Ajker Patrika

মিশিগানের গির্জায় হামলাকারী ইরাকযুদ্ধের সৈনিক, অর্থসংকটে হাতও পেতেছিলেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ৪০
মিশিগানের গির্জায় হামলাকারী ইরাকযুদ্ধের সৈনিক, অর্থসংকটে হাতও পেতেছিলেন

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের গ্র্যান্ড ব্ল্যাঙ্ক টাউনশিপে চার্চ অব জিসাস ক্রাইস্ট অব ল্যাটার-ডে সেন্টস-এ বন্দুক হামলায় অন্তত চারজন নিহত ও আটজন আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই ঘটনায় হামলাকারীও পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছিল স্থানীয় সময় রোববার সকালে যখন চার্চে একটি বড় প্রার্থনাসভা চলছিল। হামলাকারী গাড়ি নিয়ে দ্রুত গতিতে চার্চের সামনের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। গাড়ি থামানোর পর দ্রুত গুলি চালাতে শুরু করেন। এরপর চার্চের ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেন। দ্রুত পুরো চার্চে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশের সঙ্গে হামলাকারীর গুলি বিনিময় হয়। এতে তিনি নিহত হন। পুলিশ আশঙ্কা করছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের ভেতরে অনেকে আটকা পড়েছেন।

পুলিশ নিহত হামলাকারীকে ৪০ বছর বয়সী টমাস জ্যাকব স্যানফোর্ড বলে শনাক্ত করেছে। তিনি পার্শ্ববর্তী বার্টন শহরের বাসিন্দা ছিলেন। হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ এখনো সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানাতে পারেনি।

টমাস জ্যাকব স্যানফোর্ড সামরিক বাহিনীর একজন সাবেক সদস্য। সামরিক নথি ও তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট থেকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের কিছু দিক জানা যায়:

মেরিন কর্পস-এর মুখপাত্রের দেওয়া তথ্য অনুসারে, স্যানফোর্ড ২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সার্জেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একাধিক পদকও পান। সামরিক জীবনে, তিনি ইরাকে মোতায়েন হওয়ার আগে জাপানেও কর্মরত ছিলেন। ২০০৭ সালের গ্রীষ্মে কয়েক মাসের জন্য অপারেশন ইরাকি ফ্রিডমের অংশ হিসেবে ইরাকে মোতায়েন ছিলেন। স্যানফোর্ড ২০০৪ সালে গুডরিচ হাই স্কুল থেকে স্নাতক হন এবং সাবেক সৈনিক হিসেবে স্কুলটির ওয়েবসাইটেও তাঁকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

jake-with-deer

স্যানফোর্ড বিবাহিত ছিলেন এবং একটি ছোট ছেলে রয়েছে। ২০১৫ সালে তাঁর পরিবার গোফান্ডমি (GoFundMe)-তে পেজ তৈরি করেছিল। সেই পেজ থেকে জানা যায়, তাঁদের ছেলের কনজেনিটাল হাইপারইনসুলিনিজম নামক একটি বিরল জিনগত রোগে আক্রান্ত। তার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়েছিলেন তাঁরা। পরিবারটির ফেসবুক পেজে জানানো হয়, এই অসুস্থতার কারণে শিশুটির দীর্ঘ সময় হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল। তার অগ্ন্যাশয়ের অংশ অপসারণের জন্য একাধিক অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল।

ছেলের অসুস্থতার কারণে পরিবারটি প্রচণ্ড আর্থিক সংকটে পড়ে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, স্যানফোর্ড কোকা কোলার ট্রাকচালক হিসেবে কাজ করতেন। সন্তানের পাশে থাকার জন্য একপর্যায়ে কাজ ছেড়ে দিতে হয়। এক সাক্ষাৎকারে কঠিন অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সুস্থ সন্তান পাওয়ার বিষয়টি কখনোই হালকাভাবে নেবেন না। আমি চার বছর মেরিন কর্পসে ছিলাম এবং ইরাকেও ছিলাম। কিন্তু সন্তানের রোগ মোকাবিলা করা সবচেয়ে কঠিন।’

হামলাকারীর মায়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট থেকে জানা যায়, স্যানফোর্ড শখের শিকারি ছিলেন। তিনি বাইরে ঘোরাঘুরি করতেই বেশি পছন্দ করতেন। তাঁকে হরিণসহ অন্যান্য শিকার করা প্রাণীর সঙ্গে পোজ দিতে দেখা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত