Ajker Patrika

ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির জবাব দিল ‘ব্রিকস’ দেশগুলো

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩: ৪৪
সম্মেলনে অংশ নেওয়া ব্রিকস নেতাদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত
সম্মেলনে অংশ নেওয়া ব্রিকস নেতাদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত

সদস্য ও অংশীদার দেশগুলোকে নিয়ে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘ব্রিকস’ জোটের সম্মেলন। এই সম্মেলনকেই চোখ রাঙিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশগুলোর ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন এবং প্রকারান্তরে তিনি উন্নয়নশীল এসব দেশকে আমেরিকাবিরোধী হিসেবেও চিহ্নিত করেছেন। তবে তাঁর অভিযোগকে নাকচ করে দিয়েছে ‘ব্রিকস’ জোটের সদস্য দেশগুলো।

ব্রিকসের প্রভাবশালী সদস্য চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, শুল্ক কোনো দেশকে চাপে রাখার বা বাধ্য করার হাতিয়ার হতে পারে না। আজ সোমবার বেইজিংয়ে মাও নিং বলেন, ব্রিকস সব সময় উইন-উইন সহযোগিতায় বিশ্বাস করে এবং এই জোট কোনো দেশের বিরুদ্ধে কাজ করে না।

ব্রিকস দেশগুলোকে ‘অ্যান্টি-আমেরিকান’ হিসেবে চিহ্নিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা বলেছে, তারা আমেরিকাবিরোধী নয়। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার ওপরও ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। পরে অবশ্য তা স্থগিত করা হয়। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কামিল আল্লি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা এখনো গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ রয়েছে।

রাশিয়ার ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ব্রিকসের সঙ্গে তাদের অংশীদারত্ব একটি বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে এবং এটি কখনোই তৃতীয় কোনো দেশের বিরুদ্ধে পরিচালিত হবে না।

ভারত ও ব্রাজিল আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি সম্মেলন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করবেন না। আজ রিও ডি জেনিরোতে ব্রিকস নেতাদের উদ্দেশে দেওয়া উদ্বোধনী ভাষণে তিনি পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর জোর দেন—যা এবারের সম্মেলনের মূল এজেন্ডা।

তবে অফিশিয়ালি মন্তব্য করতে অনিচ্ছুক হলেও ব্রাজিলের এক কূটনীতিক রয়টার্সকে বলেছেন, ট্রাম্পের হুমকি প্রমাণ করে, ন্যায্য ও কার্যকর বাণিজ্য নীতির দাবি তোলার জন্য ব্রিকস জোট উন্নয়নশীল দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম।

নতুন সদস্য ইন্দোনেশিয়ার জ্যেষ্ঠ অর্থমন্ত্রী এয়ারলাঙ্গা হার্টার্তো বর্তমানে ব্রিকস সম্মেলন উপলক্ষে ব্রাজিলে আছেন। শুল্ক বিষয়ে আলোচনার জন্য আজ তাঁর যুক্তরাষ্ট্র সফর করারও কথা রয়েছে।

ব্রিকসের অংশীদার দেশ হিসেবে সম্মেলনে যোগ দিয়েছিল মালয়েশিয়া। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধেও সাময়িকভাবে ২৪ শতাংশ শুল্কের আওতায় আনা হয়েছিল। দেশটি জানিয়েছে, তাদের অর্থনৈতিক নীতিমালা স্বাধীন এবং কোনো মতাদর্শিক শিবিরে তারা নেই।

ব্রিকস নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে ইরানের ওপর সম্প্রতি চালানো বোমা হামলারও নিন্দা জানান এবং ট্রাম্পের শুল্কনীতির পরোক্ষ সমালোচনা করে বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য হুমকি।

২০০৯ সালে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা মিলে গঠিত হয়েছিল ব্রিকস। পরে এই জোটে যুক্ত হয় মিসর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। অতীতে সৌদি আরব এই জোটের সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছে এবং এবার তারা অংশীদার দেশ হিসেবে সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে। এ ছাড়া বিশ্বের আরও ৩০টির বেশি দেশ ব্রিকসের সদস্য বা অংশীদার হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এসব দেশকেও লক্ষ্যবস্তু করে ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন—যারা ব্রিকসে যোগ দিতে চায়, তাদের প্রতিও যুক্তরাষ্ট্র কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

বর্তমান বৈশ্বিক দ্বন্দ্ব ও বাণিজ্যযুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে জি-৭ ও জি-২০-এর সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ব্রিকস একবিংশ শতকের নতুন বহুপক্ষীয় কূটনীতির ক্ষেত্র তৈরি করছে বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অবিশ্বাস্য কম খরচে বাংলাদেশিদের গোল্ডেন ভিসা দেবে দুবাই, সুবিধা কী

উপজেলা পর্যায়ে আদালত সম্প্রসারণে একমত সব দল

ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠন নিষিদ্ধের পক্ষে ভোট দিলেন টিউলিপ–রুশনারা

ফারজানা রুপা ও শাকিলকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে জাতিসংঘকে ব্যাখ্যা দিল সরকার

চেক জালিয়াতির মামলায় সাংবাদিকের ৫ মাসের কারাদণ্ড

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত