Ajker Patrika

আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার ৮ আমল

আবু আবদুল্লাহ আহমদ
আল্লাহর ভালোবাসা  পাওয়ার  ৮ আমল

আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করতে পারা বান্দার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। খুশির ব্যাপার হলো, কী কী আমল করলে আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া যাবে—পবিত্র কোরআনে তিনি নিজেই তা বলে দিয়েছেন। এখানে তেমনই কয়েকটি আমলের কথা লিখেছেন মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ

ইহসান: শরিয়তের পরিভাষায় ইহসানের দুটি অর্থ আছে। এক. যথাযথভাবে আল্লাহর ইবাদত করা এবং দুই. অন্যের প্রতি অনুগ্রহ করা। প্রথম অর্থ সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘ইহসান হলো, তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে যেন তাঁকে দেখতে পাচ্ছ, তা সম্ভব না হলে এমন অনুভূতি নিয়ে ইবাদত করবে যেন তিনি তোমাকে দেখছেন।’ (বুখারি ও মুসলিম) দ্বিতীয় অর্থে পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘অনুগ্রহ করো, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন।’ (সুরা কাসাস: ৭৭) উল্লিখিত উভয় অর্থে ইহসান অবলম্বনকারীদের ভালোবাসার ঘোষণা দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা। এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ইহসান অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা: ১৯৫, সুরা আলে ইমরান: ১৩৪ ও ১৪৮ এবং সুরা মায়িদা: ১৩ ও ৯৩) 

তাকওয়া: তালক ইবনে হাবিব (রহ.) বলেন, ‘তাকওয়া হলো, সওয়াবের আশায় আল্লাহর নির্দেশিত পথে তাঁর আনুগত্য করা এবং তাঁর শাস্তির ভয়ে তাঁর নিষেধ করা বিষয় থেকে বিরত থাকা।’ (কিতাবুত তাকওয়া) পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকওয়াবানদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ৭৬ এবং সুরা তাওবা: ৪ ও ৭) 

ইনসাফ: বিচার-আচারে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করে যথাযথ ফয়সালা দেওয়া, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান কিংবা পরিবার পরিচালনায় অধীনদের মধ্যে সমতা ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা মায়িদা: ৪২, সুরা হুজুরাত: ৯ এবং সুরা মুমতাহিনা: ৮) 

তওবা: তওবা হলো, কৃত গুনাহের প্রতি অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না করার দৃঢ় সংকল্প করা। তওবা মানুষকে পাপের পঙ্কিলতা থেকে পরিচ্ছন্ন করে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন।’ 
(সুরা বাকারা: ২২২) 

পবিত্রতা: অন্তরকে হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার ইত্যাদি আত্মিক পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত রাখা এবং শরীর, কাপড়চোপড়, বাড়িঘর, কর্মস্থল ইত্যাদি যাবতীয় বাহ্যিক ময়লা থেকে পরিচ্ছন্ন রাখার নাম পবিত্রতা। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা তাওবা: ১০৮) 

সবর: সাধারণত সবর বলতে আমরা কেবল বিপদে ধৈর্য ধরাকেই বুঝি। তবে ইসলামে এর অর্থ আরও ব্যাপক। ইসলামে সবর বলতে ইবাদতের ওপর অবিচল থাকা, গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং বিপদ-আপদে অস্থির না হওয়াকে বোঝায়। (আস-সবর, সালিহ আল মুনাজ্জিদ) এই ব্যাপক অর্থে যাঁরা সবর করেন, আল্লাহ তাঁদের ভালোবাসেন। 
(সুরা আলে ইমরান: ১৪৬) 

তাওয়াক্কুল: বাহ্যিক উপায় অবলম্বন করার পর বিপদ দূর করা ও কল্যাণ লাভের ব্যাপারে আল্লাহর প্রতি গভীর আস্থা ও বিশ্বাস রাখার নাম তাওয়াক্কুল। বাহ্যিক উপায় অবলম্বন না করে কেবল আল্লাহর ওপর ভরসা করার নাম তাওয়াক্কুল নয়। এক সাহাবি দূর থেকে রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি নিজের বাহন কোথাও না বেঁধে রাসুলের কাছে এলেন। রাসুল (সা.) তাঁকে বাহনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, ‘আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে ছেড়ে এসেছি।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘বরং তুমি সেটি কোনো কিছুর সঙ্গে বেঁধে রেখো। তারপর আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করো।’ (ইবনে হিব্বান) পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওয়াক্কুল অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৫৯) 

সত্য ও ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম: আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর পথে সারিবদ্ধভাবে সুদৃঢ় প্রাচীরের মতো লড়াই-সংগ্রাম করে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন।’ (সুরা সফ: ৪) 

লেখক: শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচনের কারণে এগিয়ে এল কওমি মাদ্রাসার কেন্দ্রীয় পরীক্ষা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর কেন্দ্রীয় বোর্ড পরীক্ষা এগিয়ে আনা হয়েছে। কওমি সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) ও বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার পূর্বঘোষিত তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।

নতুন সূচি অনুযায়ী, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা শুরু হবে ১৭ জানুয়ারী (শনিবার)। এ ছাড়া ২০২৬ সালের দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা শুরু হবে ২৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার)।

কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানানো হয়।

আল-হাইআতুল উলয়ার অফিস ব্যবস্থাপক মু. অছিউর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির ৬৬ নম্বর সভার সিদ্ধান্ত ও ১৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত মনিটরিং সেলের সভার সিদ্ধান্তক্রমে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, ২৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) থেকে পরীক্ষা শুরু হবে। টানা ১০ দিন পরীক্ষা চলার পর ৫ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) পরীক্ষা শেষ হবে।

প্রথম দিনের পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং শেষ হবে বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে। অবশিষ্ট ৯ দিন পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ৯টায় এবং শেষ হবে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে।

প্রথম দিন তিরমিজি শরিফ প্রথম খণ্ডের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আর শেষ দিন পরীক্ষা হবে মুওয়াত্তায়ে ইমাম মালিক ও মুওয়াত্তায়ে ইমাম মুহাম্মদ কিতাবের।

এ ছাড়া কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের প্রধান পরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী জানান, বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা শুরু হবে ১৭ জানুয়ারী (শনিবার)। শুক্রবারসহ চলবে ২৪ জানুয়ারি (শনিবার) পর্যন্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুরু হচ্ছে পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট সিজন-২ কোরআন প্রতিযোগিতা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট সিজন-২ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়েছে। ‘টি কে গ্রুপ’-এর উদ্যোগে এই ‘ইসলামিক রিয়্যালিটি শো’টি দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে টি কে গ্রুপের বিজনেস ডিরেক্টর মোহাম্মদ মোফাচ্ছেল হক দেশবরেণ্য ইসলামি চিন্তাবিদ, আলেম ও শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মেধাবী কিশোর-কিশোরী হাফেজদের জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরা এবং তাদের মূল্যায়ন করার উদ্দেশ্যে পুষ্টি পবিত্র কোরআন চর্চার যে যাত্রা শুরু করেছে, তা অব্যাহত থাকবে। আমাদের বিশ্বাস, দ্বিতীয় এই আসরে পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট আরও জনপ্রিয়তা অর্জন করবে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, টি কে গ্রুপের বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ইসলামের খেদমতে এই আয়োজন সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানে টি কে গ্রুপের পরিচালক (এইচআর) আলমাস রাইসুল গনিও বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কারি এবং ‘পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট’-এর প্রধান বিচারক শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী। তিনি বলেন, ‘কিশোর ও তরুণ প্রজন্মকে পবিত্র কোরআনের প্রতি অনুরাগী করতে এই আয়োজন প্রশংসার দাবিদার। সমাজে ইসলামি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় টি কে গ্রুপের এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।’

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খুদে প্রতিভাবান হাফেজগণ প্রাথমিক অডিশন রাউন্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। অভিজ্ঞ বিচারক এবং আলেমগণের বিবেচনায় সেরা প্রতিযোগীরা মূল পর্বে অংশগ্রহণ করবে। রিজিওনাল অডিশনে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীরা পুষ্টির পক্ষ থেকে আকর্ষণীয় উপহার পাবে।

২২ ডিসেম্বর থেকে দেশব্যাপী অডিশন পর্ব শুরু হবে। চূড়ান্ত পর্ব পবিত্র রমজান মাসজুড়ে প্রতিদিন বিকেল ৫টা হতে মাগরিবের আজানের আগে দেশের অন্যতম চ্যানেল ‘নাইন’-এ প্রচারিত হবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে বিজয়ীরা পাবেন লক্ষাধিক টাকাসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় পুরস্কার।

সংবাদ সম্মেলনে টি কে গ্রুপের বিভিন্ন ইউনিটের হেড অব সেলস, হেড অব বিজনেসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রবীণ সুফি পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি আর নেই

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রখ্যাত সুফি সাধক, নকশবন্দি তরিকার প্রভাবশালী পীর ও ইসলামিক স্কলার শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ইন্তেকাল করেছেন।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের লাহোরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

তাঁর ইন্তেকালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরই খলিফা মাওলানা মাসুমুল হক। একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের গণমাধ্যম ম্যাসেজ টিভির পরিচালক আবদুল মতিন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ ঝং জেলায় মাহদুল ফাকির আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি তাজকিয়া, ইসলাহে নফস ও সুফি শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য মুরিদ ও অনুসারী রয়েছেন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাওয়াতি সফর করেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি প্রতিষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বয়ান ও নসিহত ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

শায়খ জুলফিকার আহমদ একজন প্রথিতযশা লেখকও ছিলেন। ফিকহ, আত্মশুদ্ধি, পারিবারিক জীবন এবং নারীদের ইসলামি ভূমিকা বিষয়ে রচিত তাঁর বহু গ্রন্থ মুসলিম সমাজে বিশেষভাবে সমাদৃত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে যে আমল

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৪
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে। মহানবী (সা.) সদকার এমন কিছু অসামান্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের জীবনে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।

সদকার এক অন্যতম ফজিলত হলো, এটি আল্লাহর ক্রোধ প্রশমিত করে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘দান-সদকা আল্লাহর ক্রোধ কমায় এবং মানুষকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।’ (জামে তিরমিজি)

মানুষ জীবনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নানা পাপ করে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়, ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয়। এমতাবস্থায় আল্লাহর রাগ কমানোর জন্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য সদকা এক ফলপ্রসূ আমল। সদকার বরকতে আল্লাহ সেই রাগ দূর করে দেন। এ ছাড়া, এই হাদিসের মাধ্যমে জানা যায়, সদকার কারণে আল্লাহ তাআলা দানশীল ব্যক্তিকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করেন এবং তাকে ইমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করেন।

দান-সদকা যে শুধু পরকালে সওয়াব বৃদ্ধি করে তা নয়; বরং এর বরকতে আল্লাহ দুনিয়ার সম্পদও বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। এক হাদিসে আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু জর (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সদকা কী?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘কয়েক গুণ। (অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ আল্লাহর জন্য দান করবে, তার কয়েক গুণ বেশি সওয়াব সে পাবে)। আর আল্লাহ তাআলা বিপুল ভান্ডারের অধিকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ)

অনেক হাদিসবিশারদ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, সদকার বরকতে আল্লাহ দুনিয়ায়ও সম্পদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। আর পরকালে যে প্রতিদান সে পাবে, তা হবে এর চেয়েও বহুগুণ বেশি। বাস্তবেও দেখা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দান করেন, তাঁর সম্পদ অদ্ভুতভাবে বেড়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত