Ajker Patrika

সুঁই সুতায় ফ্রিদা কাহলো

রিক্তা রিচি
সুঁই সুতায় ফ্রিদা কাহলো

চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো। মেক্সিকো থেকে যার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল পুরো বিশ্বে। ফ্রিদাকে ভালোবেসে সুঁই সুতায় বন্দী করেছেন এক বাঙালি নারী। নাম সাদিয়া সুলতানা। কী নিখুঁতভাবে যে তিনি ফ্রিদাকে তুলে ধরেছেন! দেখে ভীষণ অবাক হলাম। 

পৃথিবীতে এত এত শিল্পী-কবি-সাহিত্যিক, এত এত দৃশ্য, এত কিছু থাকতে সাদিয়া সুলতানা ফ্রিদা কাহলোকেই কেন আঁকলেন? জানতে চাইলে সাদিয়া জানান, ফ্রিদা তাঁর প্রিয় শিল্পী। 

সাদিয়া বলেন, একবার একটা লেখার প্রয়োজনে হাইপেশিয়া আর ফ্রিদা কাহলোকে নিয়ে বেশ কিছু আর্টিকেল পড়ার সুযোগ হয়। তখন ফ্রিদাকে নতুনভাবে আবিষ্কার করি। পোলিও আক্রান্ত ফ্রিদার শৈশব, তারুণ্য, দুর্ঘটনা, প্রেম, শিল্পী জীবন—সব আমাকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করে। জীবনের অগুনতি সংকটের পরও ফ্রিদা উঠে দাঁড়িয়েছেন বারবার। হতাশায় ভুগেও জীবনের মুখোমুখি হয়েছেন। রং-তুলিতে নিজেকে, নিজের অন্তর্জগৎ এঁকেছেন। ফ্রিদার আঁকা আত্ম-প্রকৃতিতে যে পরাবাস্তবতা আর বাস্তবতার যন্ত্রণা উঠে আসে, তা যেন আমাকেও আয়নার সামনে দাঁড় করায়। এই অনুভূতি নিজের ভেতরের বিষাদকে ঘায়েল করে, স্ফুলিঙ্গ তৈরি করে। আসলে ফ্রিদা নিজেকে ভালোবাসতে শেখায়। তাই ফ্রিদাকেও ভালোবাসতে হয়। সেই ভালোবাসার একটা চিহ্ন হুপআর্ট হয়ে রইল আমার ঘরে। 

সাদিয়া সুলতানার হাতে সুঁই সুতায় বন্দী ফ্রিদা কাহলোকিন্তু এই নিখুঁত কাজটি তিনি কীভাবে করলেন? তিনিও কি ফ্রিদার মতো নিজের অন্তর্গত সমস্ত দুঃখ-বিষাদকে ঘায়েল করতে চান? এ জন্যই কি বেছে নিয়েছেন হুপ আর্ট? উত্তরে সাদিয়া জানান, গত বছর করোনার কারণে যখন সাধারণ ছুটি চলছিল, তখন গৃহবন্দী জীবন বেশ একঘেয়ে লাগছিল তাঁর। মানসিক অবসাদ ও একঘেয়েমি দূর করতে ছোট বেলায় শিখে রাখা সুঁই-সুতার কাজকে বেছে নেন। পেশাগত কাজ, সংসার সবকিছু সামলে সুঁই-সুতার কাজ প্রায় ভুলতে বসেছিলেন তিনি। সাধারণ ছুটি ও লকডাউনের দিনগুলোতে তাঁর মনে হতো যে সময় চলে যাচ্ছে, তা আর ফিরে আসবে না। একটা সময় দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসবে, সাধ থাকলেও সাধ্য থাকবে না। তাই তিনি সুঁই-সুতা দিয়ে নকশা আঁকতে শুরু করলেন। এর পর একদিন ফ্রিদার শিল্পকর্ম সুঁই-সুতা দিয়ে আঁকার ভাবনা এল তাঁর মাথায়। 

‘একদিন সাহস করে কাপড়ে পেনসিল দিয়ে ফ্রিদা কাহলোর ‘সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড’ এঁকে সেলাই করতে শুরু করলাম। ভরাট, ডাল ফোঁড় ইত্যাদি সেলাই দিয়ে বিড়াল, পাতা ফুল সেলাই করে আস্তে আস্তে যখন ফ্রিদার মুখাবয়ব আনার চেষ্টা করছিলাম, তখন প্রথমে কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। এত সূক্ষ্ম কাজ ফ্রিদার! তবু ভালোবেসে কাজটা করার চেষ্টা করেছি। যতক্ষণ না নিজে সন্তুষ্ট হয়েছি, ততক্ষণ ফোঁড় খুলেছি, নতুন করে ফোঁড় তুলেছি’—জানান সাদিয়া। 

সাদিয়া সুলতানা সেলাইয়ের কাজ শেখেন ছোটবেলায়। দেখতেন মা ও বোনদের সেলাইয়ের কাজ। স্কুলেও শেখানো হতো কিছুটা। পরীক্ষার সময় রুমাল, টেবিল ক্লথ ইত্যাদি তৈরি করে জমাও দিতে হতো। সেলাইকাজ জমা দিতে গিয়ে সেলাইয়ের প্রথম হাতেখড়ি হয় তাঁর। এ ছাড়া তিনি তাঁর মা ও বড় বোনকে দেখেছেন সুঁই-সুতার কাজ করতে। তাঁরা সুঁই-সুতার নকশা থেকে শুরু করে কুশি-কাঁটা, উলের কাজ, সেলাই মেশিনে জামা-কাপড় তৈরি করতেন। 

সাদিয়া সুলতানার সূচিকর্মসাদিয়া সুলতানারা চার বোন ও এক ভাই। মধ্যবিত্ত জীবনে বেড়ে উঠেছেন তাঁরা। সে সময় ঘরে সেলাই করা সাদামাটা কামিজকে আকর্ষণীয় আর মূল্যবান করতে তাঁরা চার বোনই সুঁই-সুতার কাজ করতেন। 

এর পর অনেক সময় গড়িয়েছে, সাদিয়া সুলতানার বিয়ে হয়েছে, সন্তান হয়েছে। কিন্তু সেলাইয়ের অভ্যাস যায়নি। বরং শিশুদের জন্মের পর নতুন করে আনন্দ আয়োজন শুরু হলো। ওদের জন্য সেলাই মেশিনে তৈরি করতে লাগলেন ফ্রক ও ফতুয়া। সেসবে সুঁই-সুতার নকশা করতেন তিনি। সংসার সাজানোর জন্য অনেক ওয়ালম্যাটও সেলাই করেছেন। এর পর কাজের চাপে অনেক বছর শৌখিন কিছু সেলাই করেননি তিনি। 

করোনার কারণে সঙ্গ নিরোধকালে তাঁর মনে হলো, যান্ত্রিক জীবন বিশেষ করে মোবাইল আসক্তি শখ, স্বপ্ন সব খেয়ে ফেলছে। মায়ের ঐতিহ্যটুকু ধরে রাখা যেন নিজের স্বপ্ন জিইয়ে রাখার মতোই। এসব ভাবনা থেকে আবার কুশন কভার, জামা আর ওয়ালম্যাট সেলাইয়ে হাত দিলেন শৌখিন সাদিয়া। ফেসবুক গ্রুপ ‘শখের সেলাইয়ে’ নিজের সেলাইয়ের ছবি শেয়ার দিতে থাকেন তিনি। ব্যাপক সাড়াও পান। সেখান থেকেই প্রথম হুপআর্টের ধারণা পান তিনি। 

সবুজ ভালোবাসেন সাদিয়া সুলতানাএই মহামারিকালে মানসিকভাবে সাদিয়াও মাঝেমধ্যে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। হতাশও হন। তবে হতাশা বা আত্মসংকট বাড়তে দেন না মোটেই। মনে নেতিবাচক চিন্তা শেকড় গাড়ার আগেই উপড়ে ফেলেন। সুঁই-সুতা, ফ্রেম নিয়ে বসেন। ‘সেলাই করলে আমার মন ভালো হয়ে যায়। এ ছাড়া দিনে কিছু না কিছু পড়ি, হয় এক বা একাধিক গল্প, নয়তো কোনো উপন্যাসের কয়েক পাতা। এসব ছাড়া আমার গাছের সবুজও আমাকে প্রফুল্ল রাখে। আসলে ব্যস্ততাই জীবন। আর তাই একঘেয়ে দিনলিপিকে বৈচিত্র্যময় করতে নিজের শখের কাজে ব্যস্ত থাকি’, বলেন সাদিয়া সুলতানা। 

সেলাই নিয়ে আপনার কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে কি? জানতে চাইলে সাদিয়া বলেন, ‘আসলে প্রথমে তেমন কোনো পরিকল্পনা ছিল না। ঐতিহ্যকে ধরে রাখছি, আনন্দ পাচ্ছি—এই দুই অনুভবই কাজ করতে উৎসাহিত করত। ইদানীং ফেসবুকে সূচিকর্মের ছবি শেয়ারের পর অনেকের কাছ থেকে এত সাড়া পেয়েছি যে, আমি নতুনভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছি। অনেকে আমাকে ম্যাসেজ করেন, নিজের কাজ দেখান, আমার কাজ কিনতে চান। উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করার আমন্ত্রণ জানান। আবার তাঁরা নিজে বা তাঁদের সন্তানেরা যে আমাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে সেলাই করে, সেসবের ছবিও পাঠান। এসব দেখে আমার খুব ভালো লাগে। এমনকি আমার কয়েকজন বন্ধু আমার সূচিকর্মের একটা প্রদর্শনী আয়োজনও করতে চাইছেন। তবে আমি মনে করি, এখনো সেই সময় আসেনি। দৃষ্টিশক্তি নাজুক হওয়ার আগেই আমি আমার দেশ, প্রকৃতি নিয়ে আরও কিছু কাজ করতে চাই। আর চাই প্রায় হারিয়ে যেতে বসা সূচিশিল্প আবার ঘরে ঘরে আমাদের অবসরের অনুষঙ্গ হয়ে উঠুক।’ 

সেলাই ছাড়াও অবসরে বাগান করতে ভালোবাসেন সাদিয়া সুলতানা। ছাদে ও বারান্দায় বাগান করেন তিনি। পেশাগত জীবনে বিচারক হলেও তিনি তাঁর এই পরিচয়কে লুকিয়েই রাখেন। বর্তমানে তিনি যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে কর্মরত। তবে তিনি মানুষের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করেন সহজ ও সাধারণ হিসেবে। পেশাগত কাজের ফাঁকে যতটুকু সময় পান, সে সময়ে লেখালেখি করেন। 

গল্প-উপন্যাস পড়তে ও লিখতে বেশি ভালোবাসেন। সাদিয়ার প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘চক্র’ (গল্পগ্রন্থ, ২০১৪), ‘ন আকারে না’ (গল্পগ্রন্থ, ২০১৭), ‘আমি আঁধারে থাকি’ (উপন্যাস, ২০১৮), ‘ঘুম ঘরের সুখ-অসুখ’ (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯), ‘মেনকি ফান্দার অপরাধ কিংবা পাপ’ (গল্পগ্রন্থ, ২০২০) এবং ‘আজু মাইয়ের পৈতানের সুখ’ (মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপন্যাসিকা, ২০২০)। 

নিজের বারান্দা–বাগানেছোট থেকে লেখালেখির আগ্রহ বলেই পড়ার অভ্যাসটাও তখন থেকেই গড়ে ওঠে সাদিয়ার। প্রিয় লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মাহবুবুল হক, হাসান আজিজুল হক, নাসরীন জাহান, কুলদা রায় প্রমুখ। প্রিয় বইয়ের সংখ্যাও অসংখ্য। তবে বারবার পড়েন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাহবুবুল হকের কিছু ছোট গল্প, নাসরীন জাহানের ‘উড়ুক্কু’, ‘কমলা সুন্দরী আর এক সন্ধ্যার কাহিনি’, কুলদা রায়ের ‘বৃষ্টিচিহ্নিত জল’, জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’, ডা. এম এ হাসানের ‘যুদ্ধ ও নারী’। 

লেখালেখি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে সাদিয়া বলেন, ‘পরিকল্পনা করে তেমন কিছু লিখতে পারি না। আমার অভিজ্ঞতা আর যাতনা আমাকে লেখায়। তাই সামনে কী অপেক্ষা করছে আমি জানি না। কেবল কর্মজীবনের ব্যস্ততা বাঁচিয়ে যতটুকু সময় পাই লিখে যেতে চাই। বিশেষ করে নারী ও আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরও কিছু লিখতে চাই।’ 

পড়াশোনা, লেখালেখি বা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নারী হিসেবে কোনো বাধা বা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন কি? সাদিয়া বললেন, ‘বাধার সম্মুখীন তো হয়েছি, হচ্ছি প্রতিনিয়ত। বাধা ডিঙাতেও শিখেছি। নারী হিসেবে যাঁরা আমাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য আর বক্রোক্তি করেছে, তাঁদের জবাব দিতেও শিখেছি। আর পড়াশোনা, লেখালেখি আর পেশাগত দায়িত্ব, তিনটি ভিন্ন ভিন্ন স্তর। তাই বাধা বা সমস্যার গল্পগুলোও ভিন্নতর। সেসব নিয়ে সবিস্তারে বলার সময় এখনো আসেনি বলে মনে করি। শুধু বলব, একটা সময় বাবাহীন মধ্যবিত্ত পরিবারে যত ধরনের সংকট আসতে পারে, সবই এসেছে। তবে আমার মা কখনোই আমাদের পাঁচ ভাইবোনকে পড়াশোনা ছাড়া বিকল্প কিছু ভাবতে শেখাননি। ছেলেমেয়ে হিসেবে আমাদের প্রতি নিজের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্যও করেননি। এসবই ছিল জীবনের প্রথম ইতিবাচকতা। আর তাই মগজে গেঁথে নিয়েছিলাম মায়ের শিক্ষা, নিজেকে তৈরি করতে হবে। স্বাবলম্বী হতে হবে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ছাড়া ব্যক্তি স্বাধীনতা, আর স্বাতন্ত্র্য যে থাকবে না, তা উপলব্ধি করেছিলাম বলেই নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এই ডিসেম্বরে যা কিছু করতে পারেন

ফারিয়া রহমান খান 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৯
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

ডিসেম্বর মানেই অন্য রকম অনুভূতি। একদিকে বছর শেষের সব হিসাবনিকাশ, নতুন বছরের আগমনী বার্তা; অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দ আর পিঠা-পার্বণের আমেজ। সব মিলিয়ে এই মাসটি যেন সত্যিই বিশেষ। ডিসেম্বরে, বছরের শেষ সময়গুলো কীভাবে একটু অর্থবহ করা যায়, তা জেনে নিন।

উদ্দেশ্য স্থির করুন

নতুন বছরে আপনি কী কী করতে চান, তা এখনই ভেবে ফেলুন। একটু স্থির হয়ে বসে খাতা-কলমে লিখে আপনার নতুন বছরের উদ্দেশ্য স্থির করে নিন। লিখে রাখলে তা বিভিন্নভাবে উদ্দেশ্য পূরণে সহায়তা করবে।

ঘর সাজান

পুরোনো বছরকে সুন্দর করে বিদায় দিতেই হোক বা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে—ঘর সাজান সুন্দর করে। কিছু ওয়ার্ম লাইট ও জানালা বা টেবিলে কিছু গাছ রেখে ঘরে দিন একটু উষ্ণতার ছোঁয়া। সঙ্গে পুরোনো অপ্রয়োজনীয় জিনিস অন্য কাউকে দিয়ে দিন। দেখবেন বাসায় একটা শান্ত ও পরিচ্ছন্ন ভাব আসবে।

পিঠা-পার্বণের আমেজ ও আড্ডা

পিঠা সংস্কৃতির অংশ। তাই ঐতিহ্য ধরে রাখাতে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে সময় করে একদিন বিভিন্ন রকম পিঠা বানাতে পারেন। বড় আয়োজন নয়, বরং চা-বিস্কুট আর পিঠা নিয়ে একটি ঘরোয়া আড্ডা জমান। পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করুন। দেখবেন, মন থেকে অনেকখানি ভার নেমে গেছে।

বই পড়ুন

ডিসেম্বরের আবহাওয়া বই পড়ার জন্য উপযুক্ত। ছুটির দিনে দুপুরগুলো কাজে লাগান। গায়ে হালকা কাঁথা জড়িয়ে একটা অলস দুপুর বই পড়ে দেখুন। অথবা একটা ভালো উপন্যাস নিয়ে শীতের মিষ্টি রোদে বসে পড়ুন। সঙ্গে রাখুন এক কাপ চা। দেখবেন, খুব ভালো লাগবে।

নিজেকে সময় দিন

বছরের এই শেষ সময় এসেও নিজের জন্য সময় বের করুন। নিজের যত্ন নিন, নিজেকে নিজেই কিছু উপহার দিন। দেখবেন নিজেকে মূল্যবান ও যোগ্য মনে হবে। তা ছাড়া কাউকে কিছু উপহার দিতে চাইলেও দিতে পারেন। সেটাও কিন্তু নিজেকে সময় দেওয়ার কাজ করবে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সহায়তা করুন

শীতকালে অনেক জায়গায় পিঠা মেলা বা হস্তশিল্প মেলা বসে। এই মেলাগুলোতে ঘুরে বেড়ান। উৎসবের কেনাকাটায় বড় শপিং মল এড়িয়ে স্থানীয় কারিগরদের কাছ থেকে কিছু কিনুন এবং শীতের খাবার চেখে দেখুন। এতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা উপকৃত হবেন। মনে রাখবেন, উদ্যোক্তাদের সহায়তা না করলে তারা বড় হতে পারবে না। তাদের বড় করতে সহায়তা করাও একটা উদ্যোগ বটে।

সহায়তার হাত বাড়ান

শীতকালে অসহায় মানুষদের কষ্ট কমাতে গরম কাপড় ও কম্বল দান করুন। ছোট ছোট কাজ করে অন্যের মুখে হাসি ফোটান; যেমন কাউকে চা বা কফি খাওয়ান, বাসে বয়স্ক কারও জন্য আসন ছেড়ে দিন, কাউকে রাস্তা পার করিয়ে দিন। ছোট একটি মানবিক কাজ আপনার জীবনকে অর্থবহ করে তুলবে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

বছরের প্রতিফলন

পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বসে অথবা একা বসে এই বছর কী কী ভালো ও খারাপ হয়েছে, তা নিয়ে ভাবুন। কী কী ভুল করেছেন, সেগুলো ভেবে দেখুন। সামনের বছরগুলোতে এসব ভুল যেন না হয়, সে জন্য সতর্ক হোন। এই বছর যা কিছু ইতিবাচক হয়েছে, সেগুলো একটি ডায়েরিতে লিখে সৃষ্টিকর্তাকে কৃতজ্ঞতা জানান। কারও সঙ্গে মনোমালিন্য হয়ে থাকলে তা মিটিয়ে নিন। অযথা মনে রাগ পুষে রেখে নিজেকে কষ্ট দেবেন না।

পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করুন

পুরোনো বন্ধুরা আসলে মানুষের ব্রিদিং স্পেস বা নিশ্বাস ফেলার জায়গা। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সবার সঙ্গে সম্ভব না হলেও যাঁদের বা যাঁর সঙ্গে সম্ভব, তাঁদের বা তাঁর সঙ্গে দেখা করে কিছু সময় কাটিয়ে আসুন। মন খুলে হাসুন। স্মৃতিচারণা করুন। অন্তত এক বেলা একসঙ্গে বসে খেয়ে ফেলুন মনের মতো কোনো খাবার। দেখবেন নতুন বছর অন্য রকমভাবে শুরু হবে।

সূত্র: ক্যামিলিস্টাইল ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতের রোদে ত্বক পুড়েছে? গোসলের সময় এই প্যাকগুলো ব্যবহারে মিলবে উপকার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে পাতলা ত্বকের মানুষদের ত্বক দ্রুত পুড়ে যায়। ফলে গায়ের রং তামাটে হয়ে যায়। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস
দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে পাতলা ত্বকের মানুষদের ত্বক দ্রুত পুড়ে যায়। ফলে গায়ের রং তামাটে হয়ে যায়। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস

বলতে দ্বিধা নেই, গরমের দিনে রোদ গায়ে লাগিয়ে ভিটামিন ডি নেওয়ার কথা ভুলে গেলেও শীতে যেন তা বেশি বেশি মনে পড়ে। হিম সকালে রোদ গায়ে মাখতে কারো মন্দ লাগে না। ফলে এই মৌসুমে গায়ে রোদ লাগানোও হয় বেশি। আর এতে অতিরিক্ত পাতলা ত্বকের মানুষেরা একটু ঝামেলায় পড়েন। দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে পাতলা ত্বকের মানুষদের ত্বক দ্রুত পুড়ে যায়। ফলে গায়ের রং তামাটে হয়ে যায়। তাই এ সময় নিয়মিত যাঁরা রোদ পোহাচ্ছেন, তাঁদের ত্বক যদি এ রকম রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে যায়, তাঁরা গোসলের সময় কিছু ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তাতে সুবিধা পাবেন।

লেবুর রস, মধু ও গোলাপজলের ফেসপ্যাক

লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে মধু ত্বক আর্দ্র রাখে, যা শীতকালের রুক্ষ আবহাওয়ায় জরুরি। ১ চা-চামচ করে লেবুর রস, শসার রস, মধুর সঙ্গে আধা চা-চামচ গোলাপজল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি মুখে লাগিয়ে রাখুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। তবে এই প্যাক ব্যবহার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরাসরি রোদে না বের হওয়াই ভালো। বের হলেও ছাতা ব্যবহার করুন।

দই, বেসন ও হলুদের ফেসপ্যাক

এই প্যাক একই সঙ্গে ট্যান দূর করতে, মৃত কোষ ঝরাতে এবং ত্বক উজ্জ্বল করতে খুব ভালো কাজ করে। ২ চা-চামচ টক দই, ১ চা-চামচ বেসন, এক চিমটি হলুদবাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই প্যাক মুখে ও গলায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। প্রয়োজনে এই প্যাক শরীরের অন্য অংশের রোদে পোড়া দাগের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।

লেবুর রস ও চিনির মিশ্রণ

ঘরে বসে ট্যান অপসারণের জন্য ফেসপ্যাকে যোগ করতে পারেন লেবুর রস। প্রাকৃতিক ব্লিচিং ক্ষমতার কারণে এটি ত্বকের যেকোনো দাগ দূর করতে খুব ভালো কাজ করে। এ ছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ত্বকের দূষণ দূরে সহায়ক। সানট্যান দূর করতে লেবুর রস মধু বা চিনির সঙ্গে মিশিয়ে আক্রান্ত জায়গাগুলোয় স্ক্র‍্যাব করুন। ১৫ মিনিট আলতো করে ঘষে ধুয়ে নিন। তবে লেবু মিশ্রিত প্যাক বা স্ক্র‍্যাব ত্বকে ব্যবহার করলে ধোয়ার পর অবশ্যই ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। নয়তো ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে উঠতে পারে।

আলুর রস ও মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক

আলুর রসে মৃদু ব্লিচিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা সানট্যান হালকা করতে পারে। অন্যদিকে মুলতানি মাটি ত্বক পরিষ্কার করে। ২ চা-চামচ আলুর রস, ১ চা-চামচ মুলতানি মাটি, অল্প পরিমাণে গোলাপজল বা পানি মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই প্যাক মুখে লাগান এবং ২০ মিনিট বা পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে পানি ও স্ক্র‍্যাবার দিয়ে ম্যাসাজ করে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।

নারকেলের দুধেও মিলবে উপকার

ট্যান দূর করার পাশাপাশি নারকেল দুধ ত্বকের অন্যান্য উপকারও করে। মুখ ও হাতে ট্যান পড়ে থাকলে নারকেলের দুধকেই সমাধান হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। রোদে পোড়া ত্বকে তাজা নারকেল দুধ লাগিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। এরপর ধুয়ে নিন। ত্বক ধীরে ধীরে উজ্জ্বলতা ছড়াবে।

শসা ও লেবুর রসের মিশ্রণ

শসা ত্বক আর্দ্র রাখে এবং পোড়া ত্বকে আরাম দেয়। অন্যদিকে লেবুর রস ত্বকের রং হালকা করতে সহায়ক। শসা দিয়ে মুখ, ঘাড় ও হাতের ট্যান দূর করার ভালো উপায় হলো, খোসা ছাড়িয়ে থেঁতো করে রস বের করে নিয়ে তাতে সমপরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে তুলার বল দিয়ে সেই রস আক্রান্ত জায়গায় লাগানো। এরপর সেই রস ত্বকে পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

সূত্র: ফেমিনা ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৫
আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

মেষ

আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন। সাবধান; পুরোনো প্রেমিকার হঠাৎ ফোন আসতে পারে। ফোনটা ধরবেন নাকি বলবেন ‘নেটওয়ার্কের বাইরে আছি’, সেটা আপনার কর্মফল! প্রেমের ক্ষেত্রে বিরক্তি বা অনাগ্রহ না দেখানোই ভালো।

বৃষ

আজ আপনার ব্যাংক ব্যালেন্সের দিকে নজর দিতে হবে। না, অর্থ আসবে না; বরং অর্থ যাওয়ার পথ তৈরি হবে! বিশেষত অনলাইন শপিংয়ের দিকে মন ঝুঁকতে পারে। এমন কিছু অর্ডার করে ফেলবেন, যেটা হাতে আসার পর মনে হবে—‘এটার আসল প্রয়োজন কী ছিল?’ স্ত্রীর কাছ থেকে উপহার চেয়ে বসলে এমন কিছু পাবেন, যা দেখে হাসবেন নাকি কাঁদবেন, তা ঠিক করতে পারবেন না। ফাস্ট ফুডের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিন। একটু কম তেল-ঝাল খান, নইলে গ্যাসের চোটে মহাকাশে যাত্রা শুরু করতে পারেন।

মিথুন

মিথুন রাশির দ্বৈত সত্তা আজ দ্বিগুণ সক্রিয়। এক মন বলবে, ‘কাজটা করে ফেলি,’ আর অন্য মন বলবে, ‘আরে বাবা! নেটফ্লিক্সের সিরিজটা আগে শেষ করা যাক!’ এই দোটানার জন্য দিনের শেষে আপনার কাজও হবে না, আবার সিরিজটাও শেষও হবে না। কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী আজ আপনার সাফল্যের গল্পে এত বেশি রং মেশাবেন যে আসল গল্পের চেয়ে সেটা শুনেই বসের বেশি হাসি পাবে। সন্ধ্যায় পরিচিত কাউকে এমন একটি উপদেশ দেবেন, যা আপনি নিজে জীবনে কখনো মেনে চলেননি।

কর্কট

কর্কট রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত ঘরকুনো হন। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে ঘরের বাইরে ঠেলে দেবে। অপ্রত্যাশিতভাবে বন্ধু বা আত্মীয়ের দল বাড়িতে এসে আপনার শান্তি ভঙ্গ করতে পারে। তাদের আপ্যায়ন করতে গিয়ে পকেটের দফারফা হবে। তবে চিন্তা নেই, এই বিড়ম্বনার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের কোনো শুভ ইঙ্গিত। প্রেমিক/প্রেমিকা আজ আপনাকে ‘ডায়েট কন্ট্রোল’ করতে বলবে। আপনি গোপনে লুকিয়ে ফ্রিজের দিকে এগোনোর সময় ধরা পড়তে পারেন।

সিংহ

সিংহ রাশি, আজ আপনার ব্যক্তিত্বের তেজ এতটা বেশি থাকবে যে ঘরে ঢুকে লাইট না জ্বাললেও চলবে। সবাই আজ আপনার কথা শুনতে চাইবে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো—আপনার বলার মতো বিশেষ কোনো কথা আজ থাকবে না। বসের চোখে পড়তে চাচ্ছেন? যান, একটু উল্টাপাল্টা কিছু করুন। আপনার ভুল করার স্টাইল দেখেও তারা মুগ্ধ হতে পারে। অপ্রয়োজনীয় জিনিসে প্রচুর টাকা খরচ হতে পারে, যেমন চতুর্থ কফির কাপ অথবা একটি লাল রঙের ক্যাপ যা আপনার মোটেই প্রয়োজন নেই।

কন্যা

আজ আপনার ভেতরের ‘পারফেকশনিস্ট’ সত্তাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে। সহকর্মীর ফাইলে সামান্য একটি বানান ভুল পেলেও এমন রিঅ্যাক্ট করবেন যেন তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধটি করে ফেলেছেন। এই বাড়তি খুঁতখুঁতে স্বভাবের জন্য কিছু মানুষ আপনাকে এড়িয়ে যেতে পারে। নিজেকে নিয়ে একটু হাসিঠাট্টা করুন। সবকিছু সিরিয়াসলি নেবেন না। যদি দেখেন জুতা উল্টো পরে ফেলেছেন, তা নিয়ে একটা সেলফি তুলে পোস্ট করে দিন! দেখবেন দিনটি হালকা হয়ে গেছে।

তুলা

গ্রহদের মতে, আজ আপনার ‘ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট’ সফল হবে। তবে এই ব্যালেন্স কর্মক্ষেত্র বা ব্যক্তিগত জীবনে নয়, হবে আপনার ফ্রিজের খাবার আর আপনার ডায়েটের মধ্যে! আপনি দুই দিকেই সামঞ্জস্য রক্ষা করবেন; অর্থাৎ ডায়েটও ভাঙবেন, আবার রাতে আফসোসও করবেন। আজ আপনার সঙ্গী এমন একটি অদ্ভুত প্রশ্ন করতে পারে, যার উত্তর দিতে গিয়ে আপনার মাথা পুরোপুরি ঘুরে যাবে; যেমন ‘বিয়ে না হলে আমাদের জীবনটা কেমন হতো?’ শান্ত থাকুন এবং হাসতে শিখুন।

বৃশ্চিক

বৃশ্চিক, আপনার রহস্যময় স্বভাব আজ কারও কাছে ধরা পড়বে না। কারণ, নিজেই আজ আপনার রহস্য ভুলে যাবেন! পুরোনো একটি ভুলে যাওয়া ঋণ বা পাওনা টাকা আজ হুট করে মনে পড়তে পারে। তবে যখন সেটি দাবি করতে যাবেন, তখন অন্য পক্ষ এমন এক গল্প শোনাবে যে আপনি উল্টো তাকেই সহানুভূতি দেখিয়ে টাকা দিয়ে আসতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে আজ এমন একজনের সঙ্গে দেখা হবে, যিনি আপনার চেয়েও বেশি গম্ভীর। দুজন মিলে এমন একটি হাসির মুহূর্ত তৈরি করবেন, যা কেউ কল্পনাও করেনি।

ধনু

ধনু রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন। কিন্তু আজকের অ্যাডভেঞ্চারটি হবে আলমারি গোছানো! ভাবতেও পারেননি, আপনার আলমারির ভেতরে এত অদ্ভুত জিনিস লুকিয়ে ছিল। পুরোনো প্রেমের চিঠি থেকে শুরু করে ছেঁড়া মোজা পর্যন্ত সবই পেয়ে যাবেন। যদি আজ কোথাও যাওয়ার প্ল্যান থাকে, তবে সাবধানে যান। মানিব্যাগটি ভুল করে রান্নাঘরে রেখে আসতে পারেন। এই ভুলে যাওয়াটাই আজ আপনার সবচেয়ে বড় কৌতুক হতে চলেছে।

মকর

মকর, আপনি সাধারণত খুব শৃঙ্খলাপরায়ণ। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে একটু ডিসকোয়ালিফাই করবে। দিনের শুরুতেই গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের আগে মোবাইল ফোন খুঁজে পাবেন না। পরে দেখবেন, ফোনটি প্যান্টের পকেটেই ছিল। আপনার কঠোর পরিশ্রমের ফল আজ মিষ্টি হবে, তবে মিষ্টির সঙ্গে সামান্য তেতো অভিজ্ঞতাও আসতে পারে। বিনিয়োগের আগে দুবার চিন্তা করুন। এমন কাউকে বিশ্বাস করবেন না, যিনি আপনাকে ‘এক মাসে দ্বিগুণ লাভ’ করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।

কুম্ভ

কুম্ভ, আজ আপনার বুদ্ধি আকাশ ছুঁয়ে যাবে। এমন একটি সমস্যার সমাধান করবেন, যা কেউ ভাবতেও পারেনি। কিন্তু আফসোস! সেই সমস্যাটি হয়তো একেবারেই গুরুত্বহীন ছিল, যেমন ‘কে আগে রিমোট নেবে’ বা ‘চায়ের কাপের দাগটা কীভাবে তোলা যায়।’ বন্ধুদের মধ্যে কেউ আজ এমন একটি বড় দাবি করবে, যা শুনে আপনি প্রথমে অবাক হবেন, পরে হো হো করে হেসে উঠবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করলে তাতে অপ্রত্যাশিতভাবে প্রচুর লাইক ও কমেন্ট পাবেন।

মীন

মীন রাশির জাতক-জাতিকারা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। আজ সেই স্বপ্নময় জগৎটি আপনার কর্মক্ষেত্রে এসে পড়তে পারে। কাজের মধ্যে হঠাৎ কল্পনায় ডুবে যাবেন এবং বসকে ভুল করে অন্য কারও নাম ধরে ডেকে ফেলতে পারেন। প্রেমের ক্ষেত্রে আবেগপ্রবণতা আজ অতিরিক্ত বাড়বে। নিজের হাতে লেখা একটি কবিতা বা চিঠি প্রিয়জনকে দিলে তারা হয়তো হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়বে। কারণ, আবেগ দেখানোর জন্য আপনার শব্দচয়ন হয়তো আজ খুব একটা সিরিয়াস হবে না। তবে মনে রাখবেন, হাসিই সম্পর্কের সেরা মসলা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতকালে কলা খাবেন কি না

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ২৭
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। ছবি: ফ্রিপিক
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। ছবি: ফ্রিপিক

শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। সেগুলোতে শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তাই বলাই যায়, শীতকালে কলা খাওয়া নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, খাবার খাওয়া এবং তা থেকে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে ব্যক্তিগত সংবেদনশীলতা থেকে। যেসব খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেসব খাবার না খাওয়া ভালো। তাতে শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিনে কলাসহ ৪০০ গ্রাম ফল ও সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা এবং তার সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্য জেনে নিন।

শীতে কলার পুষ্টিগুণ বদলে যায়

এ ধারণা ঠিক নয়। কলার পুষ্টিগুণ অর্থাৎ পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, আঁশ ইত্যাদি ঋতুভেদে একই থাকে। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন কলাকে একটি পুষ্টিকর স্ন্যাক্স বা হালকা নাশতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

শীতে কলার পুষ্টিগুণ বদলে যায়, এ ধারণা ঠিক নয়। ছবি: ফ্রিপিক
শীতে কলার পুষ্টিগুণ বদলে যায়, এ ধারণা ঠিক নয়। ছবি: ফ্রিপিক

হজমে সমস্যা ও সর্দি-কাশি

আমাদের দেশেই শুধু নয়, পৃথিবীতে এমন বহু মানুষ আছেন যাঁরা বিশ্বাস করেন, কলা ঠান্ডা প্রকৃতির বলে শীতকালে খেলে সর্দি-কাশি বা হজমে সমস্যা করতে পারে। এটি আজ পর্যন্ত বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। স্বাভাবিকভাবে যেকোনো ব্যক্তি শীতকালে কলা খেতে পারেন। বরং কলা দ্রুত শক্তি দেয় বলে শীতকালে এটি শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে। তবে কলায় কারও অ্যালার্জি থাকলে খাওয়া ঠিক হবে না।

আয়ুর্বেদিক ধারণা

আয়ুর্বেদের মতো কিছু প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি কলাকে ‘শীতল’ প্রকৃতির বলে বিবেচনা করে। সে জন্য রাতে বা শীতে বেশি পরিমাণে না খাওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে এ পরামর্শ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

বিশেষ পরিস্থিতিতে সতর্কতা

অ্যালার্জি ও কফ: যাঁদের কলায় অ্যালার্জি আছে এবং যাঁদের শীতকালে কফ জমে থাকা বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কলায় কোনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া নেই। তবে যাঁদের আগে থেকে অ্যালার্জি বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের অত্যধিক মিউকাস উৎপাদনে এটি কিছু ভূমিকা রাখতে পারে। সে জন্য যাঁদের আগে থেকে এসব সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

ডায়াবেটিস: কলায় প্রাকৃতিক শর্করা থাকে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এটি পরিমিত খাওয়া উচিত।

কলা কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার ও ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে পরিচিত। ছবি: ফ্রিপিক
কলা কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার ও ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে পরিচিত। ছবি: ফ্রিপিক

শীতকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার: কলায় থাকে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের মতো প্রাকৃতিক চিনি। এটি দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে, যা শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

ইমিউনিটি বুস্টার: ভিটামিন ‘সি’ এবং ‘বি৬’ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় কলা। এতে শীতকালীন সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

সেরোটোনিন উৎপাদন: কলায় ট্রিপটোফ্যান নামে একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন (মুড-রেগুলেটর) উৎপাদনে সাহায্য করে, শীতকালীন বিষণ্নতা মোকাবিলায় সহায়ক।

শীতকালে কলা খাওয়ার টিপস

রাতের বদলে সকাল বা দুপুরে খাওয়া ভালো। এ ছাড়া কলা বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। যেমন ওটমিল ও দারুচিনির সঙ্গে কলা মিশিয়ে খেলে উষ্ণতা বাড়বে। কলার স্মুদির সঙ্গে আদা ও কাঁচা হলুদ যোগ করে খাওয়া যেতে পারে। সম্পূর্ণ পাকা কলায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে। এ ধরনের কলা দিনে ১ থেকে ২টি খান।

শীতকালে কলা খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর, যদি ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থা ও পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। তাই নিয়মিত কলা খেতে কোনো বৈজ্ঞানিক নিষেধ নেই। তবে অ্যাজমা, দীর্ঘস্থায়ী কফ, কিডনি রোগী ইত্যাদি সংবেদনশীল গ্রুপের মানুষেরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কলা খাবেন। এ ছাড়া কলাকে শীতের খাদ্যতালিকার একটি উপাদান হিসেবে দেখুন, একমাত্র উৎস হিসেবে নয়। অন্যান্য শীতকালীন ফলের সঙ্গে এর ভারসাম্য বজায় রাখুন।

তথ্যসূত্র

  • ইউএসডিএ জাতীয় পুষ্টি ডেটাবেইস: কলার পুষ্টি উপাদানের প্রামাণিক তথ্য
  • জার্নাল অব মেডিকেল ফুড (২০১৬)
  • আয়ুর্বেদিক ফারমাকোপিয়া অব ইন্ডিয়া (ভোল.১)
  • অন্যান্য
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত