Ajker Patrika

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করবে না ইরান, প্রয়োজনে আবারও হামলার হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

অনলাইন ডেস্ক
আরাকচি ও ডোনাল্ডট্রাম্প।  ফাইল ছবি
আরাকচি ও ডোনাল্ডট্রাম্প। ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ধারাবাহিক বিমান হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দেশটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি থেকে সরে আসবে না বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। গতকাল সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘মার্কিন হামলায় ভয়াবহ ক্ষতি হওয়ায় আপাতত সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে একেবারে বন্ধ হবে না। এটি আমাদের বিজ্ঞানীদের অর্জন, জাতীয় গর্বের প্রতীক। কাজেই আমরা এটি ছেড়ে দিতে পারি না।’

কাতারি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাক্ষাৎকারে আরাকচি জানান, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ‘উন্মুক্ত’ থাকলেও সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা আপাতত নেই। আরাকচি বলেন, ‘তারা যদি পারস্পরিক সুবিধার ভিত্তিতে এগিয়ে আসে, আমরা আলোচনায় প্রস্তুত। আন্তর্জাতিক আস্থা অর্জনে এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি যে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ তা প্রমাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আমরা প্রস্তুত। বিনিময়ে আমরা তাদের কাছ থেকে অবরোধ প্রত্যাহার আশা করি।’

আরাকচি বলেন, ‘আমার বার্তা পরিষ্কার—আসুন আলোচনার মাধ্যমে পরমাণু সংকটের সমাধান খুঁজি। এর আগে একবার তা সম্ভব হয়েছিল, আবারও সম্ভব।’

এদিকে, ট্রাম্প আবারও ইরানে হামলার হুমকি দিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, প্রয়োজন হলে যুক্তরাষ্ট্র আরও একবার একই ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। ট্রাম্প বলেন, ‘যদি প্রয়োজন হয়, আমরা আবারও হামলা করব। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমি আগেই বলেছিলাম এমনটা হবে।’

এর আগে, ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানির মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করলে দেশটির ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার কথা ছিল। ওই চুক্তির আওতায় ইরান তার পরমাণু স্থাপনাগুলো আন্তর্জাতিক পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করেছিল এবং এর বিনিময়ে আন্তর্জাতিক অবরোধ শিথিল করা হয়েছিল। তবে, ২০১৮ সালে ডেনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে চুক্তিটি থেকে একতরফাভাবে সরে আসে যুক্তরাষ্ট্র।

ধারণা করা হয়, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর এমন দাবির প্রেক্ষিতেই চুক্তিটি সরে আসে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছর মে মাসেও ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি নতুন চুক্তির জন্য আলোচনা চলছিল। কিন্তু ১৩ জুন হঠাৎ করেই ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় নিহত হয় ৯ শতাধিক ইরানি। ইসরায়েলে ২৮ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটি।

ইরান-ইসরায়েলের এই ১২ দিনের যুদ্ধ জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রও। পরে, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বেশ কয়েকটি মার্কিন ঘাঁটিতে ইরান হামলা চালালে ট্রাম্পের উদ্যোগে কাতারের মধ্যস্থতায় ২৪ জুন কার্যকর হয় যুদ্ধবিরতি।

যুক্তরাষ্ট্র পরে জানায়, ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে অন্তত এক থেকে দুই বছর পেছনে ঠেলে দিতে সক্ষম হয়েছে তারা। এ বিষয়ে আরাকচি জানান, ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা এখনো হামলার ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করছে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-কে এ বিষয়ে শিগগিরই অবহিত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আইএইএ যদি পরিদর্শকদের পাঠানোর অনুরোধ জানায়, তবে তা ‘সতর্কভাবে বিবেচনা’ করা হবে। যদিও আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি ও সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করে ইরান সম্প্রতি একটি আইন পাশ করে সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করেছে। এর ফলে আইএইএ পরিদর্শকেরা দেশটি ছেড়ে যান। ১২ জুন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) বোর্ডে ইরান তার পরমাণু চুক্তির বাধ্যবাধকতা যথাযথভাবে মানছে না—এমন অভিযোগে একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস করে। তেহরান দাবি করেছে, এই প্রস্তাবটি ইসরায়েল পরবর্তীতে তাদের ওপর সামরিক হামলা চালানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

মেয়াদোত্তীর্ণ ঠিকাদারের নিয়ন্ত্রণে সার্ভার, ঝুলে আছে ৭ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত