Ajker Patrika

তীব্র বায়ুদূষণে কালো হয়ে আসছে দিল্লির লাল কেল্লা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
দিল্লিতে অবস্থিত মুঘল আমলের অন্যতম বিখ্যাত স্থাপত্য লাল কেল্লা। ছবি: ইনক্রিডেবল ইন্ডিয়া
দিল্লিতে অবস্থিত মুঘল আমলের অন্যতম বিখ্যাত স্থাপত্য লাল কেল্লা। ছবি: ইনক্রিডেবল ইন্ডিয়া

তীব্র বায়ুদূষণের কারণে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অবস্থিত মুঘল আমলের অন্যতম বিখ্যাত স্থাপত্য লাল কেল্লার দেওয়ালে ‘কালো আস্তরণ’ পড়েছে বলে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে। মুঘল সম্রাট শাহজাহানের নির্মিত লালকেল্লা দিল্লির অন্যতম বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা এবং জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র।

ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণার একদিন পর অর্থাৎ ১৯৪৭ সালের ১৬ আগস্ট এই কেল্লা থেকে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু। তখন থেকে প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রীরা স্বাধীনতা দিবসে লাল কেল্লায় ভাষণ দিয়ে আসছেন।

গবেষকরা জানিয়েছেন, দূষণ ও কেল্লার দেয়ালের লাল বেলেপাথরের রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে এই আবরণ তৈরি হয়েছে। এর পুরুত্ব ০.০৫ মিলিমিটার থেকে ০.৫ মিলিমিটার পর্যন্ত পাওয়া গেছে। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এটি লালকেল্লার সূক্ষ্ম নকশা ও কারুকাজ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ গবেষণার কথা তুলে ধরা হয়েছে। ১৭শ শতাব্দীর এই স্থাপত্যের উপর বায়ুদূষণের প্রভাব নিয়ে এটিই প্রথম কোনো বিস্তারিত গবেষণা।

বায়ু মানের অবনতির কারণে দিল্লির নাম প্রায়শই বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহর হিসেবে খবরের শিরোনামে উঠে আসে, বিশেষ করে শীতকালে। রাজধানী দিল্লি ছাড়াও দেশের কয়েকটি রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার ওপর বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে সংরক্ষণবিদেরা এর আগেও সতর্ক করেছেন।

২০১৮ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ১৭শ শতাব্দীতে শ্বেতপাথরে নির্মিত সমাধি তাজমহল বায়ু ও জল দূষণের কারণে হলদেটে ও সবুজাভ-বাদামী রঙ ধারণ করেছে। ওই সময় আদালত উত্তর প্রদেশ রাজ্য সরকারকে এটি সংরক্ষণের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন।

চলতি বছরের জুন মাসে দিল্লির রেড ফোর্ট বা লাল কেল্লা নিয়ে এই গবেষণাটি পিয়ার-রিভিউড ওপেন অ্যাক্সেস সায়েন্স জার্নাল হেরিটেজে প্রকাশিত হয়। এই গবেষণাটি ভারত ও ইতালির গবেষকেরা ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে করেছিলেন।

গবেষকেরা ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দিল্লির বায়ু মানের তথ্য বিশ্লেষণ করেন। এরপর লাল কেল্লার বিভিন্ন দেয়াল থেকে কালো আস্তরণ তুলে নিয়ে সেগুলোর উপাদান পরীক্ষা করেন।

তাঁরা দেখতে পান, বাতাসে থাকা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা এবং অন্যান্য দূষণকারী পদার্থ কেল্লার দেয়ালে কালো আস্তরণ তৈরি করেছে। এর ফলে একই সঙ্গে গম্বুজ, খিলান ও সূক্ষ্ম পাথরের নকশার মতো স্থাপত্য উপাদানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গবেষকরা দেয়ালে ফোসকা পড়া এবং আস্তরণ ওঠারও প্রমাণ পেয়েছেন।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ‘পিএম ২.৫ এবং পিএম ১০ (এক ধরনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা) খোলা জায়গায় থাকা বস্তুগুলোর পৃষ্ঠতলের দাগ বা কালচে হয়ে যাওয়ার অন্যতম বড় কারণ হিসেবে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। এই কণাগুলো সময়ের সাথে সাথে জমতে থাকে, যার ফলে দৃশ্যমান বিবর্ণতা ও কালচে আস্তরণ পড়ে।

গবেষণায় লাল কেল্লা দ্রুত সংরক্ষণের পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।

গবেষকেরা আরও বলেছেন, ‘কালো আস্তরণ পড়া একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি সাধারণত একটি পাতলা কালো স্তর বা জমাট বাঁধা পদার্থের মাধ্যমে শুরু হয়। আর একদম শুরুতে ব্যবস্থা নেওয়া হলে এটি অপসারণ করা সম্ভব।’

এছাড়া, মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলোতে কালো আস্তরণ পড়া প্রতিরোধ বা এর গতি কমানোর জন্য পাথর সংরক্ষণের বিশেষ প্রলেপ বা সিল্যান্ট ব্যবহারের কথাও বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ‘সন্ত্রাসী খেল’ ফাঁস করে দিলেন জঙ্গিগোষ্ঠী জইশের সদস্য

বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে আসিফ নজরুলের পুরোনো ফেসবুক পোস্ট নতুন করে ভাইরাল করলেন হাসনাত

বাংলাদেশসহ ৫ প্রতিবেশীকেই নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছে ভারত

‘সোহরাব-রুস্তম’ সিনেমায় ইলিয়াস কাঞ্চনের নায়িকার জীবনের করুণ অবসান!

সোনার দাম বেড়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ছুঁই ছুঁই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত