আজকের পত্রিকা ডেস্ক
লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ বহু বছরের বৈরিতার পর সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছে। আঞ্চলিক রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এবং ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ায় এই অবস্থান বদল আনছে গোষ্ঠীটি। লন্ডন থেকে প্রকাশিত মধ্যপ্রাচ্য কেন্দ্রিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত মাসের শেষ দিকে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে হিজবুল্লাহর প্রধান নাঈম কাসেম সৌদি আরবের সঙ্গে ‘নতুন অধ্যায় শুরু করার’ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের আসল হুমকি ইসরায়েল—এই ব্যাপারে সবাইকে একসঙ্গে অবস্থান নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করছি, প্রতিরোধ বাহিনীর অস্ত্র কেবল ইসরায়েলি শত্রুর দিকেই নির্দেশিত—লেবানন, সৌদি আরব বা বিশ্বের অন্য কোনো রাষ্ট্র বা সত্তার দিকে নয়।’
দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়া যুদ্ধে হিজবুল্লাহর অংশগ্রহণ, ইয়েমেনের হুতিদের প্রতি তাদের কথিত সহায়তা এবং ইরান-সৌদি প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে হিজবুল্লাহ ও রিয়াদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল তিক্ত। ২০১৬ সালে সৌদি নেতৃত্বাধীন উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) হিজবুল্লাহকে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে। তবে ২০২৪ সালের জুনে আরব লীগ হিজবুল্লাহর নাম তাদের সন্ত্রাসী তালিকা থেকে সরিয়ে নেয়।
রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, হিজবুল্লাহর এই নতুন অবস্থান কেবল তাদের নিজস্ব উদ্যোগ নয়, বরং তেহরানের নেতৃত্বে পরিচালিত এক সমন্বিত প্রচেষ্টার অংশ। ইরানের দুটি সূত্র ও হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, কাসেমের বক্তব্য তেহরানের নেপথ্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফল—যার লক্ষ্য হিজবুল্লাহ ও সৌদি আরবের মধ্যে উত্তেজনা কমানো।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ম্যালকম এইচ কার্নেগি মিডল ইস্ট সেন্টারের সিনিয়র এডিটর মাইকেল ইয়াং বলেন, কাসেমের এই বক্তব্য মূলত ইরানের বার্তা বহন করছে। তিনি মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘নাঈম কাসেমের বিবৃতি আমি আসলে ইরানের বার্তা হিসেবেই পড়ছি। ইরান জানিয়ে দিচ্ছে, হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণ ইস্যুতে লেবাননকে তাদের সঙ্গেই আলোচনা করতে হবে।’
ইয়াং আরও বলেন, তেহরান এখন দেখছে, আঞ্চলিক ভারসাম্য বদলে যাচ্ছে—বিশেষ করে ইসরায়েলের বাড়তি সামরিক উপস্থিতির কারণে। এতে নতুন কিছু অপ্রত্যাশিত জোট গঠনের সুযোগ তৈরি হতে পারে। গত মাসে লেবানন সফরে গিয়ে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী লারিজানি বলেন, ‘আমি শেখ নাঈম কাসেমের উদ্যোগের প্রশংসা করছি এবং সম্পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। সৌদি আরব আমাদের ভাই রাষ্ট্র, আমাদের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা চলছে।’ তিনি আরও বলেন, সাধারণ শত্রুর মোকাবিলায় সহযোগিতা অপরিহার্য, আর কাসেমের অবস্থান ‘সম্পূর্ণ সঠিক।’
এই বিষয়ে মাইকেল ইয়াং বলেন, ‘ইরানের ধারণা, এখন আঞ্চলিক জোটগুলো বদলে যাচ্ছে। ইসরায়েল এক প্রভাবশালী শক্তি হয়ে উঠছে, ফলে সৌদিরাও এখন ইসরায়েলকে হুমকি হিসেবে দেখছে। এতে তাদের ও ইরানের স্বার্থ কিছুটা মিলছে। ইরান এখনো হিজবুল্লাহকে কৌশলগত সম্পদ হিসেবে দেখে। একসময় এটি ছিল শক্তিশালী আঞ্চলিক অস্ত্র, এখন কিছুটা দুর্বল হলেও ইরান এটি হারাতে চায় না।’
সৌদি-ইরান সম্পর্কে উষ্ণতা
কাসেমের বক্তব্য এমন সময় এসেছে, যখন ইসরায়েল পুরো অঞ্চলে সামরিক অভিযান বাড়াচ্ছে। গত মাসে ইসরায়েল গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় বসা হামাসের শীর্ষ নেতাদের বৈঠককক্ষেই কাতারে বিমান হামলা চালায়। এই হামলায় ইসরায়েলের কার্যক্রমের পরিধি ও ঝুঁকি নতুন মাত্রায় পৌঁছে যায়, যা উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করে।
হিজবুল্লাহ ঘনিষ্ঠ লেবাননি বিশ্লেষক কাসেম কাসির বলেন, হিজবুল্লাহর সাম্প্রতিক বক্তব্য মূলত বড় আঞ্চলিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এসেছে, বিশেষ করে ২০২৩ সালে চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি-ইরান মীমাংসার পর। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করছি, এই উদ্যোগ এসেছে আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ ও সৌদি-ইরান সম্পর্কোন্নয়নের ধারাবাহিকতায়। হিজবুল্লাহ আলোচনায় প্রস্তুত, এখন তারা সৌদির প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছে।’
কাসির স্মরণ করিয়ে দেন, ২০০৬ সালে নাঈম কাসেমের নেতৃত্বে হিজবুল্লাহর একটি প্রতিনিধি দল সৌদি সফর করেছিল। তখন সৌদি আরব লেবাননের জন্য দেড় বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছিল। তবে ইয়েমেন ও সিরিয়ার যুদ্ধ এবং তেহরান-রিয়াদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর দুই পক্ষের সম্পর্ক ভেঙে পড়ে।
এখন, লেবাননের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক চাপের মধ্যে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে সৌদি আরবকে ‘শান্তির পতাকা’ বাড়িয়ে দেওয়া এক নতুন কৌশল বলেই বিশ্লেষকদের মত। ২০১৯ সাল থেকে লেবাননের মুদ্রার মান ৯৮ শতাংশ কমেছে।
একই সঙ্গে পশ্চিমা দেশ ও আরব শক্তিগুলো লেবাননে অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র সংগঠনগুলোর নিরস্ত্রীকরণের দাবি জোরালো করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের চাপে গত আগস্টে লেবানন সরকার হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণে ওয়াশিংটনের প্রস্তাব গ্রহণ করে। হিজবুল্লাহ এই সিদ্ধান্তকে ‘ইসরায়েলের কাছে আত্মসমর্পণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে। তাদের দাবি, ইসরায়েল এখনো দক্ষিণ লেবাননের অন্তত পাঁচটি অঞ্চল দখল করে আছে এবং প্রায়ই আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে—এই অবস্থায় অস্ত্র পরিত্যাগ সম্ভব নয়।
সংঘাতে আগ্রহ কমেছে
নাঈম কাসেমের দাবি, ‘হিজবুল্লাহর অস্ত্র কেবল ইসরায়েলের বিরুদ্ধেই ব্যবহৃত হবে।’ এটি সৌদি আরবের উদ্দেশ্য ছাড়াও পশ্চিমা দেশগুলোর জন্যও বার্তা হতে পারে, যারা লেবাননের পুনর্গঠন সহায়তা বিবেচনা করছে। গত বছরের ইসরায়েল-লেবানন যুদ্ধের পর হিজবুল্লাহ নিজেদের বিজয় দাবি করলেও বাস্তবে বড় ধাক্কা খেয়েছে দলটি। তাদের বহু শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতা নিহত হয়েছেন, এমনকি নেতা হাসান নাসরুল্লাহও ইসরায়েলি অভিযানে নিহত হন।
যুদ্ধবিরতির পরও প্রায় প্রতিদিন ইসরায়েলি হামলায় তাদের সদস্য ও অন্তত ১০৩ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। হিজবুল্লাহ এসব হামলার জবাব দেয়নি। তবে উপসাগরীয় দেশগুলো সহজে ভুলে না। ২০২২ সালে নাসরুল্লাহ সৌদি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন—তারা ইসলামিক স্টেট (আইএস) মতাদর্শ ছড়িয়ে দিয়েছে এবং ইরাকে আত্মঘাতী হামলার পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। তখন তিনি বলেন, ‘মহারাজ, আসল সন্ত্রাসী সেই, যে দুনিয়াজুড়ে আইএস মতাদর্শ রপ্তানি করেছে।’
এখনো পর্যন্ত সৌদি কর্মকর্তারা নাঈম কাসেমের এই প্রস্তাবে কোনো প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে লেবাননের ভেতরে এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, কোনো রাজনৈতিক দল নয়—রাষ্ট্রীয় পর্যায়েই বিদেশি কূটনীতি পরিচালনা করা উচিত।
গত মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, ‘সৌদি আরব লেবাননের পাশে আছে, দেশটির নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সমর্থন জানায়। আমরা চাই, লেবানন ১৯৮৯ সালের তাইফ চুক্তি বাস্তবায়ন করুক, সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করুক এবং অস্ত্র রাষ্ট্রের বৈধ প্রতিষ্ঠানের হাতেই থাকুক।’
সৌদি আরব হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংলাপে বসবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আঞ্চলিক জোটের পরিবর্তন এবং রিয়াদ-তেহরানের নতুন বাস্তবতায় হিজবুল্লাহর বার্তা একেবারে উপেক্ষিতও হচ্ছে না। এই বিষয়ে মাইকেল ইয়াং বলেন, “ইরান এখন আর সৌদি আরবের সঙ্গে সংঘাতে থাকতে আগ্রহী নয়।’
লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ বহু বছরের বৈরিতার পর সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছে। আঞ্চলিক রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এবং ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ায় এই অবস্থান বদল আনছে গোষ্ঠীটি। লন্ডন থেকে প্রকাশিত মধ্যপ্রাচ্য কেন্দ্রিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত মাসের শেষ দিকে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে হিজবুল্লাহর প্রধান নাঈম কাসেম সৌদি আরবের সঙ্গে ‘নতুন অধ্যায় শুরু করার’ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের আসল হুমকি ইসরায়েল—এই ব্যাপারে সবাইকে একসঙ্গে অবস্থান নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করছি, প্রতিরোধ বাহিনীর অস্ত্র কেবল ইসরায়েলি শত্রুর দিকেই নির্দেশিত—লেবানন, সৌদি আরব বা বিশ্বের অন্য কোনো রাষ্ট্র বা সত্তার দিকে নয়।’
দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়া যুদ্ধে হিজবুল্লাহর অংশগ্রহণ, ইয়েমেনের হুতিদের প্রতি তাদের কথিত সহায়তা এবং ইরান-সৌদি প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে হিজবুল্লাহ ও রিয়াদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল তিক্ত। ২০১৬ সালে সৌদি নেতৃত্বাধীন উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) হিজবুল্লাহকে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে। তবে ২০২৪ সালের জুনে আরব লীগ হিজবুল্লাহর নাম তাদের সন্ত্রাসী তালিকা থেকে সরিয়ে নেয়।
রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, হিজবুল্লাহর এই নতুন অবস্থান কেবল তাদের নিজস্ব উদ্যোগ নয়, বরং তেহরানের নেতৃত্বে পরিচালিত এক সমন্বিত প্রচেষ্টার অংশ। ইরানের দুটি সূত্র ও হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, কাসেমের বক্তব্য তেহরানের নেপথ্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফল—যার লক্ষ্য হিজবুল্লাহ ও সৌদি আরবের মধ্যে উত্তেজনা কমানো।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ম্যালকম এইচ কার্নেগি মিডল ইস্ট সেন্টারের সিনিয়র এডিটর মাইকেল ইয়াং বলেন, কাসেমের এই বক্তব্য মূলত ইরানের বার্তা বহন করছে। তিনি মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘নাঈম কাসেমের বিবৃতি আমি আসলে ইরানের বার্তা হিসেবেই পড়ছি। ইরান জানিয়ে দিচ্ছে, হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণ ইস্যুতে লেবাননকে তাদের সঙ্গেই আলোচনা করতে হবে।’
ইয়াং আরও বলেন, তেহরান এখন দেখছে, আঞ্চলিক ভারসাম্য বদলে যাচ্ছে—বিশেষ করে ইসরায়েলের বাড়তি সামরিক উপস্থিতির কারণে। এতে নতুন কিছু অপ্রত্যাশিত জোট গঠনের সুযোগ তৈরি হতে পারে। গত মাসে লেবানন সফরে গিয়ে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী লারিজানি বলেন, ‘আমি শেখ নাঈম কাসেমের উদ্যোগের প্রশংসা করছি এবং সম্পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। সৌদি আরব আমাদের ভাই রাষ্ট্র, আমাদের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা চলছে।’ তিনি আরও বলেন, সাধারণ শত্রুর মোকাবিলায় সহযোগিতা অপরিহার্য, আর কাসেমের অবস্থান ‘সম্পূর্ণ সঠিক।’
এই বিষয়ে মাইকেল ইয়াং বলেন, ‘ইরানের ধারণা, এখন আঞ্চলিক জোটগুলো বদলে যাচ্ছে। ইসরায়েল এক প্রভাবশালী শক্তি হয়ে উঠছে, ফলে সৌদিরাও এখন ইসরায়েলকে হুমকি হিসেবে দেখছে। এতে তাদের ও ইরানের স্বার্থ কিছুটা মিলছে। ইরান এখনো হিজবুল্লাহকে কৌশলগত সম্পদ হিসেবে দেখে। একসময় এটি ছিল শক্তিশালী আঞ্চলিক অস্ত্র, এখন কিছুটা দুর্বল হলেও ইরান এটি হারাতে চায় না।’
সৌদি-ইরান সম্পর্কে উষ্ণতা
কাসেমের বক্তব্য এমন সময় এসেছে, যখন ইসরায়েল পুরো অঞ্চলে সামরিক অভিযান বাড়াচ্ছে। গত মাসে ইসরায়েল গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় বসা হামাসের শীর্ষ নেতাদের বৈঠককক্ষেই কাতারে বিমান হামলা চালায়। এই হামলায় ইসরায়েলের কার্যক্রমের পরিধি ও ঝুঁকি নতুন মাত্রায় পৌঁছে যায়, যা উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করে।
হিজবুল্লাহ ঘনিষ্ঠ লেবাননি বিশ্লেষক কাসেম কাসির বলেন, হিজবুল্লাহর সাম্প্রতিক বক্তব্য মূলত বড় আঞ্চলিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এসেছে, বিশেষ করে ২০২৩ সালে চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি-ইরান মীমাংসার পর। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করছি, এই উদ্যোগ এসেছে আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ ও সৌদি-ইরান সম্পর্কোন্নয়নের ধারাবাহিকতায়। হিজবুল্লাহ আলোচনায় প্রস্তুত, এখন তারা সৌদির প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছে।’
কাসির স্মরণ করিয়ে দেন, ২০০৬ সালে নাঈম কাসেমের নেতৃত্বে হিজবুল্লাহর একটি প্রতিনিধি দল সৌদি সফর করেছিল। তখন সৌদি আরব লেবাননের জন্য দেড় বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছিল। তবে ইয়েমেন ও সিরিয়ার যুদ্ধ এবং তেহরান-রিয়াদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর দুই পক্ষের সম্পর্ক ভেঙে পড়ে।
এখন, লেবাননের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক চাপের মধ্যে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে সৌদি আরবকে ‘শান্তির পতাকা’ বাড়িয়ে দেওয়া এক নতুন কৌশল বলেই বিশ্লেষকদের মত। ২০১৯ সাল থেকে লেবাননের মুদ্রার মান ৯৮ শতাংশ কমেছে।
একই সঙ্গে পশ্চিমা দেশ ও আরব শক্তিগুলো লেবাননে অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র সংগঠনগুলোর নিরস্ত্রীকরণের দাবি জোরালো করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের চাপে গত আগস্টে লেবানন সরকার হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণে ওয়াশিংটনের প্রস্তাব গ্রহণ করে। হিজবুল্লাহ এই সিদ্ধান্তকে ‘ইসরায়েলের কাছে আত্মসমর্পণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে। তাদের দাবি, ইসরায়েল এখনো দক্ষিণ লেবাননের অন্তত পাঁচটি অঞ্চল দখল করে আছে এবং প্রায়ই আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে—এই অবস্থায় অস্ত্র পরিত্যাগ সম্ভব নয়।
সংঘাতে আগ্রহ কমেছে
নাঈম কাসেমের দাবি, ‘হিজবুল্লাহর অস্ত্র কেবল ইসরায়েলের বিরুদ্ধেই ব্যবহৃত হবে।’ এটি সৌদি আরবের উদ্দেশ্য ছাড়াও পশ্চিমা দেশগুলোর জন্যও বার্তা হতে পারে, যারা লেবাননের পুনর্গঠন সহায়তা বিবেচনা করছে। গত বছরের ইসরায়েল-লেবানন যুদ্ধের পর হিজবুল্লাহ নিজেদের বিজয় দাবি করলেও বাস্তবে বড় ধাক্কা খেয়েছে দলটি। তাদের বহু শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতা নিহত হয়েছেন, এমনকি নেতা হাসান নাসরুল্লাহও ইসরায়েলি অভিযানে নিহত হন।
যুদ্ধবিরতির পরও প্রায় প্রতিদিন ইসরায়েলি হামলায় তাদের সদস্য ও অন্তত ১০৩ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। হিজবুল্লাহ এসব হামলার জবাব দেয়নি। তবে উপসাগরীয় দেশগুলো সহজে ভুলে না। ২০২২ সালে নাসরুল্লাহ সৌদি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন—তারা ইসলামিক স্টেট (আইএস) মতাদর্শ ছড়িয়ে দিয়েছে এবং ইরাকে আত্মঘাতী হামলার পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। তখন তিনি বলেন, ‘মহারাজ, আসল সন্ত্রাসী সেই, যে দুনিয়াজুড়ে আইএস মতাদর্শ রপ্তানি করেছে।’
এখনো পর্যন্ত সৌদি কর্মকর্তারা নাঈম কাসেমের এই প্রস্তাবে কোনো প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে লেবাননের ভেতরে এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, কোনো রাজনৈতিক দল নয়—রাষ্ট্রীয় পর্যায়েই বিদেশি কূটনীতি পরিচালনা করা উচিত।
গত মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, ‘সৌদি আরব লেবাননের পাশে আছে, দেশটির নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সমর্থন জানায়। আমরা চাই, লেবানন ১৯৮৯ সালের তাইফ চুক্তি বাস্তবায়ন করুক, সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করুক এবং অস্ত্র রাষ্ট্রের বৈধ প্রতিষ্ঠানের হাতেই থাকুক।’
সৌদি আরব হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংলাপে বসবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আঞ্চলিক জোটের পরিবর্তন এবং রিয়াদ-তেহরানের নতুন বাস্তবতায় হিজবুল্লাহর বার্তা একেবারে উপেক্ষিতও হচ্ছে না। এই বিষয়ে মাইকেল ইয়াং বলেন, “ইরান এখন আর সৌদি আরবের সঙ্গে সংঘাতে থাকতে আগ্রহী নয়।’
ভারতের উত্তর প্রদেশের আলিগড়ে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছেন হিন্দু মহাসভার সাধারণ সম্পাদক (জাতীয়) নেত্রী পূজা শকুন পাণ্ডে। ১৫ দিন পলাতক থাকার পর শুক্রবার রাতে রাজস্থানের ভরতপুর জেলার লোধা বাইপাস এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার...
১ ঘণ্টা আগেআফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনটি হঠাৎ আয়োজন করা হয়েছিল। অল্প সময়ের মধ্যে কিছু সাংবাদিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এটি মূলত কারিগরি ত্রুটি ছিল। অন্য কোনো সমস্যা নয়। আমাদের সহকর্মীরা নির্দিষ্ট কিছু সাংবাদিককে তালিকাভুক্ত করে নিমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছিলেন। এর বাইরে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।’
১ ঘণ্টা আগেমাদাগাস্কারে সেনাবাহিনীর একটি বিদ্রোহী ইউনিট ঘোষণা করেছে, তারা দেশের সব সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোয়েলিনা বলেছেন, সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। এর আগে গতকাল শনিবার সেনাবাহিনীর প্রশাসনিক ও টেকনিক্যাল কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত ক্যাপসাট (CAPSAT) ইউনিট...
১ ঘণ্টা আগেআফগানিস্তান সীমান্তের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে সংঘর্ষের বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখার (আইএসপিআর) বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, সীমান্তজুড়ে সংঘটিত সংঘর্ষে দুশ জনেরও বেশি তালেবান এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে, পাকিস্তানের ...
২ ঘণ্টা আগে