Ajker Patrika

ঈদ কাটুক ফুরফুরে

সানজিদা সামরিন
ঈদ কাটুক ফুরফুরে

ঈদের সকাল। বছরের এই দিনটিই বুঝি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে মন্দ লাগে না। এমনও তো হয়, সবার আগেই ঘুম ভেঙেছে, কিন্তু আলো ঠিকঠাক ফোটার অপেক্ষায় গালের নিচে বালিশ চেপে শুয়ে থাকা। মা উঠলেই এক ঝটকায় বিছানা থেকে নামতে হবে। মুখ ধুয়েই রান্নাঘরে মায়ের পেছনে ঘুরঘুর। এলাচি আর দারুচিনির গন্ধে তখন ম-ম রান্নাঘর। সেমাই আর সকালের খাবার তৈরির ফাঁকেই মা পরিয়ে দেবেন ঈদের নতুন পোশাক। ছোট ভাই তো বাবার সঙ্গে নামাজে যাবে আর বোনটি নতুন জামা পরে সেজেগুজে ঘরময় ঘুরে বেড়াবে। বিকেলে ছাদে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলে চলবে খুনসুটি, ‘আমার জামাটাই তো সবচেয়ে সুন্দর!’

খুদে সদস্যের নতুন পোশাক
বাড়ির খুদে সদস্যের ঈদের আনন্দের অনেকটা জুড়েই রয়েছে নতুন পোশাক। বাবা-মা ছাড়াও দাদাবাড়ি, নানুবাড়ি থেকেও আসবে নতুন জামা। খালামণি, ফুপিরাও দেবেন ঈদের উপহার, স্টাইলিশ পোশাকটি। ভাবতেই ঈদের আনন্দ বেড়ে তিন গুণ হয়ে যায় ছোট্ট সোনামণির।

ঈদের আগে নতুন পোশাকটি আবার কাউকে দেখানো যাবে না। বন্ধুরা দেখে ফেললেই ঈদ শেষ! ঈদের জামা লুকিয়ে রাখার দিন এখন না থাকলেও, নতুন পোশাক নিয়ে আনন্দের কোনো কমতি নেই। এখন শিশুর ঈদের জুতসই পোশাক নিয়ে বাবা-মায়েরাও বেশ সচেতন। ট্রেন্ডের ধারায় তো বইতে হবেই, পাশাপাশি আবহাওয়া অনুযায়ী শিশুর আরাম বুঝে তাঁরা পোশাক কিনছেন। এবারের ঈদ পড়েছে ভরা বৈশাখে। দাবদাহ এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। তাই বলে কি ঘুরে বেড়ানো যাবে না? অবশ্যই যাবে। তবে এমন পোশাক কিনতে হবে, যা উৎসবে পরার মতো, আবার আরামদায়কও।

আরামদায়ক হতেই হবে
ভরা গ্রীষ্মে ঈদ। তাই ছোটাছুটি করতে ও ফুরফুরে মেজাজে শিশু যাতে ঘুরে বেড়াতে পারে, সে জন্য সুতির ঢিলেঢালা পোশাক কিনুন। একদম পাতলা, হাতা কাটা ও ঢিলেঢালা পোশাকে খুব সহজেই বাতাস প্রবেশ করে। ফলে খুব বেশি ঘামার আশঙ্কা নেই। মেয়েশিশু হলে পরাতে পারেন ছোট হাতার ফ্রক বা নিমা। গরমে শিশুর পোশাক নির্বাচনের বেলায় সুতি ও লিনেন কাপড়ের কোনো বিকল্প নেই। আঁটসাঁট কাপড়ের পরিবর্তে ঢিলেঢালা পোশাক বাছাই করাই ভালো। ছেলেদের জন্য রয়েছে হালকা রঙের ঢিলেঢালা শার্ট-প্যান্ট, ফতুয়া, পাঞ্জাবি ও টি-শার্ট।

মনের মতন নকশা
নকশার ক্ষেত্রে খুব জমকালো কিছু না হওয়াই ভালো। হালকা-পাতলা ব্লক, ছাপা বা এমব্রয়ডারি থাকতে পারে। সকাল-বিকেল ও রাতের জন্য আলাদা পোশাক বেছে নিলে ভালো। কারণ এই গরমে সারা দিন একই পোশাকে থাকাটা অসম্ভব। সারা দিনের তাপমাত্রা বুঝে পোশাক পরাতে হবে শিশুদের। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস গরমের এই ঈদের জন্য সুতি, গ্যাবার্ডিন, লিনেন ও নরম সব ধরনের কাপড়ই বেছে নিয়েছে পোশাক তৈরি করার জন্য।

প্রচণ্ড গরমেই যেহেতু ঈদ, তাই শিশুর জন্য পাতলা, হাতা কাটা ও ঢিলেঢালা পোশাক কিনুন। এতে করে শুশু খুব বেশি ঘামবে না এবং ফুরফুরে মেজাজে ঘুরে বেড়াতে পারবে। মেয়েদের জন্য হাতা কাটা বা ছোট হাতার ফ্রক বা নিমা। আর ছেলে শিশুর জন্য ঢিলেঢালা শার্ট-প্যান্ট, ফতুয়া, পাঞ্জাবি ও টি-শার্ট আদর্শ হবে।

রংটা হবে মনের মতো 
পোশাকটা যখন ঈদের, তখন এর রংটা যদি মনের মতো না হয়, তাহলে কী করে হবে? তবে আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে এ সময় হালকা রং বেছে নেওয়া ভালো। চোখের আরাম দেয় এ ধরনের রং।

সাদা, অফহোয়াইট, আকাশি, গোলাপি, লাল, কলাপাতা, হলুদ ও নীলের হালকা শেডগুলো পছন্দ করা সবচেয়ে ভালো হবে।

 ছোট হাতাই আরামের
এই কাঠফাটা গরমে পোশাকের হাতা ছোট হলেই ভালো। হাফহাতা, ক্যাপহাতা, মেগিহাতা কিংবা ঘটিহাতা এগুলো আদর্শ। তবে ছেলেশিশুর পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে ফুলহাতা তো আর এড়ানো যাবে না। সে ক্ষেত্রে সুতির পাতলা কাপড়ের ঢিলেঢালা পাঞ্জাবি হলে হাতা গুটিয়ে রাখলে আরাম লাগবে। তবে দুপুরের পর 
হাফ হাতার শার্ট বা ফতুয়া পরালেই ভালো হবে।

কেনাকাটা
ঈদকে কেন্দ্র করে শিশুদের জন্য পোশাক এনেছে দেশীয় ফ্যাশন হাউস রঙ বাংলাদেশ, অঞ্জন’স, দেশাল, যাত্রা, ক্যাটস আই কিডস, লা রিভ, শৈশব, আড়ং, নিপুণ, মেনজ ক্লাব ইত্যাদি। এ ছাড়া নিউমার্কেট, উত্তরা রাজলক্ষ্মী সুপার মার্কেট, সুবাস্তু নজরভ্যালি, সীমান্ত স্কয়ার, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কসহ বিভিন্ন শপিং সেন্টারে পাওয়া যাবে শিশুর ঈদের পোশাক। ঢাকার বাইরে প্রতিটি জেলা বা উপজেলা শহরেই এখন পছন্দের ঈদের পোশাক পাওয়া যায়। এ ছাড়া প্রায় প্রতিটি ফ্যাশন হাউসের রয়েছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম পেজ ও ওয়েবসাইট। অনায়াসে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বসেই এখন বিখ্যাত ফ্যাশন হাউসের পছন্দের পোশাক পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে আগে অর্ডার করা ভালো। আর ডেলিভারির জন্য আলাদা চার্জ দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত