Ajker Patrika

বাংকার বাস্টার

১৩ হাজার কেজির বোমা ঢুকতে পারে ২০০ ফুট গভীরে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

ইরানের ফোরদো পরমাণু স্থাপনার মূল কার্যক্রম চলত পাহাড়ের ৮০ থেকে ৯০ মিটার নিচে। ইরানের কোম শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে এই স্থাপনার অবস্থান। বলা হয়ে থাকে, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মূল কার্যক্রম চলত এ কেন্দ্রে। এটি ছাড়াও শনিবার দিবাগত রাতে আরও দুটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী।

এতে ব্যবহার করা হয়েছে শক্তিশালী ‘বাংকার বাস্টার’ বা ‘ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনেট্রেটর’ বা ‘জিবিইউ-৫৭’ বোমা। এই প্রথম বিধ্বংসী এই বোমার ব্যবহার দেখল বিশ্ব।

বার্তা সংস্থা এপির দেওয়া তথ্য অনুসারে, এই বোমার ওজন ১৩ হাজার ৬০০ কেজি। ওজন ও গতিবেগের কারণে এই বোমা সারফেস থেকে ৬১ মিটার বা ২০০ ফুট গভীরে গিয়ে বিস্ফোরিত হতে পারে। ফোরদো পরমাণু স্থাপনায় যখন ইসরায়েল হামলা চালাচ্ছিল, তখন আন্তর্জাতিক সমরাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন, এই স্থাপনায় হামলা চালিয়ে মূল কার্যক্রম বন্ধ করার ক্ষমতা ইসরায়েলের নেই। আসলে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোনো দেশেরই ফোরদো পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালানোর ক্ষমতা নেই। যুক্তরাষ্ট্রও আসলে এসব মাটির নিচের স্থাপনায় হামলা চালানোর কথা ভেবেই বোমাটি বানিয়েছিল। আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সেই ১৩ হাজার ৬০০ কেজি ওজনের জিবিইউ-৫৭ বোমা ব্যবহার করেই হামলা চালালেন।

নিউইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, মার্কিন বিমানবাহিনীর জন্য এই বোমা তৈরি করেছে বোয়িং। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৩ সালে বিমানবাহিনী এই বোমা তৈরি করতে খরচ করেছে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার।

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার আগে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি আর ইরাক বা আফগানিস্তানের মতো কোনো বিদেশি সংঘাতে জড়াবেন না। তবে সেই কথা রাখতে পারলেন না। ইরানে সরাসরি হামলা চালালেন।

যুক্তরাষ্ট্র ২০০৪ সালে বাংকার বাস্টার তৈরি শুরু করে। সেই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। তখন বুশ প্রশাসনের লক্ষ্য ছিল, তা দিয়ে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার পাহাড়ে গোপন সুরক্ষিত পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করা। সেই বোমা তৈরির পর পরীক্ষা চালানো হয় বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে। এরপর সেটি সামরিক বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জর্জ ডব্লিউ বুশের সময় থেকেই বাংকার বাস্টার পেতে চাপ দিয়ে আসছিলেন। নেতানিয়াহু এই বোমা হাতের নাগালে পেলেন না, তবে কার্য সিদ্ধি করে নিলেন। গত শনিবার রাতে ছয়টি বাংকার বাস্টার ব্যবহার করে ইরানে হামলা চালানো হয়। দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ফোরদো পরমাণু স্থাপনাতেই এই ছয়টি বোমা ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া বাকি দুটি নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে মার্কিন বাহিনী।

এদিকে এই বোমা হামলার পর ট্রাম্পের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন তাঁর রিপাবলিকান পার্টির সিনেটররা। রজার উইকার বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বিবৃতিতে আরও বলেন, পরমাণু অস্ত্র নির্মাণের পথ বেছে নিয়ে এই ভাগ্য নিজে বেছে নিয়েছে ইরান।

তবে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন বিরোধী শিবির ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেক নেতা। দলটির সিনেটর টিম কাইনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর বিরুদ্ধে।

তবে এই হামলার পর ট্রাম্পের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, অসাধারণ এবং ন্যায়সংগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র ইতিহাস বদলে দেবে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন কাজ করেছে, যা অন্য কোনো দেশ করতে পারবে না।

এদিকে ট্রাম্পও নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। তাঁরা একটি দল হিসেবে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প: ইউএনও-উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে শুনানি কাল

চীন–রাশিয়া থেকে ভারতকে দূরে রাখতে কয়েক দশকের মার্কিন প্রচেষ্টা ভেস্তে দিচ্ছেন ট্রাম্প: জন বোল্টন

‘হানি ট্র্যাপের’ ঘটনা ভিডিও করায় খুন হন সাংবাদিক তুহিন: পুলিশ

আটজন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন’ দুর্নীতির প্রমাণ আছে: সাবেক সচিব

স্ত্রীকে মেরে ফেলেছি, আমাকে নিয়ে যান— ৯৯৯–এ স্বামীর ফোন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত