আপনার জিজ্ঞাসা
ইসলাম ডেস্ক
প্রশ্ন: আমাদের এলাকায় ১০ মহররমে (আশুরার দিন) কারবালার কথা স্মরণ করে তাজিয়া মিছিল হয়ে থাকে। আমিও কয়েকবার এতে অংশ নিয়েছি। পরে একজন বলে, ‘কারবালাকে স্মরণ করে তাজিয়া মিছিল করা বা শোকের নামে বিলাপ-মাতম করা ইসলামে বৈধ নয়।’ আসলেই কি বিষয়টি এমন? এ বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা জানতে চাই।
বেলায়েত হোসেন, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
উত্তর: আশুরার মর্যাদা ও ফজিলত ইসলামে অপরিসীম। আশুরার দিন রোজা রাখা মুস্তাহাব। নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে আমার আশা, তিনি এই রোজার মাধ্যমে বিগত এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১১৬২)। আশুরার দিন যেমন ফজিলতপূর্ণ, তেমনি এ দিন ঘটে গেছে ইসলামের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা আলোড়িত ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। ৬১ হিজরির ১০ মহররমে কারবালায় ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে হজরত হুসাইন (রা.) শহীদ হন। এই শোক ভোলার মতো নয়। মুসলমানদের ইতিহাসে এই বিরহ রয়ে গেছে হাজার বছর ধরে। মর্মান্তিক এই শোকে হৃদয় ব্যথিত হবে, চোখে অশ্রু আসবে—এটাই স্বাভাবিক।
শোকের সময় অন্তর ব্যথিত হওয়ার বিষয়ে হাদিসে এসেছে, ‘চোখ আর দিল থেকে যা কিছু আসে, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং তা রহমতের অংশ। কিন্তু যা কিছু হাত ও জিহ্বা থেকে আসে, তা আসে শয়তানের পক্ষ থেকে।’ (মুসনাদে আহমাদ: ২১২৭)। অর্থাৎ শোকের সময় চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরা কিংবা ব্যথিত হওয়ার মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। এটা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। এটা ওই রহমতের প্রকাশ, যা আল্লাহ তাআলা বান্দার হৃদয়ে ঢেলে দিয়েছেন। কিন্তু শোকে অধৈর্য হয়ে বিলাপ করা, হাত-পা আছড়ানো, বুক চাপড়ানো, চেহারা খামচানো—এসব ইসলামে নিষিদ্ধ। শরিয়তে খুব কঠোরভাবে তা থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়েছে। নবীজি (সা.) বলেন, ‘আমি ওই ব্যক্তি থেকে মুক্ত; যে শোকে মাথা মুণ্ডায়, বুক চাপড়ায়, কাপড় ছিঁড়ে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৬৭)
শরিয়তের এই বিধান লঙ্ঘন করে হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাতের দিনকে মাতমের দিন বানিয়ে নেওয়া, এই মাসকে শোকের মাস বানানো, এ মাসে বিয়েশাদি থেকে বিরত থাকা, তাজিয়া মিছিল করা, শরীর রক্তাক্ত করা, হুসাইন (রা.)-এর কৃত্রিম মাজার বানানো, ঘোড়ার মূর্তি তৈরি করা কোনোভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না। কারও মৃত্যুর দিনকে যদি শোকের দিন হিসেবে নির্ধারণ করা জায়েজ হতো, তাহলে নবী (সা.)-এর ইন্তেকালের দিনকে মাতমের দিন হিসেবে নির্ধারণ করা হতো। কারও শাহাদাতের দিনকে যদি শোকের দিন হিসেবে নির্ধারণ করা জায়েজ হতো, তাহলে হজরত আলী (রা.)-এর শহীদ হওয়ার দিনকে মাতমের দিন হিসেবে নির্ধারণ করা হতো।
হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) বলেন, ‘হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাতের দিনকে যদি মাতম বা শোক দিবসের জন্য এতই গুরুত্ব দেওয়া হতো, তবে সোমবার দিনটিকে আরও ঘটা করে শোক দিবস হিসেবে পালন করা বেশি প্রয়োজন ছিল। কারণ, এ দিন মহানবী (সা.) ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনেই নবীর পর শ্রেষ্ঠ মানব প্রথম খলিফা আবু বকর (রা.) মারা গেছেন।’ (গুনিয়াতুত তালেবিন: ২ / ৩৮)
হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী আশুরার দিনটি ফজিলতপূর্ণ, আর কারবালার ঘটনার কারণে এ দিনে মুমিনের হৃদয়ে নেমে আসে শোক। তাই এই দিনে মুমিনের করণীয়—রোজা রাখা, ইবাদত করা, দান-সদকা করা, নবী পরিবারের জন্য দোয়া করা। পাশাপাশি সবর করা। তবে কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ দিন এমন কোনো কাজে জড়ানো উচিত নয়, যা ইসলাম সমর্থন করে না।
উত্তর দিয়েছেন
মুফতি হাসান আরিফ
ইসলামবিষয়ক গবেষক
প্রশ্ন: আমাদের এলাকায় ১০ মহররমে (আশুরার দিন) কারবালার কথা স্মরণ করে তাজিয়া মিছিল হয়ে থাকে। আমিও কয়েকবার এতে অংশ নিয়েছি। পরে একজন বলে, ‘কারবালাকে স্মরণ করে তাজিয়া মিছিল করা বা শোকের নামে বিলাপ-মাতম করা ইসলামে বৈধ নয়।’ আসলেই কি বিষয়টি এমন? এ বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা জানতে চাই।
বেলায়েত হোসেন, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
উত্তর: আশুরার মর্যাদা ও ফজিলত ইসলামে অপরিসীম। আশুরার দিন রোজা রাখা মুস্তাহাব। নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে আমার আশা, তিনি এই রোজার মাধ্যমে বিগত এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১১৬২)। আশুরার দিন যেমন ফজিলতপূর্ণ, তেমনি এ দিন ঘটে গেছে ইসলামের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা আলোড়িত ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। ৬১ হিজরির ১০ মহররমে কারবালায় ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে হজরত হুসাইন (রা.) শহীদ হন। এই শোক ভোলার মতো নয়। মুসলমানদের ইতিহাসে এই বিরহ রয়ে গেছে হাজার বছর ধরে। মর্মান্তিক এই শোকে হৃদয় ব্যথিত হবে, চোখে অশ্রু আসবে—এটাই স্বাভাবিক।
শোকের সময় অন্তর ব্যথিত হওয়ার বিষয়ে হাদিসে এসেছে, ‘চোখ আর দিল থেকে যা কিছু আসে, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং তা রহমতের অংশ। কিন্তু যা কিছু হাত ও জিহ্বা থেকে আসে, তা আসে শয়তানের পক্ষ থেকে।’ (মুসনাদে আহমাদ: ২১২৭)। অর্থাৎ শোকের সময় চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরা কিংবা ব্যথিত হওয়ার মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। এটা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। এটা ওই রহমতের প্রকাশ, যা আল্লাহ তাআলা বান্দার হৃদয়ে ঢেলে দিয়েছেন। কিন্তু শোকে অধৈর্য হয়ে বিলাপ করা, হাত-পা আছড়ানো, বুক চাপড়ানো, চেহারা খামচানো—এসব ইসলামে নিষিদ্ধ। শরিয়তে খুব কঠোরভাবে তা থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়েছে। নবীজি (সা.) বলেন, ‘আমি ওই ব্যক্তি থেকে মুক্ত; যে শোকে মাথা মুণ্ডায়, বুক চাপড়ায়, কাপড় ছিঁড়ে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৬৭)
শরিয়তের এই বিধান লঙ্ঘন করে হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাতের দিনকে মাতমের দিন বানিয়ে নেওয়া, এই মাসকে শোকের মাস বানানো, এ মাসে বিয়েশাদি থেকে বিরত থাকা, তাজিয়া মিছিল করা, শরীর রক্তাক্ত করা, হুসাইন (রা.)-এর কৃত্রিম মাজার বানানো, ঘোড়ার মূর্তি তৈরি করা কোনোভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না। কারও মৃত্যুর দিনকে যদি শোকের দিন হিসেবে নির্ধারণ করা জায়েজ হতো, তাহলে নবী (সা.)-এর ইন্তেকালের দিনকে মাতমের দিন হিসেবে নির্ধারণ করা হতো। কারও শাহাদাতের দিনকে যদি শোকের দিন হিসেবে নির্ধারণ করা জায়েজ হতো, তাহলে হজরত আলী (রা.)-এর শহীদ হওয়ার দিনকে মাতমের দিন হিসেবে নির্ধারণ করা হতো।
হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) বলেন, ‘হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাতের দিনকে যদি মাতম বা শোক দিবসের জন্য এতই গুরুত্ব দেওয়া হতো, তবে সোমবার দিনটিকে আরও ঘটা করে শোক দিবস হিসেবে পালন করা বেশি প্রয়োজন ছিল। কারণ, এ দিন মহানবী (সা.) ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনেই নবীর পর শ্রেষ্ঠ মানব প্রথম খলিফা আবু বকর (রা.) মারা গেছেন।’ (গুনিয়াতুত তালেবিন: ২ / ৩৮)
হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী আশুরার দিনটি ফজিলতপূর্ণ, আর কারবালার ঘটনার কারণে এ দিনে মুমিনের হৃদয়ে নেমে আসে শোক। তাই এই দিনে মুমিনের করণীয়—রোজা রাখা, ইবাদত করা, দান-সদকা করা, নবী পরিবারের জন্য দোয়া করা। পাশাপাশি সবর করা। তবে কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ দিন এমন কোনো কাজে জড়ানো উচিত নয়, যা ইসলাম সমর্থন করে না।
উত্তর দিয়েছেন
মুফতি হাসান আরিফ
ইসলামবিষয়ক গবেষক
মানুষের মুখের ভাষা তার অন্তরের প্রতিচ্ছবি। একজন মুমিনের মুখের ভাষা শুধু তার ব্যক্তিগত আচরণ নয়; বরং তার ইমান, চরিত্র এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের পরিচায়ক। ইসলাম এমন একটি জীবনব্যবস্থা, যা মানুষের প্রতিটি দিককে শুদ্ধ ও সুন্দর করার শিক্ষা দেয়। মুখের ভাষা তার অন্যতম।
৮ ঘণ্টা আগেসৌদি আরবের শহরগুলোর নামকরণের পেছনে রয়েছে ইতিহাস, ভূগোল, এবং আধ্যাত্মিকতার গভীর সম্পর্ক। মক্কা ও মদিনা থেকে শুরু করে জেদ্দা এবং নিওম পর্যন্ত, এই শহরগুলোর নাম তাদের উৎপত্তি ও তাৎপর্যকে নির্দেশ করে।
১৫ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৫ ঘণ্টা আগেইসলামের দৃষ্টিতে পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। ইসলাম শুধু ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দেয় না, বরং সামাজিক, পরিবেশগত ও আধ্যাত্মিক পরিচ্ছন্নতাকেও সমান গুরুত্ব দেয়।
২০ ঘণ্টা আগে