Ajker Patrika

আবারও চালু হচ্ছে ক্যামেরা, ড্রামা-সিরিয়ালের স্বর্ণযুগ ফিরে পেতে চায় সিরিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৫, ২২: ১১
সিরিয়ার টেলিভিশন সিরিজ তাওয়াক আল-বানাতের একটি দৃশ্য ধারণের মুহূর্ত। ছবি: এএফপি
সিরিয়ার টেলিভিশন সিরিজ তাওয়াক আল-বানাতের একটি দৃশ্য ধারণের মুহূর্ত। ছবি: এএফপি

রমজান মাসে সিরিয়ান ড্রামা একসময় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তুমুল জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে অর্থ ও আন্তর্জাতিক সংযোগের ঘাটতির ফলে সেই গৌরব ধূসর হয়ে যায়। তবে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নিষেধাজ্ঞা, রাজনৈতিক নিঃসঙ্গতা ও অর্থনৈতিক অচলাবস্থার মধ্য দিয়ে চলা সিরিয়ার টেলিভিশন ও বিনোদনশিল্পে অবশেষে আশার আলো দেখা দিয়েছে।

আজ সোমবার আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, নাটক ও বিনোদনশিল্পের অচলাবস্থা ভাঙতে সিরিয়ার নতুন সরকার কাতারভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আল মাহা ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে একটি বড় চুক্তিতে পৌঁছেছে। এই চুক্তির অংশ হিসেবে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের এক প্রান্তে নির্মিত হবে একটি আধুনিক মিডিয়া ও বিনোদন কমপ্লেক্স। ‘সিটি অব দামেস্ক গেট’ নামে প্রায় ২০ লাখ বর্গমিটারজুড়ে প্রকল্পটি দেশটির সিনেমা, টেলিভিশন ও পর্যটন খাতে নতুন প্রাণসঞ্চার করতে যাচ্ছে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে ৪ হাজারেরও বেশি স্থায়ী ও ৯ হাজার মৌসুমি চাকরি তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি এটি আরব বিশ্বের টেলিভিশন চ্যানেল ও নির্মাতাদের কাছে সিরিয়াকে একটি ব্যবসাবান্ধব ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ চিত্রায়ণ গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে সিরিয়ার ওপর দীর্ঘদিন ধরে চলা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরই এই চুক্তির অন্যতম প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। এর ফলে সিরিয়ার বিনোদনজগতে আন্তর্জাতিক আগ্রহ ফিরে এসেছে। এ ছাড়া পর্যটন, রিয়েল এস্টেট ও মিডিয়া খাতগুলোতেও এই ধরনের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

সিরিয়ার প্রবীণ নির্মাতা আহমদ আলশেইখ বলেন, ‘এটা নিছক কূটনৈতিক সংকেত নয়, বরং আমাদের টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রশিল্পের জন্য এক নতুন সূচনা।’ তাঁর মতে, দশ বছর ধরে যেসব মৌলিক যন্ত্রপাতি, অংশীদারত্ব ও অর্থায়নের সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল সিরিয়া, এখন আবার সেগুলোর দরজা খুলছে।

এই পরিবর্তন শুধু অর্থনৈতিক নয়, মানসিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। আলশেইখ বলেন, ‘আইনি ও আর্থিক ভয় কেটে গেলে স্বাভাবিকভাবেই দরজা খুলে যায়। আমি আশা করি, শিগগির বিজ্ঞাপনদাতা, সম্প্রচার সংস্থা ও পরিবেশকেরা ফিরবে এবং প্রযোজনার মানও বাড়বে।’

তাঁর মতে, সিরিয়ান নাটকের শক্ত ভিত হিসেবে আছে সংবেদনশীলতা ও সমাজমনস্ক গল্প। তাই এর পুনর্জন্ম সম্ভব। তবে এর জন্য চাই পেশাগত মান, আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব এবং নতুন বিনিয়োগের প্রতি আস্থা।

এই প্রেক্ষাপটে নেটফ্লিক্স ও শাহিদের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর দৃষ্টি সিরিয়ার দিকে পড়ছে বলেও মত দিয়েছেন আলশেইখ। তাঁর বিশ্বাস, ২০২৬ সালের রমজান হবে সিরিয়ান ড্রামা পুনরুদ্ধারের মোক্ষম সময়।

এই আশা নিয়ে এগোচ্ছেন দেশটির তরুণ নির্মাতারাও। তাঁদের একজন পুরস্কারজয়ী পরিচালক আনাস জাওয়াহরি বলেন, ‘এক যুগ ধরে আমরা সৃজনশীল ও আর্থিকভাবে পঙ্গু ছিলাম। অবশেষে এখন আমরা সহযোগিতা করতে পারছি। সিরিয়া এখনো গল্প বলার জন্য উর্বর মাটি।’

জাওয়াহরির আলোচিত ডকুমেন্টারি ‘মাই মেমরি ইজ ফুল অব গোস্টস’ যুদ্ধপীড়িত হোমস শহরের মানুষের স্মৃতি ও যন্ত্রণাকে তুলে ধরে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়। এখন তিনি মনে করছেন, আরও সাহসী ও সত্যনিষ্ঠ গল্প বলার সময় এসেছে।

তাঁর ভাষায়, ‘এখন আমাদের দরকার তহবিল, উৎসব ও প্ল্যাটফর্মে সহায়তা। আমরা মুখ বন্ধ করে অপেক্ষা করেছি। এখন আবার আমাদের কণ্ঠ তুলে ধরার সময় এসেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে লতিফ সিদ্দিকী অবরুদ্ধ, নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে

রূপপুর পরমাণু কেন্দ্র পরিদর্শনের পর যা জানাল আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত