ফিচার ডেস্ক
কল্পনা করুন, একটি গ্রামে দাঁড়িয়ে একই সঙ্গে আপনি দুই দেশে আছেন। হ্যাঁ, এমনই এক গ্রামের নাম বার্লে হার্টোগ। যেটি বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসের মাঝের ছোট্ট একটি গ্রাম।
বার্লে হার্টোগ আসলে বেলজিয়ামের অংশ হলেও পুরো গ্রামটি নেদারল্যান্ডসের ভেতরে অবস্থিত। অর্থাৎ আপনি যখন গ্রামে ঘুরবেন, তখন একবার বেলজিয়ামের ভেতর। আবার কয়েক কদম পরেই নেদারল্যান্ডসে পা দিয়ে ফেলবেন, কোনো চেকপোস্ট, কোনো পাসপোর্ট দেখানো ছাড়াই।
এই অভিজ্ঞতাই বার্লে হার্টোগকে বিশ্বে অন্যতম বিভ্রান্তিকর, একই সঙ্গে আকর্ষণীয় ভ্রমণ গন্তব্য করে তুলেছে।
দরজার ওপারে ভিন্ন দেশ
গ্রামটির মজার বিষয় হলো বাড়িঘরের অবস্থান। নিয়ম হলো, যে দেশে বাড়ির সামনের দরজা পড়বে, কর দিতে হবে সেই দেশকে। ফলে এক বাড়ি বেলজিয়ামের হলেও দরজা যদি নেদারল্যান্ডসে পড়ে, তবে কর যাবে নেদারল্যান্ডসে! তাই অনেক পরিবার ইচ্ছা করেই বাড়ির দরজা সরিয়ে নিয়েছে কয়েক মিটার দূরে, যাতে কর সুবিধাজনক হয়। সেখানে এমনও রয়েছে যে এক বাড়ির রান্নাঘর বেলজিয়ামে আর শোয়ার ঘর নেদারল্যান্ডসে!
একসঙ্গে দুই গ্রাম
বার্লে হার্টোগ গ্রামে ঢুকলেই চোখে পড়বে দুটি স্বাগত সাইন, বার্লে হার্টোগ (বেলজিয়ামের অংশ) এবং বার্লে নাসাউ (নেদারল্যান্ডসের অংশ)। প্রথম দেখায় মনে হতে পারে, দুটি নাম একই। কিন্তু আসলে এগুলো দুটি আলাদা গ্রাম, যা একই জায়গায় পাশাপাশি অবস্থান করছে।
আরও অবাক করা বিষয় হলো এই এলাকার ভৌগোলিক বিন্যাস। এখানে মোট ৩০টি এনক্লেভ বা ঘেরা জমি রয়েছে। এর মধ্যে বেলজিয়ামের ২২টি ছোট এনক্লেভ। নেদারল্যান্ডসের ১টি বড় এনক্লেভ। আর ৭টি হলো নেদারল্যান্ডসের ভেতরের ক্ষুদ্র খণ্ড।
দ্বিগুণ সবকিছু
এত জটিল সীমান্তের কারণে এখানে সামাজিক ও প্রশাসনিক জীবনও ভিন্নধর্মী। গ্রামটিতে—
⦁ পানি, গ্যাস ও নিষ্কাশনের মতো কিছু সেবা দুই দেশ যৌথভাবে দেয়।
⦁ পুলিশ স্টেশনের সংখ্যা দুটি, ফায়ার সার্ভিস দুটি, এমনকি গির্জাও দুটি।
⦁ টেলিফোন ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা আলাদা।
ফলে গ্রামের মানুষ একই জায়গায় থেকেও প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম মেনে চলে।
ইতিহাস থেকে জন্ম জটের
মধ্যযুগে এখানে জমির মালিকানা ভাগ হয়েছিল ব্রাবান্তের ডিউক ও নাসাউ—এই দুই প্রভাবশালী পরিবারের মধ্যে। তাদের জমির সীমারেখাই পরবর্তী সময়ে আজকের এই বিভক্ত গ্রামে রূপ নেয়। ১৮৩১ সালে বেলজিয়াম স্বাধীন হওয়ার পর দুই দেশের সীমান্ত ঠিক করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে সীমান্ত কমিশন। কারণ, একেকটি জমিখণ্ড ছিল একেক দেশের। অবশেষে প্রতিটি খণ্ড আলাদা করে নির্ধারণ করা হয় সীমান্ত। ফলে সেই জট আজও রয়ে গেছে।
পুনর্মিলনের চেষ্টা ব্যর্থ
বছরের পর বছর বহুবার এ জটিলতা কাটাতে একীভূত করার প্রস্তাব উঠেছে। সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, বার্লে হার্টোগকে বেলজিয়ামের টার্নহাউটের সঙ্গে এবং বার্লে নাসাউকে নেদারল্যান্ডসের অন্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করার। কিন্তু দুই দেশের সংসদই সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ফলে আগের মতোই থেকে গেছে এই সীমান্তের ধাঁধা।
পর্যটনের স্বর্গ
কিন্তু এই বিভ্রান্তিকর সীমান্তই হয়ে উঠেছে পর্যটনের মূল আকর্ষণ। রাস্তায় সাদা রেখা টেনে সীমান্ত চিহ্নিত করা আছে। বাড়ির দরজায় ঝুলছে দেশের পতাকা। স্থানীয় পর্যটন অফিস থেকে পাওয়া যায় গাইডবুক। তা হাতে নিয়ে ঘুরলেই বোঝা যায় সীমান্তের এই খেলা কতটা অদ্ভুত।
গ্রামে আছে একাধিক জাদুঘর। আছে ফ্রিটজ স্পিসের তৈরি মৌমাছির মোমের ভাস্কর্যের সংগ্রহশালা। যেখানে রয়েছে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির ‘লাস্ট সাপার’ চিত্রকর্মের বিশাল প্রতিলিপি।
আরেকটি জাদুঘরে স্থানীয় কারিগরদের পুরোনো হাতিয়ার, পুরোনো পেশার স্মৃতি এবং প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নিদর্শন রয়েছে।
যাঁরা এখানে রাত কাটাতে চান, তাঁদের জন্য রয়েছে অতিথিশালা। সেখানে শুধু থাকার ব্যবস্থা নয়, বরং ওয়াইন টেস্টিং থেকে শুরু করে স্থানীয় ব্রিউয়ারিতে ভ্রমণের সুযোগও রয়েছে।
বার্লে হার্টোগ এমন এক গ্রাম, যেখানে কয়েক কদম হাঁটলেই আপনি একবার বেলজিয়ামে, একবার নেদারল্যান্ডসে চলে যাবেন। সীমান্তের বিভ্রান্তিকে পর্যটন আকর্ষণে পরিণত করা এই গ্রাম নিঃসন্দেহে পৃথিবীতে অনন্য, বিভ্রান্তিকর অথচ আকর্ষণীয় ভ্রমণ গন্তব্য।
সূত্র: এক্সপেটিকা
কল্পনা করুন, একটি গ্রামে দাঁড়িয়ে একই সঙ্গে আপনি দুই দেশে আছেন। হ্যাঁ, এমনই এক গ্রামের নাম বার্লে হার্টোগ। যেটি বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসের মাঝের ছোট্ট একটি গ্রাম।
বার্লে হার্টোগ আসলে বেলজিয়ামের অংশ হলেও পুরো গ্রামটি নেদারল্যান্ডসের ভেতরে অবস্থিত। অর্থাৎ আপনি যখন গ্রামে ঘুরবেন, তখন একবার বেলজিয়ামের ভেতর। আবার কয়েক কদম পরেই নেদারল্যান্ডসে পা দিয়ে ফেলবেন, কোনো চেকপোস্ট, কোনো পাসপোর্ট দেখানো ছাড়াই।
এই অভিজ্ঞতাই বার্লে হার্টোগকে বিশ্বে অন্যতম বিভ্রান্তিকর, একই সঙ্গে আকর্ষণীয় ভ্রমণ গন্তব্য করে তুলেছে।
দরজার ওপারে ভিন্ন দেশ
গ্রামটির মজার বিষয় হলো বাড়িঘরের অবস্থান। নিয়ম হলো, যে দেশে বাড়ির সামনের দরজা পড়বে, কর দিতে হবে সেই দেশকে। ফলে এক বাড়ি বেলজিয়ামের হলেও দরজা যদি নেদারল্যান্ডসে পড়ে, তবে কর যাবে নেদারল্যান্ডসে! তাই অনেক পরিবার ইচ্ছা করেই বাড়ির দরজা সরিয়ে নিয়েছে কয়েক মিটার দূরে, যাতে কর সুবিধাজনক হয়। সেখানে এমনও রয়েছে যে এক বাড়ির রান্নাঘর বেলজিয়ামে আর শোয়ার ঘর নেদারল্যান্ডসে!
একসঙ্গে দুই গ্রাম
বার্লে হার্টোগ গ্রামে ঢুকলেই চোখে পড়বে দুটি স্বাগত সাইন, বার্লে হার্টোগ (বেলজিয়ামের অংশ) এবং বার্লে নাসাউ (নেদারল্যান্ডসের অংশ)। প্রথম দেখায় মনে হতে পারে, দুটি নাম একই। কিন্তু আসলে এগুলো দুটি আলাদা গ্রাম, যা একই জায়গায় পাশাপাশি অবস্থান করছে।
আরও অবাক করা বিষয় হলো এই এলাকার ভৌগোলিক বিন্যাস। এখানে মোট ৩০টি এনক্লেভ বা ঘেরা জমি রয়েছে। এর মধ্যে বেলজিয়ামের ২২টি ছোট এনক্লেভ। নেদারল্যান্ডসের ১টি বড় এনক্লেভ। আর ৭টি হলো নেদারল্যান্ডসের ভেতরের ক্ষুদ্র খণ্ড।
দ্বিগুণ সবকিছু
এত জটিল সীমান্তের কারণে এখানে সামাজিক ও প্রশাসনিক জীবনও ভিন্নধর্মী। গ্রামটিতে—
⦁ পানি, গ্যাস ও নিষ্কাশনের মতো কিছু সেবা দুই দেশ যৌথভাবে দেয়।
⦁ পুলিশ স্টেশনের সংখ্যা দুটি, ফায়ার সার্ভিস দুটি, এমনকি গির্জাও দুটি।
⦁ টেলিফোন ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা আলাদা।
ফলে গ্রামের মানুষ একই জায়গায় থেকেও প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম মেনে চলে।
ইতিহাস থেকে জন্ম জটের
মধ্যযুগে এখানে জমির মালিকানা ভাগ হয়েছিল ব্রাবান্তের ডিউক ও নাসাউ—এই দুই প্রভাবশালী পরিবারের মধ্যে। তাদের জমির সীমারেখাই পরবর্তী সময়ে আজকের এই বিভক্ত গ্রামে রূপ নেয়। ১৮৩১ সালে বেলজিয়াম স্বাধীন হওয়ার পর দুই দেশের সীমান্ত ঠিক করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে সীমান্ত কমিশন। কারণ, একেকটি জমিখণ্ড ছিল একেক দেশের। অবশেষে প্রতিটি খণ্ড আলাদা করে নির্ধারণ করা হয় সীমান্ত। ফলে সেই জট আজও রয়ে গেছে।
পুনর্মিলনের চেষ্টা ব্যর্থ
বছরের পর বছর বহুবার এ জটিলতা কাটাতে একীভূত করার প্রস্তাব উঠেছে। সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, বার্লে হার্টোগকে বেলজিয়ামের টার্নহাউটের সঙ্গে এবং বার্লে নাসাউকে নেদারল্যান্ডসের অন্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করার। কিন্তু দুই দেশের সংসদই সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ফলে আগের মতোই থেকে গেছে এই সীমান্তের ধাঁধা।
পর্যটনের স্বর্গ
কিন্তু এই বিভ্রান্তিকর সীমান্তই হয়ে উঠেছে পর্যটনের মূল আকর্ষণ। রাস্তায় সাদা রেখা টেনে সীমান্ত চিহ্নিত করা আছে। বাড়ির দরজায় ঝুলছে দেশের পতাকা। স্থানীয় পর্যটন অফিস থেকে পাওয়া যায় গাইডবুক। তা হাতে নিয়ে ঘুরলেই বোঝা যায় সীমান্তের এই খেলা কতটা অদ্ভুত।
গ্রামে আছে একাধিক জাদুঘর। আছে ফ্রিটজ স্পিসের তৈরি মৌমাছির মোমের ভাস্কর্যের সংগ্রহশালা। যেখানে রয়েছে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির ‘লাস্ট সাপার’ চিত্রকর্মের বিশাল প্রতিলিপি।
আরেকটি জাদুঘরে স্থানীয় কারিগরদের পুরোনো হাতিয়ার, পুরোনো পেশার স্মৃতি এবং প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নিদর্শন রয়েছে।
যাঁরা এখানে রাত কাটাতে চান, তাঁদের জন্য রয়েছে অতিথিশালা। সেখানে শুধু থাকার ব্যবস্থা নয়, বরং ওয়াইন টেস্টিং থেকে শুরু করে স্থানীয় ব্রিউয়ারিতে ভ্রমণের সুযোগও রয়েছে।
বার্লে হার্টোগ এমন এক গ্রাম, যেখানে কয়েক কদম হাঁটলেই আপনি একবার বেলজিয়ামে, একবার নেদারল্যান্ডসে চলে যাবেন। সীমান্তের বিভ্রান্তিকে পর্যটন আকর্ষণে পরিণত করা এই গ্রাম নিঃসন্দেহে পৃথিবীতে অনন্য, বিভ্রান্তিকর অথচ আকর্ষণীয় ভ্রমণ গন্তব্য।
সূত্র: এক্সপেটিকা
মিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ২০২৫-এর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটেছে এ বছরের খেতাবপ্রাপ্ত বিজয়ী জেসিয়া ইসলামকে মুকুট পরানোর মধ্য দিয়ে। আজ ২৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএসে আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্পের কার্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
৩১ মিনিট আগেবন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে কোনো বুফে রেস্টুরেন্টে ঢুকলেন। চোখের সামনে লম্বা টেবিলে সাজানো খাবার, নানান রঙের সালাদ, গরম ধোঁয়া ওঠা মাংস, মিষ্টি, ফল। খাবারের ঘ্রাণ যেন আপনাকে কাছে টানছে। কিন্তু দেখা যায়, অনেকে অল্প কিছু খেয়েই পেট ভরিয়ে ফেলেন। এত আশা করে বুফে খেতে যাওয়া যেন জলে গেল। এমনটা হতেই পারে, যদি
৪ ঘণ্টা আগেকোনো কোনো দেশে জনগণ তাদের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি প্রবল আস্থা প্রকাশ করে। আবার কিছু দেশে সরকারের প্রতি ব্যাপক সংশয় ও অবিশ্বাস বিরাজ করে। সরকারের প্রতি জনগণের বিশ্বাস দেশভেদে ব্যাপকভাবে ভিন্ন বলে জানিয়েছে অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট।
৫ ঘণ্টা আগেপ্রতিবারই পরিকল্পনা করেন, কিন্তু কর্মক্ষেত্র আর বাড়িতে সমানতালে ব্যস্ত থাকায় পূজায় মিষ্টিমুখের জন্য ভরসা করতে হয় মিষ্টির দোকান আর অনলাইন-ভিত্তিক খাবারের পেজগুলোর ওপর। এবার আটঘাট বেঁধেই পরিকল্পনা করেছেন, অল্প করে হলেও ঘরেই তৈরি হবে দশমীর খাবার। আর শেষপাতে থাকবে মিষ্টিমুখের আয়োজন।
৭ ঘণ্টা আগে