ফিচার ডেস্ক, ঢাকা
শহর মানে সাধারণত সারি সারি ভবন, অসংখ্য মানুষ, সরকারি-বেসরকারি অফিস আর ব্যস্ত রাস্তা। কিন্তু আমেরিকায় এমন এক শহর আছে, যেটি চিরচেনা এমন চিত্রের পুরো বিপরীত। আর সেই শহরের সব বাসিন্দা বাস করে একটিমাত্র ভবনে। শুনে খানিকটা কি অবাক হচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা রাজ্যের প্যাসেজ ক্যানাল উপকূলের হুইটিয়ার শহরটি এমনই এক শহর।
শহরের প্রাণকেন্দ্র বিগিচ টাওয়ার
হুইটিয়ারের ২৬৩ জনের বেশি বাসিন্দার প্রায় সবাই বাস করে বিগিচ টাওয়ারে। ১৪ তলাবিশিষ্ট এই ভবনে প্রায় ২০০ অ্যাপার্টমেন্ট আছে। কিন্তু এটিকে কেবল একটি আবাসিক ভবন ভাবলে ভুল হবে। কারণ, এর ভেতরে আছে পোস্ট অফিস, কর্নার স্টোর, লন্ড্রি, চার্চ, পুলিশ স্টেশন, স্কুলের সঙ্গে সংযুক্ত টানেল এবং একটি ইনডোর খেলার মাঠ। শীতকালে বাইরে বের হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কারণ, প্রায় সবকিছুই একই ছাদের নিচে পাওয়া যায়। এখানে বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবন একে অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। লিফটে উঠতে গেলে, দোকানে বা লন্ড্রিতে গেলে ভবনের অনেকের সঙ্গে একাধিকবার দেখা হয়। এটি সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য বেশ আনন্দের। সেখানে সবাই মিলেমিশে থাকে, একে অপরকে সাহায্য করে। এর ভেতর দিয়ে এই ভবনের বাসিন্দারা তাঁদের সামাজিক সম্পর্ক সচল ও সক্রিয় রাখার চেষ্টা করেন।
১৯৫৩ সালে বিগিচ টাওয়ারের নির্মাণকাজ শুরু হয়, শেষ হয় ১৯৫৭ সালে। প্রথমে এটি সেনাবাহিনীর জন্য নির্মিত হয়েছিল। পরে নাগরিকদের ব্যবহারের জন্য তা উন্মুক্ত করা হয়। এর পর থেকে শহরের প্রায় পুরো জনসংখ্যা এখানে বসবাস করে। ১৯৭২ সালে এই ভবনের নামকরণ করা হয় বিগিচ টাওয়ার। এই নামকরণ করা হয় আলাস্কার কংগ্রেসম্যান নিক বিগিচের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, যিনি ১৯৭২ সালে একটি বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হন। বর্তমানে বিগিচ টাওয়ার হুইটিয়ার শহরের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত।
টিকটক ও সামাজিক মাধ্যমে হুইটিয়ার
টিকটকার নিকি ডেলভেথাল হুইটিয়ারকে ‘সবচেয়ে অদ্ভুত শহর’ উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এখানকার মানুষ এক ছাদের নিচে থাকে এবং তাদের বাইরে যাওয়ার দরকারও হয় না। শহরের প্রতিটি কাজ ভবনের ভেতরে করা যায়। ভিডিওতে তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে লিফট, দোকান, স্কুল ও খেলাধুলার জায়গাগুলো শহরের মানুষকে এক করেছে।
বিচ্ছিন্নতা ও টানেল
হুইটিয়ার শহরটি পানি ও পাহাড়ে ঘেরা। শহরে ঢোকার একমাত্র পথ হলো আড়াই মাইল দীর্ঘ একমুখী টানেল। রাত ১০টা ৩০ মিনিটের পর টানেলটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে যাঁরা সময়মতো পৌঁছাতে পারেন না, তাঁদের রাতভর টানেলের ওপারে থাকতে হয়। এই বিচ্ছিন্নতা শহরটিকে আরও বিশেষ করে তোলে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
হুইটিয়ার শহরটির জন্ম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। সেনাবাহিনী এই শহর তৈরি করেছিল কৌশল প্রয়োগের চর্চা কেন্দ্র হিসেবে। পাহাড়ে ঘেরা এবং ঘন মেঘে ঢেকে থাকায় এটি ছিল শত্রুদের নজর থেকে নিরাপদ। ১৯৪৩ সালে ফেডারেল রেলওয়ে নির্মাণ সম্পন্ন হয়। এর মাধ্যমে হুইটিয়ার বন্দরের মতো দূরবর্তী স্থানে সেনা, মালপত্র ও সেনা পরিবারের সদস্যদের আসা-যাওয়া সহজ হয়।
পঞ্চাশের দশকে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন হুইটিয়ারে বাস করতেন। তাঁদের প্রায় সবাই ছিলেন সেনা ও তাঁদের পরিবারের সদস্য। সেই সময়ে বিগিচ টাওয়ার মতো আরেকটি ভবন ছিল, তার নাম বাকনার ভবন। সেখানেও হাসপাতাল, সিনেমা, ব্যাংক, শুটিং রেঞ্জ, অফিস, লাইব্রেরি, বেকারি, স্কুল, রেডিও, টেলিভিশন স্টেশনসহ সবকিছু ছিল। ১৯৬০ সালে সেনারা চলে যাওয়ার পর শহরের জনসংখ্যা কমে পায়। বাকনার ভবন পরিত্যক্ত হয়ে ধ্বংসপ্রায় অবস্থায় চলে যায়, তবে বিগিচ টাওয়ার তখনো শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে রয়ে যায়।
আজকের হুইটিয়ার
১৯৬৯ সালে হুইটিয়ার আনুষ্ঠানিকভাবে শহর হিসেবে গঠিত হয়। বর্তমানে আড়াই শর বেশি মানুষ শহরটিতে বসবাস করেন। শহরের অর্থনীতি নির্ভরশীল আলাস্কা স্টেট ফেরি, আলাস্কা রেলওয়ে, মালবাহী পরিবহন, বাণিজ্যিক মাছ ধরা, হুইটিয়ার পর্যটন ও ভ্রমণ কার্যক্রমের ওপর।
হুইটিয়ারের অনন্য অবস্থান, পাহাড় ও সমুদ্রবন্দর এবং বিশ্বের অন্যতম সুন্দর দৃশ্য দেখতে প্রতি গ্রীষ্মে ৭ লাখের বেশি পর্যটক ভ্রমণে যায় সেখানে।
সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট ও সিএনএন
শহর মানে সাধারণত সারি সারি ভবন, অসংখ্য মানুষ, সরকারি-বেসরকারি অফিস আর ব্যস্ত রাস্তা। কিন্তু আমেরিকায় এমন এক শহর আছে, যেটি চিরচেনা এমন চিত্রের পুরো বিপরীত। আর সেই শহরের সব বাসিন্দা বাস করে একটিমাত্র ভবনে। শুনে খানিকটা কি অবাক হচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা রাজ্যের প্যাসেজ ক্যানাল উপকূলের হুইটিয়ার শহরটি এমনই এক শহর।
শহরের প্রাণকেন্দ্র বিগিচ টাওয়ার
হুইটিয়ারের ২৬৩ জনের বেশি বাসিন্দার প্রায় সবাই বাস করে বিগিচ টাওয়ারে। ১৪ তলাবিশিষ্ট এই ভবনে প্রায় ২০০ অ্যাপার্টমেন্ট আছে। কিন্তু এটিকে কেবল একটি আবাসিক ভবন ভাবলে ভুল হবে। কারণ, এর ভেতরে আছে পোস্ট অফিস, কর্নার স্টোর, লন্ড্রি, চার্চ, পুলিশ স্টেশন, স্কুলের সঙ্গে সংযুক্ত টানেল এবং একটি ইনডোর খেলার মাঠ। শীতকালে বাইরে বের হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কারণ, প্রায় সবকিছুই একই ছাদের নিচে পাওয়া যায়। এখানে বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবন একে অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। লিফটে উঠতে গেলে, দোকানে বা লন্ড্রিতে গেলে ভবনের অনেকের সঙ্গে একাধিকবার দেখা হয়। এটি সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য বেশ আনন্দের। সেখানে সবাই মিলেমিশে থাকে, একে অপরকে সাহায্য করে। এর ভেতর দিয়ে এই ভবনের বাসিন্দারা তাঁদের সামাজিক সম্পর্ক সচল ও সক্রিয় রাখার চেষ্টা করেন।
১৯৫৩ সালে বিগিচ টাওয়ারের নির্মাণকাজ শুরু হয়, শেষ হয় ১৯৫৭ সালে। প্রথমে এটি সেনাবাহিনীর জন্য নির্মিত হয়েছিল। পরে নাগরিকদের ব্যবহারের জন্য তা উন্মুক্ত করা হয়। এর পর থেকে শহরের প্রায় পুরো জনসংখ্যা এখানে বসবাস করে। ১৯৭২ সালে এই ভবনের নামকরণ করা হয় বিগিচ টাওয়ার। এই নামকরণ করা হয় আলাস্কার কংগ্রেসম্যান নিক বিগিচের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, যিনি ১৯৭২ সালে একটি বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হন। বর্তমানে বিগিচ টাওয়ার হুইটিয়ার শহরের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত।
টিকটক ও সামাজিক মাধ্যমে হুইটিয়ার
টিকটকার নিকি ডেলভেথাল হুইটিয়ারকে ‘সবচেয়ে অদ্ভুত শহর’ উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এখানকার মানুষ এক ছাদের নিচে থাকে এবং তাদের বাইরে যাওয়ার দরকারও হয় না। শহরের প্রতিটি কাজ ভবনের ভেতরে করা যায়। ভিডিওতে তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে লিফট, দোকান, স্কুল ও খেলাধুলার জায়গাগুলো শহরের মানুষকে এক করেছে।
বিচ্ছিন্নতা ও টানেল
হুইটিয়ার শহরটি পানি ও পাহাড়ে ঘেরা। শহরে ঢোকার একমাত্র পথ হলো আড়াই মাইল দীর্ঘ একমুখী টানেল। রাত ১০টা ৩০ মিনিটের পর টানেলটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে যাঁরা সময়মতো পৌঁছাতে পারেন না, তাঁদের রাতভর টানেলের ওপারে থাকতে হয়। এই বিচ্ছিন্নতা শহরটিকে আরও বিশেষ করে তোলে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
হুইটিয়ার শহরটির জন্ম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। সেনাবাহিনী এই শহর তৈরি করেছিল কৌশল প্রয়োগের চর্চা কেন্দ্র হিসেবে। পাহাড়ে ঘেরা এবং ঘন মেঘে ঢেকে থাকায় এটি ছিল শত্রুদের নজর থেকে নিরাপদ। ১৯৪৩ সালে ফেডারেল রেলওয়ে নির্মাণ সম্পন্ন হয়। এর মাধ্যমে হুইটিয়ার বন্দরের মতো দূরবর্তী স্থানে সেনা, মালপত্র ও সেনা পরিবারের সদস্যদের আসা-যাওয়া সহজ হয়।
পঞ্চাশের দশকে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন হুইটিয়ারে বাস করতেন। তাঁদের প্রায় সবাই ছিলেন সেনা ও তাঁদের পরিবারের সদস্য। সেই সময়ে বিগিচ টাওয়ার মতো আরেকটি ভবন ছিল, তার নাম বাকনার ভবন। সেখানেও হাসপাতাল, সিনেমা, ব্যাংক, শুটিং রেঞ্জ, অফিস, লাইব্রেরি, বেকারি, স্কুল, রেডিও, টেলিভিশন স্টেশনসহ সবকিছু ছিল। ১৯৬০ সালে সেনারা চলে যাওয়ার পর শহরের জনসংখ্যা কমে পায়। বাকনার ভবন পরিত্যক্ত হয়ে ধ্বংসপ্রায় অবস্থায় চলে যায়, তবে বিগিচ টাওয়ার তখনো শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে রয়ে যায়।
আজকের হুইটিয়ার
১৯৬৯ সালে হুইটিয়ার আনুষ্ঠানিকভাবে শহর হিসেবে গঠিত হয়। বর্তমানে আড়াই শর বেশি মানুষ শহরটিতে বসবাস করেন। শহরের অর্থনীতি নির্ভরশীল আলাস্কা স্টেট ফেরি, আলাস্কা রেলওয়ে, মালবাহী পরিবহন, বাণিজ্যিক মাছ ধরা, হুইটিয়ার পর্যটন ও ভ্রমণ কার্যক্রমের ওপর।
হুইটিয়ারের অনন্য অবস্থান, পাহাড় ও সমুদ্রবন্দর এবং বিশ্বের অন্যতম সুন্দর দৃশ্য দেখতে প্রতি গ্রীষ্মে ৭ লাখের বেশি পর্যটক ভ্রমণে যায় সেখানে।
সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট ও সিএনএন
বাজার করতে ভুলে গেছেন? সন্ধ্যায় রান্নাঘরে গিয়ে ফ্রিজ খুলে দেখেন, চিংড়ি ছাড়া কোনো মাছ নেই। তাহলে? বাড়িতে শাপলা আর কচুর মুখি থেকে থাকলে চিংড়ি দিয়েই রান্না করা যাবে সুস্বাদু দুই পদ। আপনাদের জন্য সর্ষে চিংড়ি শাপলা ও কচুর মুখি দিয়ে চিংড়ির রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
১১ ঘণ্টা আগেএবার পূজায় না হয় আপনিই মায়ের সাজপোশাকের পরিকল্পনা করলেন! পূজার এ কদিন তিনি কোন রঙের শাড়ি পরবেন, তার একটা খসড়া তৈরি করুন। তারপর সে অনুযায়ী শাড়ির জোগাড়যন্ত্র করে চমকে দিন বাড়ির মধ্যমণি এই মানুষকে।
১৩ ঘণ্টা আগেপ্রতীক্ষার প্রহর ফুরিয়েছে। দুর্গাপূজার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে দেবী আগমনের অপেক্ষা। পূজার ছুটির এই কদিন পুরো বাড়ি আনন্দে মেতে থাকে। পূজার কাজ, পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা, উঠোনে আলপনা দেওয়া, মিষ্টি তৈরি, পূজার ভোজ রান্না—আরও কত কাজ! তবে পূজার এই সময়টা প্রণয়িনীদের...
১৪ ঘণ্টা আগেআজ তোমাকে খোলাচিঠি লিখছি। তোমার সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় হয়েছিল। তারপর টুকটাক কথা, ছোটখাটো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বন্ধুত্বের সূচনা। আমাদের মধ্যে পছন্দ-অপছন্দের খুব যে মিল, তা-ও কিন্তু নয়! নানান তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়ে আমাদের বন্ধুত্ব পাহাড়ি নদীর মতো আপন গতিতে এগিয়ে গেছে।
১৪ ঘণ্টা আগে