Ajker Patrika

ভারতে পেঁয়াজের দরপতন, কৃষকের কপালে ভাঁজ

আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০: ১১
ভারতে পেঁয়াজের দরপতন, কৃষকের কপালে ভাঁজ

পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নিষেধাজ্ঞা এখন দেশটির কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। কারণ, তীব্র খরার সত্ত্বেও পেঁয়াজ চাষ করে ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না কৃষকেরা। টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার কারণে গত পাঁচ দিনে হঠাৎ ভারতের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে। কয়েক দিন আগেই যেসব কৃষক বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম লাভের আশা করেছিলেন, তাঁরাই এখন পেঁয়াজের দাম হঠাৎ কমে যাওয়ায় আর্থিক সংকটে পড়েছেন। 

ভারতের কর্ণাটক রাজ্য পেঁয়াজ চাষি সমিতির সভাপতি এন এম সিদ্দেশ টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, কয়েক দিন আগে পাইকারি বাজারে মাঝারি মানের পেঁয়াজের দাম কুইন্টালপ্রতি সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার রুপির মধ্যে ছিল। ভালো মানের পেঁয়াজের দাম প্রতি কুইন্টাল ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে ছিল। 

কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পরে রাজ্যের বেঙ্গালুরু, হুব্বালি, দাভানাগেরে এবং রাজ্যের অন্যান্য অংশের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম মারাত্মকভাবে কমে গেছে। 

হঠাৎ পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়া তীব্র খরার কবলে পড়া কৃষকদের জন্য একটি বড় ধাক্কা উল্লেখ করে হুব্বালির পেঁয়াজ-আলু ব্যবসায়ী সমিতির (এপিএমসি) সভাপতি সেলিম বাইহাট্টি বলেন, ‘আমরা এখন সরকারের কাছে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ-প্রতিবাদের পরিকল্পনা করছি। আমরা শিগগিরই গদগে একটি বিশাল প্রতিবাদ মিছিল করব।’ 

তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের পরই হঠাৎ পেঁয়াজের দাম কমেছে। এখন মাঝারি মানের পেঁয়াজের দাম যথাক্রমে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ রুপি এবং ভালো মানের পেঁয়াজের দাম দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার রুপিতে নেমে এসেছে। আমরা বাংলাদেশ ও ভারতের অন্যান্য রাজ্যে পেঁয়াজ রপ্তানি করতাম। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণরূপে রপ্তানি প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। স্থানীয় ও পাইকারি উভয় বাজারেই পেঁয়াজের দাম কমিয়ে দিয়েছে। আগামী দিনগুলোতে দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।’ 

শিরহাট্টির পেঁয়াজচাষি সতীশ দেশপান্ডে, বীরেশ কোগালি ও হুভিনহাদাগলির বলেন, ‘এক একর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে আমাদের ৪০ হাজার থেকে ৪৫ হাজার রুপি খরচ করতে হয়। এখন খরার কারণে আমরা ফলনও খুব কম পাচ্ছি। তবে আমরা এখন নাম মাত্র ৮০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ রুপিতে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। আমরা পেঁয়াজ চাষ ও পরিবহনে যে অর্থ ব্যয় করেছি, তাও- আমরা ফেরত পাচ্ছি না। আমাদের মাত্র চার-পাঁচ একর জমি আছে এবং পেঁয়াজ চাষের জন্য বেসরকারি ঋণদাতা ও ব্যাংক থেকে টাকা ধার নিয়েছি। দামের এই আকস্মিক দরপতন কৃষকদের মাঠে বসিয়েছে।’ 

তাঁরা আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞা শুধু মজুতদার ও মধ্যস্বত্বভোগীদের সাহায্য করছে। কারণ, কৃষকেরা তাঁদের পণ্য কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় বাজারে বিক্রেতারা বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। 

তাঁদের দাবি, সরকারের উচিত পেঁয়াজের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করা এবং ব্যবসায়ীদের উচিত সেই দামে চাষিদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কেনা, যাতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যর অবসান হয়। একই সঙ্গে কৃষকদের বাঁচাতে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত