Ajker Patrika

মৃতদের জীবিত করার দাবি করেছিলেন উত্তর প্রদেশের সেই ভোলে বাবা

আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২৪, ১৩: ১১
মৃতদের জীবিত করার দাবি করেছিলেন উত্তর প্রদেশের সেই ভোলে বাবা

উত্তর প্রদেশের হাতরাশে একটি আশ্রমে পদদলিত হয়ে ১২১ জন মারা যাওয়ার ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলে বাবা বা নারায়ণ সকার হরি ওরফে সুরাজ পাল। এই ব্যক্তি অতীতে নিজেকে ‘অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন’ বলে দাবি করেছেন। এমনকি তিনি মৃতদের জীবিত করারও দাবি করেছিলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ভোলে বাবা ২০০০ সালে একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মৃতকে জীবিত করার চেষ্টার অভিযোগে। সে সময় তিনি ১৬ বছরের এক মৃত কিশোরীর মরদেহ তার পরিবারের কাছ থেকে জোর করে নিয়ে গিয়েছিলেন। যদিও তিনি কিশোরীটিকে জীবিত করতে পারেননি। এই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল। পরে সেই মামলা অবশ্য বন্ধ হয়ে যায়।

নারায়ণ সকার বিশ্ব হরি বা ভোলে বাবাকে তাঁর ভক্তরা একজন নিরাময়কারী, অলৌকিক শক্তির অধিকারী, দুষ্ট আত্মা থেকে মুক্তিদানকারী ধর্মগুরু হিসেবে মনে করে। ভক্তরা তাঁকে তাদের ইচ্ছাপূরণকারী হিসেবেও বিবেচনা করে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই ভোলে বাবার অনুসারীদের প্রায় সবাই দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ, যাদের মধ্যে শিক্ষার হার খুবই অল্প।

ভোলে বাবার বিষয়ে তাঁর ভক্ত ঊর্মিলা দেবী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘বাবা (ভক্তদের কাছ থেকে) কিছু নেন না বা চান না। তাঁর সৎসঙ্গে তিনি আমাদের বলতেন মিথ্যা না বলতে এবং মাংস, মাছ, ডিম ও অ্যালকোহল সেবন না করতে।’ আরও মজার ব্যাপার হলো, ভক্তদের দাবি, মঙ্গলবার হাতরাশে যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল, সে বিষয়ে ভোলে বাবা আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন।

এ বিষয়ে ঊর্মিলার বোন তারামতি বলেন, ‘সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই ভোলে বাবা বলেছিলেন, “আজ প্রলয় আসবে” এবং এরপর ঠিকই প্রলয় চলে এসেছে।’ তারামতি মূলত হাতরাশে পদদলিত হয়ে ১২১ জনের মৃত্যুর ঘটনাকে ইঙ্গিত করে এ কথা বলেন।

এ ছাড়া, ভোলে বাবার ভক্তদের মধ্যে বিশ্বাস ছিল যে তাঁর পদধূলি নিয়ে তা গায়ে মাখলেই মানুষের সব ধরনের অসুস্থতা দূর হয়ে যাবে। এ বিষয়ে ভোলে বাবার ভক্ত ও অটোরিকশাচালক বিবেক ঠাকুর বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, আপনি যদি তাঁর (ভোলে বাবার) পায়ের ধুলো আপনার গায়ে এবং কপালে মাখান তাহলে আপনার সব অসুস্থতা দূর হয়ে যাবে।’ এদিকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান শেষে ভোলে বাবার প্রস্থানের সময় তাঁর পায়ের ধূলি নিতে গিয়ে ভক্তদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। আর এতেই পদদলনের ঘটনা ত্বরান্বিত হয়।

হাতরাশের সোখানা গ্রামের বাসিন্দারা বলেন যে ‘ভোলে বাবা’ জাদুবিদ্যার চর্চা করতেন। তবে এসব চর্চার বেশির ভাগই হতো অল্পবয়সী মেয়েদের ওপর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী দাবি করেছেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) সৎসঙ্গে ১০০ জনেরও বেশি লোক গিয়েছিল, যাদের ওপর ভূতের আছর ছিল এবং তিনি তাদের সবাইকে সুস্থ করে তুলেছিলেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত