আমজাদ ইউনুস
সেলজুক সুলতান মালিক শাহের উজির নিজামুল মুলক ১০৬৫ খ্রিষ্টাব্দে বাগদাদে প্রথম নিজামিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। নিজামুল মুলক একজন অনন্য বুদ্ধিমান ও বিদ্যানুরাগী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। নিজামিয়া মাদ্রাসা ছিল গতানুগতিক শিক্ষায় সম্পূর্ণ নতুন সংযোজন। বাগদাদের পর ইস্পাহান, নিশাপুর, বলখ, হেরাত, তাবারিস্তান, খুজিস্তান, ইউফ্রেটিস দ্বীপসহ বিভিন্ন প্রধানতম শহরে নিজামিয়া ধারার মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করেন।
ইসলাম বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য সুসংগঠিত মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার সূচনা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে কেউ কেউ বলেছেন, নিজামিয়া মাদ্রাসাব্যবস্থাই ইসলামের ইতিহাসের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত মাদ্রাসা। এসব মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাঁর নামেই এর নামকরণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে নিজামিয়া মাদ্রাসার অনুকরণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অসংখ্য মাদ্রাসা এবং বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে।
নিজামিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ছিল, শুদ্ধ ও একনিষ্ঠভাবে মহান আল্লাহর উপাসনা করার শিক্ষা দেওয়া, ধর্মের বিধিবিধান যথাযথভাবে পালনের জন্য বিশুদ্ধ ইসলামি শিক্ষা দেওয়া, ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজে সৎভাবে জীবনযাপন করা, অন্যকে সৎ কাজে উদ্বুদ্ধ করা এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখা ইত্যাদি।
এই প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের জন্য শিক্ষা গবেষণা ও লেখালেখির পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছিল। শিক্ষকেরা বিভিন্ন বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করতেন। গবেষণা করতেন। লেখালেখি রচনা ও সংস্কারের কাজ করতেন। শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক জগৎ উন্মোচন করার কাজও আঞ্জাম দিয়েছিল নিজামিয়া মাদ্রাসা। ইতিহাস থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা হয়েছিল।
পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায়ও জোর দেওয়া হতো। বিভিন্ন ধরনের কাজ শিখিয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা হতো। পরবর্তী সময়ে তাঁরা সরকারি-বেসরকারি নানা কাজে সম্পৃক্ত হতেন। এ ছাড়া সুন্নি চিন্তাধারার প্রচার-প্রসার করে শিয়া চিন্তাধারার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার একটি লক্ষ্যও ধারণ করত নিজামিয়া মাদ্রাসা।
সিলেবাসে দুটি মৌলিক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এক. শাফেয়ি মাজহাবের মতানুসারে ইসলামি আইনশাস্ত্র পাঠদান, দুই. আকিদা-বিশ্বাসে আশআরি চিন্তাধারার মৌলিক বিষয়গুলো পাঠদান। তা ছাড়া এই সিলেবাসে হাদিস, ব্যাকরণ, ভাষা ও সাহিত্যও বিদ্যমান ছিল।
নিজামুল মুলক মাদ্রাসার লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেন। মাদ্রাসার জন্য উদারভাবে ব্যয় করতেন। প্রত্যেক শিক্ষক ও কর্মচারীর জন্য সম্মানজনক মজুরি বরাদ্দ করেন। শিক্ষার্থীদের ভরণপোষণের দায়িত্বও নিয়েছিলেন তিনি। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন চার পাউন্ড রুটির ব্যবস্থা করতেন। ছিল চমৎকার আবাসন-সুবিধাও। প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ ছিল আলাদা কক্ষ।
সময়ের সেরা আলিম ও ধর্মবিশারদদের নিজামিয়া মাদ্রাসায় নিয়োগ দেওয়া হতো। যুগশ্রেষ্ঠ দার্শনিক ইমাম গাজ্জালী ছিলেন এই মাদ্রাসার শিক্ষক। ফারসি কবি শেখ সাদি বাগদাদের নিজামিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন।
নিজামিয়া মাদ্রাসাব্যবস্থা প্রায় চার শ বছর টিকে ছিল। এখান থেকেই শাফিয়ি সুন্নি চিন্তাধারার অনেক বিশ্বখ্যাত মুসলিম পণ্ডিত তৈরি হন। তাঁরা শাফিয়ি ফিকহ ও হাদিস পাঠদানের জন্য পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন।
সেলজুক সুলতান মালিক শাহের উজির নিজামুল মুলক ১০৬৫ খ্রিষ্টাব্দে বাগদাদে প্রথম নিজামিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। নিজামুল মুলক একজন অনন্য বুদ্ধিমান ও বিদ্যানুরাগী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। নিজামিয়া মাদ্রাসা ছিল গতানুগতিক শিক্ষায় সম্পূর্ণ নতুন সংযোজন। বাগদাদের পর ইস্পাহান, নিশাপুর, বলখ, হেরাত, তাবারিস্তান, খুজিস্তান, ইউফ্রেটিস দ্বীপসহ বিভিন্ন প্রধানতম শহরে নিজামিয়া ধারার মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করেন।
ইসলাম বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য সুসংগঠিত মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার সূচনা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে কেউ কেউ বলেছেন, নিজামিয়া মাদ্রাসাব্যবস্থাই ইসলামের ইতিহাসের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত মাদ্রাসা। এসব মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাঁর নামেই এর নামকরণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে নিজামিয়া মাদ্রাসার অনুকরণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অসংখ্য মাদ্রাসা এবং বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে।
নিজামিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ছিল, শুদ্ধ ও একনিষ্ঠভাবে মহান আল্লাহর উপাসনা করার শিক্ষা দেওয়া, ধর্মের বিধিবিধান যথাযথভাবে পালনের জন্য বিশুদ্ধ ইসলামি শিক্ষা দেওয়া, ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজে সৎভাবে জীবনযাপন করা, অন্যকে সৎ কাজে উদ্বুদ্ধ করা এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখা ইত্যাদি।
এই প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের জন্য শিক্ষা গবেষণা ও লেখালেখির পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছিল। শিক্ষকেরা বিভিন্ন বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করতেন। গবেষণা করতেন। লেখালেখি রচনা ও সংস্কারের কাজ করতেন। শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক জগৎ উন্মোচন করার কাজও আঞ্জাম দিয়েছিল নিজামিয়া মাদ্রাসা। ইতিহাস থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা হয়েছিল।
পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায়ও জোর দেওয়া হতো। বিভিন্ন ধরনের কাজ শিখিয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা হতো। পরবর্তী সময়ে তাঁরা সরকারি-বেসরকারি নানা কাজে সম্পৃক্ত হতেন। এ ছাড়া সুন্নি চিন্তাধারার প্রচার-প্রসার করে শিয়া চিন্তাধারার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার একটি লক্ষ্যও ধারণ করত নিজামিয়া মাদ্রাসা।
সিলেবাসে দুটি মৌলিক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এক. শাফেয়ি মাজহাবের মতানুসারে ইসলামি আইনশাস্ত্র পাঠদান, দুই. আকিদা-বিশ্বাসে আশআরি চিন্তাধারার মৌলিক বিষয়গুলো পাঠদান। তা ছাড়া এই সিলেবাসে হাদিস, ব্যাকরণ, ভাষা ও সাহিত্যও বিদ্যমান ছিল।
নিজামুল মুলক মাদ্রাসার লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেন। মাদ্রাসার জন্য উদারভাবে ব্যয় করতেন। প্রত্যেক শিক্ষক ও কর্মচারীর জন্য সম্মানজনক মজুরি বরাদ্দ করেন। শিক্ষার্থীদের ভরণপোষণের দায়িত্বও নিয়েছিলেন তিনি। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন চার পাউন্ড রুটির ব্যবস্থা করতেন। ছিল চমৎকার আবাসন-সুবিধাও। প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ ছিল আলাদা কক্ষ।
সময়ের সেরা আলিম ও ধর্মবিশারদদের নিজামিয়া মাদ্রাসায় নিয়োগ দেওয়া হতো। যুগশ্রেষ্ঠ দার্শনিক ইমাম গাজ্জালী ছিলেন এই মাদ্রাসার শিক্ষক। ফারসি কবি শেখ সাদি বাগদাদের নিজামিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন।
নিজামিয়া মাদ্রাসাব্যবস্থা প্রায় চার শ বছর টিকে ছিল। এখান থেকেই শাফিয়ি সুন্নি চিন্তাধারার অনেক বিশ্বখ্যাত মুসলিম পণ্ডিত তৈরি হন। তাঁরা শাফিয়ি ফিকহ ও হাদিস পাঠদানের জন্য পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন।
ক্ষমতা বা রাজত্ব পেলে মানুষ আল্লাহ ভোলা হয়ে যায়। হয়ে ওঠে বেপরোয়া ও অহংকারী। দুর্বলের ওপর অবাধে চালায় অত্যাচার ও নিপীড়ন। আসলে ক্ষমতাসীনদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এটা একটা বড় পরীক্ষা। ক্ষমতা পেয়ে বান্দা কেমন আচরণ করে, সেটাই দেখতে চান আল্লাহ তাআলা। তবে সবাই তো এক না।
১১ ঘণ্টা আগেআল্লাহ তাআলার অফুরন্ত নেয়ামতের অবারিত ঠিকানা জান্নাত। জান্নাতকে পার্থিব নেয়ামত দ্বারা আল্লাহ তাআলা সাজিয়েছেন—যা কোনো চোখ চোখ দেখেনি, কোনো কান শোনেনি এবং কোনো ব্যক্তির অন্তর তা কল্পনাও করতে পারেনি।
১৩ ঘণ্টা আগেমহান আল্লাহ আমাদের একমাত্র রিজিকদাতা। সমগ্র সৃষ্টিকুলের রিজিকের ব্যবস্থা তিনিই করে থাকেন। তাই রিজিকের সন্ধানে দিশেহারা নয়, বরং আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকা জরুরি। কোরআন ও হাদিসের আলোকে ৪টি আমল করলে রিজিক বৃদ্ধি হবে বলে আশা করা যায়।
১৪ ঘণ্টা আগেইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
২১ ঘণ্টা আগে