Ajker Patrika

হামাসের ভালো ব্যবহার ও বন্দিশালা নিয়ে যে তথ্য পাওয়া গেল

আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৯: ১১
হামাসের ভালো ব্যবহার ও বন্দিশালা নিয়ে যে তথ্য পাওয়া গেল

আমেরিকান মা-মেয়েকে মুক্তি দেওয়ার পর মানবিক কারণে আরও দুই ইসরায়েলি নারীকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস। মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলিরা হলেন নুরিত কুপার (৭৯) ও ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ (৮৫)। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডসের মুখপাত্র আবু ওবায়দা।

টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে আবু ওবায়দা বলেন, ‘এই দুজনকে গত শুক্রবারই আমরা মুক্তি দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ইসরায়েল তাঁদের নিতে চায়নি।’

মিসর ও গাজার মধ্যকার রাফাহ ক্রসিং হয়ে অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে দুই ইসরায়েলি নারী প্রথমে মিসর ও পরে ইসরায়েলে পৌঁছান। আজ মঙ্গলবার ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবের একটি হাসপাতাল থেকে নিজের বন্দিদশা নিয়ে মার্কিন সংবাদ সংস্থা স্কাই নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ। 

এ বিষয়ে স্কাই নিউজ জানিয়েছে, লিফশিৎজ নিজের মাতৃভাষা হিব্রুতে ঘটনার বর্ণনা দিলেও তাঁর কন্যা শ্যারোন দোভাষী হয়ে মায়ের বক্তব্য ও অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। 

মায়ের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে শ্যারোন জানান, ৮৫ বছর বয়সী লিফশিৎজকে হামাসের যোদ্ধারা যখন অপহরণ করে নিয়ে যায়, তখন একটি মোটরসাইকেলের পেছনে ওঠানো হয় তাঁকে। মোটরসাইকেলটির সিটের ওপর পেট রেখে একদিকে দুই পা এবং অন্যদিকে মাথা ঝুলে ছিল লিফশিৎজের। এভাবেই অনেক উঁচু-নিচু মাঠ পাড়ি দিয়ে নিয়ে যাওয়ার ফলে ঝাঁকুনিতে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। গাজায় পৌঁছানোর পর হামাসের যোদ্ধাদের খুব রুক্ষ মেজাজ দেখা গেছে বলেও জানিয়েছেন লিফশিৎজ। 

israel-hamas-warপরে তাঁকে একটি ভূগর্ভস্থ টানেলের ভেতর দিয়ে কয়েক কিলোমিটার হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ভূগর্ভস্থ সেই টানেলটিকে স্যাঁতসেঁতে এবং মাকড়সার জালে জড়ানো বলে বর্ণনা করেন লিফশিৎজ। ভূগর্ভস্থ টানেলই ছিল হামাসের বন্দিশালা; যাকে নরকের সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি।  প্রথমে তাঁরা একসঙ্গে ২৫ জন বন্দী থাকলেও পরে পাঁচজনকে আলাদা করে নিয়ে যাওয়া হয়। 

তবে বন্দিশালার বর্ণনা দিতে গিয়ে হামাস যোদ্ধাদের প্রশংসা করেছেন মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলি নারী। তিনি জানান, বন্দীদের সঙ্গে খুবই ভদ্র আচরণ করেছেন যোদ্ধারা। কখন কার কী প্রয়োজন হয়, সে বিষয়ে হামাস সদস্যরা ছিলেন খুব সচেতন। নিজে থেকেই তাঁরা এসবের খোঁজখবর নিয়েছেন। বন্দীদের জন্য নির্ধারিত গার্ড ছাড়াও ছিলেন চিকিৎসক। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা প্রদানসহ ওষুধও সরবরাহ করেছেন তাঁরা। নিয়ম করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়ার সুযোগ দেওয়া ছাড়াও বন্দীদের খাবারদাবারও সরবরাহ করা হয়েছে।

লিফশিৎজ বলেন, ‘তারা আমাদের পিটা রুটি, শক্ত মাখন, কম চর্বিযুক্ত কিছু ক্রিম মাখন এবং শসা খেতে দিয়েছে। এগুলো খেয়েই আমাদের সারা দিন কাটাতে হয়েছে।’ 

লিফশিৎজ জানান, বন্দিশালায় হামাস যোদ্ধাদের দেখে মনে হয়েছে, তাদের প্রস্তুতি অনেক সুসংগঠিত এবং এই অভিযানের পরিকল্পনা তারা অনেক সময় নিয়ে করেছে। 

আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন লিফশিৎজ। তিনি দাবি করেন, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে হামাস যে হামলা পরিচালনা করেছে, কয়েক সপ্তাহ আগেই তারা এর ইঙ্গিত দিয়েছিল। সে সময় বেলুনের সঙ্গে আগুন যুক্ত করে তারা ইসরায়েলের অনেক শস্যখেত পুড়িয়ে দিয়েছিল। 

তবে এসব সতর্কতাকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) আমলে নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন লিফশিৎজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত