আজকের পত্রিকা ডেস্ক

মুম্বাইয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প ঘিরে ভারতে নতুন করে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক বিতর্ক। চলতি মাসের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ভাইরাল হয় ‘সুকুন এম্পায়ার হালাল টাউনশিপ’ নামের ওই আবাসন প্রকল্পের বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, পেন্টহাউস, ইনফিনিটি পুলসহ নানা বিলাসবহুল সুবিধা রয়েছে ওই আবাসন প্রকল্পে।
ওই বিজ্ঞাপনে হিজাব পরিহিত এক নারী ‘অথেনটিক কমিউনিটি লিভিং’, ‘হালাল পরিবেশ’, ‘শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ’, ‘একই মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রতিবেশী’—ইত্যাদি সংলাপ ব্যবহার করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বর্ণনার সঙ্গে ভিজ্যুয়ালে দেখানো হয় টুপি পরা এক ব্যক্তি কোরআন পড়ছেন, ‘প্রার্থনার জায়গা’র কথা যখন উল্লেখ করা হয় তখন গম্বুজযুক্ত একটি স্থাপনার ভিজ্যুয়াল দেখানো হয়—মূলত সেটিকে মসজিদ বোঝানো হয়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরপরই হিন্দুদের একাংশ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।
বিশেষ করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের প্রবল ক্ষোভের কারণ হয়েছে এই বিজ্ঞাপন। তাদের ভাষ্য—এই প্রকল্পের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ উসকে দেওয়া হচ্ছে। সুকুন এম্পায়ার প্রকল্পটিকে ভারতের সংহতি বিনষ্টের একটি ‘গোপন ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করছে তারা। তারা বলছে, ভারতের আইন ও রীতির বাইরে এই প্রকল্পের মাধ্যমে আলাদা করে ‘শরিয়াহ ভিত্তিক সমান্তরাল ব্যবস্থা’ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
ব্যাপারটা এখানেই থামেনি। এই ইস্যুতে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন প্রিয়াংক কনুনগো ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিসকে বলেছেন, ‘এই প্রকল্প “দেশের মধ্যে দেশ” তত্ত্বের বাস্তবায়ন। আর এই বিজ্ঞাপন ইঙ্গিত দেয় যে মুসলিমরা অসহিষ্ণু। আজ তারা আলাদা টাউনশিপ চাচ্ছে, কাল মুসলিম চিকিৎসক চাইবে, এরপর মুসলিম পুলিশ চাইবে।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারতের শহরাঞ্চলে মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যকে নতুন করে সামনে এনেছে এই প্রকল্প। আর এই বৈষম্যের কারণেই শহরগুলোতে গেটো ধরনের কমিউনিটির চাহিদা বেড়েছে। শুধু নিরাপদ আবাসন নয়, ধর্ম চর্চার স্বাধীনতার জন্যও এই ধরনের প্রকল্পগুলোর চাহিদা বেড়েছে।
সুকুন এম্পায়ার প্রকল্পটি এমন সময়ে সামনে এসেছে, যখন ভারতে মুসলিমদের প্রকাশ্যে ধর্মীয় আচার পালন ক্রমশ বাধার মুখে পড়ছে। উদাহরণস্বরূপ, পার্ক বা অন্যান্য জায়গায় নামাজ পড়াকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না অনেক হিন্দু। এমন ঘটনায় পুলিশি পদক্ষেপও দেখা গেছে।
২০১৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর দেশটি ধর্মীয়ভাবে আরও বিভক্ত হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।
কিন্তু এরপরও এই ‘হালাল টাউনশিপ’গুলোকে সমর্থন করেন না অনেক মুসলিমও। তাঁদের আশঙ্কা, এতে ইসলামি রক্ষণশীলদের প্রভাব বাড়বে, ধর্মের কঠোর রূপ চাপানো হবে এবং ভারতের বহুসংস্কৃতির বৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ভারতের সংবিধান ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য নিষিদ্ধ করলেও, বাস্তবে দেশে আবাসনের ক্ষেত্রে বৈষম্য ব্যাপকভাবে দেখা যায়। শুধু ধর্ম নয়, বরং বর্ণ, বৈবাহিক অবস্থা, লিঙ্গ পরিচয়, এমনকি খাদ্যাভ্যাসের ভিত্তিতেও মানুষকে আবাসিক কমপ্লেক্সে অবাঞ্ছিত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সব শাকাহারী (নিরামিষাশী) কমপ্লেক্সে আমিষাশীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
২০২১ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দিল্লি ও মুম্বাইতে সাধারণ আবাসিক এলাকায় মুসলিমরা নিজেদের অবাঞ্ছিত মনে করছেন। সেখানে বাসা ভাড়া নিতে গিয়ে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন। তিন বছর ধরে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করে এমন পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে হাউজিং ডিসক্রিমিনেশন প্রজেক্টের এই গবেষণা প্রতিবেদনে।
গবেষণা প্রতিবেদনের সহ-লেখক ড. এম. মোহসিন আলম ভাট এবং আসাফ আলি লোন বলেন, ‘অনেক মুসলিম যাঁরা মুসলিম সংখ্যালঘু এলাকায় বাসা ভাড়া নেন, তাঁরা মূলত আগে অন্য জায়গায় বাড়িওয়ালাদের প্রত্যাখ্যানের শিকার হয়েছেন এবং পরবর্তীতে আরও প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কায় ওই সংখ্যালঘু এলাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করেছেন।’
দিল্লি ও মুম্বাইয়ে ৩৪০ জনের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে। রিয়েল এস্টেট এজেন্ট, বাড়িওয়ালা ও মুসলিম ভাড়াটিয়াদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গবেষকেরা। গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, প্রধানত খাদ্যাভ্যাস এবং ইসলামোফোবিয়ার (ইসলামভীতি) কারণে মুসলিমদের বাড়ি ভাড়া দিতে চান না হিন্দুরা। বিশেষ করে হিন্দুপ্রধান এলাকাগুলোতে মাসের পর মাস চেষ্টা করেও বাড়ি ভাড়া পাননি মুসলিমরা—এমন উদাহরণও অনেক।
লোন বলেন, ‘ভারতের শহরগুলোতে বাস্তবেই মুসলিমদের (ধর্মীয়) বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে।’
সারা ভারতে বছরের পর বছর ধরে ধর্ম ও সামাজিক মর্যাদার ভিত্তিতে নানা পাড়া গড়ে উঠেছে। মধ্য ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মুসলিমদের জন্য গেটেড কমিউনিটি বা গেটো (এক সময় ইউরোপে গড়ে ওঠা ইহুদিদের আলাদা বসতির মতো) এখন অনেক শহরে সাধারণ ঘটনা। গবেষক লোরাঁ গায়ার ও ক্রিস্টোফ জাফ্রেলো বলেন, এটি মূলত ভারতজুড়ে ‘সংগঠিত সহিংসতার ফল।’ উচ্চ-মধ্যবিত্তদের মধ্যেও বিভাজন দেখা যায়। মুম্বাইয়ে কিছু অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স অঘোষিতভাবে নির্দিষ্ট ধর্ম, বর্ণ ও ভাষার মানুষের জন্য সংরক্ষিত থাকে, যেমন—জৈন, ক্যাথলিক খ্রিষ্টান, বোহরা মুসলিম (ইসমাইলি শিয়া সম্প্রদায়) এবং গুজরাটি হিন্দু। দিল্লিতে জাতীয় রাজধানী অঞ্চলেও অন্তত দুটি গেটো শুধু মুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত বলে ধারণা করা হয়।
মুসলিম পেশাজীবী নারী মারিয়া সালিম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে জানিয়েছেন, ২০২০ সালে দিল্লিতে অ্যাপার্টমেন্ট খুঁজতে খুঁজতেই তাঁর পাঁচ মাস চলে গেছে! ব্রোকারদের অনেকেই তাঁকে জানাতেন, বাড়িওয়ালা মুসলিমদের ভাড়া দিচ্ছেন না। একজন তো বলেই বসেন যে মুসলিমেরা ভালো নয়।
আসাফ আলি লোন স্ট্রেইটস টাইমসকে বলেন, মুসলিমদের মধ্যে সুকুন এম্পায়ার-এর মতো আবাসিক প্রকল্পের চাহিদা মূলত এই বৈষম্যেরই ফল। তিনি বলেন, ‘যদি মুসলিমদের আলাদা কলোনিতে থাকতে বাধ্য করা হয়, তাহলে তাঁরা আর কোথায় যাবেন?’
সুকুন এম্পায়ার-এর নির্মাতারা স্ট্রেইটস টাইমসের প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি। তবে উচ্চবিত্ত ভারতীয় মুসলিমদের লক্ষ্য করে এমন প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। ২০১৮ সালে কেরালার কোচিতে ভারতে প্রথমবারের মতো অ্যাসেট জেনেসিস নামে ‘শরিয়াহ মেনে চলা ও হালাল সনদপ্রাপ্ত’ আবাসিক প্রকল্প নির্মাণের কথা ওঠে। তখনও একই ধরনের প্রতিবাদের কারণে প্রকল্পটি বাতিল হয়।
কিছু ক্ষেত্রে হিন্দুপ্রধান কমপ্লেক্সে বসবাসরত উচ্চ-মধ্যবিত্ত মুসলিমরা প্রকাশ্যে ধর্মীয় আচার পালন করতে বাধার সম্মুখীন হন। ২০২৩ সালে, নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডায় দুটি হাইরাইজ কনডোমিনিয়ামে মুসলিমরা তাঁদের হিন্দু প্রতিবেশীদের বাধার কারণে রমজান মাসে জামাতে নামাজের আয়োজন বাতিল করতে বাধ্য হন। যদিও, এই কমপ্লেক্সগুলোতে হিন্দু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়। অনেক জায়গায় অবৈধভাবে মন্দিরও বানানো হয়েছে।
২০২৪ সালে, উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মুজফফরনগরের রাজনীতিবিদ রাও নাদিম একটি হিন্দু এলাকায় ব্যাংক নিলামে একটি বাড়ি কিনেন। সেটিকে তিনি মসজিদে রূপান্তর করবেন এই অভিযোগ তুলে ব্যাপক প্রতিবাদ করেন স্থানীয় হিন্দুরা। শেষ পর্যন্ত, বাধ্য হয়ে তাঁকে বাড়িটি একটি হিন্দু পরিবারের কাছে বিক্রি করতে হয়।
হাউজিং ডিসক্রিমিনেশন প্রজেক্টের সাক্ষাৎকারে মুসলিমরা জানান, মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বসবাসের সবচেয়ে বড় কারণ হলো নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তার অনুভূতি। তবে, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সময় এ ধরনের এলাকাগুলোই সহজ লক্ষ্য হয়ে ওঠে।
রাও নাদিমও স্ট্রেইটস টাইমসকে জানান, তিনি শুধু মুসলিমদের জন্য কনডোমিনিয়ামের ধারণারও বিরোধী। কারণ এটি জাতীয় ঐক্যে বিভেদের ঝুঁকি তৈরি করে।

মুম্বাইয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প ঘিরে ভারতে নতুন করে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক বিতর্ক। চলতি মাসের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ভাইরাল হয় ‘সুকুন এম্পায়ার হালাল টাউনশিপ’ নামের ওই আবাসন প্রকল্পের বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, পেন্টহাউস, ইনফিনিটি পুলসহ নানা বিলাসবহুল সুবিধা রয়েছে ওই আবাসন প্রকল্পে।
ওই বিজ্ঞাপনে হিজাব পরিহিত এক নারী ‘অথেনটিক কমিউনিটি লিভিং’, ‘হালাল পরিবেশ’, ‘শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ’, ‘একই মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রতিবেশী’—ইত্যাদি সংলাপ ব্যবহার করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বর্ণনার সঙ্গে ভিজ্যুয়ালে দেখানো হয় টুপি পরা এক ব্যক্তি কোরআন পড়ছেন, ‘প্রার্থনার জায়গা’র কথা যখন উল্লেখ করা হয় তখন গম্বুজযুক্ত একটি স্থাপনার ভিজ্যুয়াল দেখানো হয়—মূলত সেটিকে মসজিদ বোঝানো হয়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরপরই হিন্দুদের একাংশ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।
বিশেষ করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের প্রবল ক্ষোভের কারণ হয়েছে এই বিজ্ঞাপন। তাদের ভাষ্য—এই প্রকল্পের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ উসকে দেওয়া হচ্ছে। সুকুন এম্পায়ার প্রকল্পটিকে ভারতের সংহতি বিনষ্টের একটি ‘গোপন ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করছে তারা। তারা বলছে, ভারতের আইন ও রীতির বাইরে এই প্রকল্পের মাধ্যমে আলাদা করে ‘শরিয়াহ ভিত্তিক সমান্তরাল ব্যবস্থা’ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
ব্যাপারটা এখানেই থামেনি। এই ইস্যুতে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন প্রিয়াংক কনুনগো ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিসকে বলেছেন, ‘এই প্রকল্প “দেশের মধ্যে দেশ” তত্ত্বের বাস্তবায়ন। আর এই বিজ্ঞাপন ইঙ্গিত দেয় যে মুসলিমরা অসহিষ্ণু। আজ তারা আলাদা টাউনশিপ চাচ্ছে, কাল মুসলিম চিকিৎসক চাইবে, এরপর মুসলিম পুলিশ চাইবে।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারতের শহরাঞ্চলে মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যকে নতুন করে সামনে এনেছে এই প্রকল্প। আর এই বৈষম্যের কারণেই শহরগুলোতে গেটো ধরনের কমিউনিটির চাহিদা বেড়েছে। শুধু নিরাপদ আবাসন নয়, ধর্ম চর্চার স্বাধীনতার জন্যও এই ধরনের প্রকল্পগুলোর চাহিদা বেড়েছে।
সুকুন এম্পায়ার প্রকল্পটি এমন সময়ে সামনে এসেছে, যখন ভারতে মুসলিমদের প্রকাশ্যে ধর্মীয় আচার পালন ক্রমশ বাধার মুখে পড়ছে। উদাহরণস্বরূপ, পার্ক বা অন্যান্য জায়গায় নামাজ পড়াকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না অনেক হিন্দু। এমন ঘটনায় পুলিশি পদক্ষেপও দেখা গেছে।
২০১৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর দেশটি ধর্মীয়ভাবে আরও বিভক্ত হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।
কিন্তু এরপরও এই ‘হালাল টাউনশিপ’গুলোকে সমর্থন করেন না অনেক মুসলিমও। তাঁদের আশঙ্কা, এতে ইসলামি রক্ষণশীলদের প্রভাব বাড়বে, ধর্মের কঠোর রূপ চাপানো হবে এবং ভারতের বহুসংস্কৃতির বৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ভারতের সংবিধান ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য নিষিদ্ধ করলেও, বাস্তবে দেশে আবাসনের ক্ষেত্রে বৈষম্য ব্যাপকভাবে দেখা যায়। শুধু ধর্ম নয়, বরং বর্ণ, বৈবাহিক অবস্থা, লিঙ্গ পরিচয়, এমনকি খাদ্যাভ্যাসের ভিত্তিতেও মানুষকে আবাসিক কমপ্লেক্সে অবাঞ্ছিত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সব শাকাহারী (নিরামিষাশী) কমপ্লেক্সে আমিষাশীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
২০২১ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দিল্লি ও মুম্বাইতে সাধারণ আবাসিক এলাকায় মুসলিমরা নিজেদের অবাঞ্ছিত মনে করছেন। সেখানে বাসা ভাড়া নিতে গিয়ে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন। তিন বছর ধরে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করে এমন পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে হাউজিং ডিসক্রিমিনেশন প্রজেক্টের এই গবেষণা প্রতিবেদনে।
গবেষণা প্রতিবেদনের সহ-লেখক ড. এম. মোহসিন আলম ভাট এবং আসাফ আলি লোন বলেন, ‘অনেক মুসলিম যাঁরা মুসলিম সংখ্যালঘু এলাকায় বাসা ভাড়া নেন, তাঁরা মূলত আগে অন্য জায়গায় বাড়িওয়ালাদের প্রত্যাখ্যানের শিকার হয়েছেন এবং পরবর্তীতে আরও প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কায় ওই সংখ্যালঘু এলাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করেছেন।’
দিল্লি ও মুম্বাইয়ে ৩৪০ জনের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে। রিয়েল এস্টেট এজেন্ট, বাড়িওয়ালা ও মুসলিম ভাড়াটিয়াদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গবেষকেরা। গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, প্রধানত খাদ্যাভ্যাস এবং ইসলামোফোবিয়ার (ইসলামভীতি) কারণে মুসলিমদের বাড়ি ভাড়া দিতে চান না হিন্দুরা। বিশেষ করে হিন্দুপ্রধান এলাকাগুলোতে মাসের পর মাস চেষ্টা করেও বাড়ি ভাড়া পাননি মুসলিমরা—এমন উদাহরণও অনেক।
লোন বলেন, ‘ভারতের শহরগুলোতে বাস্তবেই মুসলিমদের (ধর্মীয়) বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে।’
সারা ভারতে বছরের পর বছর ধরে ধর্ম ও সামাজিক মর্যাদার ভিত্তিতে নানা পাড়া গড়ে উঠেছে। মধ্য ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মুসলিমদের জন্য গেটেড কমিউনিটি বা গেটো (এক সময় ইউরোপে গড়ে ওঠা ইহুদিদের আলাদা বসতির মতো) এখন অনেক শহরে সাধারণ ঘটনা। গবেষক লোরাঁ গায়ার ও ক্রিস্টোফ জাফ্রেলো বলেন, এটি মূলত ভারতজুড়ে ‘সংগঠিত সহিংসতার ফল।’ উচ্চ-মধ্যবিত্তদের মধ্যেও বিভাজন দেখা যায়। মুম্বাইয়ে কিছু অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স অঘোষিতভাবে নির্দিষ্ট ধর্ম, বর্ণ ও ভাষার মানুষের জন্য সংরক্ষিত থাকে, যেমন—জৈন, ক্যাথলিক খ্রিষ্টান, বোহরা মুসলিম (ইসমাইলি শিয়া সম্প্রদায়) এবং গুজরাটি হিন্দু। দিল্লিতে জাতীয় রাজধানী অঞ্চলেও অন্তত দুটি গেটো শুধু মুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত বলে ধারণা করা হয়।
মুসলিম পেশাজীবী নারী মারিয়া সালিম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে জানিয়েছেন, ২০২০ সালে দিল্লিতে অ্যাপার্টমেন্ট খুঁজতে খুঁজতেই তাঁর পাঁচ মাস চলে গেছে! ব্রোকারদের অনেকেই তাঁকে জানাতেন, বাড়িওয়ালা মুসলিমদের ভাড়া দিচ্ছেন না। একজন তো বলেই বসেন যে মুসলিমেরা ভালো নয়।
আসাফ আলি লোন স্ট্রেইটস টাইমসকে বলেন, মুসলিমদের মধ্যে সুকুন এম্পায়ার-এর মতো আবাসিক প্রকল্পের চাহিদা মূলত এই বৈষম্যেরই ফল। তিনি বলেন, ‘যদি মুসলিমদের আলাদা কলোনিতে থাকতে বাধ্য করা হয়, তাহলে তাঁরা আর কোথায় যাবেন?’
সুকুন এম্পায়ার-এর নির্মাতারা স্ট্রেইটস টাইমসের প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি। তবে উচ্চবিত্ত ভারতীয় মুসলিমদের লক্ষ্য করে এমন প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। ২০১৮ সালে কেরালার কোচিতে ভারতে প্রথমবারের মতো অ্যাসেট জেনেসিস নামে ‘শরিয়াহ মেনে চলা ও হালাল সনদপ্রাপ্ত’ আবাসিক প্রকল্প নির্মাণের কথা ওঠে। তখনও একই ধরনের প্রতিবাদের কারণে প্রকল্পটি বাতিল হয়।
কিছু ক্ষেত্রে হিন্দুপ্রধান কমপ্লেক্সে বসবাসরত উচ্চ-মধ্যবিত্ত মুসলিমরা প্রকাশ্যে ধর্মীয় আচার পালন করতে বাধার সম্মুখীন হন। ২০২৩ সালে, নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডায় দুটি হাইরাইজ কনডোমিনিয়ামে মুসলিমরা তাঁদের হিন্দু প্রতিবেশীদের বাধার কারণে রমজান মাসে জামাতে নামাজের আয়োজন বাতিল করতে বাধ্য হন। যদিও, এই কমপ্লেক্সগুলোতে হিন্দু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়। অনেক জায়গায় অবৈধভাবে মন্দিরও বানানো হয়েছে।
২০২৪ সালে, উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মুজফফরনগরের রাজনীতিবিদ রাও নাদিম একটি হিন্দু এলাকায় ব্যাংক নিলামে একটি বাড়ি কিনেন। সেটিকে তিনি মসজিদে রূপান্তর করবেন এই অভিযোগ তুলে ব্যাপক প্রতিবাদ করেন স্থানীয় হিন্দুরা। শেষ পর্যন্ত, বাধ্য হয়ে তাঁকে বাড়িটি একটি হিন্দু পরিবারের কাছে বিক্রি করতে হয়।
হাউজিং ডিসক্রিমিনেশন প্রজেক্টের সাক্ষাৎকারে মুসলিমরা জানান, মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বসবাসের সবচেয়ে বড় কারণ হলো নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তার অনুভূতি। তবে, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সময় এ ধরনের এলাকাগুলোই সহজ লক্ষ্য হয়ে ওঠে।
রাও নাদিমও স্ট্রেইটস টাইমসকে জানান, তিনি শুধু মুসলিমদের জন্য কনডোমিনিয়ামের ধারণারও বিরোধী। কারণ এটি জাতীয় ঐক্যে বিভেদের ঝুঁকি তৈরি করে।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

মুম্বাইয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প ঘিরে ভারতে নতুন করে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক বিতর্ক। চলতি মাসের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ভাইরাল হয় ‘সুকুন এম্পায়ার হালাল টাউনশিপ’ নামের ওই আবাসন প্রকল্পের বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, পেন্টহাউস, ইনফিনিটি পুলসহ নানা বিলাসবহুল সুবিধা রয়েছে ওই আবাসন প্রকল্পে।
ওই বিজ্ঞাপনে হিজাব পরিহিত এক নারী ‘অথেনটিক কমিউনিটি লিভিং’, ‘হালাল পরিবেশ’, ‘শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ’, ‘একই মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রতিবেশী’—ইত্যাদি সংলাপ ব্যবহার করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বর্ণনার সঙ্গে ভিজ্যুয়ালে দেখানো হয় টুপি পরা এক ব্যক্তি কোরআন পড়ছেন, ‘প্রার্থনার জায়গা’র কথা যখন উল্লেখ করা হয় তখন গম্বুজযুক্ত একটি স্থাপনার ভিজ্যুয়াল দেখানো হয়—মূলত সেটিকে মসজিদ বোঝানো হয়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরপরই হিন্দুদের একাংশ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।
বিশেষ করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের প্রবল ক্ষোভের কারণ হয়েছে এই বিজ্ঞাপন। তাদের ভাষ্য—এই প্রকল্পের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ উসকে দেওয়া হচ্ছে। সুকুন এম্পায়ার প্রকল্পটিকে ভারতের সংহতি বিনষ্টের একটি ‘গোপন ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করছে তারা। তারা বলছে, ভারতের আইন ও রীতির বাইরে এই প্রকল্পের মাধ্যমে আলাদা করে ‘শরিয়াহ ভিত্তিক সমান্তরাল ব্যবস্থা’ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
ব্যাপারটা এখানেই থামেনি। এই ইস্যুতে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন প্রিয়াংক কনুনগো ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিসকে বলেছেন, ‘এই প্রকল্প “দেশের মধ্যে দেশ” তত্ত্বের বাস্তবায়ন। আর এই বিজ্ঞাপন ইঙ্গিত দেয় যে মুসলিমরা অসহিষ্ণু। আজ তারা আলাদা টাউনশিপ চাচ্ছে, কাল মুসলিম চিকিৎসক চাইবে, এরপর মুসলিম পুলিশ চাইবে।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারতের শহরাঞ্চলে মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যকে নতুন করে সামনে এনেছে এই প্রকল্প। আর এই বৈষম্যের কারণেই শহরগুলোতে গেটো ধরনের কমিউনিটির চাহিদা বেড়েছে। শুধু নিরাপদ আবাসন নয়, ধর্ম চর্চার স্বাধীনতার জন্যও এই ধরনের প্রকল্পগুলোর চাহিদা বেড়েছে।
সুকুন এম্পায়ার প্রকল্পটি এমন সময়ে সামনে এসেছে, যখন ভারতে মুসলিমদের প্রকাশ্যে ধর্মীয় আচার পালন ক্রমশ বাধার মুখে পড়ছে। উদাহরণস্বরূপ, পার্ক বা অন্যান্য জায়গায় নামাজ পড়াকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না অনেক হিন্দু। এমন ঘটনায় পুলিশি পদক্ষেপও দেখা গেছে।
২০১৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর দেশটি ধর্মীয়ভাবে আরও বিভক্ত হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।
কিন্তু এরপরও এই ‘হালাল টাউনশিপ’গুলোকে সমর্থন করেন না অনেক মুসলিমও। তাঁদের আশঙ্কা, এতে ইসলামি রক্ষণশীলদের প্রভাব বাড়বে, ধর্মের কঠোর রূপ চাপানো হবে এবং ভারতের বহুসংস্কৃতির বৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ভারতের সংবিধান ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য নিষিদ্ধ করলেও, বাস্তবে দেশে আবাসনের ক্ষেত্রে বৈষম্য ব্যাপকভাবে দেখা যায়। শুধু ধর্ম নয়, বরং বর্ণ, বৈবাহিক অবস্থা, লিঙ্গ পরিচয়, এমনকি খাদ্যাভ্যাসের ভিত্তিতেও মানুষকে আবাসিক কমপ্লেক্সে অবাঞ্ছিত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সব শাকাহারী (নিরামিষাশী) কমপ্লেক্সে আমিষাশীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
২০২১ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দিল্লি ও মুম্বাইতে সাধারণ আবাসিক এলাকায় মুসলিমরা নিজেদের অবাঞ্ছিত মনে করছেন। সেখানে বাসা ভাড়া নিতে গিয়ে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন। তিন বছর ধরে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করে এমন পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে হাউজিং ডিসক্রিমিনেশন প্রজেক্টের এই গবেষণা প্রতিবেদনে।
গবেষণা প্রতিবেদনের সহ-লেখক ড. এম. মোহসিন আলম ভাট এবং আসাফ আলি লোন বলেন, ‘অনেক মুসলিম যাঁরা মুসলিম সংখ্যালঘু এলাকায় বাসা ভাড়া নেন, তাঁরা মূলত আগে অন্য জায়গায় বাড়িওয়ালাদের প্রত্যাখ্যানের শিকার হয়েছেন এবং পরবর্তীতে আরও প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কায় ওই সংখ্যালঘু এলাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করেছেন।’
দিল্লি ও মুম্বাইয়ে ৩৪০ জনের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে। রিয়েল এস্টেট এজেন্ট, বাড়িওয়ালা ও মুসলিম ভাড়াটিয়াদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গবেষকেরা। গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, প্রধানত খাদ্যাভ্যাস এবং ইসলামোফোবিয়ার (ইসলামভীতি) কারণে মুসলিমদের বাড়ি ভাড়া দিতে চান না হিন্দুরা। বিশেষ করে হিন্দুপ্রধান এলাকাগুলোতে মাসের পর মাস চেষ্টা করেও বাড়ি ভাড়া পাননি মুসলিমরা—এমন উদাহরণও অনেক।
লোন বলেন, ‘ভারতের শহরগুলোতে বাস্তবেই মুসলিমদের (ধর্মীয়) বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে।’
সারা ভারতে বছরের পর বছর ধরে ধর্ম ও সামাজিক মর্যাদার ভিত্তিতে নানা পাড়া গড়ে উঠেছে। মধ্য ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মুসলিমদের জন্য গেটেড কমিউনিটি বা গেটো (এক সময় ইউরোপে গড়ে ওঠা ইহুদিদের আলাদা বসতির মতো) এখন অনেক শহরে সাধারণ ঘটনা। গবেষক লোরাঁ গায়ার ও ক্রিস্টোফ জাফ্রেলো বলেন, এটি মূলত ভারতজুড়ে ‘সংগঠিত সহিংসতার ফল।’ উচ্চ-মধ্যবিত্তদের মধ্যেও বিভাজন দেখা যায়। মুম্বাইয়ে কিছু অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স অঘোষিতভাবে নির্দিষ্ট ধর্ম, বর্ণ ও ভাষার মানুষের জন্য সংরক্ষিত থাকে, যেমন—জৈন, ক্যাথলিক খ্রিষ্টান, বোহরা মুসলিম (ইসমাইলি শিয়া সম্প্রদায়) এবং গুজরাটি হিন্দু। দিল্লিতে জাতীয় রাজধানী অঞ্চলেও অন্তত দুটি গেটো শুধু মুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত বলে ধারণা করা হয়।
মুসলিম পেশাজীবী নারী মারিয়া সালিম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে জানিয়েছেন, ২০২০ সালে দিল্লিতে অ্যাপার্টমেন্ট খুঁজতে খুঁজতেই তাঁর পাঁচ মাস চলে গেছে! ব্রোকারদের অনেকেই তাঁকে জানাতেন, বাড়িওয়ালা মুসলিমদের ভাড়া দিচ্ছেন না। একজন তো বলেই বসেন যে মুসলিমেরা ভালো নয়।
আসাফ আলি লোন স্ট্রেইটস টাইমসকে বলেন, মুসলিমদের মধ্যে সুকুন এম্পায়ার-এর মতো আবাসিক প্রকল্পের চাহিদা মূলত এই বৈষম্যেরই ফল। তিনি বলেন, ‘যদি মুসলিমদের আলাদা কলোনিতে থাকতে বাধ্য করা হয়, তাহলে তাঁরা আর কোথায় যাবেন?’
সুকুন এম্পায়ার-এর নির্মাতারা স্ট্রেইটস টাইমসের প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি। তবে উচ্চবিত্ত ভারতীয় মুসলিমদের লক্ষ্য করে এমন প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। ২০১৮ সালে কেরালার কোচিতে ভারতে প্রথমবারের মতো অ্যাসেট জেনেসিস নামে ‘শরিয়াহ মেনে চলা ও হালাল সনদপ্রাপ্ত’ আবাসিক প্রকল্প নির্মাণের কথা ওঠে। তখনও একই ধরনের প্রতিবাদের কারণে প্রকল্পটি বাতিল হয়।
কিছু ক্ষেত্রে হিন্দুপ্রধান কমপ্লেক্সে বসবাসরত উচ্চ-মধ্যবিত্ত মুসলিমরা প্রকাশ্যে ধর্মীয় আচার পালন করতে বাধার সম্মুখীন হন। ২০২৩ সালে, নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডায় দুটি হাইরাইজ কনডোমিনিয়ামে মুসলিমরা তাঁদের হিন্দু প্রতিবেশীদের বাধার কারণে রমজান মাসে জামাতে নামাজের আয়োজন বাতিল করতে বাধ্য হন। যদিও, এই কমপ্লেক্সগুলোতে হিন্দু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়। অনেক জায়গায় অবৈধভাবে মন্দিরও বানানো হয়েছে।
২০২৪ সালে, উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মুজফফরনগরের রাজনীতিবিদ রাও নাদিম একটি হিন্দু এলাকায় ব্যাংক নিলামে একটি বাড়ি কিনেন। সেটিকে তিনি মসজিদে রূপান্তর করবেন এই অভিযোগ তুলে ব্যাপক প্রতিবাদ করেন স্থানীয় হিন্দুরা। শেষ পর্যন্ত, বাধ্য হয়ে তাঁকে বাড়িটি একটি হিন্দু পরিবারের কাছে বিক্রি করতে হয়।
হাউজিং ডিসক্রিমিনেশন প্রজেক্টের সাক্ষাৎকারে মুসলিমরা জানান, মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বসবাসের সবচেয়ে বড় কারণ হলো নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তার অনুভূতি। তবে, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সময় এ ধরনের এলাকাগুলোই সহজ লক্ষ্য হয়ে ওঠে।
রাও নাদিমও স্ট্রেইটস টাইমসকে জানান, তিনি শুধু মুসলিমদের জন্য কনডোমিনিয়ামের ধারণারও বিরোধী। কারণ এটি জাতীয় ঐক্যে বিভেদের ঝুঁকি তৈরি করে।

মুম্বাইয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প ঘিরে ভারতে নতুন করে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক বিতর্ক। চলতি মাসের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ভাইরাল হয় ‘সুকুন এম্পায়ার হালাল টাউনশিপ’ নামের ওই আবাসন প্রকল্পের বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, পেন্টহাউস, ইনফিনিটি পুলসহ নানা বিলাসবহুল সুবিধা রয়েছে ওই আবাসন প্রকল্পে।
ওই বিজ্ঞাপনে হিজাব পরিহিত এক নারী ‘অথেনটিক কমিউনিটি লিভিং’, ‘হালাল পরিবেশ’, ‘শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ’, ‘একই মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রতিবেশী’—ইত্যাদি সংলাপ ব্যবহার করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বর্ণনার সঙ্গে ভিজ্যুয়ালে দেখানো হয় টুপি পরা এক ব্যক্তি কোরআন পড়ছেন, ‘প্রার্থনার জায়গা’র কথা যখন উল্লেখ করা হয় তখন গম্বুজযুক্ত একটি স্থাপনার ভিজ্যুয়াল দেখানো হয়—মূলত সেটিকে মসজিদ বোঝানো হয়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরপরই হিন্দুদের একাংশ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।
বিশেষ করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের প্রবল ক্ষোভের কারণ হয়েছে এই বিজ্ঞাপন। তাদের ভাষ্য—এই প্রকল্পের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ উসকে দেওয়া হচ্ছে। সুকুন এম্পায়ার প্রকল্পটিকে ভারতের সংহতি বিনষ্টের একটি ‘গোপন ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করছে তারা। তারা বলছে, ভারতের আইন ও রীতির বাইরে এই প্রকল্পের মাধ্যমে আলাদা করে ‘শরিয়াহ ভিত্তিক সমান্তরাল ব্যবস্থা’ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
ব্যাপারটা এখানেই থামেনি। এই ইস্যুতে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন প্রিয়াংক কনুনগো ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিসকে বলেছেন, ‘এই প্রকল্প “দেশের মধ্যে দেশ” তত্ত্বের বাস্তবায়ন। আর এই বিজ্ঞাপন ইঙ্গিত দেয় যে মুসলিমরা অসহিষ্ণু। আজ তারা আলাদা টাউনশিপ চাচ্ছে, কাল মুসলিম চিকিৎসক চাইবে, এরপর মুসলিম পুলিশ চাইবে।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারতের শহরাঞ্চলে মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যকে নতুন করে সামনে এনেছে এই প্রকল্প। আর এই বৈষম্যের কারণেই শহরগুলোতে গেটো ধরনের কমিউনিটির চাহিদা বেড়েছে। শুধু নিরাপদ আবাসন নয়, ধর্ম চর্চার স্বাধীনতার জন্যও এই ধরনের প্রকল্পগুলোর চাহিদা বেড়েছে।
সুকুন এম্পায়ার প্রকল্পটি এমন সময়ে সামনে এসেছে, যখন ভারতে মুসলিমদের প্রকাশ্যে ধর্মীয় আচার পালন ক্রমশ বাধার মুখে পড়ছে। উদাহরণস্বরূপ, পার্ক বা অন্যান্য জায়গায় নামাজ পড়াকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না অনেক হিন্দু। এমন ঘটনায় পুলিশি পদক্ষেপও দেখা গেছে।
২০১৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর দেশটি ধর্মীয়ভাবে আরও বিভক্ত হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।
কিন্তু এরপরও এই ‘হালাল টাউনশিপ’গুলোকে সমর্থন করেন না অনেক মুসলিমও। তাঁদের আশঙ্কা, এতে ইসলামি রক্ষণশীলদের প্রভাব বাড়বে, ধর্মের কঠোর রূপ চাপানো হবে এবং ভারতের বহুসংস্কৃতির বৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ভারতের সংবিধান ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য নিষিদ্ধ করলেও, বাস্তবে দেশে আবাসনের ক্ষেত্রে বৈষম্য ব্যাপকভাবে দেখা যায়। শুধু ধর্ম নয়, বরং বর্ণ, বৈবাহিক অবস্থা, লিঙ্গ পরিচয়, এমনকি খাদ্যাভ্যাসের ভিত্তিতেও মানুষকে আবাসিক কমপ্লেক্সে অবাঞ্ছিত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সব শাকাহারী (নিরামিষাশী) কমপ্লেক্সে আমিষাশীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
২০২১ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দিল্লি ও মুম্বাইতে সাধারণ আবাসিক এলাকায় মুসলিমরা নিজেদের অবাঞ্ছিত মনে করছেন। সেখানে বাসা ভাড়া নিতে গিয়ে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন। তিন বছর ধরে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করে এমন পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে হাউজিং ডিসক্রিমিনেশন প্রজেক্টের এই গবেষণা প্রতিবেদনে।
গবেষণা প্রতিবেদনের সহ-লেখক ড. এম. মোহসিন আলম ভাট এবং আসাফ আলি লোন বলেন, ‘অনেক মুসলিম যাঁরা মুসলিম সংখ্যালঘু এলাকায় বাসা ভাড়া নেন, তাঁরা মূলত আগে অন্য জায়গায় বাড়িওয়ালাদের প্রত্যাখ্যানের শিকার হয়েছেন এবং পরবর্তীতে আরও প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কায় ওই সংখ্যালঘু এলাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করেছেন।’
দিল্লি ও মুম্বাইয়ে ৩৪০ জনের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে। রিয়েল এস্টেট এজেন্ট, বাড়িওয়ালা ও মুসলিম ভাড়াটিয়াদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গবেষকেরা। গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, প্রধানত খাদ্যাভ্যাস এবং ইসলামোফোবিয়ার (ইসলামভীতি) কারণে মুসলিমদের বাড়ি ভাড়া দিতে চান না হিন্দুরা। বিশেষ করে হিন্দুপ্রধান এলাকাগুলোতে মাসের পর মাস চেষ্টা করেও বাড়ি ভাড়া পাননি মুসলিমরা—এমন উদাহরণও অনেক।
লোন বলেন, ‘ভারতের শহরগুলোতে বাস্তবেই মুসলিমদের (ধর্মীয়) বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে।’
সারা ভারতে বছরের পর বছর ধরে ধর্ম ও সামাজিক মর্যাদার ভিত্তিতে নানা পাড়া গড়ে উঠেছে। মধ্য ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মুসলিমদের জন্য গেটেড কমিউনিটি বা গেটো (এক সময় ইউরোপে গড়ে ওঠা ইহুদিদের আলাদা বসতির মতো) এখন অনেক শহরে সাধারণ ঘটনা। গবেষক লোরাঁ গায়ার ও ক্রিস্টোফ জাফ্রেলো বলেন, এটি মূলত ভারতজুড়ে ‘সংগঠিত সহিংসতার ফল।’ উচ্চ-মধ্যবিত্তদের মধ্যেও বিভাজন দেখা যায়। মুম্বাইয়ে কিছু অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স অঘোষিতভাবে নির্দিষ্ট ধর্ম, বর্ণ ও ভাষার মানুষের জন্য সংরক্ষিত থাকে, যেমন—জৈন, ক্যাথলিক খ্রিষ্টান, বোহরা মুসলিম (ইসমাইলি শিয়া সম্প্রদায়) এবং গুজরাটি হিন্দু। দিল্লিতে জাতীয় রাজধানী অঞ্চলেও অন্তত দুটি গেটো শুধু মুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত বলে ধারণা করা হয়।
মুসলিম পেশাজীবী নারী মারিয়া সালিম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে জানিয়েছেন, ২০২০ সালে দিল্লিতে অ্যাপার্টমেন্ট খুঁজতে খুঁজতেই তাঁর পাঁচ মাস চলে গেছে! ব্রোকারদের অনেকেই তাঁকে জানাতেন, বাড়িওয়ালা মুসলিমদের ভাড়া দিচ্ছেন না। একজন তো বলেই বসেন যে মুসলিমেরা ভালো নয়।
আসাফ আলি লোন স্ট্রেইটস টাইমসকে বলেন, মুসলিমদের মধ্যে সুকুন এম্পায়ার-এর মতো আবাসিক প্রকল্পের চাহিদা মূলত এই বৈষম্যেরই ফল। তিনি বলেন, ‘যদি মুসলিমদের আলাদা কলোনিতে থাকতে বাধ্য করা হয়, তাহলে তাঁরা আর কোথায় যাবেন?’
সুকুন এম্পায়ার-এর নির্মাতারা স্ট্রেইটস টাইমসের প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি। তবে উচ্চবিত্ত ভারতীয় মুসলিমদের লক্ষ্য করে এমন প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। ২০১৮ সালে কেরালার কোচিতে ভারতে প্রথমবারের মতো অ্যাসেট জেনেসিস নামে ‘শরিয়াহ মেনে চলা ও হালাল সনদপ্রাপ্ত’ আবাসিক প্রকল্প নির্মাণের কথা ওঠে। তখনও একই ধরনের প্রতিবাদের কারণে প্রকল্পটি বাতিল হয়।
কিছু ক্ষেত্রে হিন্দুপ্রধান কমপ্লেক্সে বসবাসরত উচ্চ-মধ্যবিত্ত মুসলিমরা প্রকাশ্যে ধর্মীয় আচার পালন করতে বাধার সম্মুখীন হন। ২০২৩ সালে, নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডায় দুটি হাইরাইজ কনডোমিনিয়ামে মুসলিমরা তাঁদের হিন্দু প্রতিবেশীদের বাধার কারণে রমজান মাসে জামাতে নামাজের আয়োজন বাতিল করতে বাধ্য হন। যদিও, এই কমপ্লেক্সগুলোতে হিন্দু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়। অনেক জায়গায় অবৈধভাবে মন্দিরও বানানো হয়েছে।
২০২৪ সালে, উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মুজফফরনগরের রাজনীতিবিদ রাও নাদিম একটি হিন্দু এলাকায় ব্যাংক নিলামে একটি বাড়ি কিনেন। সেটিকে তিনি মসজিদে রূপান্তর করবেন এই অভিযোগ তুলে ব্যাপক প্রতিবাদ করেন স্থানীয় হিন্দুরা। শেষ পর্যন্ত, বাধ্য হয়ে তাঁকে বাড়িটি একটি হিন্দু পরিবারের কাছে বিক্রি করতে হয়।
হাউজিং ডিসক্রিমিনেশন প্রজেক্টের সাক্ষাৎকারে মুসলিমরা জানান, মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বসবাসের সবচেয়ে বড় কারণ হলো নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তার অনুভূতি। তবে, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সময় এ ধরনের এলাকাগুলোই সহজ লক্ষ্য হয়ে ওঠে।
রাও নাদিমও স্ট্রেইটস টাইমসকে জানান, তিনি শুধু মুসলিমদের জন্য কনডোমিনিয়ামের ধারণারও বিরোধী। কারণ এটি জাতীয় ঐক্যে বিভেদের ঝুঁকি তৈরি করে।

সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত মধ্যস্থতাকারী জোট ‘কোয়াড’ প্রস্তাবিত মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) আরএসএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তারা শুধু যুদ্ধবিরতিতে নয়, বরং সুদানে শত্রুতার অবসান...
৮ ঘণ্টা আগে
২০২০ সালে স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন ডায়াসের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন স্পিকারের আসনে দাঁড়িয়ে থাকা এক নারী শক্ত মুখে সেই ভাষণের কপি ছিঁড়ে ফেলেন। দৃশ্যত এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে ঘটনাটি রাজনৈতিক ইতিহাসে এক প্রতীকী মুহূর্ত হিসেবে জায়গা করে নেয়।
১০ ঘণ্টা আগেএই টাইফুনের কারণে ভিয়েতনাম সরকার ইতিমধ্যে ছয়টি বিমানবন্দর বন্ধ করে দিয়েছে এবং গিয়া লাই প্রদেশে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। এটি চলতি বছরে ভিয়েতনামে আঘাত হানা ১৩তম টাইফুন এবং সবচেয়ে শক্তিশালীগুলোর একটি।
১১ ঘণ্টা আগে
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধসংক্রান্ত অফিস (ইউএনওডিসি) একটি জরিপে বলেছে, আফিম চাষের জন্য ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে এবং একই সময়ে আফিমের চাষ কমেছে ৩২ শতাংশ।
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত মধ্যস্থতাকারী জোট ‘কোয়াড’ প্রস্তাবিত মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) আরএসএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তারা শুধু যুদ্ধবিরতিতে নয়, বরং সুদানে শত্রুতার অবসান ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মৌলিক নীতিমালা নিয়ে আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত।
আরএসএফের বিবৃতিতে বলা হয়, র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস এই চুক্তি বাস্তবায়ন ও অবিলম্বে আলোচনায় বসার অপেক্ষায় আছে, যাতে সুদানের সংঘাতের মূল কারণগুলো সমাধান হয় এবং জনগণের দুর্ভোগের ইতি ঘটে। এ ঘোষণা এমন এক সময় এসেছে, যখন আরএসএফ সম্প্রতি দখল নিয়েছে এল-ফাশের শহরের, যা গত দেড় বছর ধরে অবরুদ্ধ ছিল এবং পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সুদানি সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল।
তবে সুদানি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী তখনই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে, যদি আরএসএফ সম্পূর্ণভাবে বেসামরিক এলাকা থেকে সরে যায় এবং পূর্ববর্তী শান্তিচুক্তি অনুযায়ী অস্ত্র সমর্পণ করে। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব তথ্য দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকাবিষয়ক উপদেষ্টা মাসাদ বোলস জানান, যুক্তরাষ্ট্র সুদানি সেনাবাহিনী ও আরএসএফ—উভয় পক্ষের সঙ্গে কাজ করছে, যাতে দ্রুত একটি মানবিক যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা গত প্রায় ১০ দিন ধরে দুই পক্ষের সঙ্গে কাজ করছি, বিস্তারিত চূড়ান্ত করার আশায়।’ বোলসের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে তিন মাসের মানবিক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে, এরপর নয় মাসের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এই উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি সৌদি আরব, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও যুক্ত আছে। এই চার দেশকে সম্মিলিতভাবে ‘কোয়াড’ বলা হয়।
দেশটিতে নতুন করে বাস্তুচ্যুত মানুষের ঢল নামায় আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। স্থানীয় চিকিৎসক ও ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, অতিরিক্ত মানুষের আগমনে আশ্রয়শিবিরগুলো ভয়াবহ চাপের মুখে পড়েছে।
আজ আন্তর্জাতিক সংস্থা ইসলামিক রিলিফ এক বিবৃতিতে জানায়, যেসব কমিউনিটি রান্নাঘর ক্ষুধার্ত পরিবারগুলোর শেষ ভরসা, সেগুলো এখন ধসে পড়ার পথে। সংস্থাটির এক জরিপে দেখা গেছে, সুদানের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের ৮৩ শতাংশ পরিবার এখন পর্যাপ্ত খাদ্য পাচ্ছে না।
এদিকে গতকাল বুধবার সুদানের ডাক্তার্স নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, এল-ফাশেরের পশ্চিমের বাস্তুচ্যুত শিবিরগুলো—বিশেষত তাওইলা, কুরমা ও গলো এলাকায় পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে প্রায় ৩৬ হাজার মানুষ এসব এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, এল-ফাশের দখলের পর আরএসএফ ওই অঞ্চলের একটি হাসপাতালে হামলা চালায়, যাতে ৪৫০ জনের বেশি নিহত হয়। এ ছাড়া আরএসএফ বাহিনী ঘরে ঘরে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ও যৌন সহিংসতার ঘটনাও ঘটিয়েছে।
সুদানি সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে সংঘাত শুরু হয় ২০২৩ সালে। দুপক্ষই মূলত একসময় মিত্র ছিল, যারা ২০১৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশটির গণতান্ত্রিক রূপান্তরপ্রক্রিয়া তদারকির দায়িত্বে ছিল। কিন্তু ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে শুরু হয় ভয়াবহ যুদ্ধ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, এ পর্যন্ত অন্তত ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ। তবে ত্রাণ সংস্থাগুলোর দাবি, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা এরচেয়ে বহুগুণ বেশি হতে পারে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) তথ্যমতে, বর্তমানে ২ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ চরম খাদ্যসংকটে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, শুধু এক সপ্তাহেই এল-ফাশের থেকে ৭০ হাজার মানুষ পালিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে পৌঁছেছে নর্দান স্টেটের আল-আফফাদ বাস্তুচ্যুত শিবিরে, যা রাজধানী খার্তুম থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে।
পালিয়ে আসা শিক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শী ওসমান মোহাম্মদ বলেন, ‘এল-ফাশের ছাড়ার পথে রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি। অনেকে ক্লান্তিতে ও নির্যাতনে মারা গেছেন।’
আরও একজন বাস্তুচ্যুত নারী রাওদা মোহাম্মদ বলেন, এল-ফাশেরে আকাশে সারাক্ষণ ড্রোন ঘোরে। কখন যে হামলা হয়, বুঝতেই পারা যায় না। খাবার বলতে কিছুই ছিল না—মানুষ শুধু বাদাম তেলের অবশিষ্ট অংশ খেয়ে বেঁচে ছিল।

সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত মধ্যস্থতাকারী জোট ‘কোয়াড’ প্রস্তাবিত মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) আরএসএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তারা শুধু যুদ্ধবিরতিতে নয়, বরং সুদানে শত্রুতার অবসান ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মৌলিক নীতিমালা নিয়ে আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত।
আরএসএফের বিবৃতিতে বলা হয়, র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস এই চুক্তি বাস্তবায়ন ও অবিলম্বে আলোচনায় বসার অপেক্ষায় আছে, যাতে সুদানের সংঘাতের মূল কারণগুলো সমাধান হয় এবং জনগণের দুর্ভোগের ইতি ঘটে। এ ঘোষণা এমন এক সময় এসেছে, যখন আরএসএফ সম্প্রতি দখল নিয়েছে এল-ফাশের শহরের, যা গত দেড় বছর ধরে অবরুদ্ধ ছিল এবং পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সুদানি সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল।
তবে সুদানি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী তখনই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে, যদি আরএসএফ সম্পূর্ণভাবে বেসামরিক এলাকা থেকে সরে যায় এবং পূর্ববর্তী শান্তিচুক্তি অনুযায়ী অস্ত্র সমর্পণ করে। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব তথ্য দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকাবিষয়ক উপদেষ্টা মাসাদ বোলস জানান, যুক্তরাষ্ট্র সুদানি সেনাবাহিনী ও আরএসএফ—উভয় পক্ষের সঙ্গে কাজ করছে, যাতে দ্রুত একটি মানবিক যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা গত প্রায় ১০ দিন ধরে দুই পক্ষের সঙ্গে কাজ করছি, বিস্তারিত চূড়ান্ত করার আশায়।’ বোলসের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে তিন মাসের মানবিক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে, এরপর নয় মাসের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এই উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি সৌদি আরব, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও যুক্ত আছে। এই চার দেশকে সম্মিলিতভাবে ‘কোয়াড’ বলা হয়।
দেশটিতে নতুন করে বাস্তুচ্যুত মানুষের ঢল নামায় আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। স্থানীয় চিকিৎসক ও ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, অতিরিক্ত মানুষের আগমনে আশ্রয়শিবিরগুলো ভয়াবহ চাপের মুখে পড়েছে।
আজ আন্তর্জাতিক সংস্থা ইসলামিক রিলিফ এক বিবৃতিতে জানায়, যেসব কমিউনিটি রান্নাঘর ক্ষুধার্ত পরিবারগুলোর শেষ ভরসা, সেগুলো এখন ধসে পড়ার পথে। সংস্থাটির এক জরিপে দেখা গেছে, সুদানের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের ৮৩ শতাংশ পরিবার এখন পর্যাপ্ত খাদ্য পাচ্ছে না।
এদিকে গতকাল বুধবার সুদানের ডাক্তার্স নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, এল-ফাশেরের পশ্চিমের বাস্তুচ্যুত শিবিরগুলো—বিশেষত তাওইলা, কুরমা ও গলো এলাকায় পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে প্রায় ৩৬ হাজার মানুষ এসব এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, এল-ফাশের দখলের পর আরএসএফ ওই অঞ্চলের একটি হাসপাতালে হামলা চালায়, যাতে ৪৫০ জনের বেশি নিহত হয়। এ ছাড়া আরএসএফ বাহিনী ঘরে ঘরে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ও যৌন সহিংসতার ঘটনাও ঘটিয়েছে।
সুদানি সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে সংঘাত শুরু হয় ২০২৩ সালে। দুপক্ষই মূলত একসময় মিত্র ছিল, যারা ২০১৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশটির গণতান্ত্রিক রূপান্তরপ্রক্রিয়া তদারকির দায়িত্বে ছিল। কিন্তু ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে শুরু হয় ভয়াবহ যুদ্ধ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, এ পর্যন্ত অন্তত ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ। তবে ত্রাণ সংস্থাগুলোর দাবি, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা এরচেয়ে বহুগুণ বেশি হতে পারে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) তথ্যমতে, বর্তমানে ২ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ চরম খাদ্যসংকটে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, শুধু এক সপ্তাহেই এল-ফাশের থেকে ৭০ হাজার মানুষ পালিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে পৌঁছেছে নর্দান স্টেটের আল-আফফাদ বাস্তুচ্যুত শিবিরে, যা রাজধানী খার্তুম থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে।
পালিয়ে আসা শিক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শী ওসমান মোহাম্মদ বলেন, ‘এল-ফাশের ছাড়ার পথে রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি। অনেকে ক্লান্তিতে ও নির্যাতনে মারা গেছেন।’
আরও একজন বাস্তুচ্যুত নারী রাওদা মোহাম্মদ বলেন, এল-ফাশেরে আকাশে সারাক্ষণ ড্রোন ঘোরে। কখন যে হামলা হয়, বুঝতেই পারা যায় না। খাবার বলতে কিছুই ছিল না—মানুষ শুধু বাদাম তেলের অবশিষ্ট অংশ খেয়ে বেঁচে ছিল।

মুম্বাইয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প ঘিরে ভারতে নতুন করে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক বিতর্ক। চলতি মাসের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ভাইরাল হয় ‘সুকুন এম্পায়ার হালাল টাউনশিপ’ নামের ওই আবাসন প্রকল্পের বিজ্ঞাপন।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২০২০ সালে স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন ডায়াসের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন স্পিকারের আসনে দাঁড়িয়ে থাকা এক নারী শক্ত মুখে সেই ভাষণের কপি ছিঁড়ে ফেলেন। দৃশ্যত এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে ঘটনাটি রাজনৈতিক ইতিহাসে এক প্রতীকী মুহূর্ত হিসেবে জায়গা করে নেয়।
১০ ঘণ্টা আগেএই টাইফুনের কারণে ভিয়েতনাম সরকার ইতিমধ্যে ছয়টি বিমানবন্দর বন্ধ করে দিয়েছে এবং গিয়া লাই প্রদেশে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। এটি চলতি বছরে ভিয়েতনামে আঘাত হানা ১৩তম টাইফুন এবং সবচেয়ে শক্তিশালীগুলোর একটি।
১১ ঘণ্টা আগে
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধসংক্রান্ত অফিস (ইউএনওডিসি) একটি জরিপে বলেছে, আফিম চাষের জন্য ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে এবং একই সময়ে আফিমের চাষ কমেছে ৩২ শতাংশ।
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২০২০ সালে স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন ডায়াসের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন স্পিকারের আসনে দাঁড়িয়ে থাকা এক নারী শক্ত মুখে সেই ভাষণের কপি ছিঁড়ে ফেলেন। দৃশ্যত এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে ঘটনাটি রাজনৈতিক ইতিহাসে এক প্রতীকী মুহূর্ত হিসেবে জায়গা করে নেয়।
ট্রাম্পের ভাষণ ছিঁড়ে ফেলা সেই ন্যান্সি পেলোসি মার্কিন কংগ্রেসের ইতিহাসে প্রথম নারী স্পিকার। আজ এই ডেমোক্র্যাট নেতা আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। চার দশকের বেশি সময়ের রাজনৈতিক জীবন শেষে তিনি কংগ্রেস থেকে বিদায় নিচ্ছেন বলে এক ভিডিওবার্তায় জানিয়েছেন।
৮৫ বছর বয়সী পেলোসি জানিয়েছেন, তাঁর বর্তমান মেয়াদ (২০২৭ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত) শেষ হলে তিনি আর নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটছে।
ভিডিওবার্তায় পেলোসি বলেন, ‘আমরা ইতিহাস গড়েছি, অগ্রগতি অর্জন করেছি। আমরা সব সময় নেতৃত্ব দিয়েছি আর এখন আমাদের গণতন্ত্রের সক্রিয় অংশীদার হয়ে থাকতে হবে এবং আমেরিকান আদর্শ রক্ষায় লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’
পেলোসির উত্থান ও ক্ষমতা
১৯৮৭ সালে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো থেকে পেলোসি প্রথমবার কংগ্রেসে নির্বাচিত হন এবং দ্রুতই তিনি ডেমোক্র্যাট পার্টির শীর্ষ সারিতে উঠে আসেন।
২০০৭ সালে পেলোসি ইতিহাস গড়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম নারী স্পিকার হিসেবে প্রতিনিধি পরিষদের দায়িত্ব পান। তিনি ২০১১ সাল পর্যন্ত এ পদে ছিলেন। পরে দল পুনরায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে ২০১৯ সালে পেলোসি আবারও স্পিকার নির্বাচিত হন এবং ২০২৩ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, ভাইস প্রেসিডেন্টের পর প্রেসিডেন্টের উত্তরাধিকারক্রমে স্পিকার তৃতীয় স্থানে থাকেন। এ পদে থেকেই পেলোসি দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে একাধিক প্রেসিডেন্টের নীতি-কার্যক্রম এগিয়ে নিতে কিংবা বাধা দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ‘অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’ বা স্বাস্থ্যসেবা আইন পাসে তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। একইভাবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সময় পেলোসি পরিকাঠামো উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বিল পাসেও বড় ভূমিকা রাখেন।
তবে পেলোসি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে। ২০২০ সালে ট্রাম্পের স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ শেষে পেলোসি প্রকাশ্যে সেই ভাষণের কপি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। এ ঘটনা আমেরিকার রাজনৈতিক ইতিহাসে এক প্রতীকী মুহূর্ত হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুই দফা অভিশংসনপ্রক্রিয়া (ইমপিচমেন্ট) পরিচালনায়ও পেলোসি ছিলেন অগ্রভাগে। প্রথমবার ২০১৯ সালে ইউক্রেনকে চাপ দেওয়া ও সামরিক সহায়তাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগে। দ্বিতীয়বার ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি কংগ্রেস ভবনে দাঙ্গা উসকে দেওয়ার অভিযোগে। তবে প্রতিবারই রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে ট্রাম্প রক্ষা পান।
বাইডেনের শাসনামলে পেলোসি সংখ্যাগরিষ্ঠ না হয়েও ডেমোক্র্যাটদের বেশ কয়েকটি বড় আইন পাস করাতে সক্ষম হন। তাঁর নেতৃত্বে প্রতিনিধি পরিষদ দুই বছরের কম সময়ে কোভিড-১৯ ত্রাণ প্যাকেজ, অবকাঠামো খাতে দ্বিদলীয় ব্যয় বিল, বহু ট্রিলিয়ন ডলারের জলবায়ু ও সামাজিক খরচ কর্মসূচি এবং সমকামী বিবাহ সুরক্ষা আইন পাস করে।
২০২২ সালে নিউইয়র্কের প্রতিনিধি হাকিম জেফ্রিস পেলোসির স্থলাভিষিক্ত হয়ে ডেমোক্র্যাট দলের হাউস নেতা হন। পেলোসি কংগ্রেসের বাইরেও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় ‘প্রপোজিশন-৫০’-এর পক্ষে কাজ করেছেন। এর লক্ষ্য ছিল ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে অন্তত পাঁচটি আসন পুনরুদ্ধার করা।

২০২০ সালে স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন ডায়াসের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন স্পিকারের আসনে দাঁড়িয়ে থাকা এক নারী শক্ত মুখে সেই ভাষণের কপি ছিঁড়ে ফেলেন। দৃশ্যত এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে ঘটনাটি রাজনৈতিক ইতিহাসে এক প্রতীকী মুহূর্ত হিসেবে জায়গা করে নেয়।
ট্রাম্পের ভাষণ ছিঁড়ে ফেলা সেই ন্যান্সি পেলোসি মার্কিন কংগ্রেসের ইতিহাসে প্রথম নারী স্পিকার। আজ এই ডেমোক্র্যাট নেতা আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। চার দশকের বেশি সময়ের রাজনৈতিক জীবন শেষে তিনি কংগ্রেস থেকে বিদায় নিচ্ছেন বলে এক ভিডিওবার্তায় জানিয়েছেন।
৮৫ বছর বয়সী পেলোসি জানিয়েছেন, তাঁর বর্তমান মেয়াদ (২০২৭ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত) শেষ হলে তিনি আর নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটছে।
ভিডিওবার্তায় পেলোসি বলেন, ‘আমরা ইতিহাস গড়েছি, অগ্রগতি অর্জন করেছি। আমরা সব সময় নেতৃত্ব দিয়েছি আর এখন আমাদের গণতন্ত্রের সক্রিয় অংশীদার হয়ে থাকতে হবে এবং আমেরিকান আদর্শ রক্ষায় লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’
পেলোসির উত্থান ও ক্ষমতা
১৯৮৭ সালে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো থেকে পেলোসি প্রথমবার কংগ্রেসে নির্বাচিত হন এবং দ্রুতই তিনি ডেমোক্র্যাট পার্টির শীর্ষ সারিতে উঠে আসেন।
২০০৭ সালে পেলোসি ইতিহাস গড়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম নারী স্পিকার হিসেবে প্রতিনিধি পরিষদের দায়িত্ব পান। তিনি ২০১১ সাল পর্যন্ত এ পদে ছিলেন। পরে দল পুনরায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে ২০১৯ সালে পেলোসি আবারও স্পিকার নির্বাচিত হন এবং ২০২৩ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, ভাইস প্রেসিডেন্টের পর প্রেসিডেন্টের উত্তরাধিকারক্রমে স্পিকার তৃতীয় স্থানে থাকেন। এ পদে থেকেই পেলোসি দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে একাধিক প্রেসিডেন্টের নীতি-কার্যক্রম এগিয়ে নিতে কিংবা বাধা দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ‘অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’ বা স্বাস্থ্যসেবা আইন পাসে তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। একইভাবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সময় পেলোসি পরিকাঠামো উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বিল পাসেও বড় ভূমিকা রাখেন।
তবে পেলোসি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে। ২০২০ সালে ট্রাম্পের স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ শেষে পেলোসি প্রকাশ্যে সেই ভাষণের কপি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। এ ঘটনা আমেরিকার রাজনৈতিক ইতিহাসে এক প্রতীকী মুহূর্ত হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুই দফা অভিশংসনপ্রক্রিয়া (ইমপিচমেন্ট) পরিচালনায়ও পেলোসি ছিলেন অগ্রভাগে। প্রথমবার ২০১৯ সালে ইউক্রেনকে চাপ দেওয়া ও সামরিক সহায়তাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগে। দ্বিতীয়বার ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি কংগ্রেস ভবনে দাঙ্গা উসকে দেওয়ার অভিযোগে। তবে প্রতিবারই রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে ট্রাম্প রক্ষা পান।
বাইডেনের শাসনামলে পেলোসি সংখ্যাগরিষ্ঠ না হয়েও ডেমোক্র্যাটদের বেশ কয়েকটি বড় আইন পাস করাতে সক্ষম হন। তাঁর নেতৃত্বে প্রতিনিধি পরিষদ দুই বছরের কম সময়ে কোভিড-১৯ ত্রাণ প্যাকেজ, অবকাঠামো খাতে দ্বিদলীয় ব্যয় বিল, বহু ট্রিলিয়ন ডলারের জলবায়ু ও সামাজিক খরচ কর্মসূচি এবং সমকামী বিবাহ সুরক্ষা আইন পাস করে।
২০২২ সালে নিউইয়র্কের প্রতিনিধি হাকিম জেফ্রিস পেলোসির স্থলাভিষিক্ত হয়ে ডেমোক্র্যাট দলের হাউস নেতা হন। পেলোসি কংগ্রেসের বাইরেও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় ‘প্রপোজিশন-৫০’-এর পক্ষে কাজ করেছেন। এর লক্ষ্য ছিল ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে অন্তত পাঁচটি আসন পুনরুদ্ধার করা।

মুম্বাইয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প ঘিরে ভারতে নতুন করে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক বিতর্ক। চলতি মাসের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ভাইরাল হয় ‘সুকুন এম্পায়ার হালাল টাউনশিপ’ নামের ওই আবাসন প্রকল্পের বিজ্ঞাপন।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত মধ্যস্থতাকারী জোট ‘কোয়াড’ প্রস্তাবিত মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) আরএসএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তারা শুধু যুদ্ধবিরতিতে নয়, বরং সুদানে শত্রুতার অবসান...
৮ ঘণ্টা আগেএই টাইফুনের কারণে ভিয়েতনাম সরকার ইতিমধ্যে ছয়টি বিমানবন্দর বন্ধ করে দিয়েছে এবং গিয়া লাই প্রদেশে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। এটি চলতি বছরে ভিয়েতনামে আঘাত হানা ১৩তম টাইফুন এবং সবচেয়ে শক্তিশালীগুলোর একটি।
১১ ঘণ্টা আগে
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধসংক্রান্ত অফিস (ইউএনওডিসি) একটি জরিপে বলেছে, আফিম চাষের জন্য ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে এবং একই সময়ে আফিমের চাষ কমেছে ৩২ শতাংশ।
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
ভয়াবহ টাইফুন ‘কালমায়েগি’ ভিয়েতনামে আঘাত হেনেছে। এর আগে ফিলিপাইনে দুই দিন তাণ্ডব চালিয়ে অন্তত ১১৪ জনের প্রাণ কেড়েছে এই টাইফুন।
ভিয়েতনামের জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার কালমায়েগির বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৪৯ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) পর্যন্ত পৌঁছায়। ঝড়ে অসংখ্য ঘরের ছাদ উড়ে গেছে এবং গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়েছে। উপকূলীয় এলাকায় ১০ মিটার (৩০ ফুট) উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই টাইফুনের কারণে ভিয়েতনাম সরকার ইতিমধ্যে ছয়টি বিমানবন্দর বন্ধ করে দিয়েছে এবং গিয়া লাই প্রদেশে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। এটি চলতি বছরে ভিয়েতনামে আঘাত হানা ১৩তম টাইফুন এবং সবচেয়ে শক্তিশালীগুলোর একটি।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি সেনাসদস্য উদ্ধার তৎপরতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সরকার নিম্নাঞ্চলে বন্যা ও কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে। মধ্যাঞ্চলের উচ্চভূমি অঞ্চলগুলো—বিশেষ করে, কফি উৎপাদনের জন্য পরিচিত সেন্ট্রাল হাইল্যান্ডস—সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
প্রবল ঝড়ের আগমনে পর্যটননগরী হোই আনের কুয়া দাই সৈকতের হোটেল ও ঘরবাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে উপকূলীয় শহর হুয়ের আশপাশের কৃষকেরা এখনো আগের বন্যা থেকে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। ওই অঞ্চলে চলতি সপ্তাহেই বন্যায় ৪৭ জনের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় কৃষক নগুয়েন ভ্যান রিন (৪২) বলেন, ‘গত বন্যায় আমার গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি সব মারা গেছে। কালমায়েগি এবার চতুর্থবারের মতো বন্যা আনবে—আমি ভীষণ ভয় পাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ঘর থেকে নৌকা বেয়ে বের হতে হচ্ছে আর রাস্তায় গাড়িগুলো ধীরে ধীরে পানির ভেতর দিয়ে চলাচল করছে।
এদিকে ভিয়েতনামে প্রবেশের আগে ফিলিপাইনের সেবু প্রদেশে ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় কালমায়েগি। বন্যার পানি নামার পর আজ ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র স্পষ্ট হয়—অগণিত ঘরবাড়ি মাটিতে মিশে গেছে, গাড়ি উল্টে গেছে, রাস্তাজুড়ে ধ্বংসস্তূপ।
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানায়, এখনো ১২৭ জন নিখোঁজ। ত্রাণ কার্যক্রম ও মরদেহ উদ্ধারে বাধা সৃষ্টি করছে বিশাল ধ্বংসস্তূপ।
দেশটির জ্যেষ্ঠ বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা র্যাফি আলেজান্দ্রো রয়টার্সকে বলেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন ধ্বংসস্তূপ সরানো। নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজ ও ত্রাণ কার্যক্রম চালাতে এগুলো দ্রুত পরিষ্কার করা জরুরি।
সেবুতে এক মাস আগে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে শখানেক মানুষ মারা যায় ও হাজারো গৃহহীন হয়। এর ঠিক এক মাস পর আবারও এমন বিপর্যয় নেমে এসেছে।
ফিলিপাইনের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় মিন্দানাও দ্বীপের পূর্ব দিকে নতুন একটি ঝড় তৈরি হচ্ছে, যা আগামী সপ্তাহের শুরুতে টাইফুনে পরিণত হয়ে আবারও দেশটিতে আঘাত হানতে পারে।
আজ সেবুর অনেক বাসিন্দা ঘরে ফিরে দেখেন, তাঁদের সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। কেউ কেউ মাটি ও কাদা সরিয়ে ঘর পরিষ্কারে ব্যস্ত। তালিসাই শহরের বাসিন্দা লিজা বেকুস বলেন, ‘আমার সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, শুধু মেঝেটা টিকে আছে। আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
লিজা বেকুস ধ্বংসস্তূপ থেকে ধাতব পাত ও লোহার টুকরো কুড়িয়ে বিক্রি করার চেষ্টা করছিলেন, যেন সাত সন্তানকে খাওয়ানোর জন্য কিছু চাল কেনা যায়। লিজা বলেন, ‘আমার বাচ্চাদের কিছুই নেই—তাদের ইউনিফর্ম, ব্যাগ, পোশাক সব ভেসে গেছে।’

ভয়াবহ টাইফুন ‘কালমায়েগি’ ভিয়েতনামে আঘাত হেনেছে। এর আগে ফিলিপাইনে দুই দিন তাণ্ডব চালিয়ে অন্তত ১১৪ জনের প্রাণ কেড়েছে এই টাইফুন।
ভিয়েতনামের জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার কালমায়েগির বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৪৯ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) পর্যন্ত পৌঁছায়। ঝড়ে অসংখ্য ঘরের ছাদ উড়ে গেছে এবং গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়েছে। উপকূলীয় এলাকায় ১০ মিটার (৩০ ফুট) উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই টাইফুনের কারণে ভিয়েতনাম সরকার ইতিমধ্যে ছয়টি বিমানবন্দর বন্ধ করে দিয়েছে এবং গিয়া লাই প্রদেশে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। এটি চলতি বছরে ভিয়েতনামে আঘাত হানা ১৩তম টাইফুন এবং সবচেয়ে শক্তিশালীগুলোর একটি।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি সেনাসদস্য উদ্ধার তৎপরতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সরকার নিম্নাঞ্চলে বন্যা ও কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে। মধ্যাঞ্চলের উচ্চভূমি অঞ্চলগুলো—বিশেষ করে, কফি উৎপাদনের জন্য পরিচিত সেন্ট্রাল হাইল্যান্ডস—সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
প্রবল ঝড়ের আগমনে পর্যটননগরী হোই আনের কুয়া দাই সৈকতের হোটেল ও ঘরবাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে উপকূলীয় শহর হুয়ের আশপাশের কৃষকেরা এখনো আগের বন্যা থেকে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। ওই অঞ্চলে চলতি সপ্তাহেই বন্যায় ৪৭ জনের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় কৃষক নগুয়েন ভ্যান রিন (৪২) বলেন, ‘গত বন্যায় আমার গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি সব মারা গেছে। কালমায়েগি এবার চতুর্থবারের মতো বন্যা আনবে—আমি ভীষণ ভয় পাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ঘর থেকে নৌকা বেয়ে বের হতে হচ্ছে আর রাস্তায় গাড়িগুলো ধীরে ধীরে পানির ভেতর দিয়ে চলাচল করছে।
এদিকে ভিয়েতনামে প্রবেশের আগে ফিলিপাইনের সেবু প্রদেশে ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় কালমায়েগি। বন্যার পানি নামার পর আজ ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র স্পষ্ট হয়—অগণিত ঘরবাড়ি মাটিতে মিশে গেছে, গাড়ি উল্টে গেছে, রাস্তাজুড়ে ধ্বংসস্তূপ।
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানায়, এখনো ১২৭ জন নিখোঁজ। ত্রাণ কার্যক্রম ও মরদেহ উদ্ধারে বাধা সৃষ্টি করছে বিশাল ধ্বংসস্তূপ।
দেশটির জ্যেষ্ঠ বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা র্যাফি আলেজান্দ্রো রয়টার্সকে বলেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন ধ্বংসস্তূপ সরানো। নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজ ও ত্রাণ কার্যক্রম চালাতে এগুলো দ্রুত পরিষ্কার করা জরুরি।
সেবুতে এক মাস আগে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে শখানেক মানুষ মারা যায় ও হাজারো গৃহহীন হয়। এর ঠিক এক মাস পর আবারও এমন বিপর্যয় নেমে এসেছে।
ফিলিপাইনের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় মিন্দানাও দ্বীপের পূর্ব দিকে নতুন একটি ঝড় তৈরি হচ্ছে, যা আগামী সপ্তাহের শুরুতে টাইফুনে পরিণত হয়ে আবারও দেশটিতে আঘাত হানতে পারে।
আজ সেবুর অনেক বাসিন্দা ঘরে ফিরে দেখেন, তাঁদের সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। কেউ কেউ মাটি ও কাদা সরিয়ে ঘর পরিষ্কারে ব্যস্ত। তালিসাই শহরের বাসিন্দা লিজা বেকুস বলেন, ‘আমার সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, শুধু মেঝেটা টিকে আছে। আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
লিজা বেকুস ধ্বংসস্তূপ থেকে ধাতব পাত ও লোহার টুকরো কুড়িয়ে বিক্রি করার চেষ্টা করছিলেন, যেন সাত সন্তানকে খাওয়ানোর জন্য কিছু চাল কেনা যায়। লিজা বলেন, ‘আমার বাচ্চাদের কিছুই নেই—তাদের ইউনিফর্ম, ব্যাগ, পোশাক সব ভেসে গেছে।’

মুম্বাইয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প ঘিরে ভারতে নতুন করে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক বিতর্ক। চলতি মাসের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ভাইরাল হয় ‘সুকুন এম্পায়ার হালাল টাউনশিপ’ নামের ওই আবাসন প্রকল্পের বিজ্ঞাপন।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত মধ্যস্থতাকারী জোট ‘কোয়াড’ প্রস্তাবিত মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) আরএসএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তারা শুধু যুদ্ধবিরতিতে নয়, বরং সুদানে শত্রুতার অবসান...
৮ ঘণ্টা আগে
২০২০ সালে স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন ডায়াসের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন স্পিকারের আসনে দাঁড়িয়ে থাকা এক নারী শক্ত মুখে সেই ভাষণের কপি ছিঁড়ে ফেলেন। দৃশ্যত এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে ঘটনাটি রাজনৈতিক ইতিহাসে এক প্রতীকী মুহূর্ত হিসেবে জায়গা করে নেয়।
১০ ঘণ্টা আগে
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধসংক্রান্ত অফিস (ইউএনওডিসি) একটি জরিপে বলেছে, আফিম চাষের জন্য ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে এবং একই সময়ে আফিমের চাষ কমেছে ৩২ শতাংশ।
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

তালেবান সরকার ২০২২ সালে আফগানিস্তানে আফিম চাষের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর পর থেকে দেশটিতে আফিমের চাষ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধসংক্রান্ত অফিস (ইউএনওডিসি) একটি জরিপে বলেছে, আফিম চাষের জন্য ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে এবং একই সময়ে আফিমের চাষ কমেছে ৩২ শতাংশ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগে আফগানিস্তান বিশ্বের ৮০ শতাংশের বেশি আফিম উৎপাদন করত এবং আফগান আফিম থেকে তৈরি হেরোইন ইউরোপের বাজারের ৯৫ শতাংশ পূরণ করত। তবে ২০২২ সালের এপ্রিলে তালেবান সরকার ক্ষমতা দখলের পর আফিমকে ক্ষতিকারক ও ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে এর চাষ নিষিদ্ধ করে। ইউএনওডিসির তথ্য বলছে, ‘গুরুতর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ’ সত্ত্বেও বেশির ভাগ কৃষক এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলছেন।
ইউএনওডিসি জানিয়েছে, আফগান কৃষকেরা এখন শস্য চাষ করছেন, তবে পপি—যা থেকে হেরোইনের প্রধান উপাদান আফিম পাওয়া যায়, সেটি এখনো বৈধ ফসলের চেয়ে ‘অনেক বেশি লাভজনক’। সংস্থাটি আরও উল্লেখ করেছে, লাভজনক বিকল্পের অভাব, সীমিত কৃষি উৎপাদন ও প্রতিকূল জলবায়ু পরিস্থিতির কারণে ৪০ শতাংশের বেশি আবাদযোগ্য জমি পতিত থেকে গেছে।
আফগানিস্তানের বৃহত্তম হেলমান্দ প্রদেশের একজন কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসি পশতুকে বলেন, ‘আমরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে আমাদের জেল হয়। মেনে চললে আমরা দারিদ্র্যের শিকার হই। কিন্তু আমার কাছে যদি টাকা না থাকে, তাহলে আমি আবার পপি চাষ করব।’
অন্য একজন কৃষক তাঁর বাড়ির সামনের একটি ছোট পপিখেত দেখিয়ে বলেন, ‘আমি কী করব? আমি এটা করতে বাধ্য—আমার আর কিছুই করার নেই। আমি আমার পরিবারের জন্য খাবারও জোগাড় করতে পারি না।’
চলতি বছর আফগানিস্তানে আফিম চাষের জমির পরিমাণ ছিল আনুমানিক ১০ হাজার ২০০ হেক্টর, যার বেশির ভাগ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের। এর মধ্যে বাদাখশান প্রদেশে সবচেয়ে বেশি আফিম চাষ হয়েছে। ২০২২ সালে নিষেধাজ্ঞার আগে আফগানিস্তানে ২ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে আফিম চাষ হতো।
ইউএনওডিসি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে আফিম চাষ হওয়া চারটি প্রদেশকে (বাল্খ, ফারাহ, লাগমান ও উরুজগান) ২০২৫ সালে আফিমমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। জরিপে বলা হয়েছে, ঐতিহ্যবাহী শক্ত ঘাঁটিগুলো থেকে আফিম চাষ নির্মূল হওয়া নিষেধাজ্ঞার মাত্রা ও স্থায়িত্ব তুলে ধরে।
তবে ইউএনওডিসি জানিয়েছে, তালেবানের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গার কৃষকেরা সহিংস প্রতিরোধ তৈরি করেছেন, বিশেষ করে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। বাদাখশানের কয়েকটি জেলায় সংঘর্ষের সময় হতাহতের খবরও পাওয়া গেছে। তা সত্ত্বেও বেশির ভাগ আফগান কৃষক তালেবানের সর্বোচ্চ নেতার জারি করা এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলছেন।
ইউএনওডিসি জানিয়েছে, আফিমের চাষ কমলেও নিষেধাজ্ঞার পর থেকে মেথামফেটামিনের মতো সিনথেটিক ড্রাগের পাচার বেড়েছে। ২০২৪ সালের শেষের দিকে ও এর আশপাশে এ ধরনের মাদক জব্দের হার গত বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি ছিল। ইউএনওডিসি বলছে, সংঘবদ্ধ অপরাধী গোষ্ঠীগুলো সিনথেটিক ড্রাগকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, কারণ, এগুলো উৎপাদন করা সহজ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি তেমন প্রভাব ফেলে না।

তালেবান সরকার ২০২২ সালে আফগানিস্তানে আফিম চাষের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর পর থেকে দেশটিতে আফিমের চাষ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধসংক্রান্ত অফিস (ইউএনওডিসি) একটি জরিপে বলেছে, আফিম চাষের জন্য ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে এবং একই সময়ে আফিমের চাষ কমেছে ৩২ শতাংশ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগে আফগানিস্তান বিশ্বের ৮০ শতাংশের বেশি আফিম উৎপাদন করত এবং আফগান আফিম থেকে তৈরি হেরোইন ইউরোপের বাজারের ৯৫ শতাংশ পূরণ করত। তবে ২০২২ সালের এপ্রিলে তালেবান সরকার ক্ষমতা দখলের পর আফিমকে ক্ষতিকারক ও ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে এর চাষ নিষিদ্ধ করে। ইউএনওডিসির তথ্য বলছে, ‘গুরুতর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ’ সত্ত্বেও বেশির ভাগ কৃষক এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলছেন।
ইউএনওডিসি জানিয়েছে, আফগান কৃষকেরা এখন শস্য চাষ করছেন, তবে পপি—যা থেকে হেরোইনের প্রধান উপাদান আফিম পাওয়া যায়, সেটি এখনো বৈধ ফসলের চেয়ে ‘অনেক বেশি লাভজনক’। সংস্থাটি আরও উল্লেখ করেছে, লাভজনক বিকল্পের অভাব, সীমিত কৃষি উৎপাদন ও প্রতিকূল জলবায়ু পরিস্থিতির কারণে ৪০ শতাংশের বেশি আবাদযোগ্য জমি পতিত থেকে গেছে।
আফগানিস্তানের বৃহত্তম হেলমান্দ প্রদেশের একজন কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসি পশতুকে বলেন, ‘আমরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে আমাদের জেল হয়। মেনে চললে আমরা দারিদ্র্যের শিকার হই। কিন্তু আমার কাছে যদি টাকা না থাকে, তাহলে আমি আবার পপি চাষ করব।’
অন্য একজন কৃষক তাঁর বাড়ির সামনের একটি ছোট পপিখেত দেখিয়ে বলেন, ‘আমি কী করব? আমি এটা করতে বাধ্য—আমার আর কিছুই করার নেই। আমি আমার পরিবারের জন্য খাবারও জোগাড় করতে পারি না।’
চলতি বছর আফগানিস্তানে আফিম চাষের জমির পরিমাণ ছিল আনুমানিক ১০ হাজার ২০০ হেক্টর, যার বেশির ভাগ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের। এর মধ্যে বাদাখশান প্রদেশে সবচেয়ে বেশি আফিম চাষ হয়েছে। ২০২২ সালে নিষেধাজ্ঞার আগে আফগানিস্তানে ২ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে আফিম চাষ হতো।
ইউএনওডিসি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে আফিম চাষ হওয়া চারটি প্রদেশকে (বাল্খ, ফারাহ, লাগমান ও উরুজগান) ২০২৫ সালে আফিমমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। জরিপে বলা হয়েছে, ঐতিহ্যবাহী শক্ত ঘাঁটিগুলো থেকে আফিম চাষ নির্মূল হওয়া নিষেধাজ্ঞার মাত্রা ও স্থায়িত্ব তুলে ধরে।
তবে ইউএনওডিসি জানিয়েছে, তালেবানের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গার কৃষকেরা সহিংস প্রতিরোধ তৈরি করেছেন, বিশেষ করে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। বাদাখশানের কয়েকটি জেলায় সংঘর্ষের সময় হতাহতের খবরও পাওয়া গেছে। তা সত্ত্বেও বেশির ভাগ আফগান কৃষক তালেবানের সর্বোচ্চ নেতার জারি করা এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলছেন।
ইউএনওডিসি জানিয়েছে, আফিমের চাষ কমলেও নিষেধাজ্ঞার পর থেকে মেথামফেটামিনের মতো সিনথেটিক ড্রাগের পাচার বেড়েছে। ২০২৪ সালের শেষের দিকে ও এর আশপাশে এ ধরনের মাদক জব্দের হার গত বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি ছিল। ইউএনওডিসি বলছে, সংঘবদ্ধ অপরাধী গোষ্ঠীগুলো সিনথেটিক ড্রাগকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, কারণ, এগুলো উৎপাদন করা সহজ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি তেমন প্রভাব ফেলে না।

মুম্বাইয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প ঘিরে ভারতে নতুন করে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক বিতর্ক। চলতি মাসের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ভাইরাল হয় ‘সুকুন এম্পায়ার হালাল টাউনশিপ’ নামের ওই আবাসন প্রকল্পের বিজ্ঞাপন।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত মধ্যস্থতাকারী জোট ‘কোয়াড’ প্রস্তাবিত মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) আরএসএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তারা শুধু যুদ্ধবিরতিতে নয়, বরং সুদানে শত্রুতার অবসান...
৮ ঘণ্টা আগে
২০২০ সালে স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন ডায়াসের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন স্পিকারের আসনে দাঁড়িয়ে থাকা এক নারী শক্ত মুখে সেই ভাষণের কপি ছিঁড়ে ফেলেন। দৃশ্যত এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে ঘটনাটি রাজনৈতিক ইতিহাসে এক প্রতীকী মুহূর্ত হিসেবে জায়গা করে নেয়।
১০ ঘণ্টা আগেএই টাইফুনের কারণে ভিয়েতনাম সরকার ইতিমধ্যে ছয়টি বিমানবন্দর বন্ধ করে দিয়েছে এবং গিয়া লাই প্রদেশে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। এটি চলতি বছরে ভিয়েতনামে আঘাত হানা ১৩তম টাইফুন এবং সবচেয়ে শক্তিশালীগুলোর একটি।
১১ ঘণ্টা আগে