Ajker Patrika

যুদ্ধের যুগে শান্তিময় পাঁচ দেশ

ফিচার ডেস্ক
ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

শুধু এ বছরেই নতুন করে তিনটি দেশে সংঘাত শুরু হয়েছে। না, কোনো উড়ো কথা নয়। এটি এ বছরের গ্লোবাল পিস ইনডেক্স (জিপিআই) থেকে পাওয়া তথ্য। তাদের তথ্য বলছে, বিশ্বে রাষ্ট্রভিত্তিক সংঘাতের সংখ্যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। যুদ্ধ বাড়ছে, সীমান্ত নিরাপত্তা কঠোর হচ্ছে এবং বাণিজ্যিক উত্তেজনা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ বছর যেন এক ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে বিশ্ববাসীর কাছে। তবুও মানুষ বেঁচে আছে, খাচ্ছে, ঘুরছে, শ্বাস নিচ্ছে। কিছু দেশ এখনো শান্তিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে যাচ্ছে।

ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস ইনস্টিটিউটের জিপিআই ২৩টি সূচক বিশ্লেষণ করে এমন কিছু দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে, যারা শান্তিকে রেখেছে সবার ওপরে। ২৩টি সূচকের মধ্যে ছিল সংঘাত, সামরিক ব্যয়, সন্ত্রাসবাদ, খুন ও অন্যান্য নিরাপত্তা-সংক্রান্ত পরিমাপক।

এই দেশগুলো প্রায় দুই দশক ধরে এই সব সূচকের শীর্ষে অবস্থান করছে। দীর্ঘ মেয়াদে শান্তিমূলক নীতি কতটা কার্যকর হতে পারে, এ তালিকা তাই বলছে। শান্তিময় দেশগুলো হলো—

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

আইসল্যান্ড

২০০৮ সাল থেকে একটানা বিশ্বের ‘সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ’ দেশ হিসেবে শীর্ষে রয়েছে আইসল্যান্ড। অর্থাৎ এক-দুই বছর নয়, টানা ১৭ বছর দেশটি নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে শীর্ষে। নিরাপত্তা, চলমান সংঘাত ও সামরিকীকরণ—এই তিন ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম স্কোর করে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে দেশটি। এই তিন ক্ষেত্রে আইসল্যান্ড এ বছর আরও ২ শতাংশ উন্নতি করেছে। ফলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা দেশের সঙ্গে তাদের ব্যবধান আরও বেড়েছে।

চলমান সংঘাত সূচকে আইসল্যান্ডের স্কোর ১। এটি প্রমাণ করে যে দেশটি আন্তর্জাতিক বা ঘরোয়া কোনো সংঘাতে জড়িত নয়। শান্তিতে নেতৃত্বের এই ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে দেশটিতে প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা দৃঢ়, অপরাধের হার অত্যন্ত কম, সামরিকীকরণের হার নিম্নমুখী ও সামাজিক অবস্থায় উচ্চমুখী আস্থায় রয়েছে। এ ছাড়া আইসল্যান্ড বিশ্বের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সূচকে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। ফলে এ বছর এটি বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

আয়ারল্যান্ড

২০ শতকের শেষ ভাগে আয়ারল্যান্ড সংঘাতপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু এখন দেশটিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায় শান্তি। আয়ারল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে গ্লোবাল পিস ইনডেক্সে শীর্ষ স্থানের কাছাকাছি অবস্থান ধরে রেখেছে। সামরিকীকরণ কমাতে তারা অনেক এগিয়েছে। দেশটিতে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের হার অত্যন্ত কম। বহির্বিশ্বের সঙ্গে সংঘাতের ক্ষেত্রেও তারা একই অবস্থা ধরে রেখেছে। এ ছাড়া নিম্নমুখী সামরিকীকরণ সূচকে আয়ারল্যান্ড বিশ্বে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার দিক থেকেও দেশটি শীর্ষ ১০-এ রয়েছে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আয়ারল্যান্ড সামরিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখে। তারা কূটনৈতিক সমাধানে বিশ্বাস করে। ইউরোপের যে চারটি দেশ ন্যাটোর সদস্য নয়, তাদের মধ্যে একটি আয়ারল্যান্ড। দেশটিতে শান্তি বজায় থাকার মূল কারণ, সেখানে রাজনৈতিক সন্ত্রাস কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। অপরাধ সম্পর্কে জনসাধারণের ধারণায় উন্নতি ঘটেছে। আয়ারল্যান্ডে বন্দিত্বের হার কম, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো সুপ্রতিষ্ঠিত। এ সবকিছু আয়ারল্যান্ডে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

নিউজিল্যান্ড

এ বছর নিউজিল্যান্ড দুই ধাপ ওপরে উঠে তৃতীয় হয়েছে। মূলত নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস বা আন্দোলনের প্রভাব কমে যাওয়ার ফলে তাদের অবস্থান উন্নত হয়েছে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই দ্বীপদেশ ভৌগোলিকভাবে নিরাপদ। কারণ, দেশটি আন্তর্জাতিক সংঘাত থেকে দূরে থাকে। অভ্যন্তরীণ নীতিমালাও এ দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা দেয়। নিউজিল্যান্ডের বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন বিশ্বে অন্যতম কঠোর। নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সূচকে শক্তিশালী অবস্থানের কারণে নিউজিল্যান্ডকে এ বছর বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

অস্ট্রিয়া

শীর্ষ পর্যায়ের শান্তিপূর্ণ দেশের তালিকায় অস্ট্রিয়ার অবস্থান চতুর্থ স্থানে। যদিও এ বছর দেশটি এক ধাপ নিচে নেমে গেছে। নিরাপত্তা ও সুরক্ষা এবং সামরিকীকরণ সূচকে দেশটি এখনো তর শক্তিশালী পারফরম্যান্স বজায় রেখেছে। অস্ট্রিয়ার এই উচ্চ অবস্থান দীর্ঘদিন ধরে বজায় রাখতে পেরেছে কিছু বিশেষ কারণে। দেশটি ইউরোপের কেন্দ্রে অবস্থানে অবস্থিত। সেখানে রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল। এমনকি দেশটিতে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সংঘাতের মাত্রাও একেবারে কম।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

সিঙ্গাপুর

সিঙ্গাপুর এ বছরও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। তাদের অবস্থান বিশ্বে ষষ্ঠ। দেশটি চলমান সংঘাত নিরসন এবং নিরাপত্তা ও সুরক্ষা—এই দুই সূচকে অসাধারণ উন্নতি দেখিয়েছে। এ বছর সিঙ্গাপুর চলমান সংঘাত নিরসন সূচকে বিশ্বে চতুর্থ স্থান লাভ করেছে। এটি প্রমাণ করে যে দেশটি দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে তার অবস্থান ধরে রেখেছে। কোনো সাম্প্রতিক সংঘাতজনিত মৃত্যু বা আন্তর্জাতিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার মতো ঘটনা দেশটিতে নেই।

সূত্র: বিবিসি, ভিশন অব হিউম্যানিটিজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শুটিং স্পটে মডেলকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, পরিচালকসহ ৩ জনের নামে মামলা

জাতিসংঘে ইসরায়েলকে তুলোধুনো করলেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট, মাথায় চুমু দিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট

যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চেয়েছিলেন সোহেল তাজ, ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিমানবন্দর থেকে

মামুনের কথা অসংগতিপূর্ণ, আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে: পুলিশ

অভিযোগ প্রমাণিত হলে ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল স্থগিতের দাবি সাদা দলের

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত