Ajker Patrika

হামাসের রকেটের উৎসের খোঁজ

হামাসের রকেটের উৎসের খোঁজ

হংকং: ১১ দিনের বিমান–রকেট হামলা শেষে গত শুক্রবার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল–হামাস। যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও কয়েকটি দেশের পৃষ্ঠপোষকতায় মিশরে নেতৃত্বে এই যুদ্ধবিরতি হয়েছে।

সদ্য সমাপ্ত সীমিত পর্যায়ের এ যুদ্ধে (এটা যুদ্ধ কি না, হলে কোন পর্যায়ের তা নিয়ে নানা মত আছে) গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে প্রায় ৪ হাজারের বেশি স্বল্পপাল্লার রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে, যার ৯০% বানচাল করে দিয়েছে ইসরায়েলের অত্যাধুনিক ‘আয়রন ডোম মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম’।

এসব রকেটের প্রায় ৪৫০টি ৪০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছার আগেই খোদ গাজায় ভূপাতিত হয়েছে। আর যেগুলো ইসরায়েল পর্যন্ত পৌঁছেছে সেগুলোর অনেকগুলো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় খালি জায়গায় পড়েছে। তাই হামাস এবং ইসলামিক জেহাদের ছোড়া রকেটের মাত্র ১৫% মতো লক্ষ্যবস্তুতে আগাত হানতে পেরেছে।

তৈরি থেকে নিক্ষেপ করা পর্যন্ত প্রতিটি রকেট বাবদ হামাসের বা ইসলামিক জেহাদের খরচ হয়েছে সর্বসাকল্যে কয়েক শ ডলার। অন্যদিকে গাজার রকেট থামাতে ইসরায়েলের আয়রন ডোমের এক ইউনিটের দাম প্রায় পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার, যার অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা।

যে কথা বলছিলাম, হামাস এত রকেট পেল কোথায়? এর উত্তরা পেতে আমাদের ইরানের দিকে তাকাতে হবে।

এশিয়া টাইমসকে বার্লিনের ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউটের হামাস বিশেষজ্ঞ ইমাদ আলসোস বলেন, ‘ইরানকে বাদ দিয়ে হামাসের রকেটের উৎস বোঝা যাবে না।’ হামাসের সামরিক পরিকল্পনা এবং রকেটের সামর্থ্য বুঝতে গ্রুপটির প্রতি তেহরানের সামরিক সহায়তা তলিয়ে দেখা গুরুত্বপূর্ণ বলেও জানান তিনি।

ইরান কীভাবে রকেট বানাতে ওস্তাদ হয়ে উঠল? আট বছরের ইরাক–ইরান যুদ্ধে (১৯৮০–৮৮) ব্যাপক রকেট হামলার শিকার হয় ইরান। তখন থেকে আত্মরক্ষার্থে বিভিন্ন পাল্লার রকেট তৈরির দিকে মনোযোগ দেয় দেশটি। গত ৩০ বছরের বেশি সময়ে দেশটি নিজেদের রকেট প্রযুক্তিকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে।

নিজে শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি একটা পর্যায়ে মিত্রদেরও রকেট এবং রকেট তৈরির কারিগরি সহায়তা দিতে শুরু করে তেহরান। এ সুযোগে ধীরে ধীরে রকেট তৈরি রপ্ত করে লেবাননের হিজবুল্লাহ, হামাসের সশস্ত্র শাখা আল–কাসিম ব্রিগেডস, ইসলামিক জেহাদ।

এ প্রসঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষেপণাস্ত্র বিশেষজ্ঞ ফাবিয়ান হিন্স বলেন, ‘২০১১ সালের সিরিয়া যুদ্ধের পর একপর্যায়ে ইরানের তত্ত্বাবধানে রকেট তৈরি শুরু করে হামাস।’
সম্প্রতি নিজেরা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির সক্ষমতার কথা জানিয়েছেন ইসলামিক জেহাদের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।

এসব তথ্য থেকে বোঝা যায়, গাজা উপত্যকায় তেহরান যথেষ্ট শক্তিশালী পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। অর্থাৎ নিজেদের মধ্যপ্রাচ্য কৌশলে সন্তোষজনক অবস্থানে রয়েছে দেশটি। তবে ইসরায়েলও যথেষ্ট স্মার্ট বলে মনে করেন হিন্স। কিন্তু এ দু শক্তির মধ্যপ্রাচ্য নীতি কোন দিকে হাঁটছে তা বুঝতে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে বলেও মনে করেন এ মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত