Ajker Patrika

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন

চীনের সীমান্তঘেঁষা লাদাখের বিক্ষোভেও জেন-জিরা, ভারত কি উদ্বিগ্ন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২: ০৯
লাদাখের লেহ শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
লাদাখের লেহ শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

রাজ্যের মর্যাদা ও চাকরিতে স্থানীয়দের কোটার দাবিতে চীনের সীমান্তঘেঁষা লাদাখের লেহ শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত ও ৭০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যদিও সপ্তাহ ধরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলছিল, কিন্তু আজ তা সহিংসতায় রূপ নেয়। এরপরই শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুক শান্তিপূর্ণভাবে এই প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি আজকের ঘটনাকে ‘তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটিকে ‘জেন-জি বিপ্লব’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে আজকের সহিংসতার ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেছে।

এই বিক্ষোভ ও সহিংসতা কেন হলো এবং এর পেছনে কারা রয়েছে তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো—

কেন হচ্ছে এই বিক্ষোভ?

জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে একটি দল ১০ সেপ্টেম্বর থেকে অনশন করছিল। তাদের মূল দাবি হলো, লাদাখকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা।

সোনম ওয়াংচুক আজ বুধবার তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এই তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই তাদের রাস্তায় নামিয়ে এনেছে। গত পাঁচ বছর ধরে তারা বেকারত্বের শিকার, নানা অজুহাতে বারবার তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে এবং লাদাখের দাবিগুলো পূরণ করা হয়নি। আমি বলব, এটি সামাজিক অস্থিরতার একটি ক্ষেত্র। অনেকে মনে করেন, এরা শুধু আমাদের সমর্থক, কিন্তু বাস্তবে পুরো লাদাখ আমাদের এবং এই দাবির সঙ্গে আছে। এটি ছিল একটি জেন-জি বিপ্লব।’

তিনি তরুণদের সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘সহিংসতা আমাদের পাঁচ বছরের প্রচেষ্টাকে নষ্ট করে দেবে। এটা আমাদের পথ নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সরকারের কাছে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে চাই।’

কেন্দ্র সরকার ও লাদাখের প্রতিনিধি দলের মধ্যে রয়েছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি) এবং কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (কেডিএ) সদস্যরা। তাদের পরবর্তী বৈঠক ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

ভারতের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের উপজাতি এলাকার প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করে। এই বিশেষ বিধানটি স্বায়ত্তশাসিত জেলা কাউন্সিলের মাধ্যমে এই অঞ্চলগুলোকে আইন প্রণয়ন, জমি ও বন ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় শাসনব্যবস্থার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। এর উদ্দেশ্য হলো উপজাতিদের অধিকার, ঐতিহ্য ও স্বশাসনকে রক্ষা করা। উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, লাদাখের জনসংখ্যার প্রায় ৯৭ শতাংশই তফসিলি উপজাতি ভুক্ত।

কারা এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে?

রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে লাদাখের লেহতে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি)। এটি বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত একটি জোট।

দা হিন্দুর গত ১০ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোনম ওয়াংচুক দীর্ঘদিন ধরে লাদাখের অধিকার ও উন্নয়নের পক্ষে কাজ করছেন। তিনি এই জোটের একজন সদস্য। ওয়াংচুক অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে মিলে একটি অনশনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যাতে কেন্দ্রের সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনার মাধ্যমে লাদাখের দীর্ঘদিনের দাবিগুলো পূরণ করা যায়।

দা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার অনশন চলাকালীন একজন বয়স্ক নারী ও একজন পুরুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে এলএবি’র যুব শাখা বুধবার লেহতে বনধের (হরতাল) ডাক দেয়। এরপরই এলএবি-এর তত্ত্বাবধানে বিজেপির কার্যালয়ের সামনে বিশাল জনসমাগম হয়। এরপরই সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

আন্দোলনে কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সও (কেডিএ) অংশ নিয়েছে, যারা এলএবি-এর দাবিগুলোকে সমর্থন করে। কেডিএ আগামীকাল ২৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলজুড়ে সংহতি কার্যক্রম ও বনধের ডাক দিয়েছে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এই দুটি সংগঠন গত চার বছর ধরে একসঙ্গে আন্দোলন করছে এবং সরকারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনাতেও বসেছে। কিন্তু এরপরও কোনো সমাধান আসেনি।

কেন বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে দোষারোপ করছে?

বিজেপি নেতা অমিত মালব্য লেহর সহিংসতার ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন। তিনি এক্সে একটি ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘লাদাখে দাঙ্গা সৃষ্টিকারী এই ব্যক্তি হলেন লেহ ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর। সে জনতাকে উসকে দিয়ে বিজেপির কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলে হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রাহুল গান্ধী কি এই ধরনের অস্থিতিশীলতার কথাই কল্পনা করেছিলেন?’

অন্যদিকে, কংগ্রেসের এক সমর্থক লিখেছেন, ‘সোনম ওয়াংচুকের অনশনের কয়েক দিন পর আজ জেন-জি যুবকেরা পূর্ণ শক্তিতে রাস্তায় নেমেছে এবং বিজেপিকে বাস্তব পরিস্থিতি দেখিয়ে দিয়েছে।’

এর আগে কংগ্রেস সাংসদ ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ভারতের তরুণ এবং জেন-জিদের প্রতি গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার আহ্বান জানিয়েছিলেন। নেপালে জেন-জিদের সহিংস বিক্ষোভের কারণে সরকারের পতনের পরেই এই মন্তব্য করেন রাহুল। বিজেপি নেতারা রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের সমালোচনা করে অভিযোগ করেছেন, তিনি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।

জেন-জিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

অনেকেই লাদাখের এই বিক্ষোভকে জেন-জিদের আন্দোলন বলে দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক ব্যক্তি লেহের একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘জেন-জিরা লাদাখের রাস্তায় নেমেছে।’ স্থানীয় আরেকজন উদ্যোক্তা অভিযোগ করেছেন, ‘লাদাখের জেন-জি বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয়ে আগুন দিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে।’

কিছু ব্যক্তি নেপালের সাম্প্রতিক উত্থানের সঙ্গেও লাদাখের এই বিক্ষোভের তুলনা করেছেন, যেখানে জেন-জিরা অলি সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছিল। দা প্রোটাগনিস্ট নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘এটা নেপাল নয়। এটা লাদাখ।’

এদিকে, সোনম ওয়াংচুক আজকের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘লেহতে খুবই দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বার্তা আজ ব্যর্থ হলো। আমি তরুণদের এই নির্বোধ কাজ বন্ধ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি কেবল আমাদের উদ্দেশ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’

আজ লাদাখে কী ঘটেছিল?

লেহতে আজ বুধবার পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। ১৫ দিনের অনশন শেষ করে ওয়াংচুক মঙ্গলবার তাঁর সমর্থকদের সহিংসতা এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ৬ অক্টোবর দিন ধার্য ছিল, কিন্তু বিক্ষোভকারীরা অনশনকারীদের স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে আলোচনার তারিখ এগিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছিলেন।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বুধবার এনডিএস মেমোরিয়াল গ্রাউন্ডে বিশাল জনসমাগম হয়। সেখান থেকে শত শত বিক্ষোভকারী শহরজুড়ে মিছিল করে। তারা লাদাখকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্তির সমর্থনে স্লোগান দেয়।

বিক্ষোভকারীরা যখন বিজেপির কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলে পাথর নিক্ষেপ করা শুরু করে, তখন উত্তেজনা বেড়ে যায়। পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। বিজেপির কার্যালয় ছাড়াও বেশ কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও কাগজপত্র পুড়িয়ে দেয়।

পরে অতিরিক্ত বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং কয়েক ঘণ্টার সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়, তবে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সহিংসতার পর কর্তৃপক্ষ ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ১৬৩ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সমাবেশ নিষিদ্ধ করে কারফিউ জারি করেছে।

এই সহিংসতার কারণে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক লাদাখ উৎসবও মাঝপথে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। কর্মকর্তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘অনিবার্য কারণে’ উৎসব বাতিল করা হয়েছে। তারা স্থানীয় শিল্পী, সাংস্কৃতিক দল ও পর্যটকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

হঠাৎ করে ফুঁসে ওঠা এই সহিংস বিক্ষোভে ভারত কতটা উদ্বিগ্ন?

কৌশলগতভাবে লাদাখ ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে এর আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে, যা এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাফার জোন এবং প্রতিরক্ষার জন্য একটি সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে গড়ে তুলেছে। তাই দিল্লির জন্য লাদাখের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগের।

কার্গিল যুদ্ধের মতো সামরিক সংঘাত, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য এই অঞ্চলের তাৎপর্য অনেক। কৌশলগত দিক থেকে চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলটিকে সব সময় ভারতের নজরে রাখতে হয়।

চীনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর লাদাখের অবস্থান। এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা। এখানে অসংখ্যবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যেমন গালওয়ান উপত্যকায়।

লাদাখের দুর্গম ভূখণ্ড এবং উঁচু স্থান ভারতের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের মতো সামরিক সংঘাত এই অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছিল। সর্বোপরি, সীমান্তবর্তী অঞ্চল হিসেবে আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের জন্য লাদাখের নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাইমা রহমানের সেলফিতে যে বই নিয়ে আলোচনায় মেতেছে নেটিজেনরা

গণসংবর্ধনা মঞ্চ থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের পথে তারেক রহমান

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

বিমানবন্দরে পরিবারের সঙ্গে আবেগাপ্লুত তারেক রহমান

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে ৩৫০০ কিমি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নিজেদের পারমাণবিক সক্ষমতার প্রদর্শন হিসেবে পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে একটি মধ্যপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত। কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রটি গত মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে ভারতের পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন আইএনএস আরিঘাত থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। বিশাখাপত্তনম উপকূলের কাছে এই পরীক্ষা চালানো হয়।

এনডিটিভি জানিয়েছে, সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের নৌভিত্তিক পারমাণবিক সক্ষমতাকে বেশ শক্তিশালী করেছে।

কে-৪ সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট ভারতীয় নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এর মাধ্যমে স্থল, আকাশ ও সমুদ্র—এই তিন মাধ্যম থেকে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম দেশগুলোর তালিকায় জায়গা করে নেয় ভারত।

অগ্নি-৩ স্থলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে তৈরি কে-৪ বর্তমানে ভারতের সর্বাধিক পাল্লার সমুদ্রভিত্তিক কৌশলগত অস্ত্র। স্থল সংস্করণটিকে সমুদ্র থেকে উৎক্ষেপণের উপযোগী করে পরিবর্তন করা হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে সাবমেরিনের উৎক্ষেপণ সাইলো থেকে বেরিয়ে পানির ভেতর ভেসে উঠে সমুদ্রপৃষ্ঠে পৌঁছানোর পর রকেট ইঞ্জিন চালু করে আকাশে ছুটে যাওয়ার সক্ষমতা।

এই ক্ষেপণাস্ত্র ২ দশমিক ৫ টন ওজনের পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম এবং ভারতের অরিহন্ত শ্রেণির সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা যায়।

কে-৪ হলো ভারতের পারমাণবিক ত্রিমাত্রিক প্রতিরোধব্যবস্থার সবচেয়ে নীরব অংশ। কারণ, অরিহন্ত শ্রেণির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিনগুলো দীর্ঘ সময় ধরে অচেনা সমুদ্রাঞ্চলে সম্পূর্ণ নীরবে প্রতিরোধ টহল পরিচালনার জন্য তৈরি।

কে-সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর নামের ‘কে’ অক্ষরটি ভারতের সাবেক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির রূপকার এ পি জে আবদুল কালামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাখা হয়। ভারতের সমন্বিত ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাইমা রহমানের সেলফিতে যে বই নিয়ে আলোচনায় মেতেছে নেটিজেনরা

গণসংবর্ধনা মঞ্চ থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের পথে তারেক রহমান

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

বিমানবন্দরে পরিবারের সঙ্গে আবেগাপ্লুত তারেক রহমান

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চীনে এক সন্তান নীতির প্রবক্তার মৃত্যু, শ্রদ্ধার চেয়ে সমালোচনাই বেশি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৬
চীনের পরিবার পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক প্রধান পেং পেইইউন (মাঝে)। ছবি: সংগৃহীত
চীনের পরিবার পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক প্রধান পেং পেইইউন (মাঝে)। ছবি: সংগৃহীত

চীনে বিতর্কিত এক সন্তান নীতির প্রবক্তা পেং পেইইউনের মৃত্যুতে শ্রদ্ধা নিবেদনের বদলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নীতিটি ঘিরে তীব্র সমালোচনা দেখা গেছে। গত রোববার বেইজিংয়ে ৯৬তম জন্মদিনের ঠিক আগমুহূর্তে পেংয়ের মৃত্যুতে চীনাদের প্রতিক্রিয়া অনেকটা নেতিবাচক।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে পেং পেইইউনকে নারী ও শিশুবিষয়ক কাজে ‘একজন অসাধারণ নেতা’ হিসেবে প্রশংসা করা হয়েছে। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত চীনের পরিবার পরিকল্পনা কমিশনের প্রধান ছিলেন তিনি।

তবে চীনের জনপ্রিয় মাইক্রো ব্লগিং ওয়েবসাইট ওয়েইবোতে একজন লিখেছেন, ‘ভূমিষ্ঠ হতে না পারা শিশুরা ওপারে নগ্ন দেহে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।’

এনডিটিভি জানিয়েছে, ১৯৮০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চীনে দম্পতিদের কেবল একটি সন্তান নেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা ছিল, তা কার্যকর করতে স্থানীয় কর্মকর্তারা অনেক ক্ষেত্রে নারীদের গর্ভপাত ও বন্ধ্যাকরণ করতে বাধ্য করতেন।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, এমন আশঙ্কায় বেইজিং এই এক সন্তান নীতি চালু করেছিল।

এর ফলে দীর্ঘ সময় বিশ্বের সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশ থাকার পর চীনের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার শ্লথ হয়ে পড়ে এবং গত বছর টানা তৃতীয়বারের মতো জনসংখ্যা পড়তির দিকে ছিল।

ওয়েইবোতে একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘যদি এই নীতি অন্তত ১০ বছর আগে শেষ করা হতো, তাহলে চীনের জনসংখ্যা আজ এভাবে ধসে পড়ত না!’

গত বছর চীনের জনসংখ্যা কমে ১৩৯ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সামনের বছরগুলোতে এই নিম্নগতি আরও ত্বরান্বিত হবে।

জনসংখ্যার নীতিনির্ধারক হিসেবে পেং জোর দিয়েছিলেন গ্রামীণ এলাকায়। একসময় চীনের গ্রামগুলোতে বড় পরিবার গড়ে তোলা দম্পতিদের প্রধান লক্ষ্য ছিল, যাতে বৃদ্ধ বয়সে সন্তানেরা তাঁদের দেখাশোনা করতে পারে। এ ছাড়া বংশ রক্ষার জন্য ছেলেসন্তানের প্রতি ঝোঁক বেশি থাকায় মেয়েশিশুদের অবহেলা, এমনকি কন্যা ভ্রূণ হত্যার মতো ঘটনা প্রায়ই ঘটত।

ওয়েইবোতে একজন লিখেছেন, ‘ওই শিশুগুলো যদি জন্ম নিত, তাহলে আজ তাদের বয়স প্রায় ৪০ হতো—জীবনের সেরা সময়।’

২০১০-এর দশকে এসে পেং প্রকাশ্যে তাঁর অবস্থান বদলান এবং বলেন, এক সন্তান নীতি শিথিল করা উচিত। বর্তমানে বেইজিং কমে যাওয়া জন্মহার বাড়াতে শিশু পরিচর্যা ভর্তুকি, দীর্ঘ মাতৃত্বকালীন ছুটি ও করছাড়ের মতো উদ্যোগ নিচ্ছে।

জনসংখ্যা হ্রাস ও বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি চীনের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। দেশটিতে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে গেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাইমা রহমানের সেলফিতে যে বই নিয়ে আলোচনায় মেতেছে নেটিজেনরা

গণসংবর্ধনা মঞ্চ থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের পথে তারেক রহমান

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

বিমানবন্দরে পরিবারের সঙ্গে আবেগাপ্লুত তারেক রহমান

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কম্বোডিয়ায় বিষ্ণুমূর্তি গুঁড়িয়ে দিল থাই সেনারা, ভারতের তীব্র নিন্দা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৫
একটি ব্যাকহো লোডার দিয়ে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ছবি: স্ক্রিনশট
একটি ব্যাকহো লোডার দিয়ে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ছবি: স্ক্রিনশট

কম্বোডিয়ায় হিন্দু দেবতার মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে চলমান সীমান্ত সংঘাতের জেরে থাই সেনাবাহিনী এটি ধ্বংস করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই ঘটনাকে ‘অসম্মানজনক’ বলে অভিহিত করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্ত বিরোধপূর্ণ এলাকায় সম্প্রতি নির্মিত একটি হিন্দু দেবতার মূর্তি ধ্বংসের খবর আমাদের নজরে এসেছে। এই অঞ্চলের মানুষের কাছে হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতার ঐতিহ্যের অংশ। এই ধরনের কাজ সারা বিশ্বের অনুসারীদের মনে আঘাত দেয়, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি ব্যাকহো লোডার দিয়ে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কম্বোডিয়ার প্রেহ বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা জানান, ২০১৪ সালে নির্মিত মূর্তিটি থাইল্যান্ড সীমান্ত থেকে মাত্র ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার সীমানায় ছিল। তিনি এই ঘটনাকে প্রাচীন ও পবিত্র স্থাপত্যের ওপর আঘাত হিসেবে নিন্দা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত জুলাই মাস থেকে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলেও চলতি মাসে পুনরায় সংঘাত শুরু হয়েছে। নয়াদিল্লি মনে করে, কূটনৈতিক সংলাপের মাধ্যমেই জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্পদের বিনাশ রোধ করা সম্ভব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাইমা রহমানের সেলফিতে যে বই নিয়ে আলোচনায় মেতেছে নেটিজেনরা

গণসংবর্ধনা মঞ্চ থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের পথে তারেক রহমান

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

বিমানবন্দরে পরিবারের সঙ্গে আবেগাপ্লুত তারেক রহমান

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন /৮০ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে গুদামে রাখার পরিকল্পনা ট্রাম্পের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কোস্টগার্ডের জাহাজ ভিগোরাসে আটক অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। ছবি: সংগৃহীত
কোস্টগার্ডের জাহাজ ভিগোরাসে আটক অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী আটক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ঠিকাদার খুঁজছে। এই পরিকল্পনায় বিশাল সব শিল্প গুদাম বা ওয়্যারহাউস সংস্কার করে একসঙ্গে ৮০ হাজারেরও বেশি অভিবাসীকে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের হাতে আসা এক খসড়া প্রস্তাবনার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।

বর্তমানে আটককৃতদের দেশের যেখানে জায়গা পাওয়া যায় সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) এখন সেই পদ্ধতি বদলে একটি সুশৃঙ্খল ‘ফিডার সিস্টেম’ বা সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায় যাতে দ্রুত দেশান্তর (ডিপোর্টেশন) নিশ্চিত করা যায়।

নথিতে বলা হয়েছে, নতুন গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের প্রথমে কয়েক সপ্তাহের জন্য প্রসেসিং সাইটে রাখা হবে। এরপর তাদের ৭টি বিশাল গুদামের কোনো একটিতে পাঠানো হবে, যার প্রতিটিতে ৫ থেকে ১০ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতা থাকবে। সেখান থেকেই মূলত তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হবে।

বিশাল এই গুদামগুলো ভার্জিনিয়া, টেক্সাস, লুইজিয়ানা, অ্যারিজোনা, জর্জিয়া এবং মিজৌরির প্রধান লজিস্টিক হাবগুলোর কাছাকাছি স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া ১৬টি ছোট গুদামে দেড় হাজার করে মানুষ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।

মার্কিন স্বরাষ্ট্র বিভাগ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্র ট্রিশা ম্যাকলাফলিন জানিয়েছেন, তিনি ওয়াশিংটন পোস্টের এই প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারছেন না এবং গুদাম পরিকল্পনা নিয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতেও রাজি হননি। তবে এর আগে এনবিসি এবং ব্লুমবার্গ নিউজ গুদামগুলোকে আটক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে আইসিই-এর অভ্যন্তরীণ আলোচনার খবর দিয়েছিল।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লাখ লাখ অভিবাসীকে আটক ও বিতাড়ন অভিযানের পরবর্তী পদক্ষেপ হলো এই গুদাম পরিকল্পনা। এ বছর কংগ্রেস অভিবাসীদের আটকে রাখার জন্য ৪৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। সেই অর্থ ব্যবহার করে প্রশাসন পরিত্যক্ত কারাগার সচল করেছে, সামরিক ঘাঁটির অংশ বিশেষ সংস্কার করেছে এবং রিপাবলিকান গভর্নরদের সঙ্গে মিলে দুর্গম এলাকায় অভিবাসীদের জন্য তাঁবু শিবির তৈরি করেছে।

বর্ডার জার টম হোমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছেন, চলতি বছর প্রশাসন ৫ লাখ ৭৯ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। আইসিই-এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টড এম লিয়নস গত এপ্রিলে এক সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আমাদের এটাকে ব্যবসার মতো পরিচালনা করতে শিখতে হবে।’ প্রশাসনের লক্ষ্য হলো আমাজন যেভাবে তাদের প্যাকেজ পৌঁছে দেয়, ঠিক সেভাবেই অভিবাসীদের দ্রুত ফেরত পাঠানো।

তবে রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুদামে বিপুলসংখ্যক মানুষকে রাখা লজিস্টিক সমস্যা তৈরি করবে। এসব স্থাপনা মূলত মালামাল রাখার জন্য তৈরি, মানুষের বসবাসের জন্য নয়। সেখানে বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা বা সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের অভাব থাকে। এ ছাড়া আবাসিক এলাকা থেকে দূরে হওয়ায় হাজার হাজার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা সেখানে নাও থাকতে পারে।

নিউ অরলিন্সের একজন অধিকারকর্মী তানিয়া উলফ বলেন, ‘এটি অমানবিক। মানুষকে পশুর মতো বিবেচনা করা হচ্ছে।’ আইসিই অবশ্য বলছে, তারা এই কাঠামোতে অনেক পরিবর্তন আনবে। সেখানে গোসলখানা, টয়লেট, রান্নাঘর, ডাইনিং এরিয়া, মেডিকেল ইউনিট এবং বিনোদন কেন্দ্রসহ প্রশাসনিক অফিস তৈরি করা হবে। কোনো কোনো কেন্দ্রে পরিবারের জন্য বিশেষ আবাসন ব্যবস্থাও থাকবে।

পরিকল্পিত গুদামগুলোর বেশির ভাগই রিপাবলিকান শাসিত এলাকায় হলেও দুটি বড় গুদাম ডেমোক্র্যাট শাসিত ভার্জিনিয়ার স্ট্যাফোর্ড এবং মিজৌরির ক্যানসাস সিটিতে করার কথা রয়েছে। আইসিই-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের শুরুতে আটক অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৬৮ হাজারেরও বেশি, যা এযাবৎকালের রেকর্ড। তাদের মধ্যে প্রায় ৪৮ শতাংশের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের সাজা বা অভিযোগ নেই।

অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা বলছেন, এত বড় স্থাপনা পরিচালনা করা কঠিন হবে। বিশেষ করে প্রশিক্ষিত নিরাপত্তা কর্মী ও চিকিৎসা কর্মী পাওয়া বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। যেমন, ফোর্ট ব্লিস সাইটে বর্তমানে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা কর্মীর মাত্র দুই-তৃতীয়াংশ নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। সাবেক আইসিই চিফ অব স্টাফ জেসন হাউজারের মতে, ‘গুদাম হয়তো অনেক পাওয়া যাবে, কিন্তু সেগুলো নিরাপদে চালানোর সক্ষমতা সব সময়ই জনবলের ওপর নির্ভর করে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাইমা রহমানের সেলফিতে যে বই নিয়ে আলোচনায় মেতেছে নেটিজেনরা

গণসংবর্ধনা মঞ্চ থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের পথে তারেক রহমান

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

বিমানবন্দরে পরিবারের সঙ্গে আবেগাপ্লুত তারেক রহমান

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত