগডাচের মতে, খাবার দুটি প্রধান পথে আমাদের দেহের ঘ্রাণকে প্রভাবিত করে: পেট এবং ত্বক।

পেট (গাট) : খাবার হজমের সময় অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় হয়। এই মিথস্ক্রিয়ায় কিছু উদ্বায়ী অণু বা গ্যাস নির্গত হয়, যা নিশ্বাসে দুর্গন্ধ তৈরি করে।

ত্বক: হজম হওয়া খাবারের রাসায়নিক উপাদান রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে ত্বকে পৌঁছায় এবং ঘামের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে। ঘামের সঙ্গে ত্বকের ব্যাকটেরিয়ার মিশ্রণে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। মনে রাখা ভালো, বিশুদ্ধ ঘামের কোনো ঘ্রাণ নেই।

বিভিন্ন খাবারে থাকা সালফার যৌগ এই দুর্গন্ধ তৈরির প্রধান হোতা। এই যৌগগুলো অত্যন্ত উদ্বায়ী হওয়ায় সহজেই বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।

রসুন বাড়ে আকর্ষণ

ব্রকোলি, বাঁধাকপি বা পেঁয়াজ-রসুনের মতো সালফারযুক্ত খাবার হজমের পর ডাইঅ্যালাইল ডিসালফাইড এবং অ্যালিল মিথাইল সালফাইডের মতো দুর্গন্ধযুক্ত যৌগে ভেঙে যায়।

তবে গবেষকেরা একটি অদ্ভুত তথ্য পেয়েছেন। চেক রিপাবলিকের চার্লস ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী জান হ্যাভলিচেকের গবেষণায় দেখা গেছে, রসুন নিশ্বাসের দুর্গন্ধ তৈরি করলেও, এটি পুরুষের বগলের ঘামের গন্ধকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে! এই পরীক্ষায়, ঘাম সংগ্রহের জন্য পুরুষদের ১২ ঘণ্টা ধরে বগলে প্যাড পরে থাকতে বলা হয়েছিল। যে পুরুষেরা বেশি রসুন খেয়েছিলেন, নারীদের কাছে তাদের ঘামের ঘ্রাণ ছিল ‘খুব সেক্সি’! বিজ্ঞানীরা মনে করেন, রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাগুণ স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, যার প্রতিফলন শরীরের ঘ্রাণে দেখা যায়।

ফল ও সবজি বনাম মাংস ও কার্বোহাইড্রেট

ফল ও সবজিতে আকর্ষণীয় সুঘ্রাণ

২০১৭ সালের অস্ট্রেলিয়ায় একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে পুরুষেরা বেশি ফল ও সবজি খান, তাদের শরীর থেকে ফলের মতো, মিষ্টি এবং ফুলের মতো সুঘ্রাণ আসে। এ ছাড়া, গাজর বা টমেটোর মতো সবজি থেকে পাওয়া ক্যারোটিনয়েড নামক অণু ত্বকের রঙ সামান্য হলুদ করে, যা দেখতেও আকর্ষণীয় মনে হয়।

অ্যাসপারাগাস ও অদ্ভুত ঘ্রাণ:

অ্যাসপারাগাস উদ্ভিদে অ্যাসপারাগাসিক অ্যাসিড নামক একটি যৌগ থাকে। এটি হজমের পর মিথেনেথিয়ল এবং ডাইমিথাইল সালফাইড-এর মতো সালফার যৌগ নির্গত করে, যা প্রস্রাব এবং ঘামে এক ধরনের গন্ধ তৈরি করে। এই ঘ্রাণ পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় স্থায়ী হতে পারে। মজার বিষয় হলো, কারণ মধ্যে এই ঘ্রাণ তৈরি হয় বা কারও নাকে খারাপ লাগে, তা নিয়ে গবেষণায় ব্যাপক ভিন্নতা দেখা গেছে (১৯৫০-এর দশকে <৫০% এবং ২০১০ সালে >৯০% মানুষের মধ্যে ঘ্রাণ তৈরি হওয়ার প্রমাণ মিলেছিল)।

মাংস ও মাছে কম আকর্ষণীয় ঘ্রাণ

হ্যাভলিচেকের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে পুরুষেরা মাংসবিহীন বা নিরামিষ খাবার খান, তাদের ঘামের ঘ্রাণ মাংসভোজি পুরুষদের তুলনায় বেশি মনোরম ও কম তীব্র হয়। মাংসের প্রোটিন ভেঙে যে যৌগগুলো তৈরি হয়, তা ঘ্রাণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

মাছ ও শিমের মতো খাবারে থাকা ট্রাইমিথাইলঅ্যামিন নামক তীব্র ঘ্রাণযুক্ত যৌগও দেহের দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। বিরল ক্ষেত্রে, শরীরের এই যৌগটিকে ঘ্রাণহীন যৌগে রূপান্তর করার ক্ষমতা না থাকলে ট্রাইমিথাইলঅ্যামিনুরিয়া বা ‘মাছের ঘ্রাণ সিনড্রোম’ (আঁশটে গন্ধ) দেখা যায়।

কার্বোহাইড্রেট:

গবেষণায় দেখা গেছে, কার্বোহাইড্রেট-নির্ভর খাদ্য (যেমন অতিরিক্ত ভাত বা রুটি) সবচেয়ে কম আকর্ষণীয় ঘ্রাণ তৈরি করে।

অ্যালকোহল, কফি ও উপবাসের প্রভাব

অ্যালকোহল (মদ) : লিভারে অ্যালকোহল প্রক্রিয়াকরণের সময় অ্যাসিটালডিহাইড নামক একটি বিষাক্ত ও উদ্বায়ী যৌগ নির্গত হয়, যার ঘ্রাণ পুরোনো মদের মতো তীব্র। এক গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু মুখের ঘ্রাণ শুঁকেই পুলিশ অফিসাররা ৬০ থেকে ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রে বলে দিতে পারেন কেউ মদ্যপান করেছে কিনা।

ক্যাফেইন (কফি/চা) : কফি ও চায়ের ক্যাফেইন অ্যাপোক্রিন গ্রন্থিগুলোকে উদ্দীপিত করে ঘাম বাড়াতে পারে, যা ব্যাকটেরিয়ার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে কটূগন্ধকে তীব্র করে।

উপবাস ও ঘ্রাণের বৈপরীত্য: হ্যাভলিচেক একটি ব্যতিক্রম গবেষণা করেছিলেন, যেখানে নারীরা ৪৮ ঘণ্টা উপবাস করেন। এই উপবাসী নারীদের ঘাম, যারা সাধারণ খাবার খেয়েছিলেন তাদের তুলনায় বেশি আকর্ষণীয় ছিল। তবে এই তথ্যের বিপরীতে, সুইজারল্যান্ডে ২০১৮ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, উপবাসের ফলে নিশ্বাসের দুর্গন্ধ বেড়ে যায়।

দেহের ঘ্রাণের ওপর খাদ্যের প্রভাব অত্যন্ত জটিল এবং বহু কারণে পরিবর্তনশীল—এ বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, সুঘ্রাণের জন্য খাদ্যাভ্যাসে ফল ও সবজির পরিমাণ বাড়ানো একটি কার্যকরী উপায়।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দাম্পত্য সম্পর্কে ঘৃণার অনুপ্রবেশ হলে নতুন পথ খুঁজবেন যেভাবে

অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৩
রোমান্টিক দাম্পত্য সম্পর্কে ঘৃণার উৎপত্তি হয় বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হলে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি
রোমান্টিক দাম্পত্য সম্পর্কে ঘৃণার উৎপত্তি হয় বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হলে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

রোমান্টিক দাম্পত্য সম্পর্কে ঘৃণার উৎপত্তি হয় বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হলে। রোমান্টিক এই সম্পর্কে ঘৃণা ও ঈর্ষার অনুপ্রবেশ ঘটলে তার বহিঃপ্রকাশ হয় রাগ ও ভয়ের অনুভূতির মধ্য দিয়ে। একটু খোলাসা করে বলা যাক, দম্পতিদের মধ্য়ে যখন রোমান্টিক সম্পর্ক তৈরি হয়, তখন দুজনের মধ্যকার মিলগুলো সম্পর্ককে ইতিবাচকভাবে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। আদর্শগত মিল, নৈতিকতার মিল এবং একই ধরনের জিনিস পছন্দ হলে রোমান্টিক সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদি হয়; বিশেষ করে আদর্শগত মিল আচরণে প্রকাশিত হলে পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ আরও বাড়ে। অন্যদিকে দাম্পত্য সম্পর্কে যদি একে অপরের প্রতি ঘৃণা তৈরি হয়, তাহলে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়।

ব্যক্তির স্বাস্থ্যে ঘৃণার প্রভাব

শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক—স্বাস্থ্যের চারটি ভাগ রয়েছে। ঘৃণা নামের আবেগটি স্বাস্থ্যের এই চারটি ভাগের ওপর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। গবেষণা বলে, ঘৃণা করা মানে আপনার মস্তিষ্কের ভেতরে বিনা ভাড়ায় দীর্ঘমেয়াদি ভাড়াটে থাকতে দেওয়া।

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের চর্চা করুন। ছবি: পেক্সেলস
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের চর্চা করুন। ছবি: পেক্সেলস

শারীরিক প্রভাব

অতীত জীবনে ঘটে যাওয়া আঘাত, বিশ্বাসঘাতকতা ইত্যাদি থেকে সৃষ্ট ঘৃণা আমাদের মনে বিশ্বাসহীনতার জন্ম দেয়। এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে শারীরিকভাবে। এতে ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। দীর্ঘমেয়াদি ঘৃণার অনুভূতি ওজন বৃদ্ধি, নিদ্রাহীনতা, দুশ্চিন্তা, বিষণ্নতাসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগের জন্ম দিতে পারে।

গবেষণা বলছে, দাম্পত্য দ্বন্দ্বে স্ত্রীরা স্বামীদের চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি এবং অধিকতর শারীরবৃত্তীয় প্রভাবের ভেতর দিয়ে যান; বিশেষ করে যেসব নারী দীর্ঘদিন ধরে তিক্ত দাম্পত্যের মধ্যে জীবন যাপন করেছেন, দেখা গেছে তাঁদের কর্টিসল ও অ্যাড্রেনোকোর্টিকোট্রপিক হরমোনের মাত্রার পরিবর্তন স্বামীদের তুলনায় ভিন্ন। যদিও স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার ওপর দাম্পত্য কলহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। শুধু তা-ই নয়, দেখা গেছে, দৈহিক ক্ষত নিরাময়ের গতিও দাম্পত্য বিবাদের কারণে শ্লথ হয়ে যায়। অন্যদিকে তৃপ্তিকর দাম্পত্যজীবনের সঙ্গে সুস্থ রক্তচাপের সুসম্পর্ক আছে। কাজেই অন্যের জন্য নয়, ব্যক্তির নিজের প্রয়োজনে নিজের দাম্পত্য সম্পর্ক স্বাস্থ্যকর রাখা প্রয়োজন। আর একান্তই যদি দাম্পত্য দ্বন্দ্ব নিরসন করতে পারা না যায়, প্রয়োজনে দাম্পত্য বিচ্ছেদ হতে পারে। কিন্তু বিষাক্ত সম্পর্ক নিয়ে এক ছাদের নিচে না থাকা ভালো।

মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব

কাউকে তীব্র ঘৃণার ফলে ব্যক্তির মধ্যে দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা তৈরি হয়। ফলে বারবার একই চিন্তা ঘুরেফিরে আসে। তখন বিভ্রান্তিতে ভোগেন আক্রান্ত ব্যক্তি। একে প্যারানয়া বলা যায়। অর্থাৎ এটা থেকে ব্যক্তিত্বের ব্যাধি বা অসুখ পর্যন্ত হতে পারে। পেশাজীবী নারীদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ঘরে-বাইরে দ্বিমুখী চাপ সামলাতে গিয়ে, যাঁদের সন্তান আছে, তাঁদের শরীরে কর্টিসল হরমোন নিঃসরণের মাত্রা বেশি হয়ে যায়, যা মানসিক চাপের নিয়ামক।

সামাজিক স্বাস্থ্যে প্রভাব

ইতিমধ্যে ঘৃণার কারণে ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য আহত হলে ধীরে ধীরে সামাজিক যোগাযোগগুলোও কমে আসতে থাকে। ফলে অদৃশ্য চাপ তৈরি হয়। গবেষণা বলছে, যাদের তীব্র ঘৃণার অনুভূতি থাকে, তাদের মৃত্যুহার বেশি। দাম্পত্যে সুসম্পর্ক সামাজিক স্বাস্থ্যকে অবচেতনভাবে প্রভাবিত করে।

আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যে প্রভাব

আধ্যাত্মিকতা আর ধর্ম এক জিনিস নয়। আধ্যাত্মিকতার সম্পর্ক তিনটি জায়গায়। ব্যক্তির নিজের সঙ্গে নিজের কী সম্পর্ক? নিজের সঙ্গে অন্যদের কী সম্পর্ক? নিজের সঙ্গে ওই নির্দিষ্ট মুহূর্ত বা পরিস্থিতির কী সম্পর্ক? ঘৃণা যদি কোথাও বেশি ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে, সেটা আমাদের আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যে।

ঘৃণা যখন স্বাস্থ্যের সব কটি ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে, বৈবাহিক সম্পর্ক ঘৃণার কারণে সব দিক থেকে নেতিবাচক আগুনে পুড়ে যায়, স্বাভাবিক সম্পর্ক তখন টিকিয়ে রাখা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে।

আনন্দ পান এমন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
আনন্দ পান এমন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

কেন ঘৃণার কারণে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা কঠিন

যেকোনো আন্তসম্পর্ক শূন্যতার ওপর ভর দিয়ে চলতে পারে না। দাম্পত্য সম্পর্ক প্রতিনিয়ত বৃহত্তর পরিবার, বন্ধু, প্রতিবেশী, সহকর্মী ইত্যাদি দ্বারা প্রভাবিত হয়। এখান থেকে প্রচুর নেতিবাচক উপাদান সম্পর্ককে প্রভাবিত করে। এককথায় বলা যায়, দাম্পত্যে যদি একজন অন্যজনের মাধ্যমে অবহেলিত অনুভব করে, তবে যে অবহেলিত অনুভব করছে, তার মধ্যে ঘৃণার জন্ম হবে।

মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা থেকে ঘৃণাকে সাত ভাগ করা হয়েছে—গ্রহণযোগ্য ঘৃণা, উত্তপ্ত ঘৃণা, শীতল ঘৃণা, টগবগিয়ে ফুটন্ত/জ্বলন্ত ঘৃণা, সর্বগ্রাসী ঘৃণা, ক্ষিপ্ত ঘৃণা, তিল তিল করে পুঞ্জীভূত ঘৃণা। দাম্পত্যে সবচেয়ে বেশি কাজ করে রোমান্টিক ঘৃণা। যেটা রাগ ও ভয়ের সঙ্গে অবচেতন মনে সংযুক্ত হয়। ভালোবাসা আর ঘৃণা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। গবেষণায় উঠে এসেছে, ভালোবাসা যত গভীর, তার ব্যত্যয় ঘটলে তত তীব্র ঘৃণা মানুষের মনে তৈরি হয়।

ঘৃণা থেকে বের হতে করণীয়

ঘটনাটা কিন্তু ঘটে গেছে। ঘটনাকে মুছে দেওয়া সম্ভব নয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে যে অনুভূতি হয়েছে, তা বিবেচনা করে যদি ক্ষমা করতে চাই, সে জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে। জানতে হবে, ক্ষমা করতে পারাটা একটা দক্ষতা এবং এটা একটা প্রক্রিয়া।

ঘটনা পর্যালোচনা করে, তার প্রভাব জেনে-বুঝে গ্রহণ করা, কী কারণে কী করছি—এ যুক্তিগুলো যেন নিজের কাছে পরিষ্কার থাকে। ঘৃণা নিয়ে একটি চমৎকার উদ্ধৃতি আছে, ‘আপনি যেদিন আর কাউকে ঘৃণা করবেন না, সেদিন নিজেকে ভালোবাসতে শিখবেন।’ ঘৃণামুক্ত হওয়া প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে শিখতে হয়। কাজেই নিজেকে ভালো রাখার জন্য ঘৃণা থেকে বের হতে হবে।

যে অভ্যাসগুলো নিয়মিত চর্চা করা জরুরি

মার্টিন লুথার কিং একবার বলেছিলেন, ‘ঘৃণা বোঝা হিসেবে এতই বড় যে তা বহন করা যায় না।’ কারণ, আমরা জানি তখন বিয়ে, অন্তরঙ্গতা, বন্ধুত্ব—কিছুই কাজ করে না। সোজা সম্পর্কটা গড়িয়ে নিচে হারিয়ে যায়। ঘৃণার এই বোঝা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু অভ্যাস চর্চা করতে হবে—

  • নিজেকে প্রশ্ন করুন, কেন? কেন এই ঘটনা আমার সঙ্গে ঘটল? এ ঘটনা ঘটার পেছনে আমার অবদান কী ছিল?
  • আনন্দ পান এমন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। সেটা পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন থেকে যোগব্যায়াম ক্লাস পর্যন্ত—যেকোনো কিছুই হতে পারে।
  • কখনো কখনো রাগ আমাদের দৃষ্টি ঘোলা করে দেয়। কাজেই নিজের মনোভাব বদলাতে কী করতে পারেন, ঠান্ডা মাথায় সেটা ভেবে দেখুন।
  • প্রতিটি জিনিসেরই কিছু ইতিবাচক এবং কিছু নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আছে। যে ঘটনাটি ঘৃণা উৎপাদন করছে, সেটির ইতিবাচক প্রবাহ কী হতে পারে, খুঁজতে থাকুন।
  • মন না চাইলেও কখনো কখনো আনন্দ খুঁজুন এবং নিজেকে তৃপ্তি দেওয়ার চেষ্টা করুন। এভাবে কোনো না কোনো সময় মন সত্যি আনন্দ খুঁজে নেবে।
  • জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের চর্চা করুন।
  • মনের ভাব চিঠিতে লিখে প্রকাশ করুন। যদি প্রয়োজন মনে করেন, তবে চিঠি পাঠাবেন। না হলে গোপন রাখবেন। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার মনের ভাব মৌখিক না হলেও অন্তত লিখে প্রকাশ করছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত স্বস্তি পাবেন না।
  • ক্ষমা করতে শিখুন। ক্ষমা করতে শেখা প্রয়োজন অন্যের জন্য নয়, বরং নিজের জন্য।

লেখক: চিকিৎসক, কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বিডি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সবুজ, লাল নাকি হলুদ, কোন ক্যাপসিকাম বেশি পুষ্টিকর

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
প্রতিদিন বিভিন্ন রঙের ক্যাপসিকাম খেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, চোখ ও ত্বকের স্বাস্থ্য, হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষা এবং কোষের সঠিক কার্যক্রম নিশ্চিত করা সম্ভব। ছবি: ফ্রিপিক
প্রতিদিন বিভিন্ন রঙের ক্যাপসিকাম খেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, চোখ ও ত্বকের স্বাস্থ্য, হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষা এবং কোষের সঠিক কার্যক্রম নিশ্চিত করা সম্ভব। ছবি: ফ্রিপিক

ক্যাপসিকাম শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর। কম ক্যালরিযুক্ত হলেও এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, বি৬ পটাশিয়াম, ফোলেট এবং নানা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ফলে এটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক ও দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়।

সালাদে কাঁচা বা হালকা ভাজা ক্যাপসিকাম প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা ভালো। বাজারে প্রধানত তিন রঙের পাওয়া যায় সবুজ, লাল এবং হলুদ। যদিও সবই পুষ্টিকর, কিন্তু প্রতিটি রঙের নিজস্ব গুণাগুণ রয়েছে।

সবুজ ক্যাপসিকাম ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ছবি: ফ্রিপিক
সবুজ ক্যাপসিকাম ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ছবি: ফ্রিপিক

সবুজ ক্যাপসিকামের পুষ্টিগুণ

১০০ গ্রাম কাঁচা সবুজ ক্যাপসিকামে থাকে

পানি: ৯৩.৮ গ্রাম

ক্যালরি: ২০

প্রোটিন: ০.৮৬ গ্রাম

কার্বোহাইড্রেট: ৪.৬ গ্রাম

ফাইবার: ১.৭ গ্রাম

ভিটামিন সি: ৮০.৪ মিলিগ্রাম

ভিটামিন এ: দৈনিক প্রয়োজনের ২ শতাংশ

ভিটামিন কে, ফোলেট ও পটাশিয়ামও থাকে ভালো পরিমাণে।

সবুজ ক্যাপসিকামের উপকারিতা

সবুজ ক্যাপসিকাম ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ত্বকের জন্য কোলাজেন তৈরি করতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন ‘কে’ হাড় ও হৃদ্‌যন্ত্রের জন্য উপকারী। ভিটামিন ‘এ’ চোখের স্বাস্থ্য ও ত্বকের জন্য প্রয়োজন। এ ছাড়া ফোলেট কোষ বিভাজন ও ডিএনএ গঠনে সহায়তা করে, আর পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লুটিন ও জিয়াজ্যানথিন চোখকে সুরক্ষা দেয় এবং বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধে সাহায্য করে। ফাইবার থাকায় এটি হজমে সাহায্য করে এবং পেটের সমস্যা যেমন কোলোন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।

লাল ক্যাপসিকামের পুষ্টিগুণ

লাল ক্যাপসিকাম সাধারণত সবচেয়ে পুষ্টিকর। ছবি: ফ্রিপিক
লাল ক্যাপসিকাম সাধারণত সবচেয়ে পুষ্টিকর। ছবি: ফ্রিপিক

১০০ গ্রাম লাল ক্যাপসিকামে থাকে—

পানি: ৯২.২ গ্রাম

ক্যালরি: ২৬

প্রোটিন: ০.৯৯ গ্রাম

কার্বোহাইড্রেট: ৬.০৩ গ্রাম

ফাইবার: ২.১ গ্রাম

ভিটামিন সি: ১২৮ মিলিগ্রাম

এ ছাড়া থাকে ভিটামিন এ, বি৬, পটাশিয়াম, ফোলেট।

লাল ক্যাপসিকামের উপকারিতা

লাল ক্যাপসিকাম পুরোপুরি পাকা এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ আছে, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, কোলাজেন তৈরি করে এবং ত্বককে স্বাস্থ্যবান রাখে। ভিটামিন এ ও বি৬ মস্তিষ্ক ও চোখের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এতে থাকা লাইকোপিন ও বিটা-ক্যারোটিন প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন হৃদ্‌রোগ, ক্যানসার ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। লাল পেপারের মিষ্টি স্বাদ সালাদ, স্যান্ডউইচে ব্যবহার করা যায়।

হলুদ ক্যাপসিকামের পুষ্টিগুণ

ভিটামিন ‘সি’ সবচেয়ে বেশি থাকে হলুদ ক্যাপসিকামে। ছবি: ফ্রিপিক
ভিটামিন ‘সি’ সবচেয়ে বেশি থাকে হলুদ ক্যাপসিকামে। ছবি: ফ্রিপিক

প্রতি ১০০ গ্রাম হলুদ ক্যাপসিকামে থাকে—

পানি: ৯২ গ্রাম

ক্যালরি: ২৭

প্রোটিন: ১ গ্রাম

কার্বোহাইড্রেট: ৬.৩ গ্রাম

ফাইবার: ০.৯ গ্রাম

ভিটামিন সি: ১৮৪ মিলিগ্রাম

এ ছাড়া থাকে ভিটামিন এ, বি৬, পটাশিয়াম, ফোলেট।

হলুদ ক্যাপসিকামের উপকারিতা

ভিটামিন ‘সি’ সবচেয়ে বেশি থাকে হলুদ ক্যাপসিকামে। এটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, কোষকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং প্রদাহ কমায়। ভিটামিন ‘এ’ চোখের জন্য, বি৬ মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয়। পটাশিয়াম ও ফোলেট হৃদ্‌যন্ত্র ও কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রমে সহায়ক।

ফাইবার থাকায় হজম ঠিক রাখে, পেটের সমস্যা কমায় এবং কম ক্যালরিযুক্ত হওয়ায় ডায়েটের জন্য উপযুক্ত। হলুদ ক্যাপসিকাম সহজে খাওয়া যায়।

কোনটি বেছে নেবেন?

সব রঙের ক্যাপসিকামই পুষ্টিকর, তবে—

লাল ক্যাপসিকাম সাধারণত সবচেয়ে পুষ্টিকর। পুরোপুরি পাকা হওয়ায় এতে ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে।

হলুদ ক্যাপসিকাম ভিটামিন ‘সি’র দিক দিয়ে সবচেয়ে সমৃদ্ধ। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দারুণ।

সবুজ ক্যাপসিকাম হালকা স্বাদের পাশাপাশি চোখ, হাড় ও হজমের জন্য উপকারী।

সারা দিনে বিভিন্ন রঙের ক্যাপসিকাম খেলে শরীর নানা ধরনের ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পায়। প্রতিদিনই এক বা একাধিক রঙের ক্যাপসিকাম খাওয়া স্বাস্থ্যকর। ডা. আর্চনা বাত্রা, ভারত

খাওয়ার সহজ উপায়

  • কাঁচা স্লাইস করে খাওয়া
  • টুকরো করে সালাদে মেশানো
  • হালকা ভেজে খাওয়া

সবুজ, লাল বা হলুদ তিন রঙের ক্যাপসিকাম পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। প্রতিটি রঙের নিজস্ব গুণাগুণ রয়েছে, তবে লাল ক্যাপসিকাম সাধারণত সবচেয়ে পুষ্টিকর, হলুদ রঙে ভিটামিন ‘সি’র পরিমাণ বেশি। প্রতিদিন বিভিন্ন রঙের ক্যাপসিকাম খেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, চোখ ও ত্বকের স্বাস্থ্য, হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষা এবং কোষের সঠিক কার্যক্রম নিশ্চিত করা সম্ভব।

সূত্র: হেলথশট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৩
আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

মেষ

আজ আপনার তেজ এবং উদ্দীপনা আকাশ ছুঁয়েছে। সমস্যা হলো, এই পুরো শক্তি ভুল জায়গায় ব্যবহার করতে পারেন। হয়তো চা বানাতে গিয়ে ভুল করে মাইক্রোওয়েভে ডিম সেদ্ধ করার চেষ্টা করবেন, অথবা অফিসে সহকর্মীর কলম চুরি হওয়া নিয়ে একটি রীতিমতো গোয়েন্দা অভিযান শুরু করে দেবেন। আপনার জন্য আজকের পরামর্শ: ‘শক্তিকে কাজে লাগান, তবে মাথাটাও লাগান!’ রাস্তায় হাঁটার সময় কোনো পাগলের সঙ্গে তর্ক করতে যাবেন না। সে আজ যুক্তিতে আপনাকে হারিয়ে দেবে।

বৃষ

আজকের দিনটি আপনার জন্য খাদ্য ও বিলাসের এক মহামিলন। প্রধান আর্থিক সিদ্ধান্ত হবে: ‘অতিরিক্ত একটি চিজ বার্গার অর্ডার করব, নাকি করব না?’ গ্রহ-নক্ষত্র বলছে, দ্বিধা করবেন না, সর্বদা ‘হ্যাঁ, অবশ্যই করব’ বলেন। তবে মনে রাখবেন, আলস্য আজ আপনার সেরা বন্ধু হতে পারে। আপনি এমন কঠিন কাজগুলো এড়িয়ে যাবেন, যা শোয়ার জায়গা থেকে দেড় মিটারের বেশি দূরে। যদি কোনো কাজ চেয়ার ছেড়ে উঠতে বাধ্য করে, তবে কাজটি আগামীকাল করার কথা ভাবুন।

মিথুন

আপনার ভেতরের দুটি সত্তা আজ চূড়ান্ত দ্বন্দ্বে লিপ্ত। একজন চাইবে একটি নতুন দক্ষতা শিখতে (যেমন চীনা ভাষা বা পান সাজানো), আর অন্যজন চাইবে শুধু বিছানায় শুয়ে ইন্টারনেট স্ক্রল করতে। দিনটি কাটবে মূলত নিজের সঙ্গেই তুমুল ঝগড়া করে। আপনি আয়নার সামনে গিয়ে নিজেকে বলবেন, ‘তুমি আমার জীবন নষ্ট করে দিচ্ছ!’ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একটি কয়েন টস করুন। এটি অন্তত আপনার একটি সত্তাকে কিছুক্ষণের জন্য চুপ করিয়ে দেবে। আজ কোনোভাবেই আয়নার দিকে তাকিয়ে বেশি হাসবেন না। নিজের হাসির প্রতিক্রিয়া দেখে আপনি আরও বিভ্রান্ত হতে পারেন।

কর্কট

আজ আপনার সংবেদনশীলতার মিটার ফুল স্কেলে! আপনি ডিটারজেন্টের বিজ্ঞাপনে আবেগের দৃশ্য দেখে কেঁদে ফেলতে পারেন অথবা সামান্য ট্রাফিকের শব্দে জীবন নিয়ে গভীর দার্শনিক চিন্তায় ডুবে যেতে পারেন। মনে হবে যেন সবাই আপনার শত্রু এবং আপনাকে আঘাত করার জন্যই পৃথিবীতে এসেছে। ফলস্বরূপ আপনি হয়তো একটি বিশাল বালিশের দুর্গ বানিয়ে তার ভেতরে লুকিয়ে থাকবেন। জরুরি অবস্থার জন্য আপনার বালিশের দুর্গে স্ন্যাকস এবং চকলেট মজুত রাখুন। আগে নিজে বাঁচুন, পরে পৃথিবী সামলানো যাবে। বালিশের দুর্গ থেকে না বেরিয়েও সফলভাবে টিভি রিমোট খুঁজে বের করাই হবে আজ দিনের সেরা অর্জন। মনে রাখবেন, ভাগ্য বলুন বা রাশিফল, সবচেয়ে বড় শক্তি হলো আপনার হাসির ক্ষমতা! উপভোগ করুন!

সিংহ

আজকের দিনটি আপনার জন্য স্পটলাইট! সমস্যা হলো, স্পটলাইটটা আজ আপনার দিকে ঘুরে আলমারি বা বাথরুমের ভুল জায়গায় ফোকাস করবে। আপনি চাইবেন সবাই আপনার প্রশংসা করুক, কিন্তু তারা হয়তো শুধু দেখবে আপনার জুতার তলায় লেগে থাকা চুইংগাম। আজকে ট্রাফিক জ্যাম মেজাজ খারাপ করবে। নিজেকে একটু আড়াল করুন। আজকের দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন।

কন্যা

পারফেকশন আপনার রক্তে। আপনি হয়তো পুরো দিনটা কাটাবেন টুথব্রাশের ব্রিসলগুলো ঠিকঠাক সারিতে আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে। যদি জীবনের কোনো কিছু আজ ০.০০১ শতাংশও এদিক-ওদিক হয়, তবে হয়তো পৃথিবী উল্টে দেবেন। মস্তিষ্কে আজ একটি চেকলিস্ট আছে, যা শেষ হওয়া অসম্ভব। বুক ভরে শ্বাস নিন। পৃথিবীটা এলোমেলো, বিশৃঙ্খল এবং এটিই তার সৌন্দর্য। একটি মশা আজ ঠিক আপনার টেবিলে ল্যান্ড করলেও তাকে মাফ করে দিন। এমন একটি জিনিস খুঁজে বের করুন, যা ত্রুটিপূর্ণ এবং সেটিকে সানন্দে উপেক্ষা করুন—এটিই আপনার জন্য আজকের পরামর্শ।

তুলা

আজ আপনার জীবন হলো একটি ভারসাম্যপূর্ণ দাঁড়িপাল্লা, যার একদিকে আছে সব কাজ ফেলে রেখে সিরিজ দেখা, আর অন্যদিকে আছে ‘আমার তো অনেক কাজ’— এই অপরাধবোধ। দিনের শেষে দেখা যাবে, দুটিই সমান ভারী এবং কাজ কিছুই হয়নি। সিদ্ধান্ত নিতে এতটাই বেশি সময় নেবেন যে, প্রিয় খাবারটা ততক্ষণে ঠান্ডা হয়ে যাবে। আজ যা ভালো লাগে, তা-ই করুন। কাউকে খুশি করতে যাবেন না। কারণ, তাতে ব্যালেন্স স্কেল বিগড়ে যাবে। অন্য কাউকে আপনার হয়ে রাতের খাবার অর্ডার করতে দিন—এটা সব দিক থেকে ভালো হবে।

বৃশ্চিক

আজ মস্তিষ্ক একটু বেশি সক্রিয় থাকবে, চিন্তাভাবনায় খুব উগ্র থাকবেন, সম্ভবত একটি সরল প্রশ্নকেও গভীর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বলে মনে করবেন। যদি কেউ আপনাকে বলে, ‘আজ আবহাওয়া ভালো’, আপনি সঙ্গে সঙ্গে ভাববেন, ‘হঠাৎ আমার সঙ্গে এই কথা কেন, নিশ্চয়ই এর পেছনে অন্য উদ্দেশ্য থাকতে পারে!’ আপনার ভেতরের গোয়েন্দা আজ ওভারটাইম ডিউটি করবে। কোনো ইমোজি ব্যবহার করে মেসেজ পাঠাবেন না। এর ফল মারাত্মক হতে পারে। কারণ, প্রতিটি ইমোজির গভীর অর্থ খুঁজতে গিয়ে গুবলেট পাকিয়ে ফেলতে পারেন। নিজের ফোনটা আজ বারবার চেক করা বন্ধ করুন। কারণ, আপনাকে কেউ ফলো করছে না।

ধনু

ভ্রমণের নেশা আজ পেয়ে বসবে। আপনি হয়তো ড্রয়িংরুম থেকেই এক ঘণ্টার মধ্যে গুগল ম্যাপে পৃথিবীর সব কটি দেশের রাজধানী দেখে ফেলবেন। অ্যাডভেঞ্চার আপনার জন্য অপেক্ষা করছে, তবে তা হয়তো রান্নাঘরের ফ্রিজের পেছনে লুকিয়ে থাকা পুরোনো জ্যামের বোতল খুঁজে বের করার মতো ছোটখাটো কিছু হতে পারে। আপনি যে মহান আবিষ্কারটি আজ করতে চলেছেন, তা হয়তো হলো—‘বিছানার নিচে হারিয়ে যাওয়া চাবিটা আসলে আপনার হাতেই ছিল।’ অন্তত একটি দেশের নাম ভুল উচ্চারণ করুন, সেটা নিয়ে আবার গর্বও করুন। তাতে অন্তত অপমানিত হওয়ার অমোঘ নিয়তি থাকার পরও অল্পের ওপর দিয়ে যাবে।

মকর

দায়িত্বের বোঝা আজ কাঁধে হিমালয়ের মতো চেপে বসবে। এতটাই সিরিয়াস থাকবেন যে, কেউ যদি একটি জোকও বলে, আপনি সেটার নৈতিকতা ও কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা শুরু করে দেবেন। মনে হবে আপনি একাই গোটা পৃথিবীকে চালাচ্ছেন, এমনকি যদি দিনের বেশির ভাগ সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় অর্থহীন পোস্ট দেখেও কাটান। আজ অন্তত একবার কোনো কারণ ছাড়াই হাসুন। এটা খুব কঠিন হবে, কিন্তু চেষ্টা করুন। আজই অবসর গ্রহণের পরিকল্পনা করুন, যদিও আপনি সবে ক্যারিয়ার শুরু করেছেন।

কুম্ভ

আজ অন্যদের থেকে এক হাজার বছর এগিয়ে আছেন। আপনার চিন্তাগুলো এতই মৌলিক যে কেউ সেগুলো বুঝতেই পারবে না। যখন সবাই ক্রিকেট নিয়ে কথা বলছে, আপনি তখন হয়তো মঙ্গল গ্রহে জলবায়ু পরিবর্তনের সমাধান নিয়ে গভীরভাবে মগ্ন। ফলস্বরূপ নিজেকে সমাজের ভুল জায়গায় থাকা একজন অ্যালিয়েন বলে মনে করবেন। আজ মানুষের সঙ্গে এমন একটি বিষয়ে কথা বলুন, যা গত ১০ বছরে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আজ আপনার মোজা জোড়া উল্টো করে পরুন। এটা আপনার ব্যক্তিগত বিপ্লব!

মীন

আজ স্বপ্ন আর বাস্তবতার মাঝামাঝি ভাসছেন। কল্পনার জগতে এতটা ডুবে থাকবেন যে বাস্তব জীবনে আপনি হয়তো কফি কাপের বদলে রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে কফি বানাতে চাইবেন। আপনার আবেগ আজ একটি সমুদ্র, যেখানে নিজেই ডুবে যেতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথনে ঢোকার আগে কান পরিষ্কার করুন। আপনি হয়তো অর্ধেক কথা ভুল শুনবেন। দিনের শেষে মনে করার চেষ্টা করুন, আপনি স্বপ্ন দেখছিলেন নাকি সত্যিই কাজটি করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত