Ajker Patrika

টেকনো পোভা সিরিজ

অনিন্দ্য মজুমদার অর্ণব
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২২, ১২: ৪৬
টেকনো পোভা সিরিজ

জনপ্রিয় স্মার্টফোন সিরিজ পোভা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সমন্বয়ে তৈরি হলেও নতুন স্মার্টফোনগুলোর মধ্যে অন্যতম পোভা ৪ প্রো।

পোভা ৪ প্রোতে ৬ দশমিক ৬৬ ইঞ্চি এফএইচডি এবং ৯০ হার্জের রিফ্রেশ রেটের এমোলেড স্ক্রিন ব্যবহার করা হয়েছে। আছে শক্তিশালী হেলিও জি৯৯ ৬এনএম প্রসেসর। ৬ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ারের মেগা ব্যাটারিটি চার্জ করার জন্য রয়েছে ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিংয়ের ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে ১০ ওয়াটের রিভার্স চার্জিংয়ের সুবিধা থাকবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ কাজের সক্ষমতার জন্য এতে অক্টাকোর সিপিইউ ও হাইপার ইঞ্জিন ২ দশমিক শূন্য যুক্ত করা হয়েছে। 

পোভা ৪ প্রোতে ২৫৬জিবি স্টোরেজ ও ৮জিবি র‌্যাম ব্যবহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এতে আলাদা যুক্ত করা পাঁচ জিবির অতিরিক্ত র‌্যাম স্মার্টফোনটির গতি বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে। নতুন এই স্মার্টফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে একসঙ্গে ২০টি অ্যাপ সক্রিয় থাকবে এবং ৬১ শতাংশ দ্রুততার সঙ্গে যেকোনো অ্যাপ চালু হবে।

অ্যান্ড্রয়েড ১২সমৃদ্ধ পোভা ৪ প্রোতে ৫০ এমপি এআই ডুয়েল রেয়ার ক্যামেরা ছাড়াও আছে ডুয়েল ফ্ল্যাশ, ৮ এমপি ফ্রন্ট ক্যামেরা ইউথ ফ্ল্যাশ।

র্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নয়েজ রিডাকশন, ডিটিএস অডিও টেকনোলজি এবং হাই-রেস সার্টিফিকেশনের পাশাপাশি জেড-অ্যাক্সিস লিনিয়ার মোটর, হার্ড জাইরোস্কোপ এবং প্রাণবন্ত ফোরডি ভাইব্রেশন ইফেক্টসহ উন্নত স্টোরিও ডুয়েল স্পিকার ব্যবহার করা হয়েছে এতে। এটি টেকনো স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি সাউন্ডের আমেজ দেবে।

নতুন ফোনগুলোতে ২২ শতাংশ বড় ব্যাসের কুলিং টিউব যুক্ত করা হয়েছে। ফলে ফোন গরম হবে কম। এতে গেম লাভারদের জন্য রয়েছে এক্সট্রা অর্ডিনারি কিছু গেমিং ফিচার, যা বাজারের অনেক গেমিং ফোনেই পাওয়া যায় না। নান্দনিক ও নজরকাড়া নিখুঁত ডিজাইনের ফ্লোরাইট ব্লু রঙের এই স্মার্টফোনের দাম ২৬ হাজার ৯৯০ টাকা।

পোভা ৪ সিরিজের আরও একটি সংস্করণ পোভা ৪। এ ফোনটিতে হেলিও জি৯৯ ৬এনএম প্রসেসরের, ৬ দশমিক ৮২ ইঞ্চি ডিসপ্লে; ৯০ হার্জ এইচডি ও ডট-ইন স্ক্রিন আছে। ১৮ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং সুবিধাসহ ব্যাটারি ৬ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার। রয়েছে ৫০ এমপি এআই ডুয়েল রেয়ার ক্যামেরা এবং ডুয়েল ফ্ল্যাশ। অ্যান্ড্রয়েড ১২সমৃদ্ধ এ ফোন পাওয়া যাবে ইউরানোলিথ গ্রে ও ক্রাওলাইট ব্লু, এ দুটি রঙে। ভ্যাট ছাড়া এ স্মার্টফোনটির দাম ২১ হাজার ৯৯০ টাকা।

পাশাপাশি পোভা সিরিজের ‘পোভা নিও২’ স্মার্টফোনটিও বাজারে এসেছে। এর ব্যাটারি ৭ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার।

এতে আছে ১৮ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিংয়ের সুবিধা। ৬ দশমিক ৮২ ইঞ্চি ৯০ হার্জ এইচডি প্লাস ডট-ইন স্ক্রিন আছে এতে।

অ্যান্ড্রয়েড ১২সমৃদ্ধ এই স্মার্টফোনে ১৬ এমপি ডুয়েল রেয়ার ক্যামেরা ছাড়াও আছে ডুয়েল ফ্ল্যাশ। মোবাইল ফোনটি ইউরানোলিথ গ্রে ও সাইবার ব্লু রঙে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ভ্যাট ছাড়া এর দাম ১৮ হাজার ৯৯০ টাকা।   

সূত্র: টেকনো মোবাইল ডট কম, ইন্ডিয়ান টাইমস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রূপচর্চায় ঘরোয়া উপাদান ব্যবহারের আগে যা জানা জরুরি

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে তারপর ঘরে বানানো সৌন্দর্যচর্চার পণ্যগুলো ব্যবহার করা নিরাপদ। ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে তারপর ঘরে বানানো সৌন্দর্যচর্চার পণ্যগুলো ব্যবহার করা নিরাপদ। ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

হোম মেড বা ঘরে তৈরি সৌন্দর্যচর্চার পণ্যের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বাড়ছে ক্রমাগত। আমাদের রান্নার কাজে ব্যবহার করা বহু উপাদান দিয়ে রূপচর্চা করা যায়। সে চর্চার ধারাও বেশ পুরোনো আমাদের দেশে। তবে সেসব পণ্য দিয়ে রূপচর্চার উপকরণ তৈরির আগে জানতে হবে কোন উপাদান কোন ধরনের ত্বক প্রভাবিত করতে পারে।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে তারপর ঘরে বানানো সৌন্দর্যচর্চার পণ্যগুলো ব্যবহার করা নিরাপদ। তা না হলে সমস্যা হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। রান্নাঘরের এমন কিছু উপাদান আছে, যেগুলো আমাদের ত্বক বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করতে পারে। কারও তেলতেলে ত্বক, আবার কারও শুষ্ক ত্বক। অনেককে ব্রণ বা সংবেদনশীলতার মতো সমস্যাও মোকাবিলা করতে হয়। তাই ত্বক পরিচর্যার চেষ্টা করার আগে আপনার ত্বকের ধরন জানা গুরুত্বপূর্ণ।

যে উপাদানগুলো ত্বক প্রভাবিত করতে পারে

সাইট্রাস ফল: সাইট্রাস অর্থাৎ টকজাতীয় ফল ত্বক উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে। তবে এর কিছু নেতিবাচক দিকও আছে। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ও হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. বি এল জংগিদ বলেছেন, ‘এগুলোতে উচ্চমাত্রায় অ্যাসিডিটি থাকে। এগুলো আপনার ত্বক সূর্যের আলোর প্রতি আরও সংবেদনশীল করে তুলতে পারে।’ এই সংবেদনশীলতা কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যকর উজ্জ্বলতার বদলে সানবার্ন ঘটাতে পারে।

ত্বকে সাইট্রাস জাতীয় ফলের ব্যবহার সূর্যের আলোর প্রতি ত্বককে সংবেদনশীল করে তুলতে পারে। ছবি: পেক্সেলস
ত্বকে সাইট্রাস জাতীয় ফলের ব্যবহার সূর্যের আলোর প্রতি ত্বককে সংবেদনশীল করে তুলতে পারে। ছবি: পেক্সেলস

হলুদ: হলুদ প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এটি ত্বক আরও উজ্জ্বল দেখাতে সাহায্য করতে পারে। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে হলুদে অ্যালার্জি থাকতে পারে।

দই: দইয়ে ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে, যা মৃদু এক্সফোলিয়েশনে সাহায্য করে। এটি অনেকের কাছেই আকর্ষণীয় উপকরণ। তবে এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকত হবে। দই সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে এবং জ্বালা বা ব্রেকআউট সৃষ্টি করতে পারে।

স্ক্রাব: একটি ভালো স্ক্রাব ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। কফি ও চিনির স্ক্রাব অনেক জনপ্রিয়। তবে সংবেদনশীল ত্বকে এই উপাদানগুলো ছোট ছোট ফাটল সৃষ্টি করতে পারে। তাই পরীক্ষা না করে এই ধরনের স্ক্রাব নিয়মিত ব্যবহার করা এড়িয়ে চলা উচিত।

ত্বকের জন্য ভালো ঘরোয়া উপাদান

কোনো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের আগে দ্রুত সতেজতার জন্য দুর্দান্ত উপাদান হতে পারে ডিমের মাস্ক। ছবি: পেক্সেলস
কোনো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের আগে দ্রুত সতেজতার জন্য দুর্দান্ত উপাদান হতে পারে ডিমের মাস্ক। ছবি: পেক্সেলস

অ্যালোভেরা জেল: এই রসালো উদ্ভিদ হালকা হাইড্রেশন সরবরাহ করে। এটি ত্বকে আর্দ্রতা দেয়। বিশেষত যাদের গুরুতর ত্বকের সমস্যা নেই তাদের জন্য এটি খুবই ভালো একটি উপাদান। তবে ব্যবহারের আগে বুঝে নিতে হবে এতে ত্বকে অ্যালার্জির সৃষ্টি হচ্ছে কি না।

উপটান: ছোলা, ময়দা ও মসলার এই মিশ্রণ মৃদু স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে। এটি বাড়িতে স্পা করার জন্য দারুণ।

ডিমের মাস্ক: এটি অস্থায়ীভাবে ত্বক টান টান করতে পারে। কোনো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের আগে দ্রুত সতেজতার জন্য দুর্দান্ত উপাদান হতে পারে ডিমের মাস্ক।

ত্বকের জন্য ৭ স্বাস্থ্যকর অভ্যাস

ত্বক হাইড্রেটেড রাখুন: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা স্বাস্থ্যকর ত্বক বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি স্থিতিস্থাপকতা ও সতেজ চেহারা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

হালকা ক্লিনজার ব্যবহার করুন: প্রতিদিন হালকা ক্লিনজার দিয়ে ত্বক ধুয়ে নিলে এর প্রাকৃতিক তেল না সরিয়ে পরিষ্কার থাকবে। একটি কার্যকরী ক্লিনজিং রুটিন তৈরি করুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শে। ক্লান্তি বা ঘামের পর, সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং ঠিক ঘুমানোর আগে মুখ ধোয়া সাধারণত স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য আদর্শ সময়।

সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন: সানস্ক্রিন শুধু সমুদ্রসৈকতে যাওয়ার জন্যই নয়, এটি স্কিনকেয়ারের জন্য অপরিহার্য; যা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা করে।

ধোঁয়া থেকে দূরে থাকুন: যেকোনো ধরনের ধোঁয়া এড়িয়ে চলুন। ত্বক যখন সিগারেটের ধোঁয়ার সামনে আসে, তখন মুখে সব ধরনের রাসায়নিক বিষাক্ত পদার্থ দিয়ে আবরণ তৈরি করে। এটি আপনার ত্বকের কোষগুলোতে চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে ত্বক সময়ের আগেই বুড়িয়ে যায়।

ফল খান: ত্বকে পুষ্টি জোগাতে প্রচুর পরিমাণে ফল ও সবজি খান। এতে আপনার শরীরে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। মাছের তেলের মতো স্বাস্থ্যকর চর্বি খাওয়া এবং প্রচুর প্রিজারভেটিভযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে দূরে থাকা; স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয়।

সূত্র: হেলথলাইন, হেলথ শর্টস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধনেপাতার যত উপকারিতা: ব্যথা, উদ্বেগ ও রক্তে শর্করা কমায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ধনেপাতা এমন এক ভেষজ, যা নিয়ে মতভেদ চরমে। কেউ একে ভীষণ ভালোবাসেন; আবার কারও কাছে এটি অত্যন্ত অপছন্দের।

অনেকের জন্য সালাদে ধনের কয়েকটি পাতা স্বাদে এনে দেয় নতুন মাত্রা। তবে বিশেষ জিন বহনকারী কিছু মানুষের কাছে এর স্বাদ ঠিক সাবানের মতো।

‘ইন দ্য কিচেন উইথ শেফ বে’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ব্রুক বেভস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪ থেকে ১৪ শতাংশ মানুষের দেহে এই জিনগত বৈচিত্র্য আছে; যার ফলে ধনেপাতার স্বাদ তাঁদের কাছে সাবানের মতো লাগে। অন্যদের কাছে এটি একদমই তাজা ও সুগন্ধি ভেষজ।

তবে ধনেপাতা খাওয়ার কিছু অপ্রত্যাশিত স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে এটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে—যে ব্যথা অটোইমিউন, স্নায়ুবিক অবক্ষয়জনিত, পরিপাকতন্ত্রের বা হৃদ্‌রোগের কারণ হতে পারে, এমনকি কিছু ক্যানসারের সঙ্গেও সম্পর্কিত। এ ছাড়া এই ভেষজ উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে।

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মোট মৃত্যুর অর্ধেকের বেশি ঘটে প্রদাহজনিত রোগের কারণে।

ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ এই উদ্ভিদ—যা ধনেবীজও উৎপাদন করে—তাতে এমন কিছু যৌগ রয়েছে, যা গবেষকদের মতে, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।

২০২৩ সালে ইতালির গবেষকেরা বলেন, ধনে নির্যাসের জৈব কার্যকারিতার কারণে ভেষজটিকে স্থূলতা, মেটাবলিক সিনড্রোম ও ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে মূল্যবান কার্যকর খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র: দি ইনডিপেনডেন্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫৪ বছরে টাবু, রূপের রহস্য কী

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
৩৪ বছরের অভিনয় জীবনে টাবুকে গ্ল্যামারের ওপর নির্ভর করতে হয়নি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
৩৪ বছরের অভিনয় জীবনে টাবুকে গ্ল্যামারের ওপর নির্ভর করতে হয়নি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

৪ নভেম্বর ছিল ভারতীয় অভিনেত্রী টাবুর জন্মদিন। সে উপলক্ষে বোল্ড স্কাই ডট কম প্রকাশ করেছিল রিনি জনের একটি লেখা। এই লেখা তারই অনুবাদ।

‘ম্যায় হু না’, ‘হায়দার’, ‘চিনি কম’, ‘চাঁদনি বার’ কিংবা ‘আন্ধাধুন’ সিনেমার কথা মনে আছে নিশ্চয়? তাহলেই মনে পড়বে টাবুর কথা। সু-অভিনয়, সাধারণ জীবনযাপন আর সময়ানুবর্তিতা—এই তিন মিলে তিনি টাবু। ৪ নভেম্বর ছিল তাঁর জন্মদিন। এই দিনে সামনে এসেছে তাঁর রূপরহস্যের কথা।

চুয়ান্নতম জন্মদিনে টাবু পার করছেন ভারতীয় সিনেমার জগতে তাঁর ৩৪ বছরের কর্মজীবন। এই দীর্ঘ কর্মময় জীবনে তাঁকে গ্ল্যামারের ওপর নির্ভর করতে হয়নি। দক্ষ অভিনয়, অভিব্যক্তি, কণ্ঠস্বর আর ব্যক্তিত্ব তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে। পর্দায় সহজ-সরল উপস্থিতি আসলে তাঁর সহজ-সরল জীবনযাপনেরই যেন প্রতিচ্ছবি। তাই বলে তিনি কি নিজের যত্নে উদাসীন? তা নয়; বরং তিনি নিজের ত্বক, চুলসহ শরীরের যত্নে বেশ সংবেদনশীল।

সহজে বিশ্বাসী

হ্যাঁ, টাবু জটিল ধরনের ত্বক পরিচর্যায় বিশ্বাসী নন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি সহজ ও ধারাবাহিকভাবে রুটিন মেনে চলার কথা জানিয়েছেন বহুবার। তাঁর সকালের রুটিনে সাধারণত ক্লিনজিং ও ময়শ্চারাইজিং এবং সান প্রোটেকশন বা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষার বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে। এগুলোর কোনো ধাপ তিনি কখনোই বাদ দেন না।

দীর্ঘদিনের অভ্যাস

গোসলের আগে সি সল্ট ও পেট্রোলিয়াম জেলির মিশ্রণ দিয়ে এক্সফোলিয়েট করা তাঁর দীর্ঘদিনের অভ্যাস। তিনি মনে করেন, এটি তাঁর ত্বক নরম ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। তিনি হালকা, নন-গ্রিজি ময়শ্চারাইজার পছন্দ করেন এবং চরিত্রের প্রয়োজনে না হলে ভারী মেকআপ এড়িয়ে চলেন।

ত্বকের যত্ন শুধু পণ্য ব্যবহারের বিষয় নয় বলে মনে করেন টাবু। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ত্বকের যত্ন শুধু পণ্য ব্যবহারের বিষয় নয় বলে মনে করেন টাবু। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

খাদ্য, পানি ও বিশ্রাম

ত্বকের যত্ন শুধু পণ্য ব্যবহারের বিষয় নয় বলে মনে করেন টাবু। তিনি জ্বালানি হিসেবে শরীর কোন ধরনের খাদ্য-পানীয় দিচ্ছেন, সেদিকেও মনোযোগ দেন। টাবু জানিয়েছেন, তিনি পর্যাপ্ত পানি পান করেন, প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলেন এবং তাঁর খাদ্যতালিকায় থাকে সুষম খাবারের উপস্থিতি। তাতে থাকে তাজা ফল, সবজি ও ঘরে তৈরি পুষ্টিকর সাধারণ ও সহজ খাবার।

টাবু বিশ্বাস করেন, তিনি কেমন বোধ করছেন এবং কেমন দেখাচ্ছেন, এ দুয়ের ওপর ঘুমের বড় ভূমিকা আছে। দীর্ঘ সময় কাজ করা এবং রাতের শুটিং স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, তাই সুযোগ পেলেই তিনি বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করেন।

সেই একটি দামি ক্রিম

টাবু একবার কোনো সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, নিজের মেকআপ আর্টিস্টের পরামর্শে তিনি প্রায় ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ফেস ক্রিম কিনেছিলেন। পরে তিনি সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে হাসাহাসি করেন। তিনি সে ধরনের পণ্য আর কিনবেন না বলেও জানিয়েছিলেন। ‘ফিল্ম কম্প্যানিয়ন’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটি একবার কিনেছিলাম এবং সেটাই শেষ।’ এসব দেখে বোঝা যায়, আর যা-ই হোক, তিনি ট্রেন্ড বা দামের ট্যাগ দেখে আবেগতাড়িত হন না। তাঁর জন্য সৌন্দর্য সব সময়ই স্বাচ্ছন্দ্য, ধারাবাহিকতা এবং একটি এমন রুটিনের বিষয়, যা বিলাসিতার চেয়ে অনেক বেশি প্রাকৃতিক।

টাবু নিউট্রাল টোন, হালকা আইশ্যাডো এবং প্রাকৃতিক লুক পছন্দ করেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
টাবু নিউট্রাল টোন, হালকা আইশ্যাডো এবং প্রাকৃতিক লুক পছন্দ করেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ন্যূনতম মেকআপ, সর্বোচ্চ স্বাচ্ছন্দ্য

সাধারণত পাবলিক ইভেন্টেও টাবুকে কখনো ভারী মেকআপে দেখা যায় না। তিনি নিউট্রাল টোন, হালকা আইশ্যাডো এবং প্রাকৃতিক লুক পছন্দ করেন। এই ন্যূনতম মেকআপের জন্য তাঁর ত্বক স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারে। তিনি যেমন মিতভাষী ও আত্মবিশ্বাসী, তাঁর মেকআপও তেমনি মৃদু কিন্তু পূর্ণ।

তিনি দীর্ঘ শুটিংয়ের পর মেকআপ ঠিকঠাকমতো তুলে ফেলার বিষয়েও বিশেষ যত্নবান, যাতে তাঁর ত্বক সারা দিনের ক্ষয়ক্ষতি পুনরুদ্ধারের সময় পায়।

বয়সের সঙ্গে বদলে যাওয়া

টাবুকে অনন্য করে তুলেছে যে বিষয়টি, তা হলো তিনি কখনো বয়স লুকানোর চেষ্টা করেন না। তিনি এটিকে তাঁর জীবনের যাত্রাপথের একটি স্বাভাবিক অংশ হিসেবে মেনে নেন এবং এটিই সম্ভবত তাঁর সবচেয়ে বড় রহস্য। কোনো নির্দিষ্ট চেহারা বজায় রাখার চাপ নেই বা তার চেয়ে কম দেখানোরও কোনো তাড়না নেই; বরং তিনি সুস্থ বোধ করা, সক্রিয় থাকা এবং অনায়াসে জীবনযাপনের ওপর অনেক বেশি মনোযোগী।

সে জন্যই হয়তো তিনি বলতে পারেন, ‘আমি শুধু সেই গল্প বলতে চাই, যা আমাকে অনুভব করতে শেখায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘুরে আসুন লামা থেকে

মিঠু দাশ, লামা, বান্দরবান
ছবি: লেখক
ছবি: লেখক

ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে পাহাড় ও মাতামুহুরী নদীবেষ্টিত বান্দরবানের লামা উপজেলা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বৈচিত্র্যময়। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু সারি সারি সবুজ পাহাড়। সেই সবুজ পাহাড়ে মেঘের আড়ালে হারিয়ে যেতে নেই মানা। মাঝে মাঝে ঢুকে যাবেন মেঘের রাজ্যে। সূর্যের আলো ফোটার আগে বোঝার উপায় নেই, এটি কোন জনপদ। সূর্যোদয়ের পর হেসে ওঠে সব। প্রকৃতি যেন তার সবটুকু রূপ দিয়ে সাজিয়ে তুলেছে বান্দরবানের লামাকে। সারি সারি পাহাড় আর সবুজ বনানীবেষ্টিত এলাকায় আপনার আগমনে যোগ হবে ভিন্ন মাত্রা। পাহাড় থেকে সূর্যাস্ত না দেখলে প্রকৃতির বর্ণনাতীত সৌন্দর্যের অনেকটাই অদেখা থেকে যায়। মেঘ আর কুয়াশাঢাকা পাহাড়ি পথে পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার রোমাঞ্চকর অনুভূতি ডাকছে আপনাকে।

ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্মবিশ্বাস অন্যান্য জেলার চেয়ে তিন পার্বত্য জেলা সম্পূর্ণ আলাদা। বান্দরবানের লামার মিরিঞ্জা পাহাড় থেকে দেখা যাবে লামা শহর, পাশের সবুজ সুন্দর প্রকৃতি এবং পশ্চিমে তাকালে উপকূলীয় সবুজ বনানীর পর মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কুতুবদিয়া-মহেশখালী দ্বীপের বাইরে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান জাহাজ এবং বোটগুলো যেন পাহাড়ি নদীর পানসি নৌকা! লামার বুকে বয়ে চলা মাতামুহুরী নদী যেন স্বপ্নের জগতে নিয়ে যাবে আপনাকে। মাঝেমধ্যে উঁচু উঁচু পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দেয় সূর্যের আলো। প্রকৃতির খুব কাছাকাছি আসার, বুকভরে নির্মল বাতাস নেওয়ার আর স্বর্গীয় দৃশ্য দেখে চোখ জুড়ানোর একমাত্র জায়গা লামা। এখানে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। অরণ্য রানিখ্যাত লামার মিরিঞ্জা পাহাড়, সুখীয়া ও দুঃখীয়া পাহাড় এবং আশপাশের এলাকায় আবিষ্কৃত হয়েছে শতাধিক পর্যটনকেন্দ্র। দুর্গম সব পাহাড় আর বুনো প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে অনেক স্থান লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে গেছে।

মিরিঞ্জা

এই জায়গা এরই মধ্যে দেশজুড়ে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। এখানে আছে উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণাধীন মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স। মিরিঞ্জা নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর এক পর্যটনকেন্দ্র। পাহাড়টি ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ৬০০ ফুট উঁচু। মিরিঞ্জা পর্যটনকেন্দ্র থেকে নয়ন ভরে সাগর, পাহাড়, আকাশ এবং হরেক রকম পাখি দেখা যায়। এর ওপর রয়েছে নীল আকাশে মেঘের বিচরণ। প্রতিনিয়ত মেঘ ছুঁয়ে যায় মিরিঞ্জা পাহাড়ের গা, দৃষ্টিনন্দন টাইটানিক ভিউ পয়েন্ট, ওয়াকওয়ে ও মিনি শিশুপার্ক। মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্সের গোড়াপত্তন হয়েছিল ২০০৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর, প্রায় ৩৩ একর পাহাড়ি ভূমি ঘিরে।

সুখীয়া ও দুঃখীয়া ভ্যালি

মাতামুহুরী নদীর দুই তীরে সুখীয়া ও দুঃখীয়া ভ্যালি। চোখজুড়ানো সবুজ স্নিগ্ধ বনানীঘেরা এ দুই পাহাড়ের বুক চিরে সর্পিলাকারে বহমান মাতামুহুরী নদী। সুখীয়া ও দুঃখীয়া পাহাড়ের উঁচু চূড়ার মনোরম দৃশ্যের সমারোহ দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিয়াসি পর্যটকদের হৃদয় মোহিত করেছে। এ দুই পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে মনপ্রাণ ফুরফুরে হয়ে যাবে।

পাহাড়ে জুমিয়ারা বাগান পাহারা দেওয়া এবং ফসল সংগ্রহের জন্য জুমের খেতে বাঁশ ও ছন দিয়ে জুমঘর তৈরি করে থাকে। এ জুমঘরকে তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় ‘প্রবাস্যা ঘর’, ম্রো ভাষায় ‘ঐবক’, মারমা ভাষায় ‘বাও’ এবং ত্রিপুরা ভাষায় ‘হুৎমাইঞা’ বলে। প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এ জুমঘর বেশ জনপ্রিয় এখন। ইতিমধ্যে দেশজুড়ে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে এই জুমঘর। মিরিঞ্জা পাহাড়, সুখীয়া-দুঃখীয়া পাহাড় এবং আশপাশের এলাকার নয়নাভিরাম পর্যটন স্থানগুলো ভ্রমণপিয়াসি পর্যটকদের প্রতিনিয়ত আকৃষ্ট করে চলেছে। লামায় পর্যটকদের তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি পাহাড়ি সংস্কৃতি ও জুম চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরিচয় ঘটার সুযোগ অনেক বেশি।

পর্বত, অরণ্য ও সমুদ্রপ্রেমী—এই তিন শ্রেণির পর্যটকের সেরা গন্তব্য মেঘে আবৃত পাহাড়, সবুজ উপত্যকার মায়াবী জনপদ লামা।

যেভাবে যাবেন

রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ, ফকিরাপুল অথবা সায়েদাবাদ থেকে হানিফ কিংবা শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস বাসে সরাসরি লামায় যাওয়া যায়। এ ছাড়া কক্সবাজারগামী যেকোনো বাসে চকরিয়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, জিপগাড়ি বা চাঁদের গাড়ি কিংবা বাসযোগে মিরিঞ্জা বাজারে নেমে ১০ মিনিট হেঁটে মিরিঞ্জা ভ্যালি যাওয়া যায়। ট্রেনে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চকরিয়া স্টেশন পর্যন্ত যেতে হবে। সেখান থেকে চকরিয়া বাস টার্মিনালে গিয়ে অন্য পরিবহনে মিরিঞ্জায় যাওয়া যাবে। দেশের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চল থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম, তারপর লামায় যেতে হবে।

ভ্রমণকালীন সতর্কতা

  • সার্বিক নিরাপত্তার প্রয়োজনে কিছু জায়গায় তল্লাশি হতে পারে। তাই সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র বা পেশাগত বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে।
  • পাহাড়ের ওপর নির্বিঘ্নে চলাফেরা করার জন্য ভালো গ্রিপসহ জুতা পরতে হবে।
  • টর্চ লাইট, ওরস্যালাইন, দড়ি, প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সঙ্গে রাখতে হবে। কাঁধের ব্যাগ যেন খুব বেশি ভারী হয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • ভ্রমণের জন্য গাইড নিতে হবে।
  • বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঝরনাগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
  • ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিনয়ী আচরণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, তাদের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি আপনার চেয়ে আলাদা। তাই তাদের সামাজিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিকে সম্মান করতে হবে।
  • খাবারের প্যাকেট, পানির বোতলসহ যেকোনো আবর্জনা যেখানে-সেখানে ফেলা যাবে না।
  • পাহাড়ি এলাকায় সন্ধ্যার পর রাত্রিযাপনের জায়গার আশপাশে থাকুন। সন্ধ্যার পর নিরিবিলি অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকা এড়িয়ে চলা উত্তম।
  • হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য ব্যয় সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়। তাই ভ্রমণে যাওয়ার আগে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পরিবর্তিত ব্যয় জেনে নেওয়া ভালো।
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত