Ajker Patrika

এককভাবে বিজ্ঞান ও শান্তিতে নোবেল পাওয়ার একমাত্র কীর্তিটি তাঁর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এককভাবে দুটি নোবেল পুরস্কার জিতে নজিরবিহীন কীর্তি গড়েছেন লিনাস পলিং। ছবি: সংগৃহীত
এককভাবে দুটি নোবেল পুরস্কার জিতে নজিরবিহীন কীর্তি গড়েছেন লিনাস পলিং। ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীর ইতিহাসে বহু মহান বিজ্ঞানী, সমাজকর্মী এবং রাষ্ট্রনায়ক নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তবে এমন একটি নাম আছে, যিনি কেবল একবার নয়, দুবার এই বিরল সম্মাননা অর্জন করেছেন—তাও সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি ক্ষেত্রে: একটি বিজ্ঞানে, অন্যটি বিশ্ব শান্তিতে। তিনি হলেন কিংবদন্তি মার্কিন বিজ্ঞানী লিনাস পলিং। তিনি এককভাবে দুটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে নোবেল পুরস্কার জয় করে নজিরবিহীন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন।

রসায়নের নায়ক থেকে বিশ্ব শান্তির দূত

লিনাস পলিং ১৯৫৪ সালে রসায়নে প্রথম নোবেল পুরস্কার পান। তাঁর আবিষ্কার ছিল রাসায়নিক বন্ধনের প্রকৃতি এবং জটিল অণুর গঠন ব্যাখ্যায় যুগান্তকারী। তাঁর তত্ত্ব আধুনিক রসায়ন, খনিজ বিজ্ঞান এবং আণবিক জীববিজ্ঞানের ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছে।

বিজ্ঞানের এমন শিখরে পৌঁছানোর পরেও পলিং কেবল গবেষণাগারেই সীমাবদ্ধ থাকেননি। বিজ্ঞান তাঁকে যেমন মহাবিশ্বের মৌলিক রহস্য উন্মোচনের সক্ষমতা দিয়েছিল, তেমনি পারমাণবিক বোমার যুগের ভয়াবহতাও বুঝতে সাহায্য করেছিল। জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকির ধ্বংসযজ্ঞের পর ১৯৫০-এর দশকে যখন বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছিল। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে পরমাণু অস্ত্রের প্রতিযোগিতা দেখে শিউরে উঠেছিলেন লিনাস পলিং। তিনি উপলব্ধি করেন, মানবজাতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হলো এই পারমাণবিক ধ্বংসযজ্ঞ।

এককভাবে শান্তির জন্য দ্বিতীয় নোবেল

বৈজ্ঞানিক সাফল্যের চূড়া থেকে পলিং রাতারাতি শান্তি আন্দোলনের একজন অগ্রদূত হয়ে ওঠেন। তিনি বিশ্বের হাজার হাজার বিজ্ঞানীর স্বাক্ষর সংগ্রহ করে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষার বিরুদ্ধে আবেদন জানান এবং সাধারণ মানুষের কাছে এই অস্ত্রের ভয়াবহতা তুলে ধরেন। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য তার নিরলস সংগ্রাম ও সক্রিয়তার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৬২ সালে তাকে শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়।

এই পুরস্কারটি ছিল এক ঐতিহাসিক ঘটনা, কারণ এটি ছিল এককভাবে জেতা তাঁর দ্বিতীয় নোবেল পুরস্কার।

উল্লেখ্য, মাদাম কুরি পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে দুবার নোবেল পেলেও তাঁর প্রথম পুরস্কারটি ছিল যৌথভাবে।

লিনাস পলিংয়ের এই অনন্য অর্জন প্রমাণ করে, একজন মানুষ একই সঙ্গে বিজ্ঞান ও মানবতার জন্য কতটা গভীরভাবে নিবেদিত হতে পারে। তিনি দেখিয়েছেন, গভীরতম বৈজ্ঞানিক জ্ঞান কখনো মানবিক দায়িত্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে না।

লিনাস পলিং বিজ্ঞানী হিসেবে অণুর বন্ধন ব্যাখ্যা করেছেন, আর শান্তিদূত হিসেবে তিনি মানবতা ও বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের বন্ধন রক্ষার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তাঁর জীবন আমাদের শেখায়, মানব কল্যাণই জ্ঞানের চূড়ান্ত লক্ষ্য হওয়া উচিত। লিনাস পলিংয়ের এই বিরল অর্জন তাঁকে মানব ইতিহাসের এক অনন্য উচ্চতায় স্থান দিয়েছে, যেখানে বিজ্ঞান ও বিবেক হাত ধরাধরি করে হাঁটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ফোন বন্ধ পেলে ধরে নিবা মারা গেছি’, স্ত্রীকে বলেছিলেন ইউক্রেনে নিহত রাজবাড়ীর নজরুল

শাহবাগে গত রাতে ফুটপাত থেকে নারীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার

নার্সিং হোমে বয়স্ক পুরুষদের ওষুধ খেতে উৎসাহিত করতে মিনি স্কার্ট পরে তরুণীর নাচ

ফিলিস্তিনিদের বের করে দেওয়া হবে না, বরং উল্টোটা ঘটবে: ট্রাম্প

যে কারণে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন ইসরায়েলের দুজন প্রধানমন্ত্রী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত