Ajker Patrika

সুইডেনে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ, নতুন নিয়মে খরচ ও আবেদনের প্রক্রিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯: ০৭
সুইডেনে কাজের সুযোগের পাশাপাশি স্থায়ী বসবাসের আবেদন করতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত
সুইডেনে কাজের সুযোগের পাশাপাশি স্থায়ী বসবাসের আবেদন করতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত

ইউরোপে স্থায়ীভাবে বসবাসের স্বপ্ন দেখা বিদেশিদের জন্য সুইডেন হতে পারে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। উদ্ভাবনী অর্থনীতি, সহজ কর্মক্ষেত্র, সংস্কৃতি এবং উন্নত জীবনযাত্রার জন্য পরিচিত এই নরডিক দেশ এখন বিদেশি কর্মীদের জন্য স্থায়ী বসবাসের (পারমানেন্ট রেসিডেন্সি বা পিআর) পথ আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। তবে এই প্রক্রিয়া আগের চেয়ে এখন আরও বেশি কঠিন।

সুইডিশ মাইগ্রেশন এজেন্সির অফিশিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, সুইডেন সরকার নতুন একটি আয়ের নিয়ম ঘোষণা করেছে। এই নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশি কর্মীদের জন্য প্রতি মাসে করের আগে কমপক্ষে ২৯ হাজার ৬৮০ সুইডিশ ক্রোন (প্রায় ৩ দশমিক ৮১ লাখ টাকা) উপার্জন করা বাধ্যতামূলক। এই নিয়ম তাঁদের জন্য প্রযোজ্য, যাঁরা কাজের অনুমতি বাড়াতে এবং পরবর্তীকালে স্থায়ী বসবাস নিশ্চিত করতে চান। এখানে সুইডেনের স্থায়ী বসবাসের যোগ্যতা, খরচ, প্রক্রিয়া এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে একটি বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হলো।

কেন সুইডেনে স্থায়ী বসবাস গুরুত্বপূর্ণ

সুইডেনে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেলে প্রতিবছর বা দুই বছর পরপর ভিসার জন্য পুনরায় আবেদন করার ঝামেলা থেকে মুক্তি মেলে। এটি আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং আপনাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকদের মতো কিছু অধিকারও দেয়। স্থায়ী বসবাসের মর্যাদা পেলে আপনি—

১. আর কোনো নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তার অধীনে থাকতে বাধ্য নন এবং আপনি স্বাধীনভাবে চাকরি বা ভূমিকা পরিবর্তন করতে পারেন।

২. শেনজেন অঞ্চলের দেশগুলোতে আরও সহজে ভ্রমণ এবং কাজ করার সুযোগ পাবেন।

৩. আপনার পরিবারের সদস্যরাও একটি স্থিতিশীল অভিবাসন মর্যাদা উপভোগ করবে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনকে আরও সহজ করে তুলবে।

যোগ্যতার মানদণ্ড

স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করার আগে আপনাকে অবশ্যই একটি বৈধ কাজের অনুমতি রাখতে হবে। নিচে এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত দেওয়া হলো—

১. গত সাত বছরের মধ্যে কমপক্ষে ৪৪ মাস কাজ করার পাশাপাশি আপনার কাছে ৪৮ মাসের জন্য কাজের অনুমতি থাকতে হবে (সাধারণত দুটি দুই বছরের মেয়াদে দেওয়া হয়)।

২. চাকরি ও বেতনের সব প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করে আপনার কাজের অনুমতি নবায়নের জন্য যোগ্য হতে হবে।

৩. নিয়মিত আয় এবং আবাসন প্রমাণ করতে হবে।

৪. কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড থাকা যাবে না এবং সুইডেনে একটি ভালো জীবনযাপন করার প্রমাণ দেখাতে হবে।

৫. আপনার কাজের অনুমতির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩০ দিন আগে আবেদন জমা দেওয়া যেতে পারে। যদি আপনি ৪৮ মাসের নিয়মটি পূরণ না করেন, তবে আপনাকে আবেদনের জন্য ষষ্ঠ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

প্রয়োজনীয় নথিপত্র

যোগ্যতার পাশাপাশি কাগজপত্রও আপনার আবেদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আবেদন করার সময় এই নথিগুলো প্রস্তুত রাখুন—

১. বৈধ পাসপোর্ট এবং সাম্প্রতিক ভিসার স্ট্যাম্প।

২. চুক্তিপত্র ও বেতনের স্লিপ।

৩. ভাড়া বা মালিকানার কাগজপত্রসহ আবাসনের প্রমাণ।

৪. ব্যাংকের বিবরণী ও আয়কর রিটার্নের কাগজপত্র।

৫. বিমার বিবরণ।

৬. যদি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আবেদন করেন, তাহলে পারিবারিক সম্পর্ক প্রমাণের কাগজপত্র।

এই নথিগুলো সঠিকভাবে প্রস্তুত থাকলে আবেদন প্রক্রিয়াকরণ দ্রুত হয় এবং প্রত্যাখ্যানের আশঙ্কা কমে যায়।

আবেদনের ধাপ

স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদনকারীরা এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে পারেন—

১. সুইডেন মাইগ্রেশন এজেন্সির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করুন।

২. বেতনের স্লিপ, আবাসনের প্রমাণ, চুক্তিপত্রসহ প্রয়োজনীয় সব নথি আপলোড করুন।

৩. অনলাইনে আবেদন ফি জমা দিন।

৪. একজন কেস অফিসার নিয়োগের জন্য অপেক্ষা করুন।

৫. যদি বলা হয়, তাহলে বায়োমেট্রিক জমা দিন।

৬. সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করুন এবং অনুমোদন পেলে আপনার স্থায়ী বসবাসের কার্ড সংগ্রহ করুন।

বেশির ভাগ আবেদনকারীর জন্য এই প্রক্রিয়া ডিজিটাল, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দূতাবাস থেকে সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।

স্থায়ী বসবাসের নতুন আয়ের নিয়ম

২০২৫ সালের ১৭ জুন থেকে সুইডেন আর্থিক শর্ত বাড়িয়েছে। কাজের অনুমতির জন্য যোগ্য হতে (স্থায়ী বসবাসের দিকে অগ্রসর হতে) হলে আপনাকে সুইডেনের গড় বেতনের কমপক্ষে ৮০ শতাংশ উপার্জন করতে হবে। এর পরিমাণ হলো প্রতি মাসে করের আগে ২৯ হাজার ৬৮০ সুইডিশ ক্রোন, যা প্রায় ৪ লাখ টাকার সমান।

এ নিয়ম নতুন আবেদন এবং নির্ধারিত সময়সীমার পরে জমা দেওয়া অনুমতির নবায়নের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তবে কিছু ক্ষেত্রে যেমন ইইউ বা ইইএ নাগরিক, ব্লু কার্ডধারী, মৌসুমি কর্মী, গবেষক, ক্রীড়াবিদ, ইন্টার্ন এবং আউ পেয়াররা এই নিয়ম থেকে অব্যাহতি পাবেন।

স্থায়ী বসবাসের আবেদনের খরচ

আবেদন ফি প্রায় ১৯ হাজার টাকা, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা কম। তবে এর সময়, কাগজপত্র এবং অপেক্ষার দীর্ঘ প্রক্রিয়া বাড়তি খরচ যোগ করতে পারে।

কিছু সুইডিশ কোম্পানি তাদের কর্মীদের এবং তাদের পরিবারের জন্য এই ফি দিয়ে থাকে। যদি তা না হয়, তাহলে নিয়োগকর্তারা পরিবারের সদস্যদের জন্য কিস্তিতে ফি দেওয়ার ব্যবস্থা করে সাহায্য করতে পারেন।

যদি আপনি স্বাধীনভাবে আবেদন করেন, তাহলে মনে রাখবেন, আপনার আবেদনটি পর্যালোচনাধীন থাকা অবস্থায় ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকতে পারে এবং সিদ্ধান্ত আসতে কয়েক মাস বা এমনকি বছরও লেগে যেতে পারে।

স্থায়ী বসবাসের কিছু সুবিধা

স্থায়ী বসবাস কিছু বিশেষ সুযোগ করে দেয়—

১. ভ্রমণের স্বাধীনতা: শেনজেন অঞ্চলের মধ্যে যাতায়াত করা নিজ দেশের ভিসা থেকে আবেদন করার চেয়ে অনেক সহজ।

২. পারিবারিক স্থিতিশীলতা: পরিবারের সদস্যরা বারবার ভিসা নবায়ন না করেই স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের সুবিধা উপভোগ করতে পারে।

৩. নাগরিকত্বের পথ: কয়েক বছর স্থায়ী বসবাসের পর নিজ দেশের নাগরিকত্ব এবং একটি সুইডিশ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারে।

৪. স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা: সরকারি পরিষেবাগুলোর সুবিধা পারিবারিক জীবনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি মূল্য যোগ করে।

স্থায়ী বসবাস কি বাতিল হতে পারে

সুইডেনে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি শর্তহীন নয়। মাইগ্রেশন এজেন্সি এটি বাতিল করতে পারে; যদি—

১. আপনি আর সুইডেনে না থাকেন বা দীর্ঘ সময় বিদেশে কাটান।

২. আবেদনের সময় আপনি মিথ্যা বা অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে থাকেন।

তবে যদি আপনি সুইডেনে বসবাস চালিয়ে যান এবং নিয়মাবলি মেনে চলেন, তাহলে স্থায়ী বসবাস আপনাকে বারবার নবায়ন ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের জন্য বসবাসের অনুমতি দেয়।

চ্যালেঞ্জ

নিয়মাবলি স্পষ্ট হলেও আবেদনকারীদের কিছু বাধার মুখোমুখি হতে হয়। প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো হলো—

১. দীর্ঘ প্রক্রিয়াকরণের সময়, যা কখনো কখনো কয়েক বছর পর্যন্তও বাড়তে পারে।

২. আবেদন পর্যালোচনাধীন থাকা অবস্থায় ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা

৩. নিয়মাবলি মাঝপথে পরিবর্তন হওয়া, যা কখনো কখনো পূর্ববর্তী আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়।

৪. নিয়োগকর্তারা সব সময় পরিবারের সদস্যদের ভিসার জন্য সাহায্য না-ও করতে পারেন।

৫. এমনকি ছোটখাটো আইনি সমস্যাও অনুমোদনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

স্থায়ী বসবাস বনাম নাগরিকত্ব: পার্থক্য কী

স্থায়ী বসবাস (পিআর): এটি আপনাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সুইডেনে বসবাস এবং কাজ করার অধিকার দেয়। এটি শেনজেন অঞ্চলে ভ্রমণের স্বাধীনতা এবং স্থিতিশীলতা দেয়, কিন্তু আপনি নিজ দেশের নাগরিক হিসেবে থাকেন।

নাগরিকত্ব: এটি আপনাকে পূর্ণ রাজনৈতিক ও আইনি অধিকার দেয়, যার মধ্যে ভোট দেওয়া, সুইডিশ পাসপোর্ট পাওয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিস্তৃত সুযোগ অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত, স্থায়ী বসবাসের পর পাঁচ বছর থাকার পর (যদি আপনি একজন সুইডিশ নাগরিককে বিয়ে করেন, তাহলে সময়টি কম) এবং ভালো আচরণের প্রমাণ দিলে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়।

আবেদন গ্রহণের সম্ভাবনা বাড়াতে কিছু টিপস

আপনার স্থায়ী বসবাসের আবেদনকে শক্তিশালী করতে এই বিষয়গুলো মনে রাখুন—

১. নিয়মিত কর্মসংস্থান বজায় রাখুন: কাজের কোনো বিরতি এড়িয়ে চলুন এবং নিশ্চিত করুন যে আপনার বেতনসীমা প্রয়োজনীয় মাপকাঠির সঙ্গে মেলে।

২. আর্থিক রেকর্ড প্রস্তুত রাখুন: ব্যাংকের বিবরণী, বেতনের স্লিপ এবং আবাসনের প্রমাণপত্র আবেদন প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে।

৩. আইনি ঝামেলা এড়িয়ে চলুন: সামান্য অপরাধও আপনার অনুমোদনের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে।

৪. সুইডিশ ভাষার মূল বিষয়গুলো শিখুন: ভাষাজ্ঞান বাধ্যতামূলক নয়, তবে এটি আপনার সামাজিক সংহতির আগ্রহ প্রমাণ করে।

৫. সর্বদা খোঁজখবর রাখুন: নিয়মগুলো প্রায়ই পরিবর্তন হয়, তাই মাইগ্রেশন এজেন্সির সর্বশেষ আপডেটগুলো সব সময় যাচাই করুন।

সুইডেনে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেতে কত সময় লাগে—এর উত্তর হলো, আপনার আবেদনের বিষয়টি এবং মাইগ্রেশন এজেন্সির কাজের চাপের ওপর নির্ভর করে প্রক্রিয়াকরণে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।

পরিবারের সদস্যরা কি আবেদন করতে পারে

আপনার সঙ্গে পরিবারের সদস্যরাও আবেদন করতে পারে, তবে আয় এবং আবাসনের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুরুষেরও নারীর মতো মেনোপজ হয়, বুঝবেন যেভাবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মেনোপজ একজন পুরুষের দৈনন্দিন জীবন ও মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
মেনোপজ একজন পুরুষের দৈনন্দিন জীবন ও মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

নারীর মেনোপজের বিষয়টি নিয়ে অনেকের ধারণা থাকলেও পুরুষেরও মেনোপজ হতে পারে এটি অনেকেই জানেন না। ৪০ থেকে ৫০-এর ঘরে পা রাখলে পুরুষেরও কিছু শারীরিক ও মানসিক উপসর্গ প্রকাশ্যে আসে যা জানান দেয় তার মেনোপজের কথা। অনেক পুরুষ বিষণ্নতায় ভোগেন। অনেকের যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে যায় আবার ইরেকটাইল ডিসফাংশন-এর সমস্যায় পড়েন অনেকে।

পুরুষের মেনোপজের বিষয়টি নিয়ে বেশি আলোচনা না হওয়ায় এ সময় উপসর্গগুলো বুঝে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আপনি বা আপনার আশেপাশের চল্লিশোর্ধ্ব পুরুষটির মেনোপজ হয়েছে কি না সেটা বুঝতে পারবেন যেসব লক্ষণ দেখে তা জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কর্তৃপক্ষ। সেগুলো হলো—

১. মেজাজের ওঠানামা ও খিটখিটে হয়ে যাওয়া

২. পেশিতে ভর দেওয়া এবং ব্যায়াম করার সক্ষমতা কমতে থাকা

৩. শরীরে চর্বি জমে যাওয়া, বিশেষ করে পেটের চারপাশে বা বুকের অংশে চর্বি জমা (‘ম্যান বুবস’ বা গাইনোকোম্যাস্টিয়া)

৪. উদ্যম বা শক্তির অভাব

৫. অনিদ্রা বা সব সময় ক্লান্ত বোধ করা

৬. মনোযোগ ও স্বল্পমেয়াদি স্মৃতিশক্তি

এসব উপসর্গ একজন পুরুষের দৈনন্দিন জীবন ও মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এর মূল কারণ চিহ্নিত করে যথাযথ চিকিৎসা বা পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

‘মেল মেনোপজ’কে অ্যান্ড্রোপজ নামেও পরিচিত। তবে এই বিষয়টির ভুল ব্যাখ্যা দেখা যায় অনেক সময়। বলা হয়, পুরুষদের মধ্যবয়সে নারীদের মতো হঠাৎ করে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে যায়। আসলে তা ঘটে না।

পুরুষদের টেস্টোস্টেরন মাত্রা বয়সের সঙ্গে ধীরে ধীরে কমে। প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সের পর প্রতি বছর গড়ে ১ শতাংশ করে। এই স্বাভাবিক হ্রাস সাধারণত কোনো বড় সমস্যা সৃষ্টি করে না।

তবে কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি, যাকে বলা হয় লেট-অনসেট হাইপোগোনাডিজম (late-onset hypogonadism) দেখা দিতে পারে। তখন ক্লান্তি, যৌন আকাঙ্ক্ষা হ্রাস, বা মেজাজের পরিবর্তনের মতো উপসর্গ দেখা যায়।

তবুও অনেক সময় এই ধরনের উপসর্গের সঙ্গে হরমোনের কোনো সম্পর্কই থাকে না। মানসিক চাপ, ঘুমের সমস্যা, জীবনযাত্রা বা অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতাও এর কারণ হতে পারে।

পুরুষদের অনেক উপসর্গের পেছনে হরমোন নয়, বরং জীবনযাত্রা বা মানসিক কারণই দায়ী হতে পারে। যেমন—যৌন আকাঙ্ক্ষা হ্রাস, ইরেকটাইল ডিসফাংশন (যৌন অক্ষমতা) বা মেজাজের ওঠানামার মতো সমস্যা হতে পারে—চাপ (stress), বিষণ্নতা (depression) ও উদ্বেগ (anxiety)।

তাছাড়া ইরেকটাইল ডিসফাংশনের শারীরিক কারণও থাকতে পারে। যেমন—ধূমপান, হৃদ্‌রোগ বা রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা।

এ ছাড়া যে মানসিক সমস্যাগুলো সাধারণত দেখা যায়, সেগুলো হলো—কাজের চাপ, সম্পর্কের জটিলতা, অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তা বা বয়স্ক বাবা-মাকে নিয়ে উদ্বেগ থেকে।

এছাড়াও অনেক পুরুষ ‘মিডলাইফ ক্রাইসিস’-এর মধ্য দিয়ে যান। জীবনের অর্ধেক পথ পার করার পর তাঁরা নিজের সাফল্য, পেশা বা ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা ও হতাশায় ভোগেন, যা কখনো কখনো বিষণ্নতার পর্যায়েও পৌঁছে যেতে পারে।

‘মেল মেনোপজ’-এর অন্যান্য সম্ভাব্য কারণ

অনেক সময় এসব উপসর্গের পেছনে থাকে হরমোন নয়, বরং জীবনযাপনের নানা অভ্যাস। যেমন—পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, অস্বাস্থ্যকর বা অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম না করা, অতিরিক্ত ধূমপান বা মদ্যপান ও আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি।

লেট-অনসেট হাইপোগোনাডিজম (Late-onset hypogonadism)

সব সময় জীবনযাত্রার ধরন বা মানসিক সমস্যাই যে কারণ হবে তাও নয়। এর পেছনে থাকতে পারে হাইপোগোনাডিজম নামের একটি শারীরিক অবস্থা। এ অবস্থায় টেস্টিস পর্যাপ্ত পরিমাণে হরমোন (বিশেষত টেস্টোস্টেরন) উৎপন্ন করতে ব্যর্থ হয়।

হাইপোগোনাডিজমের ধরন বেশ কয়েক রকমের হয়ে থাকে।

জন্মগত (congenital) : জন্ম থেকেই থাকে, ফলে কৈশোরে দেরিতে যৌবনাগমন বা ছোট আকারের টেস্টিসের মতো উপসর্গ দেখা যায়।

অর্জিত বা পরবর্তীকালে হওয়া (acquired) : জীবনের পরে কোনো পর্যায়ে দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে স্থূলতা (obesity) বা টাইপ-২ ডায়াবেটিস–এ আক্রান্ত পুরুষদের মধ্যে।

এই অবস্থাকে বলা হয় লেট-অনসেট হাইপোগোনাডিজম, যা ‘মেল মেনোপজ’-এর মতো উপসর্গ তৈরি করতে পারে।

তবে এটি খুবই বিরল এবং চিকিৎসার মাধ্যমেও সমাধান হয়।

এটি নির্ণয়ের জন্য সাধারণত চিকিৎসক আপনার উপসর্গ এবং রক্ত পরীক্ষায় টেস্টোস্টেরনের মাত্রা যাচাই করে সিদ্ধান্ত দেন।

যদি আপনি এই উপসর্গগুলোর কোনোটি অনুভব করেন, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করা জরুরি। চিকিৎসক সাধারণত আপনার কাজের পরিবেশ, ব্যক্তিগত জীবন এবং মানসিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইবেন, যেন বোঝা যায় উপসর্গগুলো স্ট্রেস বা উদ্বেগজনিত কি না।

যদি মানসিক কারণ থাকে তাহলে ওষুধ, টকিং থেরাপি সহায়ক হতে পারে। এ ছাড়া ব্যায়াম এবং রিলাক্সেশন টেকনিকও কার্যকর।

পাশাপাশি আপনার টেস্টোস্টেরন লেভেল যাচাই করতে চিকিৎসক রক্ত পরীক্ষা করতে পারেন। যদি পরীক্ষায় দেখা যায় আপনার টেস্টোস্টেরন ঘাটতি রয়েছে, তাহলে আপনাকে এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের (হরমোন বিশেষজ্ঞ) কাছে পাঠানো হতে পারে।

বিশেষজ্ঞ যদি নিশ্চিত করেন, এটি হরমোনজনিত সমস্যা তাহলে টেস্টোস্টেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির মাধ্যমে এর সমাধান হতে পারে। যা হরমোনের ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করে এবং ধীরে ধীরে উপসর্গগুলো কমিয়ে আনে। এই চিকিৎসা সাধারণত ইনজেকশন বা জেল আকারে দেওয়া হয়।

সূত্র: ইংল্যান্ডের সরকারি স্বাস্থ্য সেবা এনএইচএস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রাকৃতিকভাবে ঠোঁট গোলাপি করার উপায়

বিভাবরী রায়
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৪
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

শীত আসি আসি করছে, আর এর মধ্য়েই ঠোঁট কালচে হয়ে উঠেছে। তাই হয়তো ইদানীং বাইরে বের হওয়ার সময় একটু গাঢ়রঙা লিপস্টিক পরে বের হচ্ছেন। রং দিয়ে বিবর্ণ ঠোঁট ঢেকে তো রাখছেন, কিন্তু মন থেকে কি হাসতে পারছেন? মনে হয় না। যদি ঠোঁটের রং স্বাভাবিকভাবেই গোলাপি করে তুলতে চান এবং ঠোঁটের নমনীয়তা ফিরে পেতে চান, তাহলে জেনে রাখুন, ঘরোয়া উপায়েও তা সম্ভব।

বেশ কিছু ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে, যার মাধ্যমে ঠোঁটকে স্থায়ীভাবে গোলাপি করে তোলা যায়। পাশাপাশি মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম, তাহলে কিছুদিনের মধ্য়ে ঠোঁট হয়ে উঠবে প্রাকৃতিকভাবে গোলাপি।

যেসব প্রাকৃতিক উপাদান গোলাপি ঠোঁট পেতে সাহায্য় করবে

টমেটো

টমেটোতে সেলেনিয়াম থাকে, যা আপনার ঠোঁটকে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সাহায্য় করবে। প্রতিদিন এটি সালাদ হিসেবে খেতে পারেন। যাঁরা রোজ বাইরে বের হন বা যাঁদের দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকতে হয়, তাঁরা টমেটোবাটা ঠোঁটে ব্যবহার করলেও উপকার পাবেন।

নারকেল ও ডাবের পানি

সম্ভব হলে প্রতিদিন ডাবের পানি পান করুন। প্রতিদিনের কোনো একটি খাবারে নারকেল যোগ করুন। এতে ত্বকের পাশাপাশি ঠোঁটও কোমল থাকবে। এ ছাড়াও মুখ ও ঠোঁটে নারকেল তেল ব্যবহার করুন।

আখরোট

আখরোট ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি সমৃদ্ধ উৎস, যা আপনার ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে পারে। এটি কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়। তারুণ্যদীপ্ত ত্বকের জন্য নিয়মিত এসব খাবার খান। এমনকি আপনার ঠোঁটের মৃত ত্বক অপসারণ এবং ঠোঁট গোলাপি রাখার জন্য একটি আখরোট দিয়ে স্ক্রাবও তৈরি করতে পারেন।

টক দই

টক দই ও দইয়ের মতো দুগ্ধজাত খাবারে যে প্রোটিন থাকে, তা ত্বক ফাটা প্রতিরোধে সহায়ক। প্রতিদিন টক দই খেলে এই উপকার পাওয়া যাবে। ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করতে স্নানের সময় একটু টক দই ঠোঁটে মেখে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে নিলে কয়েক দিনের মধ্য়ে ভালো ফল চোখে পড়বে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

মধু

মধুকে বলা হয় প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। প্রতিদিন এক চা-চামচ মধু খাওয়ার অভ্যাস করলে পেলব ঠোঁট পাওয়া যায়। এ ছাড়াও রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে মধু মেখে নিলে ঠোঁট গোলাপি হয়ে উঠবে। মধুতে ম্যাগনেশিয়াম এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা ঠোঁটের রং বিবর্ণ হওয়া রোধ করে।

কালচে ঠোঁটে গোলাপি আভা ফিরিয়ে আনতে সপ্তাহে দু-তিন দিন ঠোঁটের যত্ন নিতে হবে। বাইরে থেকে ফিরে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করে লিপস্টিক তুলতে হবে। মুখ ধোয়ার পর লিপবাম লাগাতে হবে। সপ্তাহে দুই দিন দুধের সরের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ঠোঁটে লাগালে কালচে ভাব ধীরে ধীরে কেটে যাবে। শারমিন কচি রূপবিশেষজ্ঞ, স্বত্বাধিকারী, বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ কেয়ার

লেবু

যদি আপনি সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানির সঙ্গে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করেন, তাহলে এটি আপনার শরীরকে বিষমুক্ত করার পাশাপাশি ঠোঁটেও গোলাপি ভাব এনে দেবে। যেহেতু লেবুতে ব্লিচিংয়ের বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তাই ঠোঁটে লেবুর রস লাগাতে পারেন। চাইলে চিনির সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে স্ক্রাবও তৈরি করে নেওয়া যায়।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

বিটরুট

ডায়াবেটিস না থাকলে ঠোঁট গোলাপি করতে আপনার নিয়মিত এ সবজিটি খাওয়া উচিত। এতে খনিজ ও ভিটামিন রয়েছে, যা আপনার ত্বকের জন্য উপকারী হতে পারে। এটি ত্বকের বার্ধক্য ও বিবর্ণতা রোধ করে। তাই রং হালকা করতে ও ত্বককে আর্দ্র রাখতে বিটরুটের রস ঠোঁটে ব্যবহার করতে পারেন।

যা মেনে চলতে হবে

রাসায়নিকের পরিবর্তে প্রাকৃতিক বিকল্প ব্যবহার

প্রাকৃতিকভাবে ঠোঁট গোলাপি করে তুলতে চাইলে রাসায়নিক উপাদানযুক্ত লিপস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। যদিও এ টিপসটি মেকআপপ্রেমীদের জন্য গ্রহণ করা কঠিন। তবে রাসায়নিক উপাদানযুক্ত লিপস্টিক ব্যবহারে ঠোঁট অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে ওঠে। এর পরিবর্তে প্রাকৃতিক বিকল্প যেমন ডালিম, বিটরুট বা স্ট্রবেরির রস যদি ঠোঁটে ব্যবহার করা যায়, তাহলে ঠোঁটে গোলাপি আভার পাশাপাশি আর্দ্রতাও বজায় থাকে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

লিপস্টিক ব্যবহার করতে চাইলে আগে ঠোঁট প্রাইম করতে হবে

লিপস্টিক লাগানোর আগে বাদাম বা নারকেল তেল দিয়ে হালকাভাবে ঠোঁট ব্রাশ করে নেওয়া ভালো। এগুলো ব্যবহার করার পর কয়েক মিনিট অপেক্ষা করে তারপর লিপস্টিক ব্যবহার করুন। এসব তেলের পরিবর্তে লিপ বামও ব্যবহার করা যেতে পারে। তেল বা লিপবামের এই কোট একটি প্রতিরক্ষামূলক স্তর হিসেবে কাজ করে ও ঠোঁটকে আর্দ্র রাখে। ফলে লিপস্টিকের কারণে ঠোঁট অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে পড়ে না।

গোলাপি ঠোঁট পেতে যা এড়িয়ে চলতে হবে

এখন সবার কাছে লং লাস্টিং লিপস্টিক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। লিকুইড ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করলে তা ঠোঁটে দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, কিন্তু টানা ব্যবহার করতে থাকলে ঠোঁটের রং কালচে হয়ে যেতে শুরু করে।

যত রাতে বাড়ি ফিরুন বা যতই ক্লান্ত থাকুন, ঘুমানোর আগে সব সময় লিপস্টিক ভালোভাবে তুলে তারপর বিছানায় যাবেন। লিপস্টিক তোলার পর ঠোঁটকে আর্দ্র করার জন্য লিপবাম বা প্রাকৃতিক যেকোনো তেল ব্যবহার করতে পারেন।

রক্তে পুষ্টি উপাদান পৌঁছানোর জন্য নারকেল বা বাদাম তেলের সঙ্গে পেপারমিন্ট তেল মিশিয়ে ঠোঁটে লাগাতে পারেন। এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং ঠোঁটকে আর্দ্র রাখে।

ঠোঁট গোলাপি রাখতে চাইলে ধূমপান এড়াতে হবে। ধূমপানের একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো ঠোঁট কালো হয়ে যাওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাল শাপলায় শর্ষে ইলিশ

ফিচার ডেস্ক
ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা
ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা

বাজারে শাপলা পাওয়া যাচ্ছে। লাল শাপলা পেয়ে থাকলে ফ্রিজে রাখা ইলিশ মাছের মাথা ও লেজ দিয়ে রান্না করুন জম্পেশ করে। আপনাদের জন্য লাল শাপলায় শর্ষে ইলিশের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা

উপকরণ

লাল শাপলা ২ আঁটি, ইলিশ মাছের মাথা ও লেজ ১টি করে, পেঁয়াজকুচি আধা কাপ, আদা ও রসুনবাটা এক চা-চামচ, হলুদগুঁড়া, মরিচগুঁড়া ও ধনেগুঁড়া এক চা-চামচ করে, লবণ স্বাদমতো, কাঁচা মরিচ ফালি ছয়-সাতটা, সরিষাবাটা ৪ টেবিল চামচ, সয়াবিন তেল ৪ টেবিল চামচ।

প্রণালি

লাল শাপলা কেটে লবণ মাখিয়ে রেখে দিন ১ থেকে ২ ঘণ্টা। এরপর ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। কড়াইতে সয়াবিন তেল গরম হলে পেঁয়াজকুচি হালকা ভেজে আদা ও রসুনবাটা, হলুদগুঁড়া, মরিচগুঁড়া, ধনেগুঁড়া ও লবণ দিন। এরপর কষানোর জন্য পানি দিন। কষানো মসলায় মাছের মাথা, লেজ ও শাপলা দিন। এবার ফুটে উঠলে ঢাকনাসহ রান্না করুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। শেষে সরিষাবাটা আর কাঁচা মরিচ ফালি দিয়ে লবণ দেখে নামিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেল লাল শাপলায় শর্ষে ইলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যেসব খাবারে আকর্ষণীয় হয় গায়ের ঘ্রাণ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

প্রত্যেক মানুষের একটি অনন্য ঘ্রাণ আছে, ঠিক যেমন আঙুলের ছাপ। আপনার ব্যক্তিত্ব, মেজাজ, স্বাস্থ্য—সবকিছুই এই ঘ্রাণকে প্রভাবিত করে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, রসুন, মাংস, এমনকি উপবাসও শরীরের ঘ্রাণ পরিবর্তন করে দিতে পারে। গায়ের গন্ধ কিন্তু উপেক্ষা করার বিষয় নয়। অন্যরা আপনাকে কীভাবে দেখছে, সেটিকে প্রভাবিত করে ঘ্রাণ।

স্কটল্যান্ডের স্টার্লিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ক্রেইগ রবার্টসের মতে, ‘আমাদের শরীরের ঘ্রাণ মূলত জিন, হরমোন, স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কারণগুলোর পাশাপাশি, আমাদের খাদ্যাভ্যাস একটি বড় ভূমিকা পালন করে।’

খাবার যেভাবে ঘ্রাণ তৈরি করে

নিউইয়র্কের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা বিষয়ক সহকারী অধ্যাপক লিনা বেগডাচের মতে, খাবার দুটি প্রধান পথে আমাদের দেহের ঘ্রাণকে প্রভাবিত করে: পেট এবং ত্বক।

পেট (গাট) : খাবার হজমের সময় অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় হয়। এই মিথস্ক্রিয়ায় কিছু উদ্বায়ী অণু বা গ্যাস নির্গত হয়, যা নিশ্বাসে দুর্গন্ধ তৈরি করে।

ত্বক: হজম হওয়া খাবারের রাসায়নিক উপাদান রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে ত্বকে পৌঁছায় এবং ঘামের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে। ঘামের সঙ্গে ত্বকের ব্যাকটেরিয়ার মিশ্রণে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। মনে রাখা ভালো, বিশুদ্ধ ঘামের কোনো ঘ্রাণ নেই।

বিভিন্ন খাবারে থাকা সালফার যৌগ এই দুর্গন্ধ তৈরির প্রধান হোতা। এই যৌগগুলো অত্যন্ত উদ্বায়ী হওয়ায় সহজেই বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।

রসুন বাড়ে আকর্ষণ

ব্রকোলি, বাঁধাকপি বা পেঁয়াজ-রসুনের মতো সালফারযুক্ত খাবার হজমের পর ডাইঅ্যালাইল ডিসালফাইড এবং অ্যালিল মিথাইল সালফাইডের মতো দুর্গন্ধযুক্ত যৌগে ভেঙে যায়।

তবে গবেষকেরা একটি অদ্ভুত তথ্য পেয়েছেন। চেক রিপাবলিকের চার্লস ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী জান হ্যাভলিচেকের গবেষণায় দেখা গেছে, রসুন নিশ্বাসের দুর্গন্ধ তৈরি করলেও, এটি পুরুষের বগলের ঘামের গন্ধকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে! এই পরীক্ষায়, ঘাম সংগ্রহের জন্য পুরুষদের ১২ ঘণ্টা ধরে বগলে প্যাড পরে থাকতে বলা হয়েছিল। যে পুরুষেরা বেশি রসুন খেয়েছিলেন, নারীদের কাছে তাদের ঘামের ঘ্রাণ ছিল ‘খুব সেক্সি’! বিজ্ঞানীরা মনে করেন, রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাগুণ স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, যার প্রতিফলন শরীরের ঘ্রাণে দেখা যায়।

ফল ও সবজি বনাম মাংস ও কার্বোহাইড্রেট

ফল ও সবজিতে আকর্ষণীয় সুঘ্রাণ

২০১৭ সালের অস্ট্রেলিয়ায় একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে পুরুষেরা বেশি ফল ও সবজি খান, তাদের শরীর থেকে ফলের মতো, মিষ্টি এবং ফুলের মতো সুঘ্রাণ আসে। এ ছাড়া, গাজর বা টমেটোর মতো সবজি থেকে পাওয়া ক্যারোটিনয়েড নামক অণু ত্বকের রঙ সামান্য হলুদ করে, যা দেখতেও আকর্ষণীয় মনে হয়।

অ্যাসপারাগাস ও অদ্ভুত ঘ্রাণ:

অ্যাসপারাগাস উদ্ভিদে অ্যাসপারাগাসিক অ্যাসিড নামক একটি যৌগ থাকে। এটি হজমের পর মিথেনেথিয়ল এবং ডাইমিথাইল সালফাইড-এর মতো সালফার যৌগ নির্গত করে, যা প্রস্রাব এবং ঘামে এক ধরনের গন্ধ তৈরি করে। এই ঘ্রাণ পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় স্থায়ী হতে পারে। মজার বিষয় হলো, কারণ মধ্যে এই ঘ্রাণ তৈরি হয় বা কারও নাকে খারাপ লাগে, তা নিয়ে গবেষণায় ব্যাপক ভিন্নতা দেখা গেছে (১৯৫০-এর দশকে <৫০% এবং ২০১০ সালে >৯০% মানুষের মধ্যে ঘ্রাণ তৈরি হওয়ার প্রমাণ মিলেছিল)।

মাংস ও মাছে কম আকর্ষণীয় ঘ্রাণ

হ্যাভলিচেকের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে পুরুষেরা মাংসবিহীন বা নিরামিষ খাবার খান, তাদের ঘামের ঘ্রাণ মাংসভোজি পুরুষদের তুলনায় বেশি মনোরম ও কম তীব্র হয়। মাংসের প্রোটিন ভেঙে যে যৌগগুলো তৈরি হয়, তা ঘ্রাণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

মাছ ও শিমের মতো খাবারে থাকা ট্রাইমিথাইলঅ্যামিন নামক তীব্র ঘ্রাণযুক্ত যৌগও দেহের দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। বিরল ক্ষেত্রে, শরীরের এই যৌগটিকে ঘ্রাণহীন যৌগে রূপান্তর করার ক্ষমতা না থাকলে ট্রাইমিথাইলঅ্যামিনুরিয়া বা ‘মাছের ঘ্রাণ সিনড্রোম’ (আঁশটে গন্ধ) দেখা যায়।

কার্বোহাইড্রেট:

গবেষণায় দেখা গেছে, কার্বোহাইড্রেট-নির্ভর খাদ্য (যেমন অতিরিক্ত ভাত বা রুটি) সবচেয়ে কম আকর্ষণীয় ঘ্রাণ তৈরি করে।

অ্যালকোহল, কফি ও উপবাসের প্রভাব

অ্যালকোহল (মদ) : লিভারে অ্যালকোহল প্রক্রিয়াকরণের সময় অ্যাসিটালডিহাইড নামক একটি বিষাক্ত ও উদ্বায়ী যৌগ নির্গত হয়, যার ঘ্রাণ পুরোনো মদের মতো তীব্র। এক গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু মুখের ঘ্রাণ শুঁকেই পুলিশ অফিসাররা ৬০ থেকে ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রে বলে দিতে পারেন কেউ মদ্যপান করেছে কিনা।

ক্যাফেইন (কফি/চা) : কফি ও চায়ের ক্যাফেইন অ্যাপোক্রিন গ্রন্থিগুলোকে উদ্দীপিত করে ঘাম বাড়াতে পারে, যা ব্যাকটেরিয়ার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে কটূগন্ধকে তীব্র করে।

উপবাস ও ঘ্রাণের বৈপরীত্য: হ্যাভলিচেক একটি ব্যতিক্রম গবেষণা করেছিলেন, যেখানে নারীরা ৪৮ ঘণ্টা উপবাস করেন। এই উপবাসী নারীদের ঘাম, যারা সাধারণ খাবার খেয়েছিলেন তাদের তুলনায় বেশি আকর্ষণীয় ছিল। তবে এই তথ্যের বিপরীতে, সুইজারল্যান্ডে ২০১৮ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, উপবাসের ফলে নিশ্বাসের দুর্গন্ধ বেড়ে যায়।

দেহের ঘ্রাণের ওপর খাদ্যের প্রভাব অত্যন্ত জটিল এবং বহু কারণে পরিবর্তনশীল—এ বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, সুঘ্রাণের জন্য খাদ্যাভ্যাসে ফল ও সবজির পরিমাণ বাড়ানো একটি কার্যকরী উপায়।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত