Ajker Patrika

সিরিয়া বিশ্বের জন্য হুমকি নয়, নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আহ্বান আল শারার

আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২: ২০
সিরিয়াকে আফগানিস্তানের মতো একটি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান এমন অভিযোগ রয়েছে শারার বিরুদ্ধে। ছবি: সংগৃহীত
সিরিয়াকে আফগানিস্তানের মতো একটি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান এমন অভিযোগ রয়েছে শারার বিরুদ্ধে। ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বর্তমানে দেশটির কার্যত নেতা বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) প্রধান আহমেদ আল-শারা ওরফে আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি বলেছেন, সিরিয়া এখন যুদ্ধক্লান্ত। এটি বর্তমানে প্রতিবেশী দেশ বা পশ্চিম বিশ্বের জন্য হুমকি হওয়ার সুযোগ নেই।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমটি।

আহমেদ আল-শারা বলেন, ‘এত কিছুর পর এসব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া উচিত। কারণ এগুলো পুরোনো সরকারকে লক্ষ্য করে আরোপ করা হয়েছিল। অত্যাচারীর সঙ্গে করা আচরণ ভুক্তভোগীর সঙ্গেও করা উচিত নয়।’

তিনি আরও বলেন, এইচটিএসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত রাখা উচিত নয়। এইচটিএস বেসামরিক নাগরিক বা এলাকাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানায়নি। তারা নিজেরাই আসাদ সরকারের অপরাধের শিকার।

এর আগে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশ এটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। ২০১৬ সালে আল-কায়েদা থেকে আলাদা হয়ে জন্ম নেয় এইচটিএস।

সিরিয়াকে আফগানিস্তানের মতো একটি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান এমন অভিযোগ রয়েছে শারার বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে, তাদের ঐতিহ্যও আলাদা। আফগানিস্তান ছিল একটি উপজাতীয় সমাজ। সিরিয়ার আলাদা মানসিকতা রয়েছে।

তিনি নারী শিক্ষায় বিশ্বাস করেন উল্লেখ করে শারা বলেন, ‘ইদলিবে আট বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের উপস্থিতি ৬০ শতাংশের বেশি।’ সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইদলিব ২০১১ সাল থেকে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সিরিয়ায় মদ্যপান অনুমোদিত হবে কি না—শারাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তিনি উত্তরে বলেন, ‘অনেক কিছুই আমি বলার অধিকারী নই, কারণ সেসব আইনি বিষয়।’

শারা বলেন, আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে, যারা সংবিধান লিখবে। এই সংবিধান অনুযায়ী যে কোনো শাসক বা প্রেসিডেন্টকে চলতে হবে।

আহমদ আল-শারার নেতৃত্বে হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) গত সপ্তাহে সিরিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে, যার মাধ্যমে আসাদ পরিবারের পাঁচ দশক ধরে চলা কঠোর শাসনের অবসান ঘটেছে।

গত শনিবার এইচটিএসের এই নেতা বলেছিলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চলা যুদ্ধ এবং সংঘর্ষে বিধ্বস্ত সিরিয়ার বর্তমান অবস্থা নতুন কোনো সংঘাতের অনুমতি দেয় না। এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার হলো দেশের পুনর্গঠন এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, এমন কোনো বিরোধে জড়ানো নয়, যা আরও ধ্বংস ডেকে আনতে পারে।’ আল-শারা জোর দিয়ে বলেন, ‘কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যার সমাধান করাই এখন একমাত্র বাস্তবসম্মত পথ।’ তবে তিনি সতর্ক করেন, ‘অপরিকল্পিত সামরিক অভিযান’ কারও জন্য লাভজনক হবে না।

তবে, অনেক সিরীয় এখনো শারাকে বিশ্বাস করেন না। শারা তাঁর প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন। বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বেসামরিক পোশাক পরেছিলেন তিনি। বোঝাতে চেয়েছেন, বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা আহমদ আল শারার অতীতের চরমপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি নতুন সিরিয়া গঠনে প্রভাব ফেলবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রামা দুয়াজি শুধু মামদানির স্ত্রী নন, একজন প্রতিভাবান শিল্পীও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানির পাশে তাঁর স্ত্রী রামা দুয়াজি। ছবি: দ্য পিপল
নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানির পাশে তাঁর স্ত্রী রামা দুয়াজি। ছবি: দ্য পিপল

সিরীয়-আমেরিকান ইলাস্ট্রেটর ও ডিজাইনার রামা দুয়াজি সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন নিউইয়র্কের নতুন মেয়র জোহরান মামদানির স্ত্রী হিসেবে। তবে নিজস্ব পরিচয়ে তিনি একজন প্রতিভাবান শিল্পী। তিনি তাঁর কাজের ভেতর দিয়ে নারী, আরব পরিচয়, প্রতিরোধ ও সহমর্মিতার বিষয়গুলোকে গভীরভাবে অনুসন্ধান করেন।

বুধবার (৫ নভেম্বর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, রামার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে। ৯ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে তিনি দুবাইয়ে চলে যান। সেখানেই বড় হন এবং সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য কাতারের ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের রিচমন্ড ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয়ে তিনি স্নাতক সম্পন্ন করেন।

রামা দুয়াজির শিল্পকর্ম মূলত কালো-সাদা রেখাচিত্রে নারীর প্রতিকৃতি, যেখানে দেখা যায় নারীসত্তা, অভিব্যক্তি ও বৈচিত্র্যের প্রতি গভীর মমতা। তাঁর কাজ প্রকাশিত হয়েছে দ্য নিউ ইয়র্কার, ওয়াশিংটন পোস্ট, বিবিসি, অ্যাপল, স্পোটিফাই, ভাইস এবং টেট মডার্ন–এর মতো বিশ্বখ্যাত মাধ্যমগুলোতে। পাশাপাশি ভার্জিনিয়া ও বৈরুতে তাঁর একক প্রদর্শনী হয়েছে।

২০২১ সালে এক ডেটিং অ্যাপে রামা ও জোহরান মামদানির পরিচয় হয়। পরে তাঁদের প্রথম দেখা হয় ব্রুকলিনের একটি ইয়েমেনি কফিশপে। এভাবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের গভীরতা বাড়ে। একপর্যায়ে তাঁরা লোয়ার ম্যানহাটনের আদালতে বিয়ে করেন। দুবাইয়ে তাঁদের বাগদান ও নিকাহ অনুষ্ঠানটি ছিল রূপকথার মতো। সূর্যাস্তের পটভূমিতে ফুল ও সবুজে সাজানো এক রোমান্টিক আবহ তৈরি করা হয়েছিল।

রামা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত জীবনের চেয়ে শিল্পকর্ম ও সামাজিক বিষয়ে বেশি সক্রিয়। বিশেষ করে ফিলিস্তিনের প্রতি তাঁর অবস্থান বহুবার প্রকাশ পেয়েছে। ২০২১ সালে একটি ইলাস্ট্রেশনে তিনজন মানুষকে তিনি একসঙ্গে কনুই মিলিয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখিয়েছিলেন, যার ওপরে আরবিতে লেখা ছিল—‘আমরা ছাড়ব না।’ গাজায় ক্ষুধা ও মানবিক সংকট নিয়েও তিনি সচেতনতা তৈরির কাজ করেছেন।

মাত্র ২৮ বছর বয়সে রামা হবেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের বাসভবন গ্রেসি ম্যানসনে বসবাসকারী প্রথম জেনারেশন–জেড সদস্য। তবে জোহরান মামদানির ভাষায়, ‘রামা শুধু আমার স্ত্রী নন, তিনি একজন অসাধারণ শিল্পী, যিনি নিজের কাজ দিয়ে পরিচিত হওয়ার যোগ্য।’

করোনা মহামারির বেশ কিছু সময় পরিবারের সঙ্গে দুবাইয়ে কাটিয়েছিলেন রামা। পরে নিউইয়র্কে স্থায়ী হন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি নতুন শহরে এসেছিলাম, কাউকে চিনতাম না। তাই ইনস্টাগ্রামে দেখা সৃজনশীল মানুষদের বার্তা পাঠাতে শুরু করি। অবাক করা বিষয় হলো, নিউইয়র্কে মানুষ নতুন সম্পর্ক গড়ায় বেশ খোলা মন। এভাবেই আমি অনেক দারুণ আরব-আমেরিকান শিল্পীর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছি।’

রামা দুয়াজি আজ শুধু নিউইয়র্কের মেয়রের স্ত্রী নন, বরং আধুনিক আরব নারীর এক সাহসী ও সৃজনশীল প্রতীক, যিনি শিল্পের মাধ্যমে নিজের শিকড় ও মানবিক দায়বদ্ধতা একসূত্রে বেঁধেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

থাইল্যান্ডে যৌন শিক্ষার ক্লাস থেকে ব্রিটিশ সন্ন্যাসিনী গ্রেপ্তার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ৫০
গ্রেপ্তারের আগ মুহূর্তে ক্লায়েন্টদের ক্লাস নিচ্ছেন মারিয়া। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তারের আগ মুহূর্তে ক্লায়েন্টদের ক্লাস নিচ্ছেন মারিয়া। ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ কোহ ফাঙ্গানে ‘সেক্স ইয়োগা’ বা তান্ত্রিক যোগচর্চা শেখানোর অভিযোগে এক ব্রিটিশ নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মারিয়া শেচেতিনিনা নামে ৪০ বছর বয়সী ওই নারী নিজেকে ‘তান্ত্রিক আধ্যাত্মিকতা ও পবিত্র যৌনতার’ শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি ‘মারিয়া স্কাই লাভ’ নামে সক্রিয় ছিলেন এবং প্রতি সপ্তাহে যোগা ও তান্ত্রিক ম্যাসাজ ক্লাস চালাতেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ৪ নভেম্বর স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁর পেছনে ক্লাস নিচ্ছিলেন মারিয়া। এমন সময় পর্যটন পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করে।

আটকের সময় মারিয়া পুলিশকে বলেন, ‘আমার আইনজীবী বলেছেন, এটা এখানে বৈধ।’ তবে পুলিশ তাঁর পাসপোর্ট ও ওয়ার্ক পারমিট পরীক্ষা করে দেখতে পায়—তিনি একটি রেসিডেন্সিয়াল প্রোপার্টি কোম্পানির কাস্টমার রিলেশনস ম্যানেজার হিসেবে কাজের অনুমতি পেয়েছেন, যোগা বা ম্যাসাজ শেখানোর অনুমতি নেই তাঁর।

ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি ক্লাসে ৪০০ বাথ (প্রায় ১৫০০ টাকা) ফি নিতেন মারিয়া। পুলিশ তাঁর কাছ থেকে যোগা নোট, বিজ্ঞাপন ফ্লায়ার, টিকিট, ব্যানার এবং কিউআর কোড-সংবলিত প্রচারপত্র জব্দ করেছে।

পর্যটন পুলিশ বিভাগের লেফটেন্যান্ট কর্নেল উইনিত বুনচিত জানান, মারিয়ার ‘অশালীন ও ঝুঁকিপূর্ণ’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টের বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ জানানোর পরই তদন্ত শুরু হয়। তিনি বলেন, ‘বিদেশিদের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত জরুরি ডিক্রির আওতায় তান্ত্রিক যোগা প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করা অনুমোদিত নয়। তাই তাঁকে অবৈধভাবে কাজ করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।’

এর আগে চলতি বছরের মার্চে একই দ্বীপে পোল্যান্ডের ইউটিউবার মিখাল গ্রিগোরুককেও ‘সেক্স যোগা’ ক্লাস চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

কোহ ফাঙ্গান দ্বীপটি দীর্ঘদিন ধরে ‘হিপি স্বর্গ’ হিসেবে পরিচিত—যেখানে আধ্যাত্মিক রিট্রিট, নিরামিষ ক্যাফে ও বিখ্যাত ফুল মুন পার্টির কারণে সারা বিশ্বের পর্যটকেরা ভিড় জমান। তবে পুলিশের আশঙ্কা, অনেক বিদেশি পর্যটক সঠিক ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই সেখানে বিভিন্ন ধরনের মেডিটেশন ও বিকল্প থেরাপির কর্মশালা চালাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নীরবে নেপথ্যে যেভাবে মামদানির জয় নিশ্চিত করলেন স্ত্রী রামা দুয়াজি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
স্ত্রী রামা দুয়াজির সঙ্গে জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত
স্ত্রী রামা দুয়াজির সঙ্গে জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয়ে আলোচনায় এসেছেন জোহরান মামদানি। তবে তাঁর এই সাফল্যের নেপথ্যে ছিলেন স্ত্রী রামা দুয়াজি, যিনি নীরবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন পুরো প্রচার অভিযানে।

ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট মামদানির নির্বাচনী প্রচারের স্বতন্ত্র চেহারা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর উপস্থিতি গড়ে তোলার পেছনে ২৮ বছর বয়সী এই শিল্পীর অবদানই সবচেয়ে বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস শহরে বেড়ে ওঠা ও দুবাইয়ে পড়াশোনা করা সিরীয়-মার্কিন রামা দুয়াজি চার বছর আগে নিউইয়র্কে যান। তিনি মামদানির নির্বাচনী প্রচারের লোগো থেকে শুরু করে সামগ্রিক নকশা তৈরি করেন; বিশেষ করে, উজ্জ্বল হলুদ, কমলা ও নীল রঙের ব্র্যান্ডিং, যা পরে তাঁদের তৃণমূল আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠে।

নির্বাচনের আগপর্যন্ত দুয়াজি কোনো বিতর্কসভা বা প্রচার সমাবেশে অংশ নেননি এবং অনলাইনে খুব কমই প্রচারণা-সম্পর্কিত কিছু শেয়ার করেছেন। ব্যতিক্রম ছিল কেবল জুন মাস। সে সময় মামদানির অপ্রত্যাশিত প্রাইমারি জয়ের পর ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছিলেন, ‘এরচেয়ে বেশি গর্বিত হওয়া সম্ভব নয়।’

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের দিন সকালে ভোট দেওয়ার সময় মামদানির সঙ্গে ছিলেন দুয়াজি। পরে দ্য ডেইলি শোতে তাঁকে মেয়র প্রার্থীর পাশে দেখা যায়।

এ ছাড়া কুইন্সের ফরেস্ট হিলস স্টেডিয়ামে ১০ হাজারের বেশি সমর্থকের ভিড়ে দুয়াজিকে দেখা গেছে; যেখানে ডেমোক্র্যাট নেতা আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ ও সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে শেষ নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য দেন মামদানি।

মামদানি ও দুয়াজির পরিচয় ২০২১ সালে ডেটিং অ্যাপ হিঞ্জ-এ। সে বছর নিউইয়র্ক রাজ্য পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন মামদানি। তাঁদের প্রথম দেখা হয়েছিল ব্রুকলিনে—ইয়েমেনি ক্যাফে ‘কাহওয়া হাউসে’।

২০২৪ সালের অক্টোবরে মেয়র পদে প্রার্থিতা ঘোষণার ঠিক আগে তাঁরা বাগদান করেন। পরে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে লোয়ার ম্যানহাটনে তাঁদের বিয়ে হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে ব্রাজিলীয় মডেলের ছবি দিয়ে ২২টি ভোটার আইডি, রাহুলের ‘এইচ বোমা’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী আজ বুধবার তাঁর বহুল প্রতীক্ষিত ‘এইচ বোমা’ ফেলেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, গত বছরের হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে ব্যাপক ভোট জালিয়াতি হয়েছে। তাঁর দাবি, হরিয়ানায় মোট ২ কোটি ভোটারের মধ্যে ২৫ লাখ ভোট চুরি হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি আটজন ভোটারের একজন ভুয়া, যা মোট ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশ। তবে এখানেই শেষ নয়। রাহুল দেখিয়েছেন, ব্রাজিলীয় এক মডেল হরিয়ানা নির্বাচনে ২২ বার ভোট দিয়েছেন।

রাহুল গান্ধী বলেন, নির্বাচনের পর বহু কংগ্রেস প্রার্থী তাঁকে জানিয়েছেন—কিছু একটা গড়বড় হয়েছে। সব এক্সিট পোল অর্থাৎ বুথফেরত জরিপে কংগ্রেসের জয়ের পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু ফল এল উল্টো। জিতল বিজেপি। তিনি সাংবাদিকদের সামনে বিজেপি নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী নয়াব সিং সাইনির একটি ভিডিও দেখান। সেখানে নির্বাচনের ফল ঘোষণার দুই দিন আগে সাইনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘ব্যবস্থা হয়ে গেছে, বিজেপি জিতছে।’

রাহুল গান্ধীর প্রশ্ন, ‘এই ব্যবস্থা বলতে কী বোঝানো হয়েছিল? তখন সব দলই বলছিল কংগ্রেস বিপুল ব্যবধানে জিতছে, অথচ তিনি নিশ্চিন্ত মুখে বলছেন বিজেপি জয়ী।’ তিনি আরও বলেন, হরিয়ানার ইতিহাসে এই প্রথমবার ডাকযোগে ভোটের ফল বুথের ভোটের বিপরীত এসেছে। তিনি বলেন, ‘আমি ভারতের নির্বাচন কমিশন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্ন করছি, শতভাগ প্রমাণসহ। আমরা নিশ্চিত, কংগ্রেসের বিজয়কে পরাজয়ে পরিণত করতে একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছিল।’

তাঁর দাবি, কংগ্রেস আটটি আসনে খুব সামান্য ব্যবধানে হেরেছে। এর মধ্যে একটি আসনে মাত্র ৩২ ভোটে। সব মিলিয়ে ব্যবধান দাঁড়ায় ২২ হাজার ৭৭৯ ভোট। তিনি বলেন, ‘অর্থাৎ পুরো হরিয়ানা নির্বাচন কংগ্রেস ২২ হাজার ৭৭৯ ভোটে হেরেছে।’

গান্ধী উদাহরণ হিসেবে দেখান, ভোটার তালিকায় এক নারীর ছবি ২২ বার ব্যবহার করা হয়েছে। ওই নারীর ছবিটি আসলে এক ব্রাজিলীয় মডেলের, যা একটি স্টক ফটো ওয়েবসাইট থেকে বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যায়। তিনি বলেন, ওই মডেলের ছবি বিভিন্ন নামে তালিকাভুক্ত। যেমন, ‘সুইটি, সীমা, সরস্বতী’ ইত্যাদি। তিনি বলেন, ‘এই নারী ১০টি ভিন্ন বুথে ভোট দিতে পারেন। মানে, এটা কোনো এলোমেলো ভুল নয়, বরং একটি কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত অপারেশন।’

তিনি আরও জানান, একটি আসনে ১০০টি ভোটার আইডিতে একই নারীর ছবি পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ‘এই নারী চাইলে ১০০ বার ভোট দিতে পারেন। এর মাধ্যমে ভোটার তালিকায় এমন জায়গা তৈরি করা হয় যাতে বিজেপির লোকজন অন্য রাজ্য থেকে এসে ভোট দিতে পারে।’

আরেক নারীর ছবিও তিনি দেখান, যা ২২৩ বার ব্যবহার হয়েছে দুটি বুথের ভোটার তালিকায়। তাঁর অভিযোগ, ‘এই কারণেই নির্বাচন কমিশন বুথের সিসিটিভি ফুটেজ ধ্বংস করে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের পক্ষে চাইলে এক সেকেন্ডেই ভুয়া ভোটার শনাক্ত করা সম্ভব। তাহলে কেন তারা করে না? কারণ, তারা বিজেপিকে সাহায্য করছে।’ এরপর তিনি একই ছবি কিন্তু ভিন্ন নামসহ ভোটার আইডির আরও কিছু উদাহরণ দেখান। তাঁর দাবি, নির্বাচনের আগে হরিয়ানার ভোটার তালিকা থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার নাম মুছে ফেলা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত