Ajker Patrika

ট্রাম্পের ভিসা কড়াকড়ির পর ভারতের দিকেই ঝুঁকছে মার্কিন কোম্পানিগুলো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ৩৪
ভারতের হায়দরাবাদের একটি করপোরেট ভবনে মার্কিন কোম্পানি অ্যামাজনের লগো। ছবি: রয়টার্স
ভারতের হায়দরাবাদের একটি করপোরেট ভবনে মার্কিন কোম্পানি অ্যামাজনের লগো। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ভিসা নীতিমালা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও বেশি ভারতমুখী করতে বাধ্য করছে। বিশেষ করে, এইচ-১বি ভিসায় বিধিনিষেধের ফলে ভারতীয় কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়লেও কোম্পানিগুলো ভারত থেকেই আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ আদায় করে নিতে চাইছে। এ জন্য এসব কোম্পানি ভারতে তাদের গ্লোবাল ক্যাপাবিলিটি সেন্টার (জিসিসি) বা কার্যক্রম কেন্দ্রকে শক্তিশালী করছে। এসব কেন্দ্র শুধু প্রযুক্তিগত সহায়তার জায়গায়ই সীমাবদ্ধ নেই; বরং এখন গবেষণা, ডিজাইন, ওষুধ আবিষ্কার থেকে শুরু করে ফাইন্যান্সসহ উচ্চমূল্যের নানা খাতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের ১ হাজার ৭০০ জিসিসি ভারতের মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে, যা মোট সংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি। এই সংখ্যা ২০৩০ সালের মধ্যে ২ হাজার ২০০ ছাড়াতে পারে এবং বাজারমূল্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার বেড়ে যাওয়া এবং ভিসা সীমাবদ্ধতা যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজার কৌশল পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখছে। এর ফলে ভারতীয় জিসিসি গ্লোবাল দক্ষতা ও স্থানীয় নেতৃত্বের সমন্বয়ে এক শক্তিশালী বিকল্প হিসেবে উঠে আসছে।

ডেলয়েট ইন্ডিয়ার পার্টনার রোহান লোবো বলেন, ‘একটি ইন হাউস ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করার জন্য জিসিসিগুলো এখনই প্রস্তুত। বেশ কিছু মার্কিন কোম্পানি ইতিমধ্যেই কর্মী চাহিদা পুনর্বিবেচনা করছে।’

আরএনএসআরের প্রতিষ্ঠাতা ললিত অহুজাও জানিয়েছেন, ফেডএক্স, ব্রিস্টল-মাইয়ার্স স্কুইব, টার্গেট ও লোসের মতো কোম্পানিগুলো ভারতে জিসিসি কেন্দ্র চালু করেছে এবং নতুন পরিকল্পনা আরও দ্রুত এগোচ্ছে।

অতীতে যুক্তরাষ্ট্রে এইচ-১বি ভিসার আবেদন ফি দুই থেকে পাঁচ হাজার ডলারের মধ্যেই হয়ে যেত। কিন্তু ট্রাম্প সম্প্রতি এই ফি বাড়িয়ে এক লাখ ডলার করেছেন। এতে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন চাপে পড়েছে। একই সঙ্গে মার্কিন সিনেটও এইচ-১বি ও এল-১ ভিসা আরও কঠোর করার বিল পুনরায় উত্থাপন করেছে।

ফলে কোম্পানিগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পণ্য উন্নয়ন, সাইবার নিরাপত্তা ও ডেটা অ্যানালিটিকসের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ ভারতের জিসিসিতে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা করছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো আরও তাড়াহুড়ো করে বিকল্প খুঁজছে।

তবে সবাই এমন বিকল্পে আশাবাদী নন। কেউ কেউ আরেকটু অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণের কৌশল বেছে নিয়েছেন। কারণ, মার্কিন কংগ্রেসে প্রস্তাবিত ‘হায়ার অ্যাক্ট’ পাস হলে বিদেশ থেকে কাজ আদায় করে আনা কোম্পানিগুলোকে ২৫ শতাংশ কর দিতে হতে পারে। এমন হলে ভারতের সেবা রপ্তানিতে তা আরেকটি বড় ধাক্কা হিসেবে আবির্ভূত হবে।

তবে বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের ২৮৩ বিলিয়ন ডলারের আইটি শিল্পের জন্য এই প্রবণতা একদিকে চাপ তৈরি করলেও অন্যদিকে সুযোগও এনে দিচ্ছে। ‘নামুরা’র সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যেখানে এইচ-১বি নির্ভর আয়ের ক্ষতি হতে পারে, সেখানেই জিসিসির মাধ্যমে বাড়তি রপ্তানি দিয়ে তা পূরণ সম্ভব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফ্লোটিলা থেকে আটক ২২৩ জনকে ইউরোপে পাঠাবে ইসরায়েল, জাহাজগুলোর ভাগ্য অনিশ্চিত

২০২৫ সালে বসবাসের জন্য সেরা ৫ দেশ

গাজার জলসীমায় পৌঁছে গেছে ফ্লোটিলার এক জাহাজ, পথে আরও ২৩টি

বাংলাদেশ–নেপালে সহিংস আন্দোলন হলেও পরিবর্তন আসেনি, বিদেশি হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি হয়েছে: আরএসএস প্রধান

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৩৯ নৌযান আটক করেছে ইসরায়েল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত