Ajker Patrika

ইরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে ইসরায়েলের হামলায় নিহত ৭১

অনলাইন ডেস্ক
তেহরানের উত্তরে প্রয়াত শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির শাসনামলে নির্মাণ করা হয় এভিন কারাগার। ছবি: সংগৃহীত
তেহরানের উত্তরে প্রয়াত শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির শাসনামলে নির্মাণ করা হয় এভিন কারাগার। ছবি: সংগৃহীত

ইরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে গত সোমবার বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। এতে ৭১ জন নিহত হন বলে হামলার ছয় দিন পর জানিয়েছে তেহরান।

এই কারাগারে দশকের পর দশক ধরে আটকে রাখা হয়ে আসছে ইরানের রাজনৈতিক বন্দী ও ভিন্নমতাবলম্বীদের।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যে কেবল দেশটির সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানে, তা নয়। অন্যান্য স্থাপনাও তাদের লক্ষ্য ছিল। যুদ্ধের শেষদিকেই এভিন কারাগারে হামলা চালানো হয়।

১৯৭২ সালে প্রয়াত শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির শাসনামলে কারাগারটি নির্মাণ করা হয়। তেহরানের উত্তরে প্রায় পাঁচ হেক্টর জায়গাজুড়ে গড়ে ওঠা এই কারাগারে ১০-১৫ হাজার বন্দী থাকতে পারেন।

পাহলভির সময়ে ইরানের আন্দোলনকারী, সাংবাদিক, গবেষক ও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বিদেশিদের আটকে রাখা হতো।

১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পরও এটি রাজনৈতিক বন্দী ও ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রধান আটককেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পায় এবং ইরানি শাসনব্যবস্থার প্রতীক হয়ে ওঠে।

এভিন কারাগারে গত সোমবার ইসরায়েলি হামলার পর এত দিন আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করেনি ইরান। গতকাল শনিবার তারা নিশ্চিত করে, হামলায় নিহত ৭১ জনের মধ্যে তাদের শীর্ষ প্রসিকিউটর আলী ঘানাতকারও ছিলেন।

রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে ঘানাতকারের নেতৃত্বে পরিচালিত মামলাগুলোর মধ্যে নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী নার্গিস মোহাম্মদির বিরুদ্ধে করা মামলা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।

তেহরানে গতকাল ঘানাতকারসহ ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে নিহত প্রায় ৬০ ব্যক্তির রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়।

ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগর জাহাঙ্গীর বলেন, ‘এভিন কারাগারে ইসরায়েলি হামলায় মোট ৭১ জন শহীদ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কারাগারের প্রশাসনিক কর্মী, সৈনিক, বন্দীদের আইনি সহায়তা করতে আসা স্বজন ও কারাগারের আশপাশে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ।’

তাঁর এই বক্তব্য বিচার বিভাগের সংবাদমাধ্যম মিজানে প্রকাশিত হয়।

মিজান জানিয়েছে, বোমা হামলায় এভিন কারাগারের মেডিকেল সেন্টার, প্রকৌশল ভবন, দর্শনার্থী ভবন ও প্রসিকিউটরের কার্যালয় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ইসরায়েলের এই হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক ও মানবাধিকার আইনের পরিপন্থী’ বলে মন্তব্য করেন আসগর জাহাঙ্গীর।

এদিকে এভিন কারাগারে হামলার ঘটনায় ইসরায়েলের সমালোচনা করেছে একাধিক মানবাধিকার সংস্থা। তাদের অভিযোগ, এই হামলার মাধ্যমে বেসামরিক ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে পার্থক্য করার আন্তর্জাতিক নীতিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছে।

তবে ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা কেবল ইরানের শাসকগোষ্ঠীর লক্ষ্যবস্তুতেই অভিযান চালায়।

তেহরানের এভিন কারাগারে বর্তমানে একাধিক বিদেশি নাগরিককে আটকে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দুই ফরাসি নাগরিক—সেসিল কোলার ও জ্যাক পারিস। গত তিন বছর ধরে কারাগারটিতে আটক তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিৎকার শুনে ছুটে আসা স্থানীয়রা ধর্ষণের শিকার নারীকেই মারধর করে

বিমানবন্দরের প্রকল্পে ‘অসম’ চুক্তি, স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়েছেন ঢাকায় ইউএই রাষ্ট্রদূত

মন্ত্রীর আত্মীয়তাই ‘যোগ্যতা’

আদানিকে আরও ৩৮৪ মিলিয়ন ডলার দিল বাংলাদেশ, মোট পরিশোধ ১.৫ বিলিয়ন

অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দুই বন্ধুর ধর্ষণ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত