Ajker Patrika

শয়তানের চুল ছিল ঘন বাদামি, চোখ দুটো নীল

পরাগ মাঝি
আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২৪, ০০: ০৫
শয়তানের চুল ছিল ঘন বাদামি, চোখ দুটো নীল

রাষ্ট্রশক্তির গহিনে চলে অন্তর্ঘাতের খেলা। সেই খেলায় ভর দিয়ে বিশ্বব্যাপী গড়ে ওঠে ভয়ংকর সন্ত্রাসের নেটওয়ার্ক। এই চক্রের পাঁকে পড়ে কেউ খুনি, কেউ ডাকাত, কেউ ধর্ষক ও লুটেরা হয়। মানবতার সেখানে কোনো ঠাঁই নেই, পাগলামিই হয়ে ওঠে মুখ্য। দুনিয়াজুড়ে বেড়ে ওঠা এমন ভয়ংকর সন্ত্রাসী ও তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে আজকের পত্রিকার এই সিরিজ প্রতিবেদন। তবে বলে রাখা ভালো, এটা কোনো মৌলিক রচনা নয়, সংকলনমাত্র। প্রকাশিত হয় প্রতি শুক্রবার দুপুরে, আজ তার চতুর্থ কিস্তি।

১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি। সংগঠন করতেন বলে থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই একটি সরোরিটি হাউসে। একই সংগঠনের আরও জনা ত্রিশেক ছাত্রী ছিলেন ওই বাড়িতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম প্রেমের উন্মাদনা আর বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-আড্ডায় দেখতে দেখতে কেটে গেল দুই বছর। তার পরই একদিন জীবনের এক কঠিন পরিণতির মুখোমুখি হলেন তিনি।

১৯৭৮ সালের জানুয়ারি মাসের সেই দিনটি ছিল শনিবার। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ক্লান্ত ছিলেন ক্যাথি। দুই দিন পরই ছিল ক্যালকুলাস পরীক্ষা। তাই একটু পড়াশোনা করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু শরীর আর সায় দিল না। সেদিন তাই মাঝরাতের আগেই রুমমেট কারেন শ্যান্ডলারকে নিয়ে লাইট বন্ধ করে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। 

মাঝরাত পেরিয়ে গেলে ঘুমের ঘোরেই কানে বাজে রুমের দরজা খোলার আওয়াজ। চোখ মেলে আলো-আঁধারির মাঝে চশমা ছাড়াই ক্যাথি দেখতে পান একটি মানুষের শরীর। সামনে দাঁড়িয়ে যেন তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছে! এর পরই দেখা গেল একটি হাত উঁচিয়ে ধরেছে অবয়বটি। পরক্ষণেই ক্যাথির মুখের ওপর সজোরে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করল সে। ক্যাথির কাছে এই আঘাতকে একটি চড়ের মতো মনে হলো। যেন কোনো ব্যথাই পেলেন না তিনি। কিন্তু ওক গাছের একটি মোটা ডাল দিয়ে করা ওই আঘাতে ততক্ষণে চুরমার হয়ে গেছে ক্যাথির চোয়াল। গালের একপাশ ছিঁড়ে ঝুলে পড়েছে। 

এর পরই ক্যাথির রুমমেট কারেনের বিছানার দিকে এগিয়ে যায় লোকটি। কারণ ততক্ষণে জেগে উঠেছিলেন কারেন। নির্মমভাবে আঘাত করা হয় তাঁকেও। ক্যাথি তখন চিৎকার করার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু মুখ দিয়ে কোনো আওয়াজই বের হলো না। কারেনকে আঘাত করে লোকটি যখন দ্বিতীয়বারের মতো ক্যাথির দিকে এগিয়ে এল, তখনই জানালা দিয়ে একটি গাড়ির হেডলাইটের উজ্জ্বল আলো এসে তার মুখের ওপর পড়ল। সরোরিটি হাউসে বসবাস করা এক ছাত্রীকে নামিয়ে দিতে এসেছিল ওই গাড়ি। মুখে আলো এসে পড়ায় ভরকে যায় হামলাকারী এবং রুম থেকে দৌড়ে পালায়। পালানোর সময়ও ওই বাড়ির কয়েক ব্লক দূরে আরেকটি বাড়িতে ঢুকে শেরিল থমাস নামে আরও এক নারীকে গুরুতর জখম করে যায় সে। 

গত ফেব্রুয়ারিতে দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভয়ংকর সেই রাতের স্মৃতিচারণা করেছেন ক্যাথি ক্লেইনার। ছবি: সংগৃহীতআদালতে প্রমাণ হয়েছিল, সেদিনের সেই হামলাকারী আর কেউ নন—আমেরিকার সবচেয়ে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার টেড বান্ডি। ক্যাথি আর কারেন সৌভাগ্যক্রমে তাঁর হাত থেকে বেঁচে গেলেও সেদিন রাতে ওই সরোরিটি হাউসেরই অন্য দুই ছাত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন তিনি। তাঁদের একজন মার্গারেট বোম্যান, অন্যজন লিসা লেভি। মূলত ওই বাড়িতে সবার আগে মার্গারেটের রুমেই প্রবেশ করেছিলেন বান্ডি। মার্গারেটকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তিনি যান লিসার রুমে। নির্মমভাবে হত্যা করেন তাঁকেও। শুধু তাই নয়, লিসার নিথর হয়ে যাওয়া দেহটিকে তিনি পাশবিক উপায়ে ধর্ষণও করেন। লিসার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিল তাঁর কামড়ের দাগ। আর এই কামড়ের দাগই প্রমাণ করেছিল বান্ডির অপরাধ। ফ্লোরিডার আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। 

কিন্তু ফ্লোরিডার ওই ঘটনা ছিল টেড বান্ডির দ্বারা সংঘটিত সর্বশেষ নৃশংসতাগুলোর একটি। এর আগেই ওয়াশিংটন, ওরেগন, কলোরাডো, ইউটাহসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত সাতটি অঙ্গরাজ্যে আরও অসংখ্য নারীর জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছিলেন এই সুশিক্ষিত, স্মার্ট এবং সুদর্শন যুবক। নিজের জবানিতেই তিনি অন্তত ৩০ জন নারীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছিলেন। যদিও তাঁর শিকারের সংখ্যা ৪০-এর বেশি বলে মনে করেন অনেকে। এসব হত্যাকাণ্ডের বেশির ভাগই সংঘটিত হয়েছিল ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে। 

১৯৭৮ সালে ফ্লোরিডার সরোরিটি হাউসে নিহত লিসা লেভি ও মার্গারেট বোম্যান। ছবি: সংগৃহীত১৯৭৪ সালের বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে ওয়াশিংটন এবং ওরেগন থেকে যখন একের পর এক কলেজ পড়ুয়া মেয়ে লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছিলেন, তখন এর নেপথ্যের ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছিল রাজ্য দুটির পুলিশ। সেবার এ দুটি রাজ্যে মাত্র ছয় মাসেই ছয়জন নারী অপহৃত হন। ওয়াশিংটনের সিয়াটলে লেক সামামিশ স্টেট পার্ক থেকে একই দিনে প্রকাশ্য দিবালোকে নিখোঁজ হয়ে যান জেনিস অ্যান ও ডেনিস মেরি নামের দুই তরুণী। এ ঘটনা পুরো অঞ্চলে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তবে সেদিনই খুনিকে ধরার জন্য একটি সূত্র পেয়ে যায় পুলিশ। এক নারী এসে দাবি করেন, সুদর্শন এক যুবক তাঁকেও অপহরণ করতে চেয়েছিলেন। সরল বিশ্বাসে তিনি ওই যুবককে সাহায্য করতে গিয়েছিলেন। কারণ যুবকের একটি হাত আর্ম স্লিংয়ে (ব্যথাযুক্ত হাত গলায় ঝুলিয়ে রাখা) বাঁধা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সন্দেহ হলে তিনি যুবকের গাড়ির কাছ থেকে দ্রুত সরে এসেছিলেন। 

টেড বান্ডির কাছ থেকে বেঁচে যাওয়া সেই নারীই পুলিশকে তাঁর চেহারা, বয়স ও শরীরের গড়ন সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, ঘন বাদামি চুলের ওই যুবকের ভক্সওয়াগন টেন বিটল মডেলের গাড়িটিও ছিল বাদামি। আর তাঁর চোখের মণি দুটি ছিল নীল। 

টেড বান্ডির আলোচিত সেই ভক্সওয়াগন টেন বিটল গাড়িটি। ছবি: সংগৃহীতনারীর বর্ণনা শুনে আঁকা একটি ছবি পরে পত্রিকায় প্রকাশ করে সন্দেহভাজন ব্যক্তির সন্ধান চায় পুলিশ। এই ছবি দেখে পুলিশের সঙ্গে অসংখ্য মানুষ যোগাযোগ করেন এবং সন্দেহভাজনদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। তবে তাঁদের মধ্যে অন্তত চারজন ছবিটি দেখে টেড বান্ডির মতো মনে হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। এই চারজনের মধ্যে একজন ছিলেন বান্ডির ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু, একজন তাঁর সহকর্মী এবং একজন শিক্ষক ছাড়াও ছিলেন তাঁর সেই সময়ের প্রেমিকা এলিজাবেথ ক্লোয়েফার! একটি পার্টিতে প্রথম দেখা হয়েছিল তাঁদের। দুবার বিবাহবিচ্ছেদের মুখোমুখি হওয়া এবং এক কন্যাসন্তানের জননী এলিজাবেথ প্রথম দেখাতেই বান্ডির প্রেমে পড়েছিলেন। 

এদিকে চারজন টেড বান্ডির সঙ্গে সন্দেহভাজন ব্যক্তির চেহারার মিল থাকার কথা জানালেও পুলিশ তা শুরুতে উড়িয়ে দেয়। আইনে অধ্যয়নরত, এমন সুদর্শন আর মার্জিত ব্যক্তিত্বের একজন মানুষ, অতীতে যার কোনো অপরাধের রেকর্ডও নেই, তিনি কীভাবে একের পর এক নারীকে খুন করবেন, তা ছিল পুলিশের কল্পনারও অতীত। ১৯৭৮ সালে ফ্লোরিডার আদালতে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এমন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বহুবার পার পেয়ে গেছেন বান্ডি। এমনকি তাঁর প্রতি মানুষের এমন মনোভবের সুযোগ নিয়ে দুবার জেল থেকেও পালিয়েছিলেন তিনি। 

২০১৯ সালে নির্মিত ‘এক্সট্রিমলি উইকেড, শকিংলি এভিল অ্যান্ড ভাইল’ সিনেমায় বান্ডি ও তাঁর প্রেমিকা এলিজাবেথকে চিত্রায়িত করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীতসন্দেহভাজন হিসেবে শুরুতে টেড বান্ডির বিষয়টি উড়িয়ে দিলেও পুলিশ ঠিকই তাঁর দিকে নজর রাখতে শুরু করেছিল। একপর্যায়ে ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট তাঁকে ট্রাফিক অমান্যের ফাঁদে ফেলে গ্রেপ্তারও করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর ভক্সওয়াগন টেন বিটল গাড়িটির ভেতরে একটি ধাতব দণ্ড, হ্যান্ডকাফ, রশি, গ্লাভস, মুখোশসহ সন্দেহজনক কিছু জিনিস জব্দ করা হয়। সে যাত্রায় জুতসই প্রমাণের অভাবে খুব দ্রুতই ছাড়া পেয়ে যান বান্ডি। তবে পুলিশের নজর বলে কথা! ফলে খুব ঘন ঘন তাঁকে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হয় এবং আদালতে তাঁর হাজিরা দেওয়া একটি নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়। 

 ১৯৭৫ সালেই বান্ডিকে ক্যারল ডেরঞ্চ নামে এক নারীকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপহরণের পর বান্ডির হাত থেকে ফসকে গিয়েছিলেন ক্যারল। ফলে এই অপহরণে অবধারিতভাবে দোষী সাব্যস্ত হন বান্ডি। তাঁকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে কলোরাডোর অ্যাসপেন কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় ১৯৭৭ সালে কলোরাডোর আরেক তরুণীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয় তাঁকে। এই মামলায় নিজেই নিজের আইনজীবী হিসেবে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেন আইনের ছাত্র বান্ডি। এর ফলে তিনি আইনবিষয়ক পড়াশোনার জন্য আদালত চত্বরের লাইব্রেরিতে যাতায়াতের সুযোগ পেতেন। এই সুযোগেই একদিন লাইব্রেরির দোতলার জানালা থেকে লাফ দিয়ে পালান। কিন্তু আট দিনের মাথায় তিনি আবারও ধরা পড়ে যান। 

কলোরাডোর পিটকিন কাউন্টি আদালতের এই ভবন থেকেই লাফ দিয়ে পালিয়েছিলেন টেড বান্ডি। ছবি: সংগৃহীতসেই বছরের ডিসেম্বরে বান্ডি আবারও পালান। এবার অ্যাসপান কারাগারের যে কক্ষে তাঁকে রাখা হয়েছিল, সেই কক্ষের ছাদ কেটে ছোট একটি গর্ত তৈরি করেছিলেন তিনি। আর এই গর্ত দিয়ে সহজে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য শরীরের ১৪ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন। গর্ত দিয়ে বেরিয়ে তিনি জেলারের অফিসকক্ষে ঢুকে পড়েছিলেন। জেলার বাইরে থাকায় সেখানেই কয়েদির পোশাক পাল্টে সাধারণ মানুষের বেশে জেল থেকে বেরিয়ে যান। কেউ তাঁকে সন্দেহও করেনি। এবার আর কোনো ভুল করেননি বান্ডি। যত দ্রুত সম্ভব কলোরাডো ছেড়ে প্রায় ২ হাজার মাইল দূরের অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডায় গিয়ে হাজির হন। যথারীতি সেখানেও তিনি দুজন নারীকে হত্যার পাশাপাশি আরও তিনজনকে মারাত্মক আহত করেন। গল্পের শুরুতে বলা ক্যাথি ক্লেইনার ছিলেন তাঁদেরই একজন।

সরোরিটি হাউসে সেদিনের সেই হামলার পর ফ্লোরিডায়ই কিম্বার্লি ডায়ান লিচ নামে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীকেও অপহরণের পর হত্যা করেছিলেন বান্ডি। ফেরারি জীবনে ফ্লোরিডায় কোনো পরিচয়পত্র তৈরির সুযোগ ছিল না তাঁর। ফলে চাকরিও জোটেনি। এ অবস্থায় চুরি আর ছিনতাই করেই দিন কাটছিল তাঁর। চুরি করা একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চালাতে গিয়েই ফ্লোরিডার পুলিশের হাতে তিনি ধরা পড়ে যান। তবে পুলিশ তখনো জানত না এটাই আলোচিত ও কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার টেড বান্ডি। 

বান্ডির হাতে নিহত ১২ বছরের কিম্বার্লি ডায়ান লিচ। ছবি: সংগৃহীতবান্ডির পরিচয় ফাঁস হওয়ার পর ফ্লোরিডার কারাগারে থাকা অবস্থায়ই ওই রাজ্যের তিন নারীকে হত্যা এবং আরও তিনজনের ওপর গুরুতর হামলার অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এবারও নিজের মামলা নিজেই লড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই মামলা মিডিয়ার মাধ্যমে শুধু আমেরিকায় নয়, সারা পৃথিবীতেই আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়। মানুষের আগ্রহের কারণেই মামলাটির শুনানি হয় ক্যামেরার সামনে। অবাক করা বিষয় হলো, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত মামলা চলার দিনগুলোতে আদালতকক্ষের ভেতরে বান্ডির প্রতি সমর্থন জানিয়ে অসংখ্য মানুষ অবস্থান করতেন। বান্ডির এসব সমর্থকের প্রায় সবাই ছিলেন নারী। শুনানির সময় বান্ডি কোনো যুক্তি কিংবা পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করলে ওই নারীরা শিস বাজাতেন, হাততালি দিয়ে তাঁকে সাধুবাদ জানাতেন। নীল চোখে বান্ডি তাঁদের দিকে একনজর তাকিয়ে মুচকি হেসে নিজের আসনে গিয়ে বসতেন। শুনানির সেই দিনগুলোতে আদালতকক্ষে একজন নারীর উপস্থিতি ছিল অবশ্যম্ভাবী। তাঁর নাম ক্যারল অ্যান বোনি। অনেক আগে থেকেই বান্ডির প্রেমে পাগল ছিলেন তিনি। ফ্লোরিডার কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি বান্ডিকে বিয়েও করেছিলেন। এমনকি বান্ডির একটি কন্যাসন্তানও তিনি গর্ভে ধারণ করেছিলেন। 

ফ্লোরিডার কারাগারের ভেতরে ক্যারল অ্যান বোনির সঙ্গে একান্ত মুহূর্তে বান্ডি। ছবি: সংগৃহীতআদালতে বান্ডির মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার সময় তাঁকে উদ্দেশ্য করে বিচারক বলেছিলেন, ‘বৈদ্যুতিক শক দ্বারা আপনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আদেশ দেওয়া হলো। আপনি মারা না যাওয়া পর্যন্ত সেই বিদ্যুৎ আপনার শরীরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে। নিজের যত্ন নিন, যুবক। আপনাকে আন্তরিকতার সঙ্গেই বলছি; নিজের যত্ন নিন। এই কক্ষে মানবতার যে সম্পূর্ণ অপচয় আমি দেখেছি, তা এই আদালতের জন্য একটি চরম ট্র্যাজেডি। সুন্দর যুবক আপনি। ভালো আইনজীবী হওয়ার কথা ছিল। আপনাকে আমার সামনে প্র্যাকটিস করতে দেখলেই বেশি খুশি হতাম আমি। কিন্তু আপনি অন্য পথে চলে গেলেন, বন্ধু। নিজের যত্ন নিন।’ 

ফ্লোরিডার আদালতে বান্ডির মা-ও উপস্থিত ছিলেন। ছেলে এত বড় অপরাধী কিংবা তাঁর মৃত্যুদণ্ড হবে, তা তিনি ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি। তবু মায়ের মন বলে কথা। রায়ের আগে আদালতকক্ষে তিনি মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে ছোটখাটো একটি বক্তব্যও দিয়েছিলেন। 

জীবনের শুরুর দিকে মা ইলিনর লুইস কোয়েলকে নিজের বড় বোন হিসেবে জানতেন বান্ডি। আর নানা-নানিকে ভাবতেন বাবা-মা। কারণ মায়ের অপরিণত বয়সেই তিনি গর্ভে এসেছিলেন। সত্যিকার বাবার পরিচয় কোনো দিনও জানা হয়নি তাঁর। কোয়েল অবশ্য দাবি করতেন, জ্যাক ওর্থিংটন নামে এক নাবিকের সঙ্গে মিলনের ফলেই বান্ডির জন্ম হয়েছিল। যদিও পরবর্তী সময়ে এই নামে নৌবাহিনীতে কারও অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

আদালতে বান্ডির মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করছেন বিচারক। ছবি: সংগৃহীতটেড বান্ডির রহস্যময় সেই জীবনের ইতি ঘটে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার আরও প্রায় এক দশক পর ১৯৮৯ সালে। ফ্লোরিডার কারাগারে বৈদ্যুতিক চেয়ারে বসিয়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুর আগে বান্ডি বলে গিয়েছিলেন, তাঁর দেহাবশেষ যেন কেসকেড মাউন্টেন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ওয়াশিংটন ও ওরেগনজুড়ে বিস্তৃত এই পাহাড়ি বনাঞ্চলেই বান্ডি তাঁর বেশির ভাগ শিকারকে গুম করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রেসিডেন্ট আল–শারাকে দুবার হত্যাচেষ্টা আইএস–এর, নস্যাৎ করে দিয়েছে সিরিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারা। ছবি: সংগৃহীত
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারা। ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল–শারাকে অন্তত দুই দফায় হত্যার চেষ্টা করেছে ইসলামিক স্টেটস (আইএস)। তবে সিরীয় কর্তৃপক্ষ এসব হত্যাচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে। সিরিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের অপর একটি দেশের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আইএসের এই পরিকল্পনাগুলো সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্টের জন্য সরাসরি হুমকি তৈরি করেছিল। বিশেষ করে, এই হত্যাচেষ্টা এমন এক সময়ে সামনে এল যখন তিনি দীর্ঘদিনের শত্রু এই জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিতে যাচ্ছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই সূত্র দুটি জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে শারার বিরুদ্ধে দুটি পৃথক হত্যাচেষ্টা নস্যাৎ করা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, ১৪ বছরের বিধ্বস্ত গৃহযুদ্ধের পর ক্ষমতা সুসংহত করতে গিয়ে শারা এখন কতটা ঝুঁকির মুখে রয়েছেন। সূত্রগুলো বলছে, এর মধ্যে একটি পরিকল্পনা ছিল শারার একটি সরকারি অনুষ্ঠানে হামলার। তবে বিষয়টির সংবেদনশীলতার কারণে বিস্তারিত জানানো হয়নি।

সিরিয়ার তথ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

এই হত্যার ষড়যন্ত্রের খবর এমন সময়ে সামনে এল, যখন সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক আইএস-বিরোধী জোটে যোগ দিতে যাচ্ছে। আজ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে শারার সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠক করবেন। এটি হবে কোনো সিরীয় রাষ্ট্রপ্রধানের যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রথম ঘটনা।

গত ডিসেম্বর ক্ষমতায় আসেন আহমদ আল-শারা। তাঁর নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী বাহিনী তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শারা নিজেকে মধ্যপন্থী নেতা হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে তিনি আশা করছেন, সিরিয়ার পুনর্গঠন ও আন্তর্জাতিক সহায়তার পথ খুলে যাবে।

আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ার এই জোটে যোগ দেওয়া দেশটির দিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। রাশিয়া ও ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র থেকে সিরিয়া এখন ধীরে ধীরে পশ্চিমা ও আরব দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।

১৪ বছরের গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়াকে এক করতে শারার কাজ এখন কঠিন। দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা অব্যাহত, আর সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার জন্য দামেস্ক বারবার ইসলামিক স্টেটকে দায়ী করছে।

রোববার সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশজুড়ে আইএসবিরোধী অভিযান শুরু করেছে। সরকারি গণমাধ্যম জানায়, এতে ৭০ জনের বেশি সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী আইএস সরকার ও সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে নতুন হামলার পরিকল্পনা করছিল। এই অভিযান ছিল আইএসকে সতর্কবার্তা দেওয়া এবং দেখানোর যে, সিরীয় গোয়েন্দারা তাদের গভীরভাবে অনুপ্রবেশ করেছে। শারার সরকার মনে করছে, আইএসবিরোধী বৈশ্বিক জোটে যোগ দিলে এটি জঙ্গি দমনে বড় সুবিধা আনবে।

গত বছর মাত্র ১১ দিনের ঝটিকা অভিযানে ক্ষমতা দখলের আগে শারা নেতৃত্ব দিতেন ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নামক একটি গোষ্ঠীর, যা একসময় আল-কায়েদার সিরীয় শাখা ছিল। ২০১৬ সালে তিনি ওই সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এরপর থেকেই তিনি আইএসবিরোধী রক্তক্ষয়ী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। ইদলিবে এইচটিএসের ঘাঁটিতে আইএসের সেলগুলোকে ধ্বংস করতে তিনি বহু অভিযান চালিয়েছেন।

আসাদের পতনের পর আইএস আবার সিরিয়ায় ফিরে আসার চেষ্টা করছে। তারা শারার পশ্চিমাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এবং ধর্মীয় সহনশীলতার প্রতিশ্রুতিকে ইসলামবিরোধী বলে প্রচার করছে। গত জুনে দামেস্কের এক গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২৫ জন নিহত হন। সরকার হামলার জন্য আইএসকে দায়ী করলেও গোষ্ঠীটি এর দায় স্বীকার করেনি।

কয়েকজন সিরীয় কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, আইএসবিরোধী যুদ্ধে শারার সরকার কয়েক মাস ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে জোটে যোগ দিলে এই সমন্বয় আরও বাড়বে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের আস্থা অর্জনের অংশ হিসেবেও দেখা হচ্ছে, যাতে বছরের শেষের আগে সিরিয়ার ওপর থাকা অবশিষ্ট নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া যায়।

গত সপ্তাহে রয়টার্স জানায়, প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা দামেস্কের এক বিমানঘাঁটিতে উপস্থিতি স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা ঘাঁটির সঠিক নাম ও অবস্থান প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় করা শান্তিচুক্তি স্থগিত থাইল্যান্ডের, কম্বোডিয়ার সঙ্গে ফের সংঘাতের শঙ্কা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ট্রাম্পের উপস্থিতিতে বর্ধিত শান্তিচুক্তিতে সই করেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল (মাঝে) ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত  (বামে)। ছবি: এএফপি
ট্রাম্পের উপস্থিতিতে বর্ধিত শান্তিচুক্তিতে সই করেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল (মাঝে) ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত (বামে)। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় করা শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন স্থগিত করেছে থাইল্যান্ড। কম্বোডিয়া সীমান্ত এলাকায় স্থলমাইনে দুই থাই সেনা আহত হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। এতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

থাই সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে আজ সোমবার জানিয়েছে, শ্রী সাকেত প্রদেশের সীমান্ত এলাকায় সকালে টহল দেওয়ার সময় দুই সেনা স্থলমাইনের ওপর পা দেন। এতে একজন সেনার ডান পায়ের গোড়ালি কেটে ফেলতে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নাভিরাকুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সবকিছু বন্ধ রাখতে হবে।’ সীমান্তে যা ঘটেছে তা পরিস্থিতি প্রশমনে সাহায্য করেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি। অনুতিন আরও বলেন, ‘যদি কোনো পদক্ষেপ সংঘাত কমাতে না পারে, তাহলে আমরা কিছুই করতে পারব না। তাই সবকিছু বন্ধ রাখতে হবে।’

এর আগে, গত ২৬ অক্টোবর কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত আসিয়ান সম্মেলনের ফাঁকে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ওই শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সই করেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নাভিরাকুল ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত। উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।

চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশ সীমান্ত থেকে ট্যাংক ও কামানের মতো সব ভারী অস্ত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। থাইল্যান্ড ১৮ জন কম্বোডীয় বন্দীকে মুক্তি দিতে রাজি হয়। এর বিনিময়ে কম্বোডিয়া সীমান্ত এলাকার সব স্থলমাইন অপসারণে থাইল্যান্ডকে সহযোগিতা করার অঙ্গীকার করে।

থাই প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল নাত্রাপন নাকপানিচ সোমবার জানান, থাইল্যান্ড এখন ওই ১৮ জন কম্বোডীয় বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে। তিনি আরও জানান, বিস্ফোরণটি এমন এলাকায় ঘটেছে যেখানে নিয়মিত থাই সেনারা টহল দেয় এবং আগে কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি।

নাত্রাপন বলেন, থাইল্যান্ড ইতিমধ্যে আসিয়ান অন্তর্বর্তী পর্যবেক্ষক দলের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা প্রমাণ পাই যে তারা (কম্বোডিয়া) ইচ্ছাকৃতভাবে নতুন করে মাইন পুঁতেছে, তাহলে আমরা শুধু প্রতিবাদ করেই ক্ষান্ত থাক না।’

গত জুলাই থেকে সীমান্ত উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এতে সীমান্ত পারাপারের চেকপোস্টগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, পণ্য ও মানুষের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। থাইল্যান্ডের সিদ্ধান্তের বিষয়ে কম্বোডিয়া সরকার এখনো কোনো প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজায় খেয়ালখুশিমতো গুলি করেছে ইসরায়েলিরা, ফিলিস্তিনিদেরই বানাত মানবঢাল: সেনাদের স্বীকারোক্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৫
গাজায় ইসরায়েলি সেনারা চাইলেই যে কাউকে খেয়াল–খুশি মতো গুলি করতে পারত। ছবি: এএফপি
গাজায় ইসরায়েলি সেনারা চাইলেই যে কাউকে খেয়াল–খুশি মতো গুলি করতে পারত। ছবি: এএফপি

ইসরায়েলি সেনারা জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ চলাকালে সেনাদের মধ্যে নিয়মকানুন, নৈতিকতা ও আইনি সীমা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল। তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে, গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করার বিষয়টি অনেক সময় নির্ভর করেছে কেবল একজন মাত্র অফিসারের খেয়ালের ওপর। এই তথ্য উঠে এসেছে ব্রিটিশ টিভি চ্যানেল আইটিভিতে সম্প্রচার হতে যাওয়া প্রামাণ্যচিত্র ‘ব্রেকিং র‍্যাংকস: ইনসাইড ইসরায়েলস ওয়ার।’

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) একটি ট্যাংক ইউনিটের কমান্ডার ড্যানিয়েল বলেন, ‘যদি কেউ বিনা বাধায় গুলি চালাতে চাইত, সেটা সে পারত। কেউ আটকাত না।’

প্রামাণ্যচিত্রটিতে অংশ নেওয়া সেনাদের কেউ কেউ পরিচয় গোপন রেখেছেন, কেউ আবার খোলাখুলিই কথা বলেছেন। সবাই বলেছেন—গাজায় নাগরিকদের বিষয়ে আইডিএফের আনুষ্ঠানিক আচরণবিধি কার্যত বিলীন হয়ে গেছে। তারা নিশ্চিত করেছেন যে, আইডিএফ নিয়মিতভাবেই গাজার মানুষদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। সৈন্যরা আরও জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সহায়তায় পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোর কাছে বেসামরিক লোকজন বিনা উসকানিতে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

আইডিএফ আর্মার্ড ইউনিটের অফিসার ক্যাপ্টেন ইয়োতাম ভিল্ক বলেন, ‘প্রশিক্ষণে আমাদের শেখানো হয়—কেবল তখনই গুলি চালানো যাবে, যখন টার্গেট বা লক্ষ্যবস্তু ক্ষমতা, হামলার অভিপ্রায় ও সামর্থ্য দেখাবে।’ কিন্তু গাজায় সেই নীতি আর টিকে ছিল না। ভিল্ক বলেন, ‘এখানে কেউ ক্ষমতা, অভিপ্রায় ও সামর্থ্য নিয়ে ভাবে না। শুধু সন্দেহ করাই (হত্যা করার জন্য) যথেষ্ট।’

ইলি ছদ্মনামে এক সেনা বলেন, ‘জীবন-মৃত্যুর সিদ্ধান্ত কোনো নিয়মে নয়, মাঠের কমান্ডারের বিবেকেই নির্ভর করে।’ তিনি জানান, ‘এখানে (গাজায়) কে শত্রু আর কে না—তা পুরোপুরি এলোমেলো হয়ে গেছে। কেউ খুব দ্রুত হাঁটলে সে সন্দেহভাজন, খুব ধীরে হাঁটলেও সন্দেহভাজন। তিনজন হাঁটছে, একজন পেছনে—তাও সামরিক ফরমেশন!’ এমনটাই ভাবত ইসরায়েলি কমান্ডার ও সেনারা।

ইলি একটি ঘটনার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এক কর্মকর্তা এমন এক ভবনে ট্যাংকের গোলা ছোড়ার নির্দেশ দেন, যেটি ‘নিরাপদ এলাকা’ হিসেবে চিহ্নিত ছিল। তিনি বলেন, হামলা নির্দেশ দেওয়ার সময় সেই ভবনে ‘একজন মানুষ ছাদে কাপড় শুকোচ্ছিলেন। অফিসার বললেন, লোকটা নিশ্চয়ই স্পটার। অথচ, সে কেবল কাপড় শুকোচ্ছিল। কোনো দুরবিন নেই, অস্ত্রও নেই। নিকটতম সামরিক ঘাঁটি ৬০০-৭০০ মিটার দূরে। তাহলে সে কীভাবে স্পটার হবে? তবে তারপরও ট্যাংক থেকে গোলা ছোড়া হয়, ভবনের অর্ধেক ভেঙে পড়ে, অনেকেই মারা যায় ও আহত হয়।’

দ্য গার্ডিয়ানের আগস্ট মাসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গাজায় নিহতদের ৮৩ শতাংশই সাধারণ নাগরিক। আইডিএফের নিজেদের তথ্যেও দেখা গেছে এই তথ্য। এটি আধুনিক যুদ্ধের ইতিহাসে বেসামরিক মৃত্যুর সর্বোচ্চ হার। তবে আইডিএফ এই বিশ্লেষণ অস্বীকার করেছে।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এক মাস আগে যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। লিখিত বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, ‘আইডিএফ আইনের শাসনের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। হামাস বেসামরিক স্থাপনায় আশ্রয় নেওয়ায় ও সেগুলো সামরিক কাজে ব্যবহারের কারণে জটিলতা তৈরি হলেও আমরা নৈতিক ও আইনি বাধ্যবাধকতার মধ্যে থেকেই কাজ করি।’

প্রামাণ্যচিত্রে কিছু সৈন্য বলেছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলি রাজনীতিক ও ধর্মীয় নেতাদের কথাবার্তা তাদের মনোভাব বদলে দেয়। ওই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। অনেক নেতা বলেছিলেন, প্রতিটি ফিলিস্তিনিই এখন বৈধ টার্গেট।

জাতিসংঘের একটি কমিশন সেপ্টেম্বরে জানায়, গাজায় ইসরায়েল ‘গণহত্যা’ চালিয়েছে। কমিশন বলেছে, ইসরায়েলি নেতাদের ভাষণ থেকেই সেই ‘উদ্দেশ্য’ স্পষ্ট। যেমন, প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ ৭ অক্টোবরের হামলার পর বলেছিলেন, ‘পুরো (ফিলিস্তিনি) জাতি দায়ী। নাগরিকেরা জানত না, তারা এতে জড়িত নয়—এই গল্প মিথ্যা।’

ট্যাংক কমান্ডার ড্যানিয়েল বলেন, ‘এ ধরনের কথাবার্তা আমাদের মধ্যে ছড়িয়ে গেছে। বারবার শুনে শেষে বিশ্বাস করে ফেলি যে গাজায় কোনো নিরপরাধ মানুষ নেই।’ হেরজগের মুখপাত্র অবশ্য বলেছেন, তিনি সব সময় মানবিক মূল্যবোধ ও নিরপরাধদের সুরক্ষার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

প্রামাণ্যচিত্রে দেখা গেছে, কিছু ইহুদি ধর্মগুরু বা র‍্যাবাইও সৈন্যদের মাঝে প্রতিশোধের মনোভাব ছড়িয়েছেন। মেজর নেতা কাসপিন বলেন, ‘একবার আমাদের ব্রিগেডের র‍্যাবাই এসে আধঘণ্টা ধরে বলেছিলেন, আমাদেরও ৭ অক্টোবরের মতো প্রতিশোধ নিতে হবে—সবার ওপর, এমনকি বেসামরিকদের ওপরও।’

চরমপন্থী রাব্বি আভরাহাম জারবিভ প্রামাণ্যচিত্রে বলেন, ‘ওখানকার সবকিছুই সন্ত্রাসের অবকাঠামো।’ তিনি কেবল ধর্মীয় অনুমোদনই দেননি, নিজেও ‘বুলডোজার চালিয়ে’ ফিলিস্তিনি পাড়া-মহল্লা ধ্বংস করেছেন। তিনি বলেন, ‘আইডিএফ এখন গাজা ধ্বংস করতে লাখ লাখ শেকেল (ইসরায়েলি মুদ্রা) বিনিয়োগ করছে। আমরা পুরো সেনাবাহিনীর ধারা বদলে দিয়েছি।’

প্রামাণ্যচিত্রে সৈন্যরা নিশ্চিত করেছেন, যুদ্ধ চলাকালে ‘ফিলিস্তিনি সাধারণ মানুষকে মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহারের বিষয়টি সত্য। এটি সেনাদের ভাষায় পরিচিত ‘মশা প্রোটোকল’ নামে। ড্যানিয়েল বলেন, ‘আপনি কোনো এক বেসামরিক লোককে টানেলে পাঠাও। তার জামায় আইফোন বাঁধা থাকে। সে হাঁটতে হাঁটতে টানেলের মানচিত্র সেনাদের কাছে পাঠায়। এই কৌশলটা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রতিটি ইউনিট নিজের মশা ব্যবহার শুরু করে।’

আইডিএফ এ বিষয়ে জানায়, ‘মানবঢাল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অভিযোগ পাওয়া গেলে তা গভীরভাবে তদন্ত করা হয়। কিছু ঘটনার তদন্ত সামরিক পুলিশ ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন করছে।’ প্রামাণ্যচিত্রে স্যাম নামে এক ঠিকাদার বলেন, তিনি জিএইচএফের খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে কাজ করতেন এবং দেখেছেন—ইসরায়েলি সৈন্যরা নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে।

তিনি বলেন, ‘দুই তরুণ খাদ্য নিতে দৌড়াচ্ছিল। হঠাৎ দেখি দুই সৈন্য হাঁটু গেড়ে বসে গুলি করল। দুজনের মাথা পেছনে হেলে পড়ে গেল।’ আরেক ঘটনায়, এক আইডিএফ ট্যাংক খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের পাশে দাঁড়ানো একটি সাধারণ গাড়িতে গুলি চালায়। ভেতরে ছিল চারজন সাধারণ মানুষ।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, শুধু খাদ্যসহায়তা নিতে গিয়ে অন্তত ৯৪৪ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তবে জিএইচএফ ও আইডিএফ উভয়ই দাবি করেছে, তারা কোনোভাবেই সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়নি। আইডিএফ বলেছে, তারা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে ও বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি কমাতে চেষ্টা করে।

তবে এ ধরনের ঘটনাগুলোর অভ্যন্তরীণ তদন্তে এখনো পর্যন্ত প্রায় কোনো শাস্তি বা জবাবদিহি হয়নি। প্রামাণ্যচিত্রে গাজায় থাকা অনেক ইসরায়েলি সৈন্যের মানসিক বিপর্যয়ের কথাও উঠে এসেছে। ড্যানিয়েল বলেন, ‘তারা (ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ) আমার মধ্যে ইসরায়েলি হিসেবে, আইডিএফ অফিসার হিসেবে যে গর্ব ছিল—সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন শুধু লজ্জাই অবশিষ্ট রয়ে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত সুহার্তো এখন ইন্দোনেশিয়ার ‘জাতীয় বীর’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সুহার্তোর পুত্র–কণ্যার কাছে জাতীয় বীরের পদক তুলে দিচ্ছেন সুবিয়ান্তো। ছবি: এএফপি
সুহার্তোর পুত্র–কণ্যার কাছে জাতীয় বীরের পদক তুলে দিচ্ছেন সুবিয়ান্তো। ছবি: এএফপি

সাবেক প্রেসিডেন্ট সুহার্তোকে জাতীয় বীর ঘোষণা করেছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। তবে সুহার্তোর শাসনামলে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। স্থানীয় সময় আজ সোমবার জাতীয় বীর দিবসের অনুষ্ঠানে আরও নয়জনের সঙ্গে সুহার্তোর নামও ঘোষণা করা হয়।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট প্রাবো সুবিয়ান্তো। তিনি একসময় সুহার্তোর জামাতা ছিলেন। মানবাধিকার কর্মী ও শিক্ষাবিদদের অনেকেই এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, তিন দশকের শাসনামলে সুহার্তো ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি করেছেন।

এই পুরস্কারে মনোনীত করায় সুহার্তোর নাম যুক্ত হলো ইন্দোনেশিয়ার ২ শতাধিক জাতীয় বীরের তালিকায়, যেখানে রয়েছেন দেশটির স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ও প্রথম রাষ্ট্রপতি সুকর্নও। প্রেসিডেন্টের সামরিক সচিব বলেন, ‘মধ্য জাভা প্রদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক, জেনারেল সুহার্তো স্বাধীনতার সময় থেকেই নেতৃত্বে উজ্জ্বল ছিলেন।’ প্রাবো ওই অনুষ্ঠানে পুরস্কারটি সুহার্তোর কন্যা সিতি হারদিয়ানতি রুকমানা ও পুত্র বামবাং ত্রিহাতমোজোর হাতে তুলে দেন।

প্রতি বছর ইন্দোনেশিয়ায় দেশের উন্নয়ন ও গৌরবে বিশেষ অবদান রাখা নাগরিকদের জাতীয় বীর উপাধি দেওয়া হয়। ২০০৮ সালে ৮৬ বছর বয়সে মারা যান সুহার্তো। ১৯৬৭ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি সুকর্নর কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করেন এবং তিন দশক দেশ শাসন করেন।

এর আগে, ইন্দোনেশিয়া ১৯৪৫ সালে নেদারল্যান্ডস ও জাপানের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। সুহার্তো সামরিক শক্তি ব্যবহার করে রাজনৈতিক বিরোধিতা দমন করেন এবং নাগরিক প্রশাসনের ওপর সেনাবাহিনীর আধিপত্য কায়েম করেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিশাল অঙ্কের দুর্নীতি, পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের স্বার্থে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহারের অভিযোগও ওঠে।

তবে তিনিই ইন্দোনেশিয়াকে দীর্ঘ সময় স্থিতিশীলতা ও দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে নিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৯৭-৯৮ সালের এশীয় আর্থিক সংকটে দেশটি বিশৃঙ্খলায় পড়ে, আর তাতেই তাঁর শাসনের পতন ঘটে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। অসুস্থতার কারণে কখনো আদালতের মুখোমুখি হননি তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত