ইসলাম ডেস্ক
‘(হে নবী) আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের প্রতি কোমল হয়েছেন। আপনি যদি রূঢ় ও কঠোর হতেন, তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে সরে যেত।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৫৯)
মানুষের স্বভাবজাত দুইটি বৈশিষ্ট্য হলো কোমলতা ও কঠোরতা। তবে মানবিক সম্পর্ক, সামাজিক সংহতি, এমনকি আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগেও প্রয়োজন হয় হৃদয়ের কোমলতা ও নম্রতার। কারণ সম্পর্ক গড়ে উঠে ভালোবাসা, সহানুভূতি ও মানবিক আচরণের মধ্যে দিয়ে। আর রূঢ় ও কঠোরতায় সম্পর্কের বিনাশ ঘটে।
কোরআনের আলোকে আমরা জানতে পারি, কোমলতা নবীজি (সা.)-এর অন্যতম মহৎ গুণ, যা আল্লাহ তাআলার এক বিশেষ রহমতের বহিঃপ্রকাশ। রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সমগ্র মানবতার জন্য রহমতস্বরূপ। তাঁর সহনশীল আচরণ, কোমল ভাষা ও সদয় ব্যবহারই মানুষকে তাঁর দিকে আকৃষ্ট করত।
কোমলতার প্রয়োজনীয়তা
কোমলতা এমন এক গুণ, যার মাধ্যমে মানুষের মাঝে সহানুভূতি, পরার্থপরতা এবং ক্ষমাশীলতা জন্ম নেয়। কারণ মানুষের ভেতরে স্বভাবতই অহংকার, জুলুম ও কঠোরতার প্রবণতা বিদ্যমান থাকে। তাই ইসলামে এই গুণ অর্জনের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোমলতা থেকে বঞ্চিত, সে সকল কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮০৯)
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘নম্রতা যেই বস্তুর মাঝে থাকে, সেটিকে সৌন্দর্যময় করে তোলে। আর তা উঠিয়ে নেওয়া হলে জিনিসটি ত্রুটিপূর্ণ হয়ে যায়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৬৪১৬)
নবীজি (সা.)-এর জীবনে কোমলতা
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়েই কোমলতার নিদর্শন পাওয়া যায়। হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, একবার এক বেদুইন ব্যক্তি মসজিদে নববীতে প্রস্রাব শুরু করলে সাহাবায়ে কেরাম তাঁকে বাধা দিতে উদ্যত হন। কিন্তু রাসুল (সা.) তাদের থামিয়ে দেন এবং বলেন—‘তাকে শেষ করতে দাও, এরপর সেখানে পানি ঢেলে দাও।’ (সহিহ্ বুখারি: ৬০২৫)
এই ঘটনা প্রমাণ করে, রাসুল (সা.) কেবল কথা ও আচরণেই নয়, পরিস্থিতি বিবেচনায়ও ছিলেন পরম সহনশীল ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী।
সমাজে কোমলতার প্রভাব
কঠোরতা মানুষকে বিমুখ করে, সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং বিদ্বেষ ও বিরোধ সৃষ্টি করে। পক্ষান্তরে নম্রতা, ভদ্রতা ও কোমলতা মানুষকে একত্র করে, হৃদয়ের দূরত্ব কমায় এবং ভালোবাসা ও সৌহার্দ্য সৃষ্টি করে। একজন কোমল হৃদয়ের মানুষ নিজের জন্য যেমন কল্যাণ বয়ে আনে, তেমনি সমাজকেও শান্তির পথে পরিচালিত করে।
আধুনিক জীবনের চিত্র
আজকের সমাজে কোমলতা ও নম্রতার স্থানে রূঢ় ও অহংকার স্থান গেড়ে বসেছে। এর ফলে সামাজিক সম্পর্কে টানাপোড়েন, পারিবারিক জীবনে অস্থিরতা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিরূপতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। হৃদয়ের কঠোরতা আমাদের আচরণে প্রতিফলিত হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আমাদের কর্তব্য—
মোটকথা, বিনয় ও কোমলতা শুধু চারিত্রিক সৌন্দর্যের নিদর্শন নয়; বরং তা ইহকাল ও পরকালের সফলতার পাথেয় এই গুণগুলো মানুষকে শ্রদ্ধার পাত্র করে তোলে, সমাজে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ায় এবং আত্মিক প্রশান্তি এনে দেয়। তাই আসুন, আমরা নিজেদের মধ্যে নম্রতা ও কোমলতা সৃষ্টি করি। অহংকার, রূঢ় ও তাচ্ছিল্য থেকে বেঁচে থাকি। এতে আমাদের ব্যক্তি জীবন যেমন হবে সুন্দর ও সফল, তেমনি গড়ে উঠবে শান্তিময় একটি দেশ ও সমাজ।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক
‘(হে নবী) আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের প্রতি কোমল হয়েছেন। আপনি যদি রূঢ় ও কঠোর হতেন, তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে সরে যেত।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৫৯)
মানুষের স্বভাবজাত দুইটি বৈশিষ্ট্য হলো কোমলতা ও কঠোরতা। তবে মানবিক সম্পর্ক, সামাজিক সংহতি, এমনকি আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগেও প্রয়োজন হয় হৃদয়ের কোমলতা ও নম্রতার। কারণ সম্পর্ক গড়ে উঠে ভালোবাসা, সহানুভূতি ও মানবিক আচরণের মধ্যে দিয়ে। আর রূঢ় ও কঠোরতায় সম্পর্কের বিনাশ ঘটে।
কোরআনের আলোকে আমরা জানতে পারি, কোমলতা নবীজি (সা.)-এর অন্যতম মহৎ গুণ, যা আল্লাহ তাআলার এক বিশেষ রহমতের বহিঃপ্রকাশ। রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সমগ্র মানবতার জন্য রহমতস্বরূপ। তাঁর সহনশীল আচরণ, কোমল ভাষা ও সদয় ব্যবহারই মানুষকে তাঁর দিকে আকৃষ্ট করত।
কোমলতার প্রয়োজনীয়তা
কোমলতা এমন এক গুণ, যার মাধ্যমে মানুষের মাঝে সহানুভূতি, পরার্থপরতা এবং ক্ষমাশীলতা জন্ম নেয়। কারণ মানুষের ভেতরে স্বভাবতই অহংকার, জুলুম ও কঠোরতার প্রবণতা বিদ্যমান থাকে। তাই ইসলামে এই গুণ অর্জনের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোমলতা থেকে বঞ্চিত, সে সকল কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮০৯)
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘নম্রতা যেই বস্তুর মাঝে থাকে, সেটিকে সৌন্দর্যময় করে তোলে। আর তা উঠিয়ে নেওয়া হলে জিনিসটি ত্রুটিপূর্ণ হয়ে যায়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৬৪১৬)
নবীজি (সা.)-এর জীবনে কোমলতা
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়েই কোমলতার নিদর্শন পাওয়া যায়। হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, একবার এক বেদুইন ব্যক্তি মসজিদে নববীতে প্রস্রাব শুরু করলে সাহাবায়ে কেরাম তাঁকে বাধা দিতে উদ্যত হন। কিন্তু রাসুল (সা.) তাদের থামিয়ে দেন এবং বলেন—‘তাকে শেষ করতে দাও, এরপর সেখানে পানি ঢেলে দাও।’ (সহিহ্ বুখারি: ৬০২৫)
এই ঘটনা প্রমাণ করে, রাসুল (সা.) কেবল কথা ও আচরণেই নয়, পরিস্থিতি বিবেচনায়ও ছিলেন পরম সহনশীল ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী।
সমাজে কোমলতার প্রভাব
কঠোরতা মানুষকে বিমুখ করে, সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং বিদ্বেষ ও বিরোধ সৃষ্টি করে। পক্ষান্তরে নম্রতা, ভদ্রতা ও কোমলতা মানুষকে একত্র করে, হৃদয়ের দূরত্ব কমায় এবং ভালোবাসা ও সৌহার্দ্য সৃষ্টি করে। একজন কোমল হৃদয়ের মানুষ নিজের জন্য যেমন কল্যাণ বয়ে আনে, তেমনি সমাজকেও শান্তির পথে পরিচালিত করে।
আধুনিক জীবনের চিত্র
আজকের সমাজে কোমলতা ও নম্রতার স্থানে রূঢ় ও অহংকার স্থান গেড়ে বসেছে। এর ফলে সামাজিক সম্পর্কে টানাপোড়েন, পারিবারিক জীবনে অস্থিরতা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিরূপতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। হৃদয়ের কঠোরতা আমাদের আচরণে প্রতিফলিত হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আমাদের কর্তব্য—
মোটকথা, বিনয় ও কোমলতা শুধু চারিত্রিক সৌন্দর্যের নিদর্শন নয়; বরং তা ইহকাল ও পরকালের সফলতার পাথেয় এই গুণগুলো মানুষকে শ্রদ্ধার পাত্র করে তোলে, সমাজে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ায় এবং আত্মিক প্রশান্তি এনে দেয়। তাই আসুন, আমরা নিজেদের মধ্যে নম্রতা ও কোমলতা সৃষ্টি করি। অহংকার, রূঢ় ও তাচ্ছিল্য থেকে বেঁচে থাকি। এতে আমাদের ব্যক্তি জীবন যেমন হবে সুন্দর ও সফল, তেমনি গড়ে উঠবে শান্তিময় একটি দেশ ও সমাজ।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক
আল্লাহর ইচ্ছায় মানুষ দুনিয়ায় আসে অল্প সময়ের জন্য—শূন্য হাতে জন্ম, শূন্য হাতেই বিদায়। জন্ম যাত্রার সূচনা, মৃত্যু তার অবশ্যম্ভাবী সমাপ্তি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
১২ ঘণ্টা আগেআল্লাহ তাআলা মানুষকে পরিশ্রমনির্ভর করে সৃষ্টি করেছেন। তাই দিনের বেলায় নানা কাজ শেষে রাতে মানুষ বিশ্রাম নেয়। প্রশান্তিময় বিশ্রামের সর্বোত্তম উপায় হলো ঘুম। তবে শোয়ার আগে শরীর ও মনকে পবিত্র করে নেওয়া উচিত।
১৯ ঘণ্টা আগেশান্তি, শৃঙ্খলা এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূলমন্ত্র হলো পরামর্শ। পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ ও রাষ্ট্র পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে পরামর্শভিত্তিক কাজের গুরুত্ব অপরিসীম। পরামর্শ করে কাজ করলে যেমন মানসিক তৃপ্তি আসে, তেমনি তাতে আল্লাহর রহমতও বর্ষিত হয়। ইসলামে পরামর্শকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। মহানবী (সা.)
২ দিন আগেপবিত্র কোরআনের ৬২ তম সুরা, সুরা জুমুআ। এটি মাদানি সুরা, যা জুমার দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্যকে কেন্দ্র করে নাজিল হয়েছে। এই সুরার মূল বার্তা হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যের মাধ্যমে ইমানদারদের পরিশুদ্ধ জীবন লাভ এবং ইহুদিদের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা।
৩ দিন আগে