Ajker Patrika

রক্ত কেনা যায় না—ইয়েমেনে নিমিশাকে ক্ষমা করতে অস্বীকৃতি মাহদির পরিবারের

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, ২১: ৪৭
ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়া। ছবি: বিবিসি
ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়া। ছবি: বিবিসি

ইয়েমেনে এক ভারতীয় নার্সের হাতে নিহত ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আবদো মাহদির পরিবার জানিয়েছে, তারা কোনো অবস্থাতেই হত্যাকারী নিমিশা প্রিয়াকে ক্ষমা করবে না। এতে প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড ঠেকাতে একটি সমঝোতার আশায় থাকা তাঁর পরিবারের আশা ভঙ্গ হলো।

তালাল মাহদির ভাই আবদেলফাত্তাহ মাহদি এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আমরা কোনো রকমের সমঝোতা প্রত্যাখ্যান করছি। ন্যায়বিচারের অর্থই হলো মৃত্যুদণ্ড। রক্ত কেনা যায় না।’

তিনি জানান, মৃত্যুদণ্ড স্থগিত হলেও তাঁরা ‘আল্লাহর সাহায্যে’ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন।

৩৮ বছর বয়সী নিমিশা প্রিয়া ভারতের কেরালার বাসিন্দা। ২০০৮ সালে তিনি নার্স হিসেবে কাজ করতে ইয়েমেন যান এবং স্থানীয় আইনের অধীনে ইয়েমেনি নাগরিক মাহদির সঙ্গে যৌথভাবে একটি ক্লিনিক চালু করেন। ২০১৭ সালে মাহদির মরদেহ কেটে টুকরো করে পানির ট্যাংকে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিমিশাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযোগ ওঠে, মাহদি নিমিশাকে হয়রানি করছিলেন, অর্থ আত্মসাৎ করেছিলেন এবং তাঁর পাসপোর্ট জব্দ করে দেশে ফেরার পথ বন্ধ করে দেন। পালানোর পথ খুঁজতে গিয়ে নিমিশা তাঁকে চেতনানাশক ইনজেকশন দেন। এই ইনজেকশন পরে প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।

এই অপরাধে ইয়েমেনের স্থানীয় আদালত ২০২০ সালে নিমিশাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে নিমিশার পরিবার সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করলেও তা ২০২৩ সালে খারিজ হয়ে যায়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে হুতি বিদ্রোহী সরকারের প্রেসিডেন্ট মাহদি আল-মাশাত তাঁর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করেন।

এদিকে ইয়েমেনের ইসলামি আইন অনুযায়ী—খুনের মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে ‘দিয়াত’ (রক্তমূল্য) পরিশোধ করে ক্ষমা পেতে পারেন। তবে মাহদির পরিবার জানিয়েছে, তারা কোনো রকম অর্থের বিনিময়ে নিমিশাকে ক্ষমা করতে রাজি নয়।

মাহদির ভাই বলেন, ‘আমরা জানি, আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু এসবে আমাদের অবস্থান বদলাবে না। আমরা কিসাস চাই—বদলার বিচার এবং অন্য কিছুই না।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রশাদ আল-আলিমি নিমিশার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এক দিন আগে তা স্থগিত করেন। এর লক্ষ্য হলো—শেষ পর্যন্ত দিয়াত চুক্তির মাধ্যমে নিমিশার দণ্ড মওকুফ করতে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে রাজি করানো যায় কি না। তবে সেটি সাময়িক স্বস্তি ছাড়া কিছু নয়। পরিবারের ক্ষমা ছাড়া এই মৃত্যুদণ্ড রোধ সম্ভব নয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, নিমিশার পরিবার নিহত মাহদির পরিবারকে ‘রক্তমূল্য’ হিসেবে ১০ লাখ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল। নিমিশার মা গত এক বছর ধরে তিনি ইয়েমেনে অবস্থান করছেন মেয়েকে বাঁচানোর প্রচেষ্টায়। কিন্তু মাহদির পরিবার তাঁর সব প্রচেষ্টাকেই প্রত্যাখ্যান করেছে। বর্তমানে নিমিশা প্রিয়া ইয়েমেনের রাজধানী সানায় কারাবন্দী। এই অঞ্চল হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালার সঙ্গে শত্রুতা মুহাম্মদ ইউনূসের, আমি ‘কোল্যাটারাল ড্যামেজ’: টিউলিপ সিদ্দিক

এনসিপি নেতার বাড়িতে কাফনের কাপড়, চিরকুটে লেখা—‘প্রস্তুত হ রাজাকার’

৪০ পুলিশ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহার, অর্থ ফেরতের নির্দেশ

গণশুনানিতে দুদক চেয়ারম্যানের প্রতি ক্ষোভ দেখালেন মৎস্যচাষি

‘কাল দেখা হইবে, ভালো থাকিস’—ছেলেকে বলেছিলেন গণপিটুনিতে নিহত প্রদীপ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত