Ajker Patrika

গাজা সিটিতে ইসরায়েলি স্থল অভিযান: ফের অনিশ্চয়তায় যাত্রা বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৯
গাজা নগরী ছাড়ার নির্দেশসংবলিত লিফলেট আকাশ থেকে ফেলা হচ্ছে। ছবি: এএফপি
গাজা নগরী ছাড়ার নির্দেশসংবলিত লিফলেট আকাশ থেকে ফেলা হচ্ছে। ছবি: এএফপি

ইসরায়েল যে কতটা নৃশংস হতে পারে তা এই ২৩ মাসের যুদ্ধে খুব ভালো করে বুঝে গেছে ফিলিস্তিনিরা। যদিও কোথায় গেলে এই নৃশংসতা থেকে রেহাই মিলবে জানা নেই তাদের। তবু, গাজা সিটিতে ইসরায়েলি স্থল অভিযান শুরুর পর তল্পি-তল্পা গুছিয়ে ‘নিরাপদ আশ্রয়’ নামের এক মরীচিকার পেছনে ছুটছে বাসিন্দারা।

শেখ রেদওয়ান এলাকার বাসিন্দা লিনা আল মাগরেবি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানান, বিপজ্জনক জেনেও বসতভিটা ছাড়তে চাননি তিনি। কিন্তু, এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা তাকে কল করে এলাকা ছাড়তে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘আবারও বাস্তুচ্যুত হওয়া এবং নতুন করে তাঁবু কেনার খরচ জোগাতে আমি গয়না বেচতে বাধ্য হয়েছি। যানবাহনও এখন খুব বেশি ব্যয়বহুল হয়ে গেছে। খান ইউনিস পৌঁছাতে আমার ১০ ঘণ্টা লেগেছ।’

গাজা সিটি ইসরায়েলি অভিযানকে শক্তিশালী বলে অভিহিত করছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তাঁর ভাষ্য—এটিই হামাসের শেষ শক্ত ঘাঁটি। তাই হামাস নির্মূলে এখানে শক্তিশালী হামলা চালানো অত্যন্ত জরুরি।

গাজা সিটি থেকে বের হওয়ার জন্য শুধু মাত্র একটা রাস্তা নির্ধারণ করে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। আল-রশিদ নামের একটিমাত্র সড়ক দিয়েই এখান থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বাসিন্দাদের। এতদিন এলাকা থেকে সরতে না চাইলেও স্থল অভিযান শুরুর পর জীবন বাঁচাতে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই। এত মানুষ একসঙ্গে গাজা সিটি ছাড়তে শুরু করায় তৈরি হয়েছে তীব্র যানজট। এ ছাড়া, চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণ যানবাহনও নেই উপত্যকায়। একটা গাড়ি খুঁজে পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।

গত মাসে যখন ইসরায়েলি পার্লামেন্ট গাজা সিটি দখলের অনুমোদন দেয়, তখনই এর বিরোধিতা করেছিল বিশ্বনেতারা। এমনকি পশ্চিমা মিত্ররাও এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এরপরও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াকে এক প্রকার বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গতকাল মঙ্গলবার গাজা সিটিতে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনা বাহিনী—আইডিএফ।

গাজা সিটিতে ইসরায়েলি অভিযান শুরুর পর আবারও বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এই হামলাকে অত্যন্ত বেপরোয়া এবং নিন্দনীয় আখ্যা দিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই হামলা কেবল আর রক্তপাত ঘটাবে, নিরীহ বেসামরিকদের প্রাণ কেড়ে নেবে এবং বাকি জিম্মিদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলবে।’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জার্মানি ও জাতিসংঘও।

এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধ করতে চায়। কিন্তু যখন আপনি হামাসের মতো একটি অসভ্য দলের সঙ্গে ডিল করছেন, তখন সেটা সম্ভব নাও হতে পারে।’

গাজায় ইসরায়েলি হামলা তীব্র হওয়ার মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের একটি তদন্ত কমিশন প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। তবে ইসরায়েল ওই প্রতিবেদন সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত