Ajker Patrika

আপনার জিজ্ঞাসা

শিশুর নাম ‘বিসমিল্লাহ’ রাখা যাবে কি

মুফতি শাব্বির আহমদ
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৩৮
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। ছবি: সংগৃহীত
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম। আমার সদ্যোজাত কন্যা সন্তানের জন্য আমরা একটি ছোট ও তাৎপর্যপূর্ণ নাম খুঁজছিলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তার নাম ‘বিসমিল্লাহ’ রাখব। নামটি সংক্ষিপ্ত ও আকর্ষণীয় হওয়ায় আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে। কিন্তু আমাদের পরিবারের মুরব্বিরা আপত্তি করে বলছেন, ‘বিসমিল্লাহ’ আল্লাহর একটি অত্যন্ত পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ বাক্য। এটি কোনো মানুষের নাম হতে পারে না এবং এই নাম রাখলে ভবিষ্যতে এটিকে সাধারণ নামে ডাকার কারণে পবিত্র বাক্যের প্রতি অসম্মান বা বেয়াদবি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

আমি জানতে চাই: ১. ইসলামি শরিয়তে মেয়ের নাম ‘বিসমিল্লাহ’ রাখা কি জায়েজ? ২. যদি জায়েজও হয়, তবু এই পবিত্র বাক্যকে নাম হিসেবে ব্যবহার করা উত্তম নাকি বেয়াদবির আশঙ্কায় এই নাম রাখা থেকে বিরত থাকা উচিত?

মো. ফরহাদ হোসেন, মিরপুর, ঢাকা

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আপনার প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জীবনঘনিষ্ঠ। চমৎকার এই প্রশ্নের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

শিশুর নাম ‘বিসমিল্লাহ’ রাখার বিষয়ে ফিকহবিদদের মতামত হলো: নামের অর্থের দিক থেকে ‘বিসমিল্লাহ’ কোনো প্রচলিত ব্যক্তিবাচক নাম নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ বাক্য বা কালাম। এর অর্থ হলো, ‘আমি আল্লাহর নামে শুরু করছি।’ এটি প্রতিটি ভালো কাজ শুরু করার আগে বরকত লাভের জন্য পাঠ করা হয়। যেহেতু এটি আল্লাহর কোনো নাম বা সিফাত নয়, বা কোনো নিষিদ্ধ অর্থ বহন করে না, তাই এই নাম রাখার ফলে শরয়িভাবে কোনো বড় অসুবিধা নেই বা গুনাহ হবে না।

যদিও এই নাম রাখা শরিয়তে সরাসরি হারাম নয়, তবে এটি না রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ, নামের মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তির পরিচিতি দেওয়া এবং একটি সুন্দর অর্থ বহন করা। ‘বিসমিল্লাহ’ সেই অর্থে কোনো ব্যক্তির পরিচয় বা গুণকে প্রকাশ করে না।

‘বিসমিল্লাহ’ একটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও পবিত্র কালাম। এই পবিত্র বাক্যটিকে যখন সাধারণ মানুষের মতো ডাকা হবে, বিশেষ করে রাগ বা বিরক্তির মুহূর্তে ডাকা হলে, তখন এর আদব ও মর্যাদার হানি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এর ফলে না জেনে অনেকেই এই পবিত্র বাক্যের প্রতি বেয়াদবি করে ফেলতে পারে।

মোটকথা হলো, যদি কেউ মেয়ের নাম ‘বিসমিল্লাহ’ রেখে দেন, তবে শরিয়তে কোনো বাধা নেই। কিন্তু উত্তম হলো মেয়েদের এমন নাম রাখা, যা সুন্দর অর্থবহ হয় এবং সাহাবিয়া বা নেককার নারীদের নামের সঙ্গে মিল থাকে।

দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া অবলম্বনে

উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত