Ajker Patrika

প্রতিরক্ষা দপ্তরের নাম পাল্টে ‘সমর দপ্তর’ রাখছেন ট্রাম্প, কিসের ইঙ্গিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

এবার প্রতিরক্ষা দপ্তরের নামই বদলে দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শিগগির তিনি এমন একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করতে চলেছেন, যার মাধ্যমে প্রতিরক্ষা দপ্তরের (পেন্টাগন) নাম পরিবর্তন করে ‘সমর দপ্তর’ (ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার) রাখা হবে।

আজ শুক্রবার এই আদেশে স্বাক্ষর করার কথা রয়েছে। ফলে প্রতিরক্ষা দপ্তর নতুন নামটি একটি সেকেন্ডারি টাইটেল বা একটি ব্যাখ্যামূলক ঐচ্ছিক নাম হিসেবে ব্যবহার করবে। পাশাপাশি প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে ‘সমরমন্ত্রী’ হিসেবে পরিচয় করানো হবে।

আমেরিকার সামরিক বাহিনীর তদারকি করে পেন্টাগন। মূলত ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘সমর দপ্তরের’ উত্তরসূরি এ দপ্তর। ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত বিভাগটি মন্ত্রিসভার অধীনে ছিল।

তবে মার্কিন কংগ্রেসের হাতে নির্বাহী দপ্তর তৈরির ক্ষমতা ন্যস্ত থাকায় নাম পরিবর্তনের জন্য একটি সাংবিধানিক সংশোধনের প্রয়োজন হবে। বিবিসির পাওয়া নির্বাহী আদেশের নথিতে বলা হয়েছে, ‘প্রতিরক্ষা দপ্তর’ নামটির চেয়ে ‘সমর দপ্তর’ নামটি আরও শক্তিশালী বার্তা বহন করে, যা শুধু প্রতিরক্ষার সক্ষমতার ওপর জোর না দিয়ে বরং প্রস্তুতি ও সংকল্পের ওপরও জোর দেয়।

আদেশে আরও বলা হয়েছে, ‘শক্তিমত্তা ও সংকল্প’ প্রদর্শনের জন্য প্রতিরক্ষামন্ত্রী, তাঁর বিভাগ ও অধীনস্থ কর্মকর্তারা নতুন পদবিগুলো ঐচ্ছিক নাম হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। ট্রাম্প কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া আনুষ্ঠানিকভাবে নাম পরিবর্তন করতে পারবেন না, তাই হেগসেথকে স্থায়ীভাবে নাম পরিবর্তনের জন্য আইনগত ও নির্বাহী পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করতে বলা হয়েছে।

জর্জ ওয়াশিংটনের আমলে ‘সমর দপ্তর’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এর নাম পরিবর্তন করে ‘প্রতিরক্ষা দপ্তর’ করা হয়। নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, ‘নামটি ফিরিয়ে আনা আমাদের জাতীয় স্বার্থের ওপর এ বিভাগের মনোযোগ আরও তীক্ষ্ণ করবে এবং প্রতিপক্ষের কাছে আমেরিকানদের নিজেদের স্বার্থরক্ষায় সমরের প্রস্তুতি কতটা রয়েছে, তার সংকেত দেবে।’

হোয়াইট হাউস এখনো স্থায়ীভাবে নাম পরিবর্তনের ব্যয়ের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো ধারণা করছে, শত শত সংস্থা, প্রতীক, ই-মেইল ঠিকানা, ইউনিফর্ম ও অন্যান্য পরিবর্তনের জন্য কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে। এ পদক্ষেপ পেন্টাগনের খরচ কমানোর প্রচেষ্টাকে উল্টো বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

ট্রাম্প বারবার নাম পরিবর্তনের এ ধারণা প্রকাশ করেছেন। তাঁর যুক্তি হলো, ‘সমর দপ্তর’ থাকাকালে দুই বিশ্বসমরে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অবিশ্বাস্য জয়ের ইতিহাস’ রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে—আইনপ্রণেতারা এ পরিবর্তনকে সমর্থন করবেন।

‘আমি নিশ্চিত, আমাদের যদি দরকার হয়, তবে কংগ্রেস তাতে সায় দেবে। আমি মনে করি না আমাদের এর প্রয়োজন রয়েছে’, গত সপ্তাহে ট্রাম্প এ কথা বলেন।

ট্রাম্প ও হেগসেথ প্রতিরক্ষা দপ্তরের মনোযোগ ‘যুদ্ধ করার’ ও একটি ‘যুদ্ধংদেহী ভাবমূর্তি’ ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছেন। তাঁদের যুক্তি হলো, প্রতিরক্ষা দপ্তরটি এখন অতিরিক্ত মাত্রায় বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি এবং ‘সচেতন মতাদর্শ’-সংক্রান্ত কর্মসূচির ওপর মনোনিবেশ করছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রাম্প নোবেল শান্তি পুরস্কার বাগানোর বিষয়-সম্পর্কিত আলোচনার গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছেন। বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজকে তিনি বলেন, ‘আমি কেবল সমর বন্ধ করতে পারি। আমি মনোযোগ আকর্ষণ করি না। আমি কেবল জীবন বাঁচাতে চাই।’

এ নাম পরিবর্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২০০তম নির্বাহী আদেশ হতে যাচ্ছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর এভাবে তিনি একের পর এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে যাচ্ছেন। যদিও নাম পরিবর্তনটি কিছুটা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু এটি এমন এক সময়ে আসছে, যখন চীন জাপানের বিরুদ্ধে বিজয়ের ৮০ বছর পূর্তিতে নতুন অস্ত্র, ড্রোন ও সামরিক সরঞ্জামের প্রদর্শনী করেছে। চীনের এ প্রদর্শনীকে অনেক বিশ্লেষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা হিসেবে মনে করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত