Ajker Patrika

ট্যাংক ছেড়ে ট্রাক্টর নিয়ে চাষাবাদে পাকিস্তান সেনাবাহিনী 

আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩: ০৬
ট্যাংক ছেড়ে ট্রাক্টর নিয়ে চাষাবাদে পাকিস্তান সেনাবাহিনী 

পাকিস্তানের জন্মের পর থেকেই প্রায় অর্ধেক সময় দেশটি শাসন করেছে সেনাবাহিনী। বাকি সময়টায়ও তারা দেশের ‘অভিভাবকের’ ভূমিকা পালন করেছে কোনো না কোনোভাবে। নাক গলিয়েছে বেসামরিক প্রশাসনেও। এত দিন তারা দেশের অর্থনীতি নিয়ে সরাসরি কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করেনি। কিন্তু এবার পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রায় ১০ লাখ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে চাষাবাদের জন্য। 

জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীর মুখে খাবার তুলে দিতে বিপুল পরিমাণ সরকারি জমি অধিগ্রহণ করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে সামরিক-বেসামরিক উদ্যোগে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর এক উদ্যোগ নেওয়া হয়। উদ্যোগের আওতায় দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে খাসজমি অধিগ্রহণ করে সেনাবাহিনী পরিচালিত কৃষি খামার প্রকল্প চালু করার কথা বলা হয়। 
 
পরিকল্পনা অনুসারে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে প্রায় ১০ লাখ একর (৪ লাখ ৫ হাজার হেক্টর) জমি অধিগ্রহণ করবে সেনাবাহিনী, যা ভারতের রাজধানী দিল্লির আয়তনের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বড়। পরিকল্পনা অনুসারে, এর মাধ্যমে সেনাবাহিনী উন্নত শস্য উৎপাদন করবে এবং এর ফলে পানির অপচয়ও রোধ হবে। 

নিক্কেই এশিয়া পাকিস্তান সরকারের বিভিন্ন নথির বরাত দিয়ে জানিয়েছে, দেশটির সেনাবাহিনী আগামী ৩০ বছরের জন্য এই পরিমাণ জমি লিজ নেবে এবং এখানে তারা যব, তুলা, আখ, বিভিন্ন ফল ও সবজি উৎপাদন করবে। নিক্কেইয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই কৃষিজ উৎপাদন থেকে যে পরিমাণ লাভ আসবে, তার ২০ শতাংশ ব্যয় করা হবে কৃষি উন্নয় গবেষণায়। বাকি মুনাফা রাজ্য সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সমান হিস্যায় ভাগ করে নেওয়া হবে। 

তবে সেনাবাহিনীর এমন উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানের বিভিন্ন স্তরের লোকজন। তাঁরা বলছেন, সেনাবাহিনী এমনিতেই বিপুল শক্তিশালী একটি সত্তা। তার ওপর তারা যদি কৃষি খাতে এত বিপুল পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করে এবং সেখান থেকে মুনাফা অর্জন করে, তবে তা দেশে আড়াই কোটি ভূমিহীন দরিদ্রকে আরও বঞ্চিত করবে। 

পাকিস্তানের পরিবেশবাদী আন্দোলনের নেতা ও পরিবেশ আইনজীবী রাফে আলম বলেন, এই অধিগ্রহণ পাকিস্তানের মাটিতে সেনাবাহিনীর অবস্থানকে আরও দৃঢ় করবে এবং এর মাধ্যমে তারা দেশের সবচেয়ে বড় জমিদারে পরিণত হবে। তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর কাজ হলো দেশকে বিদেশি হুমকি থেকে রক্ষা করা এবং বেসামরিক সরকারের অনুরোধে তাদের সহায়তা করা। এর বেশিও না, কমও না।’ 

এদিকে, পুরো বিষয়টি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে তা এখনো পরিষ্কার নয়। নিক্কেই এশিয়া বলছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী অধিকৃত এসব ভূমির অধিকাংশই চোলিস্তান মরুভূমিতে অবস্থিত, যেখানে পানির সংকট ব্যাপক। এ ছাড়া পাঞ্জাব হাইকোর্ট এর আগে রায় দিয়েছিলেন, সেনাবাহিনী এই জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে না। পরে গত জুলাই মাসে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ সেই রায় বদলে দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত