Ajker Patrika

ইউনিফর্ম জবের প্রতি দুর্বলতা থেকেই বিসিএস পুলিশ ক্যাডার

মো. আমান উল্লাহ, ময়মনসিংহ
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ১৬: ০৬
ইউনিফর্ম জবের প্রতি দুর্বলতা থেকেই বিসিএস পুলিশ ক্যাডার

‘হাইস্কুলে পড়াকালে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠে খেলাধুলা করার সময় দেখতাম, পুলিশের এসপিদের মানুষ অনেক সম্মান করছে। বিভিন্ন জাতীয় প্রোগ্রামেও পুলিশের অফিসাররা ইউনিফর্ম পরে অতিথির আসনে বসতেন, দেখে খুবই ভালো লাগত। এসব দেখেই ইউনিফর্ম জবের প্রতি দুর্বলতা। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইদের বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া দেখে বিসিএস পুলিশ ক্যাডার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া।’ এভাবেই নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন মো. মশিউর রহমান। তিনি ৪১তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। যার মেধাক্রম ৩২।

মো. মশিউর রহমানের জন্ম ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ভাবখালী গ্রামে। বাবা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার জনতা মহাবিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক। মা গৃহিণী। ২০১০ সালে গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ২০১২ সালে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

২০১৮ সালে স্নাতকের ফলাফল যেদিন প্রকাশ হয়, সেদিন থেকেই বিসিএস প্রস্তুতির সূচনা করেন মশিউর। হলের বড়দের থেকে পরামর্শ নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেন। তারপর ৪১তম বিসিএসের সার্কুলার প্রকাশ করা হলে আবেদন করার সময় প্রথম পছন্দ দেন বিসিএস পুলিশ। পর্যায়ক্রমে প্রিলি, রিটেন, ভাইভা সম্পন্ন করেন। মশিউর বলেন, ‘প্রস্তুতির শুরু থেকে চেষ্টা করেছি সর্বোচ্চ, কিন্তু প্রত্যাশা রেখেছি সর্বনিম্ন। সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস ছিল, তিনি মিলিয়ে দিয়েছেন।’

বিসিএস ক্যাডার হওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করে মশিউর জানান, চাকরির সুবাদে শ্রীমঙ্গল থাকায় ফলাফলের দিন অফিস থেকে বাসায় ফিরে যখন রেজাল্টটা দেখি, তখন নিজের রোল পুলিশ ক্যাডারে দেখে চোখে পানি চলে আসছে। আমার বাবা-মার নিরলস পরিশ্রম, আমার একাগ্রতা, সবার দোয়া এবং পরম করুণাময়ের করুণাই আমার এ সাফল্যের মূলমন্ত্র। রেজাল্ট শোনার পর বাবা-মার চোখে-মুখে যে আনন্দ আমি দেখেছি, আমার জন্য তারা যে সম্মানিত হয়েছেন—এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কিছু হতে পারে না।

সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস রেখে ধৈর্য নিয়ে একাগ্রতার সঙ্গে অনুশীলন করলে সফলতা আসবেই। অনেকের শুধু বিসিএসের নতুন বই কেনার নেশা থাকে, কিন্তু পড়ার ইচ্ছা থাকে না। প্রতিটি বিষয়ের জন্য চার-পাঁচটা বই না পড়ে প্রতিটি বিষয়ের জন্য ভালো মানের একটি বা দুটি বই বারবার পড়া উচিত। মশিউর প্রিলি, রিটেন, ভাইভা সবকিছুই লিখে নোট করে পড়তেন। এতে পরীক্ষার আগের রাতে রিভিশন দেওয়া সহজ হতো। কারণ প্রস্তুতি যতই ভালো থাকুক, পরীক্ষার আগে ভালো করে রিভিশন দিতে না পারলে ভালো ফলাফল আশা করা কঠিন। তাই নিজের মতো করে নিজে হ্যান্ড নোট তৈরি করে পড়লে সুবিধা হবে। আর বিসিএস একটা লম্বা প্রক্রিয়া হওয়ায় অবশ্যই প্ল্যান ‘বি’ রাখা উচিত প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর।

মো. মশিউর রহমান সততা ও দক্ষতা আর দেশপ্রেমের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে চান। তিনি বলেন, দেশের ও জনগণের সেবা করার যে সুযোগ পেয়েছি তা আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে করতে পারি সবার কাছে এই দোয়া চাই। অহংকার যেন কখনো আমাকে স্পর্শ করতে না পারে। বিনয়ী থেকে নিজের কর্তব্য যেন পালন করতে পারি সেই ব্রত নিয়েই পুলিশ সার্ভিসের নতুন জীবন শুরু করার প্রহর গুনছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাপুড়ের রক্তে তৈরি হলো বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকর অ্যান্টিভেনম

পাথরঘাটায় তিন শিক্ষকের ওপর হামলার‌ অভিযোগ শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে

সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি এড়াতে বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দেখলেই পুলিশে সোপর্দ করবেন: সামান্তা

কুষ্টিয়ায় দুই পুলিশকে আসামির হাতুড়িপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত