Ajker Patrika

পশু প্রেম থেকে টাটার বন্ধু শান্তনু, এবার কোম্পানির শীর্ষপদে

রতন টাটার শেষ সময়ের ‘ছায়াসঙ্গী’ শান্তনু। ছবি: এনডিটিভির সৌজন্যে
রতন টাটার শেষ সময়ের ‘ছায়াসঙ্গী’ শান্তনু। ছবি: এনডিটিভির সৌজন্যে

পশু প্রেমের জন্য বেশ পরিচিতি ছিল টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান রতন টাটার। পথে থাকা কুকুর-বিড়ালের জন্য টাটার সদর দপ্তর বোম্বে হাউসে আশ্রয়ের ব্যবস্থাও করেছিলেন তিনি। অন্যদিকে শান্তনু নাইডু নামে এক তরুণ অটোমোবাইল ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার দ্রুতগতির যানবাহন থেকে গৃহহীন কুকুর-বিড়ালের জীবন কীভাবে রক্ষা করা যায়—তা নিয়ে এক বিশেষ প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেন। শান্তনুর এই উদ্যোগে মুগ্ধ হয়ে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন রতন টাটা। সেই থেকে তাঁদের মধ্যে বাড়ে ঘনিষ্ঠতা। পরবর্তীতে শান্তনুর পরামর্শক, কর্মদাতা ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় এই শিল্পপতি।

গত বছর রতন টাটার মৃত্যুতে এই বন্ধুত্বে ভাঙন এলে টাটার সঙ্গে সম্পর্ক রয়ে গিয়েছিল শান্তনু নাইডুর। এবার টাটা মোটরসের জেনারেল ম্যানেজার ও স্ট্র্যাটেজিক ইনিশিয়েটিভস প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেলেন রতন টাটার শেষ সময়ের ‘ছায়াসঙ্গী’ শান্তনু।

অটোমোবাইল ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার শান্তনু নাইডু। ছবি: লিংকডইন
অটোমোবাইল ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার শান্তনু নাইডু। ছবি: লিংকডইন

পেশাজীবীদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে এক আবেগঘন পোস্টের মাধ্যমে এই খবরটি শেয়ার করেছেন শান্তনু। তিনি লিখেছেন, ‘আনন্দের সংবাদ এই যে, আমি টাটা মোটরসে জেনারেল ম্যানেজার ও স্ট্র্যাটেজিক ইনিশিয়েটিভসের প্রধান হিসেবে একটি নতুন যাত্রা শুরু করেছি। আমার মনে আছে, সাদা শার্ট আর নেভি প্যান্ট পরা আমার বাবা যখন টাটা মোটরসের প্ল্যান্ট থেকে ফিরতেন, তখন জানালার কাছে বসে তাঁর জন্য অপেক্ষা করতাম আমি। জীবন যেখান থেকে শুরু হয়েছিল, সেখানেই ফিরেছে। এখন তা পূর্ণতা পেল।’

শান্তনু নাইডু এর আগে টাটা গ্রুপের স্টার্টআপ ও সামাজিক উদ্যোগ সংক্রান্ত প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। ২০১৪ সালে সাবিত্রীবাই ফুলে পুনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ২০১৬ সালে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন।

২০১৮ সালে রতন টাটার সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। খুব শিগগিরই তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এক ভিডিওতে রতন টাটার জন্মদিনে নাইডুকে গান গাইতে দেখা যায়। ভিডিওতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়।

শান্তনু নাইডু তাঁর ‘আই কেম আপঅন অ্যা লাইটহাউস’ বইয়ে রতন টাটার সঙ্গে নিজের বন্ধুত্বের মুহূর্তগুলো তুলে ধরেছিলেন। টাটার ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি রতন টানা ও শান্তনুর একসঙ্গে কাটানো মুহূর্ত, ব্যক্তিত্ব, অ্যাডভেঞ্চার গুলো উঠে আসে এই বইতে। নাইডু যখন এই বইটি লিখতে চান তখন রতন টাটা সম্মতি দিয়ে বলেন, ‘আমার জীবনকে সম্পূর্ণভাবে তুলে ধরার জন্য একটি বই কখনোই যথেষ্ট হবে না।’

ভারতে একাকী বসবাসকারী প্রবীণদের জন্য পাশে থাকতে ২০২১ সালে শান্তনু নাইডু ‘গুডফেলোজ’ নামে একটি স্টার্টআপ শুরু করেন। রতন টাটাও তাঁর এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছিলেন।

রতন টাটা তাঁর উইলে প্রিয় বন্ধুর প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে শান্তনুর শিক্ষাঋণ সম্পূর্ণভাবে মওকুফ করে দেন।

২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর ৮৬ বছর বয়সে রতন টাটা মারা যান। প্রিয় বন্ধু ও পথপ্রদর্শকের প্রয়াণে শান্তনু নাইডু লিংকডইনে একটি আবেগঘন শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, ‘আমার জীবনে বন্ধুত্বের এই শূন্যতা সারা জীবনেও পূরণ হওয়ার নয়। শোকের মধ্য দিয়ে ভালোবাসার প্রকাশ করতে হবে। বিদায়, আমার প্রিয় লাইটহাউস।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত