Ajker Patrika

ভারতের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় উৎপাদন বন্ধ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভারতের পোশাক শিল্প। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পোশাক শিল্প। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্য রপ্তানিতে ৫০ শতাংশ শুল্ক গতকাল বুধবার থেকে কার্যকর হয়েছে। নতুন এ শুল্ক আরোপের পর ইতিমধ্যেই গুজরাট, তামিলনাড়ু, উত্তর প্রদেশসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে বহু পোশাক কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।

এই অনিশ্চিত পরিস্থিতি ব্যবসায়ী ও তাঁদের জীবিকার ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলছে, তা খতিয়ে দেখতে ভারতের প্রধান রপ্তানি কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখেছেন বিবিসি সংবাদদাতারা। টার্গেট, ওয়ালমার্ট, গ্যাপ ও জারার মতো ব্র্যান্ডের জন্য ১৬ বিলিয়ন ডলারের যে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে ভারত, তার এক-তৃতীয়াংশ তৈরি হয় তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুরে। কিন্তু এই মুহূর্তে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন শহরের প্রতিষ্ঠানগুলো।

একটি পোশাক কারখানার মালিক এন কৃষ্ণমূর্তি জানান, ক্রেতারা সব অর্ডার বন্ধ করে দিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, সেপ্টেম্বরের পর থেকে আর কিছু করার থাকবে না। ব্যবসা বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল এই ব্যবসায়ীর। সে জন্য নতুন কর্মীও নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু মার্কিন শুল্ক আরোপের পর তাঁর পুরো পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। নতুন করে নিয়োগ পাওয়া ২৫০ কর্মীকেও বসিয়ে রাখতে হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক, চিংড়ি, রত্ন-গয়নাসহ বিভিন্ন পণ্যের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক দেশগুলোর একটি ভারত। রপ্তানিকারকদের সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনস (এফআইইও) বলছে, বাড়তি শুল্কের ফলে রপ্তানি ব্যয় যে পরিমাণ বেড়েছে, তাতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আর সম্ভব হচ্ছে না। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে একের পর এক অর্ডার বাতিল হচ্ছে, উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

সংগঠনের সভাপতি এস সি রালহান বলেন, ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র সরকার অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এতে মোট শুল্কের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। ফলে টেক্সটাইল ও পোশাক কারখানাগুলোয় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।

এস সি রালহান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতীয় পণ্যের দাম ৩০-৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ফলে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের পক্ষে চীন, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্য দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা আর সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে টেক্সটাইল খাত প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে বাজার হারাচ্ছে।

শুধু পোশাকই নয়; চামড়া, হস্তশিল্প, সিরামিক, কেমিক্যাল, কার্পেটসহ অন্যান্য শ্রমনির্ভর খাতও একই সংকটে পড়েছে। রালহান বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির কারণে এসব খাতে প্রতিযোগিতা কমে গেছে। অর্ডার বাতিল হচ্ছে, রপ্তানি কমে যাচ্ছে।

সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে সামুদ্রিক খাবার রপ্তানিতে। এত দিন ধরে ভারত থেকে এই খাতের রপ্তানির প্রায় ৪০ শতাংশই যেত যুক্তরাষ্ট্রে। এখন শুল্ক বৃদ্ধির ফলে সেখানেও হতাশা নেমে এসেছে। ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে এই খাতসংশ্লিষ্টদের।

এফআইইও বলছে, উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলাতে জরুরি সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। ভর্তুকি ও ঋণ সহায়তার মতো পদক্ষেপ নেওয়া না হলে বিপুলসংখ্যক শ্রমিকের চাকরি ঝুঁকির মুখে পড়বে।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ৪০-৪৫ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ২০২৪-২৫ সালের প্রায় ৮৭ বিলিয়ন ডলার থেকে এবার ৫০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

আসামে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বহাল থাকবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত