Ajker Patrika

ইরান ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে গোপনে দেনদরবার করেছে ইসরায়েল

অনলাইন ডেস্ক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসরায়েল গোপনে রাশিয়ার সঙ্গে ইরান ও সিরিয়া ইস্যুতে গোপনে দেনদরবার করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কান। গতকাল বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, গত ২৪ জুন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার এক সপ্তাহ পর এসব আলোচনা শুরু হয়। রাশিয়া মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেওয়ার পরই আলোচনা শুরু হয় বলে জানা গেছে।

তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবালের খবরে কান নিউজের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের আলোচনার নির্দিষ্ট কোনো বিষয়বস্তু বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। কেবল জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা কূটনৈতিকভাবে ইরান ও সিরিয়া ইস্যুতে সমাধানের পথ খুঁজছেন।

এদিকে, ইরান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় পরিসরের একটি সমঝোতা গড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে ইসরায়েল। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তুলবেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইরান ইস্যুতে লেবাননের সঙ্গে যেভাবে সমঝোতা হয়েছিল, সেরকম একটি কাঠামো তৈরির লক্ষ্য রয়েছে ইসরায়েলের।

উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইরানের ওপর বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এরপর ২৪ জুন ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলে হামলা বন্ধ করে ইসরায়েল। সে সময় রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি হামলার কঠোর সমালোচনা করে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইসরায়েলের এই উসকানিমূলক হামলা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’ একই সঙ্গে সতর্ক করা হয় যে, ‘এর সমস্ত পরিণতি ইসরায়েলি নেতৃত্বকেই ভোগ করতে হবে।’

তবে প্রকাশ্য এই নিন্দার পরও রাশিয়া এখন পর্যন্ত ইরানকে রাজনৈতিক সহায়তার বাইরে অন্য কোনো বড় পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেয়নি, যদিও দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতার চুক্তি রয়েছে।

এদিকে, যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েল তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ চুক্তি বা ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’ সম্প্রসারণের বিষয়েও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, এই আঞ্চলিক কৌশলের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের সঙ্গে সিরিয়ারও পরোক্ষ আলোচনা শুরু হতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়া বহু বছর ধরেই ভারসাম্যের কৌশল অবলম্বন করে আসছে। একদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে, অন্যদিকে ইরানের সঙ্গে শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় ইরানের কয়েকজন শীর্ষ জেনারেল ও বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। এর জবাবে ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ফলে রাশিয়ার জন্য জটিল কূটনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কারণ, দুই দেশের সঙ্গেই মস্কোর কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে।

তবে এই উত্তেজনার সুযোগ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিজেদের শক্তি বাড়ানোর সুযোগও দেখতে পারে রাশিয়া। মস্কোর কিছু বিশ্লেষকের মতে, ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা বাড়লে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বিশ্ব নজর কিছুটা সরতে পারে। এতে কিয়েভের প্রতি পশ্চিমাদের সমর্থন দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা রাশিয়ার স্বার্থে কাজ করতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত