Ajker Patrika

গ্রেটাকে ফ্রান্সগামী বিমানে উঠিয়ে দিল ইসরায়েল, অন্যদের কী হবে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১০ জুন ২০২৫, ১৮: ৩১
তেল আবিব থেকে ফ্রান্সের একটি বিমানে সুইডেনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন গ্রেটা থুনবার্গ। ছবি: ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
তেল আবিব থেকে ফ্রান্সের একটি বিমানে সুইডেনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন গ্রেটা থুনবার্গ। ছবি: ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে ইসরায়েল থেকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গ্রেটা থুনবার্গ দেশে ফিরে যেতে রাজি হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে প্রয়োজনীয় নথিপত্রে স্বাক্ষর করে তেল আবিব থেকে ফ্রান্সের একটি বিমানে সুইডেনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন গ্রেটা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তবে ফ্রান্সের বক্তব্য একটু ভিন্ন। তারা বলছে, তাদের ছয়জন নাগরিকের মধ্যে পাঁচজন ইসরায়েলের নির্বাসনসংক্রান্ত আদেশে সই করতে রাজি হননি। ফলে তাঁদের ইসরায়েলের আদালতে হাজির করা হবে।

গ্রেটা থুনবার্গসহ ১২ জন ফিলিস্তিনপন্থী অধিকারকর্মী গাজার দিকে সাহায্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার ভোরে ইসরায়েলি বাহিনী জাহাজটিকে আটক করে আশদোদ বন্দরে নিয়ে যায়।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই জাহাজকে ‘সেলফি ইয়ট’ বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, থুনবার্গদের এই নৌযাত্রা ‘গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য নয়’, বরং নিজেদের প্রচার ও মিডিয়া স্টান্ট হিসেবেই এটি পরিকল্পিত হয়েছে। ওই নৌকায় থাকা ত্রাণের পরিমাণ ছিল খুবই সামান্য—একটি ট্রাকের পূর্ণ ধারণক্ষমতার চেয়ে কম। গতকাল রাতে জাহাজটি আশদোদ বন্দরে আসার পর তাঁদের তেল আবিরের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এক্সের একটি পোস্টে বলেছে, যাঁরা নির্বাসনসংক্রান্ত কাগজে সই করে ইসরায়েল ছেড়ে যেতে রাজি হবেন না, তাঁদের ইসরায়েলি আইন অনুযায়ী আদালতে হাজির করা হবে।

আজ সকালে ইসরায়েলের মন্ত্রণালয় গ্রেটা থুনবার্গের প্লেনে বসা একটি ছবিও শেয়ার করেছে। ছবির ক্যাপশনে লেখা ছিল, তিনি (গ্রেটা থুনবার্গ) ‘সুইডেনের উদ্দেশে (ফ্রান্স হয়ে) ইসরায়েল ছেড়েছেন’।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ-নোয়েল ব্যারো এক্সে লিখেছেন, ‘আমাদের দূতাবাসের কর্মীরা গতকাল রাতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আটক ছয়জন ফরাসি নাগরিকের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছেন। তাঁদের একজন স্বেচ্ছায় চলে যেতে রাজি হয়েছেন এবং আজই ফিরছেন। বাকি পাঁচজনকে জোর করে দেশ থেকে বের করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।’ ব্যারো তাঁদের নাম জানাননি, তবে এই ছয়জনের মধ্যে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিমা হাসান ও আল-জাজিরার সাংবাদিক ওমর ফাইয়াদ আছেন।

ম্যাডলিন ইয়টে ফ্রান্স ও সুইডেন ছাড়াও ব্রাজিল, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও তুরস্কের নাগরিকেরাও ছিলেন।

ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) নামের একটি আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা এই ইয়ট পরিচালনা করছিল। তারা গতকাল রাতে এক বিবৃতিতে জানায়, যাঁরা ইসরায়েলের নির্বাসনসংক্রান্ত আদেশ মানবেন না, তাঁদের তেল আবিরের কাছে রামলে কারাগারে পাঠানো হতে পারে। তারা আরও বলেছে, ‘আমরা সব স্বেচ্ছাসেবকের অবিলম্বে মুক্তি এবং চুরি হওয়া জিনিসপত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। আমাদের অপহরণ বেআইনি ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।’ এফএফসি জানিয়েছে, ইয়টটিতে শিশুর খাবার, সাধারণ খাবার এবং ওষুধ ছিল।

গাজাবাসীর অনাহারে থাকার বিষয়টি তুলে ধরতে এবং সাহায্য পৌঁছে দিতে ১ জুন ইতালি থেকে এই নৌযাত্রা শুরু করে এফএফসি। তবে ইসরায়েল বলছে, গাজায় হামাস যোদ্ধাদের কাছে অস্ত্র পৌঁছানো আটকাতে সমুদ্রপথে অবরোধ জরুরি। এ জন্যই ম্যাডলিন ইয়টটি আটক করা হয়েছে। তবে এফএফসি বলছে, সমুদ্রপথ অবরোধ করাই অবৈধ।

এর আগে ২০১০ সালে ইসরায়েলি কমান্ডোরা ১০ জন তুর্কি অধিকারকর্মীকে হত্যা করেছিল। সে সময় তাঁরা ‘মাভি মারমারা’ নামের তুরস্কের একটি জাহাজে গাজার দিকে সাহায্য নিয়ে যাচ্ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত