Ajker Patrika

লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করল কানাডা, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের আভাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
লরেন্স বিষ্ণোই। ছবি: সংগৃহীত
লরেন্স বিষ্ণোই। ছবি: সংগৃহীত

ভারতসহ ভারতের বাইরে হত্যা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত লরেন্স বিষ্ণোই ও তাঁর দলকে ফৌজদারি কার্যবিধির (ক্রিমিনাল কোড) অধীনে একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে কানাডা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় কানাডার জননিরাপত্তামন্ত্রী গ্যারি আনন্দাসাঙ্গারী এ ঘোষণা দেন।

এ ঘোষণার ফলে কানাডায় থাকা বিষ্ণোই গ্যাংয়ের নগদ টাকা, যানবাহন ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যাবে। এটি কানাডার আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অর্থায়নসহ অন্যান্য অপরাধের জন্য কঠোরভাবে মামলা করার ক্ষমতা দেবে। একই সঙ্গে অভিবাসন কর্মকর্তারা গ্যাংয়ের সন্দেহভাজন সদস্যদের কানাডায় প্রবেশেও বাধা দিতে পারবেন।

কানাডা সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, হিংসা ও সন্ত্রাসের কোনো স্থান কানাডায় নেই, বিশেষ করে সেসব কর্মকাণ্ডের, যা নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে ভয় ও ভীতি প্রদর্শন করে। কানাডার আইন অনুযায়ী, এখন থেকে কোনো কানাডীয় নাগরিক বা বিদেশে থাকা কেউ যদি জেনেবুঝে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রিত সম্পত্তির সঙ্গে লেনদেন করে, তবে তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সময় ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছায়। তবে আজকে কানাডার এ সিদ্ধান্তকে সম্পর্ক পুনর্গঠনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। অনেকে একে ভারত-কানাডা সম্পর্কে পুনর্গঠনের আভাস হিসেবে দেখছেন।

কানাডার এমপি ও শ্যাডো পাবলিক সেফটি মিনিস্টার ফ্রাঙ্ক ক্যাপিউটো এক মাস আগে জননিরাপত্তামন্ত্রী আনন্দাসাঙ্গারীকে একটি চিঠি দেন। ওই চিঠিতে তিনি বিষ্ণোই গ্যাংয়ের অপরাধ সাম্রাজ্যের বিষয় তুলে ধরে তাঁকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করার আহ্বান জানান। তিনি লেখেন, বিষ্ণোই গ্যাং বিভিন্ন সময়ে কানাডার নাগরিকদের হত্যা ও চাঁদাবাজির জন্য দায়ী এবং তারা ‘রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও আদর্শগত কারণে’ এই অবৈধ কাজগুলো করে থাকে।

এর আগে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের সরকারপ্রধান ডেভিড ইবি, আলবার্টার ড্যানিয়েল স্মিথ, সারে শহরের মেয়র ব্রেন্ডা লকসহ কানাডার বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

লরেন্স বিষ্ণোই ও তাঁর গ্যাং ২০২২ সালের মে মাসে পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসে ওয়ালার হত্যার পর থেকে আরও বহু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এই তালিকায় রয়েছে—২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রাজপুত নেতা সুখদেব গোগামেদি এবং ২০২৪ সালের অক্টোবরে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ বাবা সিদ্দিকের হত্যা। সে সঙ্গে ২০২৫ সালের এপ্রিলে বলিউড তারকা সালমান খানের বাড়ির বাইরে গুলিবর্ষণের ঘটনায়ও এই লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং জড়িত।

তবে ২০২৩ সালের জুনে খালিস্তানপন্থী নেতা ও কানাডার নাগরিক হরদীপ নিজ্জারকে হত্যার পরই গ্যাংটি আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি পায়। নিজ্জারের হত্যাকাণ্ড একটি কূটনৈতিক বিতর্কের জন্ম দেয়। এ ঘটনার পর ট্রুডো কোনো প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ করেন যে ভারত সরকার এর সঙ্গে জড়িত।

তবে ভারত এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ট্রুডোর বিরুদ্ধে খালিস্থানি জঙ্গি ভোটব্যাংকের প্রতি তোষণ করার অভিযোগ আনে। ফলস্বরূপ, ভারত-কানাডা সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। তবে মার্ক কার্নি আসার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক ধীরে ধীরে ভালো হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত