Ajker Patrika

চীন-ভারত শত্রু নয়, অংশীদার হওয়া উচিত: দিল্লিতে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১৭: ৩৩
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ছবি: ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ছবি: ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ভারত ও চীনের একে অপরকে শত্রু বা হুমকি হিসেবে না দেখে বরং সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। দিল্লি সফরে গিয়ে এ কথা বলেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুই রাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান উত্তেজনা কমাতে এ সফর করছেন তিনি। ২০২০ সালে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর দুই দেশের মধ্যে এটি দ্বিতীয় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক।

গতকাল সোমবার দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত পৌঁছেছেন ওয়াং ই। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও দুই দেশের সম্পর্কে বরফ গলতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। বলেন, ‘আমরা আমাদের সম্পর্কের একটি কঠিন সময়কে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে চাইছি।’

গতকাল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। বৈঠকে বাণিজ্য, তীর্থযাত্রা, নদীসংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদানসহ দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সীমান্ত বিরোধ সমাধানের লক্ষ্যে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গেও বৈঠক করেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে ওয়াং ই বলেন, ‘সীমান্তে স্থিতিশীলতা ফিরেছে ভেবে ভালো লাগছে। গত কয়েক বছরে যে অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হয়েছে, তা কোনো পক্ষের জন্যই ভালো ছিল না।’

আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও ওয়াং ইর বৈঠকের কথা রয়েছে।

এর আগে গত বছরের অক্টোবরেও বিরোধপূর্ণ হিমালয় সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে টহলব্যবস্থা নিয়ে একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল দুই দেশ। এরপর থেকে দুই দেশ সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, চীন ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের জন্য তিব্বতের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ভ্রমণের অনুমতি দিয়েছে। ভারতও চীনা পর্যটকদের জন্য ভিসা পরিষেবা পুনরায় চালু করেছে এবং নির্ধারিত পথের মাধ্যমে সীমান্ত-বাণিজ্য পুনরায় শুরু করার আলোচনাতেও রাজি হয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছর দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পরিষেবা পুনরায় চালুর খবরও শোনা যাচ্ছে।

ওয়াং ইর এ সফর এমন এক সময়ে হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার কারণে ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছেন। এর ফলে মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে গিয়ে পৌঁছেছে, যা এশিয়ার দেশগুলোর ওপর ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কের মধ্যে সর্বোচ্চ। হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো এক মন্তব্যে ভারতের বিরুদ্ধে ‘রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের’ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ভারত যদি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বিবেচিত হতে চায়, তবে তাকে তেমনভাবেই আচরণ করতে হবে।

ওয়াং ইর সঙ্গে বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও বহু মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থা চাই, যার মধ্যে একটি বহু মেরুকেন্দ্রিক এশিয়াও থাকবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা জরুরি।’

চলতি মাসের শেষের দিকে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চীন যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত সাত বছরে এটিই হবে তাঁর প্রথম চীন সফর। শিগগির চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে মোদি বৈঠক করবেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত