ইসলাম ডেস্ক
সময়ের এক গাঢ় দুপুরে, জ্ঞান ভুবনের দরজায় এক সন্ন্যাসী দাঁড়িয়ে ছিলেন—নীরব, দীপ্ত, অদ্ভুত নিরাসক্ত। তাঁর হাতে ছিল না কোনো তরবারি, ছিল কেবল এক কলম। তাঁর কণ্ঠে ছিল না কোনো উচ্চারণ, কিন্তু তাঁর লেখা যুগে যুগে উচ্চারিত হয়েছে পৃথিবীর সকল ভাষায়। তিনি ইবনে সিনা। মৃত্যু তাঁকে কেড়ে নেয় ১০৩৭ সালের ২২ জুন, কিন্তু কালের পাতায় তিনি রয়ে যান অক্ষয় হয়ে।
শৈশবেই মহিরুহের বীজ
ইবনে সিনা জন্মগ্রহণ করেন ৯৮০ সালে পারস্যের বুকের ভেতর আফশানা নামের এক শান্ত গ্রামে। দশ বছর বয়সে কোরআন মুখস্থ করেন, ষোলোতেই করেন চিকিৎসা শাস্ত্রে পারদর্শিতা অর্জন। এমনকি নিজের অসুস্থ পিতার চিকিৎসাও করেছিলেন শৈশবে, যেখানে ব্যর্থ হয়েছিল অনেক অভিজ্ঞ হাকিম।
শুধু চিকিৎসক নন, তিনি ছিলেন কবি, গণিতবিদ, দার্শনিক, জ্যোতির্বিদ, ভাষাবিদ—একজন পরিপূর্ণ রেনেসাঁ মানুষ, রেনেসাঁর বহু পূর্বে।
আল-কানুন: চিকিৎসার কাব্যগ্রন্থ
ইবনে সিনার চিকিৎসাবিদ্যায় শ্রেষ্ঠ কীর্তি হলো ‘আল-কানুন ফিত তিব্ব’—যা ল্যাটিন অনুবাদ হয়ে The Canon of Medicine নামে ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে। পঞ্চাশের অধিক রোগ-ব্যাধির বিশ্লেষণ, হাজারেরও বেশি ওষুধের ব্যাখ্যা, শল্যচিকিৎসা ও সংক্রমণ বিষয়ে বিস্ময়কর ধারণা—সবই ছিল এই একক মহাগ্রন্থে।
তিনি বলেছিলেন, ‘চিকিৎসা শুধু শরীরের নয়, আত্মারও। রোগীর দেহ নয়, তার আশাও সুস্থ করতে হয়।’
দর্শনের অমর ধ্রুবতারা
ইবনে সিনা প্লেটো ও অ্যারিস্টটলকে গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু অনুগামী হয়ে নয়—তিনি তাদের যুক্তি ইসলামি আলোয় ব্যাখ্যা করে গড়েছিলেন নিজস্ব চিন্তার জগৎ। তাঁর দর্শন ছিল আত্মা, সৃষ্টিকর্তা, মানব চেতনা ও অস্তিত্বের দার্শনিক অনুসন্ধান। তাঁর লিখিত গ্রন্থ ‘আশ-শিফা’ ছিল এক অমর প্রতিকৃতি—যেখানে দর্শন, যুক্তি এবং বিজ্ঞান একসঙ্গে মিশে গিয়েছিল।
ইউরোপীয় চিন্তানায়ক গ্যাব্রিয়েল নাহদা বলেছিলেন, ‘ইবনে সিনা না থাকলে রেনেসাঁর আলো হয়তো আরও কয়েক শতাব্দী পরে আসত।’
শেষ প্রহরে এক সাধকের প্রস্থান
জীবনের শেষ দিনগুলোতে ইবনে সিনা ছিলেন অতিশয় দুর্বল। কিন্তু পড়াশোনা, গবেষণা, চিকিৎসা—কোনো কিছু থামাননি। যখন বুঝলেন আর সময় নেই, তখন তিনি চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়ে কোরআনের আয়াত নিয়ে ধ্যানমগ্ন হন। তিনি বলেন, ‘আমি জ্ঞান ও সাধনার জন্য বেঁচে ছিলাম, এখন মৃত্যুকেও সাধনার অংশ করে নিচ্ছি।’ এ যেন মৃত্যুর গায়ে ছুঁয়ে যাওয়া এক পবিত্র কবিতা।
১০৩৭ সালের ২২ জুন তাঁর দেহ নিস্তব্ধ হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু চিন্তার যে শিখা তিনি জ্বালিয়েছিলেন—তা নেভেনি।
লেখক: রাফাত আশরাফ
শিক্ষক
সময়ের এক গাঢ় দুপুরে, জ্ঞান ভুবনের দরজায় এক সন্ন্যাসী দাঁড়িয়ে ছিলেন—নীরব, দীপ্ত, অদ্ভুত নিরাসক্ত। তাঁর হাতে ছিল না কোনো তরবারি, ছিল কেবল এক কলম। তাঁর কণ্ঠে ছিল না কোনো উচ্চারণ, কিন্তু তাঁর লেখা যুগে যুগে উচ্চারিত হয়েছে পৃথিবীর সকল ভাষায়। তিনি ইবনে সিনা। মৃত্যু তাঁকে কেড়ে নেয় ১০৩৭ সালের ২২ জুন, কিন্তু কালের পাতায় তিনি রয়ে যান অক্ষয় হয়ে।
শৈশবেই মহিরুহের বীজ
ইবনে সিনা জন্মগ্রহণ করেন ৯৮০ সালে পারস্যের বুকের ভেতর আফশানা নামের এক শান্ত গ্রামে। দশ বছর বয়সে কোরআন মুখস্থ করেন, ষোলোতেই করেন চিকিৎসা শাস্ত্রে পারদর্শিতা অর্জন। এমনকি নিজের অসুস্থ পিতার চিকিৎসাও করেছিলেন শৈশবে, যেখানে ব্যর্থ হয়েছিল অনেক অভিজ্ঞ হাকিম।
শুধু চিকিৎসক নন, তিনি ছিলেন কবি, গণিতবিদ, দার্শনিক, জ্যোতির্বিদ, ভাষাবিদ—একজন পরিপূর্ণ রেনেসাঁ মানুষ, রেনেসাঁর বহু পূর্বে।
আল-কানুন: চিকিৎসার কাব্যগ্রন্থ
ইবনে সিনার চিকিৎসাবিদ্যায় শ্রেষ্ঠ কীর্তি হলো ‘আল-কানুন ফিত তিব্ব’—যা ল্যাটিন অনুবাদ হয়ে The Canon of Medicine নামে ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে। পঞ্চাশের অধিক রোগ-ব্যাধির বিশ্লেষণ, হাজারেরও বেশি ওষুধের ব্যাখ্যা, শল্যচিকিৎসা ও সংক্রমণ বিষয়ে বিস্ময়কর ধারণা—সবই ছিল এই একক মহাগ্রন্থে।
তিনি বলেছিলেন, ‘চিকিৎসা শুধু শরীরের নয়, আত্মারও। রোগীর দেহ নয়, তার আশাও সুস্থ করতে হয়।’
দর্শনের অমর ধ্রুবতারা
ইবনে সিনা প্লেটো ও অ্যারিস্টটলকে গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু অনুগামী হয়ে নয়—তিনি তাদের যুক্তি ইসলামি আলোয় ব্যাখ্যা করে গড়েছিলেন নিজস্ব চিন্তার জগৎ। তাঁর দর্শন ছিল আত্মা, সৃষ্টিকর্তা, মানব চেতনা ও অস্তিত্বের দার্শনিক অনুসন্ধান। তাঁর লিখিত গ্রন্থ ‘আশ-শিফা’ ছিল এক অমর প্রতিকৃতি—যেখানে দর্শন, যুক্তি এবং বিজ্ঞান একসঙ্গে মিশে গিয়েছিল।
ইউরোপীয় চিন্তানায়ক গ্যাব্রিয়েল নাহদা বলেছিলেন, ‘ইবনে সিনা না থাকলে রেনেসাঁর আলো হয়তো আরও কয়েক শতাব্দী পরে আসত।’
শেষ প্রহরে এক সাধকের প্রস্থান
জীবনের শেষ দিনগুলোতে ইবনে সিনা ছিলেন অতিশয় দুর্বল। কিন্তু পড়াশোনা, গবেষণা, চিকিৎসা—কোনো কিছু থামাননি। যখন বুঝলেন আর সময় নেই, তখন তিনি চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়ে কোরআনের আয়াত নিয়ে ধ্যানমগ্ন হন। তিনি বলেন, ‘আমি জ্ঞান ও সাধনার জন্য বেঁচে ছিলাম, এখন মৃত্যুকেও সাধনার অংশ করে নিচ্ছি।’ এ যেন মৃত্যুর গায়ে ছুঁয়ে যাওয়া এক পবিত্র কবিতা।
১০৩৭ সালের ২২ জুন তাঁর দেহ নিস্তব্ধ হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু চিন্তার যে শিখা তিনি জ্বালিয়েছিলেন—তা নেভেনি।
লেখক: রাফাত আশরাফ
শিক্ষক
মানবজাতিকে আল্লাহ তাআলা অসংখ্য, অগণিত নিয়ামত দান করেছেন। এর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অতুলনীয় দুটি নিয়ামত হলো—১. ইসলাম, ২. মহানবী (সা.)। এই দুই নিয়ামতের প্রভাব মানবজীবনে চিরস্থায়ী ও সর্বজনীন। তাই এই দুই নিয়ামত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো:
৪ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগেইসলামি পঞ্জিকায় রবিউস সানি মাসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, মাসের প্রথম জুমা মুসলিমদের জন্য আল্লাহর রহমত, নেক আমল ও ক্ষমা লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ। জুমা নিজেই সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে ইসলামে বিশেষ মর্যাদা রাখে। এ দিনে আল্লাহর নৈকট্য লাভ, গুনাহ মাফ এবং নেক কাজের প্রতিশ্রুতি অনেক বেশি।
১ দিন আগেইসলাম মানুষের জীবনের প্রতিটি অনুষঙ্গের দিকনির্দেশনা দেয়, যেখানে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার প্রতিও সমান গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। খেলাধুলাকে ইসলাম কেবল চিত্তবিনোদনের মাধ্যম হিসেবে নয়, বরং শরীরচর্চা, সুস্থ মন ও সামরিক প্রস্তুতির এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে দেখে। ইসলাম খেলাধুলার অনুমতি দিয়েছে...
১ দিন আগে