Ajker Patrika

২০২৫ সালে বিশ্বের ১০ বন্ধুসুলভ দেশ

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
পাঠকদের ভোটে কেনিয়া বিশ্বের ‘সবচেয়ে’ বন্ধুসুলভ দেশ নির্বাচিত হয়েছে। ছবি: উইকিপিডিয়া
পাঠকদের ভোটে কেনিয়া বিশ্বের ‘সবচেয়ে’ বন্ধুসুলভ দেশ নির্বাচিত হয়েছে। ছবি: উইকিপিডিয়া

ট্রাভেল ম্যাগাজিন ‘সিএন ট্রাভেলার’ সম্প্রতি ‘রিডার্স চয়েস অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫’–এর ফল প্রকাশ করেছে। যেখানে পাঠকদের ভোটে নির্ধারিত হয়েছে বিশ্বের বন্ধুবৎসল দেশগুলোর নাম। তবে এই তালিকায় ইউরোপীয় দেশগুলো অন্তর্ভুক্ত নয়। সেগুলো আলাদাভাবে ‘ইউরোপের সবচেয়ে বন্ধুবৎসল দেশ’ শিরোনামে প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থাৎ ইউরোপ বাদে বাকি বিশ্ব এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।

সেরা ১০ দেশ

কেনিয়া

পাঠকদের ভোটে কেনিয়া বিশ্বের ‘সবচেয়ে’ বন্ধুসুলভ দেশ নির্বাচিত হয়েছে। দেশটিতে পর্যটকেরা যায় সাধারণত ‘বিগ ফাইভ’ বা আফ্রিকার পাঁচটি বড় প্রাণী দেখার জন্য। এগুলো হলো সিংহ, চিতাবাঘ, গন্ডার, হাতি ও কেপ বাফেলো। নাইরোবির প্রাণবন্ত রাতের জীবন আর সাদা বালুর সৈকতের ধারে বিলাসবহুল রিসোর্টগুলোও কেনিয়াকে করে তুলেছে ভ্রমণপ্রেমীদের পছন্দের জায়গা।

বার্বাডোজের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে পশ্চিম আফ্রিকান ও ব্রিটিশ ঐতিহ্যে। ছবি: উইকিপিডিয়া
বার্বাডোজের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে পশ্চিম আফ্রিকান ও ব্রিটিশ ঐতিহ্যে। ছবি: উইকিপিডিয়া

বার্বাডোজ

বার্বাডোজ একই সঙ্গে শান্ত ও প্রাণবন্ত—এই দুই বিপরীত বৈশিষ্ট্যের সুন্দর মিশেল। দেশটির সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে পশ্চিম আফ্রিকান ও ব্রিটিশ ঐতিহ্যে। দেশটিতে প্রতিবছর আয়োজিত ‘ক্রপ ওভার ফেস্টিভ্যাল’। সে সময় রং, সংগীত আর আনন্দে ভরে ওঠে পুরো দ্বীপ। হাজারো বিদেশি পর্যটক বার্বাডোজ ভ্রমণে যায় সেখানকার মানুষের আন্তরিক আতিথেয়তা উপভোগ করতে।

মেক্সিকো

গত বছরের তুলনায় পাঁচ ধাপ এগিয়ে এ বছর মেক্সিকো জায়গা করে নিয়েছে শীর্ষ তিনে। দেশটির সংস্কৃতিতে আছে একই সঙ্গে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার ছোঁয়া। রাস্তার পাশে খাস্তা টাকো, মারিয়াচি সংগীত ও টাকিলার উৎসবমুখর রাত। সব মিলিয়ে মেক্সিকোর অভিজ্ঞতা দারুণ। সেখানে নভেম্বর মাসে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ‘ডে অব দ্য ডেড’ উৎসব। ১৩ কোটি মানুষের দেশটিতে পর্যটকেরা সব সময় উষ্ণ আর হাসিমুখের অভ্যর্থনা পায়।

প্রথমবারের মতো ‘সবচেয়ে’ বন্ধুসুলভ দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ভুটান। ছবি: উইকিপিডিয়া
প্রথমবারের মতো ‘সবচেয়ে’ বন্ধুসুলভ দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ভুটান। ছবি: উইকিপিডিয়া

ভুটান

ভুটান এক বিশেষ কারণে তালিকায় যোগ হয়েছে। সে দেশের মানুষ কতটা সুখে আছে, সেটিই সরকারের কাছে উন্নতির মাপকাঠি। এটি নির্ধারণ করা হয় গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস ইনডেক্সের মাধ্যমে। যদিও ভুটানে পর্যটনের ওপর বেশি কর নেওয়া হয়। তবে সেই অর্থ ব্যবহার করা হয় দেশের উন্নয়নে। হিমালয়ের পাদদেশে ছোট এই দেশ পরিবেশবান্ধব ও মানবিক জায়গা থেকেও প্রশংসনীয়। প্রথমবার তালিকায় যোগ হওয়া ভুটান এশিয়ার ‘সবচেয়ে’ বন্ধুসুলভ দেশ হিসেবে জায়গা পেয়েছে।

কম্বোডিয়া

কম্বোডিয়ার সংস্কৃতি থেরবাদ বৌদ্ধধর্মের ‘মেত্তা’ ধারণার ওপর গড়ে উঠেছে। এর মানে, সকল জীবের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। তাই দেশটির মানুষ অতিথিদের কাছে খুবই আন্তরিক। ফনম পেনের নদীতীরের শহর ও বিশাল আঙ্কর ভাট মন্দির পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। তবে আসল কম্বোডিয়ান সংস্কৃতি বুঝতে গেলে গ্রামে যাওয়া উচিত, যেখানে খেমারদের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প ও কৃষিজীবন দেখা যায়।

ভিয়েতনাম

সবুজ ধানখেত, শান্ত শহর আর মনোমুগ্ধকর উপসাগর—সব মিলিয়ে ভিয়েতনাম যেন এক রূপকথার দেশ। সেখানকার মানুষ পর্যটকদের কাছে তাদের সংস্কৃতি ও সৌন্দর্য ভাগ করে নিতে বেশ আগ্রহী। তাদের সামাজিক জীবনের মূল সূত্র হলো ‘কমিউনিটি’। ফুটপাতের খাবারের দোকান থেকে শুরু করে উন্মুক্ত আকাশের নিচে ব্যায়ামাগার কিংবা রাস্তার পাশের নরসুন্দর—সবখানে একধরনের সামাজিক বন্ধন টের পাওয়া যায়। ‘সিএন ট্রাভেলার’র মতে, ভিয়েতনামে গেলে হা জিয়াং লুপ ঘোরা ছাড়া ভ্রমণ অসম্পূর্ণ। এটি চার দিনের মোটরবাইক যাত্রা। যদিও মূলত দর্শনীয় স্থান দেখার জন্য পর্যটকেরা যায়, কিন্তু সবচেয়ে বেশি মনে থাকে স্থানীয় গাইডদের সঙ্গে তৈরি হওয়া বন্ধুত্ব।

মরিশাস ও চিলি

মরিশাস এমন একটি দ্বীপ, যেখানে শান্ত জীবন ও প্রকৃতি অসাধারণ সৌন্দর্যে ভরা।

অন্যদিকে, দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র দেশ হিসেবে চিলি তালিকায় জায়গা পেয়েছে। সেখানকার সংস্কৃতি, মানুষের ভদ্রতা ও সামাজিক ব্যবস্থা বেশ প্রশংসনীয়। উত্তরে আতাকামা মরুভূমি থেকে দক্ষিণে প্যাটাগোনিয়ার তুষারাবৃত হিমবাহ, চিলির বিপরীতমুখী প্রাকৃতিক দৃশ্য পর্যটকদের জন্য চমৎকার অভিজ্ঞতা।

থাইল্যান্ড ও সেশেলস

থাইল্যান্ড একক পর্যটক, ডিজিটাল নোম্যাড ও পরিবারভিত্তিক ভ্রমণকারীদের জন্য সমান জনপ্রিয়। সেখানকার মানুষ সব সময় অতিথিদের উষ্ণভাবে স্বাগত জানায়। দীর্ঘদিন ধরে থাই জনগণকে বিশ্বের সবচেয়ে অতিথিপরায়ণ বলা হয়। তাই দেশটির ডাকনাম ‘দ্য ল্যান্ড অব স্মাইলস’।

অন্যদিকে, ছোট হলেও সেশেলসের প্রভাব বেশ। মাত্র ১ লাখ ৭ হাজার জনসংখ্যার এই দ্বীপদেশ ১১৫টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। সেগুলোর মধ্যে মাত্র ৮টিতে জনবসতি আছে। সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখনো প্রায় অক্ষত আছে। তাই অনেকে একে ‘স্বর্গরাজ্য’ বলে। সেশেলসের আকর্ষণীয় সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে আফ্রিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার মিলিত প্রভাবে। এমনকি ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রিন্স উইলিয়াম ও কেটও মধুচন্দ্রিমার জন্য সেশেলস বেছে নিয়েছিলেন।

সূত্র: সিএন ট্রাভেলার

ছবি: উইকিপিডিয়া

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত